ঢাকা ০৫:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সংশোধন হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:১৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ৪৬৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রিকশাওয়ালার বসে আছে রিকশার পাদানিতে। অনেকটা আরাম করেই বসেছেন তিনি। তার সামনে দামী ভিডিও ক্যামেরা ধরে রেখেছে এক যুবক। আরেকজন বুম ধরে রেখেছেন মুখের উপরে।

রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে দূর থেকে এ দৃশ্য চোখে পড়লো। আগ্রহ নিয়ে কাছে গিয়ে দেখি রিকশাওয়ালার সাক্ষাৎকার গ্রহণ চলছে। যুবক একটার পর একটা প্রশ্ন করছে, রিকশাওয়ালা নির্দ্ধিধায় উত্তর দিয়ে চলেছেন। তবে প্রশ্নের মধ্যে রিকশাওয়ালার জীবন-জীবিকা নিয়ে কোনো প্রসঙ্গ নেই। তাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে দেশের রাজনীতি নিয়ে। সামনের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে। তিনি অকপটে উত্তর দিচ্ছেন। তার কথা শুনে উপস্থিত লোকজন বেশ মজাই পাচ্ছেন।

এক পর্যায়ে রাজনীতির একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলো। রিকশাওয়ালা বার বার ঘুরে ফিরে উত্তর দিচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্নকর্তা যেটা চাচ্ছেন সেটা এড়িয়ে চলছেন। রিকশাওয়ালার বুদ্ধিমত্তার কাছে অনেকটা হার মেনে গেলো সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী।

পেশাগত কারণেই আমি নিজে রিকশাওয়ালাকে ছোট্ট একটা প্রশ্ন করলাম। সাথে সাথে তিনি যে উত্তর এড়িয়ে চলছিলেন তা বলতে বাধ্য হলেন। ওই পর্যন্তই শেষ! একটা ছবি তুলে আমি একটু দূরে চলে গেলাম।

দূরে দাঁড়িয়ে পরিচিত একজনের সাথে কথা বলার সময় দেখি ওই দুই যুবক আমার সামনে হাজির! বুম হাতে যুবকটি বিনয়ের সাথে আমাকে বললো, স্যার আপনি কী করেন?

বললাম- কেনো রে ভাই। হঠাৎ এমন প্রশ্ন কেনো?

যুবকটি বললো- আপনার প্রশ্নের টেকনিক দেখে অবাক হয়েছি। দেখেছেন তো রিকশাওয়ালা কতো চতুর। ঘুরেফিরে প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছিলেন।
পরিচয় দিয়ে বললাম, এভাবে টার্গেট করে প্রশ্ন করলে রিকশাওয়ালার মতো সাধারণ মানুষও বুঝে যায় তুমি কোন কথা তার মুখে শুনতে চাচ্ছো। এটা সাংবাদিকতার নীতিবিরুদ্ধ। তাকে অবাধে কথা বলার সুযোগ দিলে, সব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করলে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতি হতো না।
সাংবাদিকতায় নতুন হলেও যুবকটি বুদ্ধিমান বটে। নিজের অজ্ঞতার কথা নিমিষেই স্বীকার করে নিলো। বললো, ভাই এতোকিছু শেখা হয়নি।
ভুল বা অজ্ঞতা দোষের কিছু নয়। বরং তা স্বীকার করে সংশোধন হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

নিউজটি শেয়ার করুন

সংশোধন হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ

আপডেট সময় : ১২:১৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

রিকশাওয়ালার বসে আছে রিকশার পাদানিতে। অনেকটা আরাম করেই বসেছেন তিনি। তার সামনে দামী ভিডিও ক্যামেরা ধরে রেখেছে এক যুবক। আরেকজন বুম ধরে রেখেছেন মুখের উপরে।

রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে দূর থেকে এ দৃশ্য চোখে পড়লো। আগ্রহ নিয়ে কাছে গিয়ে দেখি রিকশাওয়ালার সাক্ষাৎকার গ্রহণ চলছে। যুবক একটার পর একটা প্রশ্ন করছে, রিকশাওয়ালা নির্দ্ধিধায় উত্তর দিয়ে চলেছেন। তবে প্রশ্নের মধ্যে রিকশাওয়ালার জীবন-জীবিকা নিয়ে কোনো প্রসঙ্গ নেই। তাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে দেশের রাজনীতি নিয়ে। সামনের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে। তিনি অকপটে উত্তর দিচ্ছেন। তার কথা শুনে উপস্থিত লোকজন বেশ মজাই পাচ্ছেন।

এক পর্যায়ে রাজনীতির একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলো। রিকশাওয়ালা বার বার ঘুরে ফিরে উত্তর দিচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্নকর্তা যেটা চাচ্ছেন সেটা এড়িয়ে চলছেন। রিকশাওয়ালার বুদ্ধিমত্তার কাছে অনেকটা হার মেনে গেলো সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী।

পেশাগত কারণেই আমি নিজে রিকশাওয়ালাকে ছোট্ট একটা প্রশ্ন করলাম। সাথে সাথে তিনি যে উত্তর এড়িয়ে চলছিলেন তা বলতে বাধ্য হলেন। ওই পর্যন্তই শেষ! একটা ছবি তুলে আমি একটু দূরে চলে গেলাম।

দূরে দাঁড়িয়ে পরিচিত একজনের সাথে কথা বলার সময় দেখি ওই দুই যুবক আমার সামনে হাজির! বুম হাতে যুবকটি বিনয়ের সাথে আমাকে বললো, স্যার আপনি কী করেন?

বললাম- কেনো রে ভাই। হঠাৎ এমন প্রশ্ন কেনো?

যুবকটি বললো- আপনার প্রশ্নের টেকনিক দেখে অবাক হয়েছি। দেখেছেন তো রিকশাওয়ালা কতো চতুর। ঘুরেফিরে প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছিলেন।
পরিচয় দিয়ে বললাম, এভাবে টার্গেট করে প্রশ্ন করলে রিকশাওয়ালার মতো সাধারণ মানুষও বুঝে যায় তুমি কোন কথা তার মুখে শুনতে চাচ্ছো। এটা সাংবাদিকতার নীতিবিরুদ্ধ। তাকে অবাধে কথা বলার সুযোগ দিলে, সব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করলে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতি হতো না।
সাংবাদিকতায় নতুন হলেও যুবকটি বুদ্ধিমান বটে। নিজের অজ্ঞতার কথা নিমিষেই স্বীকার করে নিলো। বললো, ভাই এতোকিছু শেখা হয়নি।
ভুল বা অজ্ঞতা দোষের কিছু নয়। বরং তা স্বীকার করে সংশোধন হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।