খেয়ে না খেয়ে অর্ধশতাধিক বেদের মানবেতর দিনযাপন
- আপডেট সময় : ০৭:৫৮:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪
- / ৫৮৩ বার পড়া হয়েছে
অভাব-অনটন যেনো নিত্যসঙ্গী ওদের! দু’বেলা দু’মুঠো ভাতের জন্য শিশুদের আর্তচিৎকার যেখানে নিত্যদিনের ঘটনা! অস্বাস্থ্যকর, নিরাপত্তাহীনতা আর ভাসমান জীবনের মধ্য দিয়ে এভাবেই খেয়ে না খেয়ে মানবেতর দিনযাপন করছে অর্ধশতাধিক বেদে সম্প্রদায় । নদীর স্রোতের ভাসমান কচুরিপানার মতোই ধুঁকে-ধুঁকে বয়ে চলছে ‘চির অবহেলিত, চির পতিত, চির অপাংক্তেয়, যাদের বুধ ফাঁটলেও মুখ ফোঁটেনা; যাদের বিচারের বানী নিরবে নিভৃতে কাঁদছে’- সেই বেদে সম্প্রদায়ের জীবন। আজ এখানে-তো কাল ওখানে। তাঁবু টানিয়ে ঝূঁকিপূর্ণ বসবাস করছে এ সম্প্রদায়ের অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোররা। পিছিয়ে পড়া এই জনগোষ্ঠীকে মূল স্রোতে নিয়ে আসতে প্রয়োজন সরকারি, বেসরকারি কার্যকারী উদ্যোগ আর যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা।
সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়কের পশ্চিমে গঙ্গাপ্রসাদ এলাকায় তাবু টানিয়ে অত্যন্ত মানবেতরভাবে বসবাস করছে অর্ধশতাধিক বেদে সম্প্রদায়। প্রচন্ড শীত, কুয়াশা, রোদ-বৃষ্টি, ঝড়সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এভাবেই খোলা আকাশের নিচে তাঁবু টানিয়ে ভাসমান বেদে সম্প্রদায়ের বসবাস। অনেকটা অস্বাস্থ্যকর এবং নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিয়েই বছরের পর বছর চলছে বেদে সম্প্রদায়ের জীবন-জীবিকা। মৌলিক চাহিদা রীতিমতো অধরা এই সম্প্রদায়ের কাছে। অথচ তারাও এই দেশেরই নাগরিক!
বেদে ফুলমতি বেগম (৪২) বলেন, “নদীর স্রোতে ভেসে চলা কচুরিপানার মতোই এভাবেই ধুঁকে ধুঁকে চলছে আমাদের জীবন-জীবিকা। সিংগা লাগাই, পোঁকা উঠাই ও মাজা-কোমর টানি। এভাবেই আমাদের চলতে হয়; খুব কষ্ট আছি আমরা! বাড়ি নাই, ঘর নাই, এভাবেই পলিথিন দিয়ে তাঁবু টানিয়ে থাকি। ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা করাতে পারিনি! বুকভরা কষ্টের কথা শোনার কেউ নাই!”
বেদে জোনাকি রানী বলেন, “আর সবার মতো আমরাও চাই আমাদের ছেলে-মেয়ে নিরাপদে থাকুক, লেখাপড়া শিখুক, মানুষের মতো মানুষ হোক। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাঁস- আমরা আমাদের শিশুদের দু’বেলা দু’মুঠো ভাতই ঠিকমতো যোগান দিতে পারি না; সেখানে শিশুদের নিয়ে এমন ভাবনা অলীক কল্পনা ছাড়া আর কিছুই না আমাদের কাছে! কেউ খোঁজ নেয়না আমাদের। এসব নিয়ে আমাদেরও আর কোন দুঃখ নাই। সব সয়ে গেছে। মাঝে মধ্যে মনে হয়, আমরা বুঝি স্বাধীন দেশের পরাধীন নাগরিক ! ”
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান জানান, “খোঁজ-খবর নিয়ে যদি কোন সুযোগ থাকে, তাহলে বেদে সম্প্রদায়কে পুর্নবাসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’