ঢাকা ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সরকারের বিদায় ছাড়া কোনো উপায় নেই : মোশাররফ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:২৩:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৪০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারের বিদায় ছাড়া কোনো উপায় নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

রোববার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অস্থায়ী মঞ্চে এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। ছাত্রদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করে সংগঠনটি।

দেশে গণতন্ত্র নেই ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুণ্ঠিত মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এই সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করতে হবে। সবকিছু রাজপথে ফয়সালা করা হবে। বিদেশে টাকা পাচারের কারণে অর্থনীতি ধ্বংসের শেষ প্রান্তে। দ্রব্যমূল্যের উধর্গতিতে সরকারি সিন্ডিকেটের লোকজন পকেট ভর্তি করেছে। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরকারের অবৈধ নির্দেশ মানার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আজ বাংলাদেশ যে জায়গায় দাঁড়িয়েছে তাতে সরকারের বিদায় ছাড়া কোনো উপায় নেই। তাই ইতিহাসের ক্রমধারায় এবারও ছাত্রদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। ছাত্র-যুবকদের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।

জনগণ রায় দিয়েছে এই সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে উল্লেখ করে মোশাররফ আরও বলেন, এরা অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, তাই এরা মেরামত করতে পারবে না। সমাজকে ধ্বংস করেছে, তাই মেরামত করতে পারবে না। বিচারবিভাগকে ধ্বংস করেছে, তাই স্বাধীন করতে পারবে না। সেজন্য জনগণ বার্তা দিয়েছে এই সরকারকে তারা আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিএনপির ১০ দফার প্রথম দফা হচ্ছে এই সরকারের পদত্যাগ। কিন্তু আপনারা জানেন, স্বৈরাচার কখনও আপসে ক্ষমতা ছাড়ে না। অতত্রব তাদেরকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করতে হবে। তাই আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, ফয়সালা হবে রাজপথে। রাজপথে থাকতে হবে। আর রাজপথের অতীত ইতিহাস থেকে আমরা জানি, ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান আমলে এই দেশের ছাত্র সমাজ এবং জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণঅভ্যুত্থান করে আইয়ুব খানের পতন ঘটিয়েছিলো। স্বৈরশাসক এরশাদকেও ছাত্রদলের নেতৃত্বে সব ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে পতন ঘটিয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপি বিভাগীয় সমাবেশ জনগণ বার্তা দিয়েছে এই সরকার রাষ্ট্রকে মেরামত করতে পারবে না। তারা এ সরকারকে আর দেখতে চায় না। দশ দফা কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। ঢাকার সমাবেশ বানচাল করতে সরকার বিএনপি নেতাদের গ্রেফতার করেছে। সরকার যত নির্যাতন নিপীড়ন করুক আন্দোলনকে দমানো যাবে না। জনগণ রাস্তায় নেমেছে আর রক্ষা নাই। দশ দফা বাস্তবায়ন করাই বিএনপির প্রধান চ্যালেঞ্জ। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দশ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্ধকার কেটে যাবে আলোর পথে বাংলাদেশ।

অন্ধকার কেটে যাবে, আলোর পথে যাবে বাংলাদেশ উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, ছাত্র সমাজ, যারা যুগপৎ আন্দোলনে আছে তারা আলো দেখার জন্য ইতিহাস সৃষ্টি করবে।

মোশাররফ বলেন, এই সরকারকে বলতে চাই, গ্রেফতার, হামলা, মামলা, গুম করেও যেহেতু আন্দোলন দমাতে পারেননি, তাই বলতে চাই আর আপনাদের রেহাই নেই।

বর্তমান সরকারের লুটপাট, দুর্নীতি ও বিদেশে টাকা প্রচার করার কারণে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে, অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর হবে। গত ১৪ বছরে গায়ের জোরের সরকার দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটের পকেট ভারী করার জন্য অভিযোগ করে মোশাররফ বলেন, আজকে গরিব মানুষের পেটে ভাত জুটে না। মধ্যবিত্ত গরিব হয়ে গেছে। কিন্তু ধনীরা আরও ধনী হয়েছে। গরিবরা আরও গরিব হয়েছে, ১৪ বছর সরকারের লুটপাটের কারণে।

বিচারবিভাগ সরকারের হাতে বন্দি মন্তব্য করে মোশাররফ বলেন, সরকার দলীয়করণ করতে গিয়ে বিচারবিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের অবৈধ নির্দেশনা মানতে গিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে ধিকৃত মন্তব্য করে তিনি বলেন, শুধুমাত্র সরকারের অবৈধ নির্দেশনা মানতে গিয়ে র‌্যাবকে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ড. আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, বর্তমান কমিটির নেতা তবিবুর রহমান সাগর, আবু আফসান মো. ইয়াহিয়া, খায়রুল আলম সুজন, মো. আসাদুজ্জামান আসাদ, মো. আনোয়ার হোসেন, শাফি ইসলাম, মো. আবু জাফর, মো. আদনান, মো. মোহন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আরিফুল ইসলাম, সাইদুল ইসলামসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

সরকারের বিদায় ছাড়া কোনো উপায় নেই : মোশাররফ

আপডেট সময় : ০৭:২৩:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারের বিদায় ছাড়া কোনো উপায় নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

রোববার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অস্থায়ী মঞ্চে এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। ছাত্রদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করে সংগঠনটি।

দেশে গণতন্ত্র নেই ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুণ্ঠিত মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এই সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করতে হবে। সবকিছু রাজপথে ফয়সালা করা হবে। বিদেশে টাকা পাচারের কারণে অর্থনীতি ধ্বংসের শেষ প্রান্তে। দ্রব্যমূল্যের উধর্গতিতে সরকারি সিন্ডিকেটের লোকজন পকেট ভর্তি করেছে। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরকারের অবৈধ নির্দেশ মানার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আজ বাংলাদেশ যে জায়গায় দাঁড়িয়েছে তাতে সরকারের বিদায় ছাড়া কোনো উপায় নেই। তাই ইতিহাসের ক্রমধারায় এবারও ছাত্রদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। ছাত্র-যুবকদের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।

জনগণ রায় দিয়েছে এই সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে উল্লেখ করে মোশাররফ আরও বলেন, এরা অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, তাই এরা মেরামত করতে পারবে না। সমাজকে ধ্বংস করেছে, তাই মেরামত করতে পারবে না। বিচারবিভাগকে ধ্বংস করেছে, তাই স্বাধীন করতে পারবে না। সেজন্য জনগণ বার্তা দিয়েছে এই সরকারকে তারা আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিএনপির ১০ দফার প্রথম দফা হচ্ছে এই সরকারের পদত্যাগ। কিন্তু আপনারা জানেন, স্বৈরাচার কখনও আপসে ক্ষমতা ছাড়ে না। অতত্রব তাদেরকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করতে হবে। তাই আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, ফয়সালা হবে রাজপথে। রাজপথে থাকতে হবে। আর রাজপথের অতীত ইতিহাস থেকে আমরা জানি, ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান আমলে এই দেশের ছাত্র সমাজ এবং জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণঅভ্যুত্থান করে আইয়ুব খানের পতন ঘটিয়েছিলো। স্বৈরশাসক এরশাদকেও ছাত্রদলের নেতৃত্বে সব ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে পতন ঘটিয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপি বিভাগীয় সমাবেশ জনগণ বার্তা দিয়েছে এই সরকার রাষ্ট্রকে মেরামত করতে পারবে না। তারা এ সরকারকে আর দেখতে চায় না। দশ দফা কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। ঢাকার সমাবেশ বানচাল করতে সরকার বিএনপি নেতাদের গ্রেফতার করেছে। সরকার যত নির্যাতন নিপীড়ন করুক আন্দোলনকে দমানো যাবে না। জনগণ রাস্তায় নেমেছে আর রক্ষা নাই। দশ দফা বাস্তবায়ন করাই বিএনপির প্রধান চ্যালেঞ্জ। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দশ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্ধকার কেটে যাবে আলোর পথে বাংলাদেশ।

অন্ধকার কেটে যাবে, আলোর পথে যাবে বাংলাদেশ উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, ছাত্র সমাজ, যারা যুগপৎ আন্দোলনে আছে তারা আলো দেখার জন্য ইতিহাস সৃষ্টি করবে।

মোশাররফ বলেন, এই সরকারকে বলতে চাই, গ্রেফতার, হামলা, মামলা, গুম করেও যেহেতু আন্দোলন দমাতে পারেননি, তাই বলতে চাই আর আপনাদের রেহাই নেই।

বর্তমান সরকারের লুটপাট, দুর্নীতি ও বিদেশে টাকা প্রচার করার কারণে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে, অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর হবে। গত ১৪ বছরে গায়ের জোরের সরকার দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটের পকেট ভারী করার জন্য অভিযোগ করে মোশাররফ বলেন, আজকে গরিব মানুষের পেটে ভাত জুটে না। মধ্যবিত্ত গরিব হয়ে গেছে। কিন্তু ধনীরা আরও ধনী হয়েছে। গরিবরা আরও গরিব হয়েছে, ১৪ বছর সরকারের লুটপাটের কারণে।

বিচারবিভাগ সরকারের হাতে বন্দি মন্তব্য করে মোশাররফ বলেন, সরকার দলীয়করণ করতে গিয়ে বিচারবিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের অবৈধ নির্দেশনা মানতে গিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে ধিকৃত মন্তব্য করে তিনি বলেন, শুধুমাত্র সরকারের অবৈধ নির্দেশনা মানতে গিয়ে র‌্যাবকে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ড. আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, বর্তমান কমিটির নেতা তবিবুর রহমান সাগর, আবু আফসান মো. ইয়াহিয়া, খায়রুল আলম সুজন, মো. আসাদুজ্জামান আসাদ, মো. আনোয়ার হোসেন, শাফি ইসলাম, মো. আবু জাফর, মো. আদনান, মো. মোহন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আরিফুল ইসলাম, সাইদুল ইসলামসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।