ঢাকা ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বেলকুচিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী বদি ফকিরকে অপর প্রার্থী ইঞ্জিঃ আমিনুলের নির্দেশে  হামলার অভিযোগ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪
  • / ৪৫৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নির্বাচনী এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। উভয় পক্ষ থানায় অভিযোগ দাখিল করেছেন। সরকারী কাজে বাঁধাদান ও থানায় ভিতরে হট্টগোলের অভিযোগ দায়ের করা মামলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হামলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদিউজ্জামন ফকিরের কর্মী সমর্থক রেজাউল করীম, মোশারফ হোসেন, কামাল পারভেজ ও আব্দুল কাদের আহত হয়েছেন। এর মধ্যে রেজাউল করীম ও মোশারফ হোসেনকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম.মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদিউজ্জামন ফকির।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বেলকুচি প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করে তিনি বলেন, গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে বেলকুচি উপজেলার শাহপুর ডিএসএস স্কুল এলাকায় পথসভা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বেলকুচি উপজেলার চালা সাত রাস্তার মোড় এলাকায় পৌছলে আমার গাড়ি বহড়ে হামলা চালানো হয়। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিনুল ইাসলামের উপস্থিতিতে এবং তার নির্দেশে হামলা চালানো হয়। এতে আমার চার কর্মী সমর্থক আহত হন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমি ও আমার কর্মী সমর্থকরা আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পর আত্মরক্ষায় বেলকুচি থানায় আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা চালানো হয়। বেলকুচি থানার সিসিটিভির ফুটেজ দেখলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে। এছাড়া জামতৈল বাজারে আমার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করা হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিনুল ইসলামের মদদে এই ঘটনা ঘটছে।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডল তার কোম্পানির বেতনভুক্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম সরকারকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বানাতে চান। এমপি মমিন মন্ডলের ভাই আব্দুল আলিম মন্ডল ও জুবায়ের মন্ডল আমিনুলের পক্ষে সভা-সমাবেশ ও ভোট প্রার্থনা করছেন। হামলার ঘটনার পর থেকে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এবিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তবে বদিউজ্জামান ফকিরের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুল ইসলাম বলেন, বাদিউজ্জামন ফকিকের কর্মী সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে রাতে আমার উপর হামলা করেছে। হামলায় আমার বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছে। নিজেরা হামলা করে এখন আমার উপর দোষ চাপানো হচ্ছে। আমার উপর হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তারা মিথ্যা অভিযোগ করে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। নিশ্চিত পরাজয় জেনে তারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন।
আগামী ৮ মে বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিন জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এরা হলেন, আমিনুল ইসলাম সরকার, বদিউজ্জামান ফকির  মীর সেরাজুল ইসলাম।
প্রার্থীদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম সরকার বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডলের মালিকাধীন শিল্প গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান কটন ক্লাব (বিডি) এর জিএম প্রশাসন, বদিউজ্জামান ফকির  এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক, মীর সেরাজুল ইসলাম সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের পিএস ও ঢাকার বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মীর মোশারফ হোসেনের ছোট ভাই। বদিউজ্জামান ফকিরকে সমর্থন দিচ্ছেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস।
এ বিষয়ে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, রাতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুলের কর্মী সমর্থকরা থানায় এসে হট্টগোল ও সরকারী কাজে বাঁধা দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। এই মামলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর করতে কাজ করছে পুলিশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

বেলকুচিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী বদি ফকিরকে অপর প্রার্থী ইঞ্জিঃ আমিনুলের নির্দেশে  হামলার অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৯:৪৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নির্বাচনী এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। উভয় পক্ষ থানায় অভিযোগ দাখিল করেছেন। সরকারী কাজে বাঁধাদান ও থানায় ভিতরে হট্টগোলের অভিযোগ দায়ের করা মামলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হামলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদিউজ্জামন ফকিরের কর্মী সমর্থক রেজাউল করীম, মোশারফ হোসেন, কামাল পারভেজ ও আব্দুল কাদের আহত হয়েছেন। এর মধ্যে রেজাউল করীম ও মোশারফ হোসেনকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম.মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদিউজ্জামন ফকির।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বেলকুচি প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করে তিনি বলেন, গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে বেলকুচি উপজেলার শাহপুর ডিএসএস স্কুল এলাকায় পথসভা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বেলকুচি উপজেলার চালা সাত রাস্তার মোড় এলাকায় পৌছলে আমার গাড়ি বহড়ে হামলা চালানো হয়। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিনুল ইাসলামের উপস্থিতিতে এবং তার নির্দেশে হামলা চালানো হয়। এতে আমার চার কর্মী সমর্থক আহত হন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমি ও আমার কর্মী সমর্থকরা আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পর আত্মরক্ষায় বেলকুচি থানায় আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা চালানো হয়। বেলকুচি থানার সিসিটিভির ফুটেজ দেখলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে। এছাড়া জামতৈল বাজারে আমার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করা হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিনুল ইসলামের মদদে এই ঘটনা ঘটছে।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডল তার কোম্পানির বেতনভুক্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম সরকারকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বানাতে চান। এমপি মমিন মন্ডলের ভাই আব্দুল আলিম মন্ডল ও জুবায়ের মন্ডল আমিনুলের পক্ষে সভা-সমাবেশ ও ভোট প্রার্থনা করছেন। হামলার ঘটনার পর থেকে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এবিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তবে বদিউজ্জামান ফকিরের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুল ইসলাম বলেন, বাদিউজ্জামন ফকিকের কর্মী সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে রাতে আমার উপর হামলা করেছে। হামলায় আমার বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছে। নিজেরা হামলা করে এখন আমার উপর দোষ চাপানো হচ্ছে। আমার উপর হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তারা মিথ্যা অভিযোগ করে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। নিশ্চিত পরাজয় জেনে তারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন।
আগামী ৮ মে বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিন জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এরা হলেন, আমিনুল ইসলাম সরকার, বদিউজ্জামান ফকির  মীর সেরাজুল ইসলাম।
প্রার্থীদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম সরকার বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডলের মালিকাধীন শিল্প গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান কটন ক্লাব (বিডি) এর জিএম প্রশাসন, বদিউজ্জামান ফকির  এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক, মীর সেরাজুল ইসলাম সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের পিএস ও ঢাকার বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মীর মোশারফ হোসেনের ছোট ভাই। বদিউজ্জামান ফকিরকে সমর্থন দিচ্ছেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস।
এ বিষয়ে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, রাতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুলের কর্মী সমর্থকরা থানায় এসে হট্টগোল ও সরকারী কাজে বাঁধা দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। এই মামলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর করতে কাজ করছে পুলিশ।