ঢাকা ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আপিল করেও মেয়র পদে প্রার্থীতা  ফিরে পাননি জাহাঙ্গীর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:২০:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মে ২০২৩
  • / ৪৪০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
কাজী মকবুল, গাজীপুর :
গাজীপুর সিটি করপোরেশন ২০২৩ নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ও সিটির সামায়িক বহিস্কৃত ও পরে পদত্যাগ করা মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম আপিল করেও প্রার্থীতা ফিরে পাননি। বাতিল হওয়া মনোনয়নপত্রের বৈধতা ফিরে পাওয়ার আশায় আপিল করলেও রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশ বহাল রেখেছে আপিল কর্তৃপক্ষ। আজ বৃহস্পতিবার (০৪ মে ২০২৩) বিকেলে আপিলের শুনানি শেষে আদেশ দিয়েছেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শুনানিতে অংশ নেওয়া রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রতিনিধি ও শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ নির্বাচন কর্মকর্তা মঞ্জুর হোসেন খান।
তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার বাছাইয়ে বাদ পড়া মোট ৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করেন। তাঁদের মধ্যে মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, একজন সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও ৫ জন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন।
আপিলের শুনানিতে দুজন আইনজীবীসহ জাহাঙ্গীর আলম নিজে উপস্থিত ছিলেন। শুনানিতে তারা পুন:তফসিলি করণের জন্য টাকা জমা দেওয়া এবং জামিনদার খেলাপি হয় না বলে দাবি করেন। কিন্তু শুনানিতে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি জানান, আপিলকারীগণ ব্যাংকের আইন অনুযায়ী এখনো ঋণ খেলাপি। জাহাঙ্গীর আলম যে প্রতিষ্ঠানের ঋণের জামিনদার সে ঋণ এখনো পুন: তফসিলিকরণ হয়নি। এসময় ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্য প্রার্থীগণ মনোনয়ন জমাদানের সময় ঋণ খেলাপি ছিলেন। তাই তাঁরা পরে টাকা জমা দিলেও তারা খেলাপি।
উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আপীলকারী কর্তৃপক্ষ ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমসহ ঋণ খেলাপীর কারণে মনোনয়ন বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তার দেওয়া আদেশ বহাল রাখেন।
এ সময় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম কাউন্সিলর পদে একজন প্রার্থীর টাকা জমার রশিদে কোড নম্বর ভুল থাকায় বাতিল হওয়া মনোনয়নটি বৈধ ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, বাছাইকালে  একটি খেলাপি ঋণ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের ঋণের জামিনদার হওয়ার কারণে জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল করেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। জাহাঙ্গীর আলমের উপস্থিতিতে ওই কর্মকর্তা এই আদেশ দেন। তবে তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত জাহাঙ্গীর আলম ও তার আইনজীবী রিটার্নিং কর্মকর্তার উদ্দেশে বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী জামিনদার কখনো ঋণখেলাপি হয় না। তা ছাড়া খেলাপি ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান ঋণ তফসিলিকরণের জন্য ইতিমধ্যে ডাউন পেমেন্টের টাকা জমা দেওয়া হয়েছে, ব্যাংক সেই টাকা বুঝে পেছে। ঋণটি পুন:তফসিলি করণের জন্য আবেদন করেছে।
এ সময় জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, শতভাগ রপ্তানিমুখী একটি কোরিয়ান শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানোর জন্য মানবিক কারণে আমার নিজের জমি বন্ধক রেখেছিলাম। আমি ওই টাকা নিজে নিইনি এবং প্রতিষ্ঠানটি ওই টাকা পরিশোধ করেছে।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ব্যাংকের কর্মকর্তা জানান, তিনি ডাউন পেমেন্টর টাকা জমা দিয়েছেন। আবেদন করেছেন। এর একটি প্রসিডিউর আছে। আজ ব্যাংকের বোর্ড সভা আছে। সেখানে বিষয়টি আলোচনার কথা রয়েছে। এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা তাঁর কাছে জানতে চান, ওই প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপি নয়, এটা আপনি বলতে পারেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, বোর্ড সভায় অনুমোদন হলে বলা যাবে।
এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম এই নির্বাচনে যে সমস্ত কাগজপত্র দাখিল করেছেন, তাঁর সবকিছু সঠিক পাওয়া গেছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি যে প্রতিষ্ঠানের জন্য জামিনদার হয়েছিলেন, সেই প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হওয়ায় তাঁর মনোনয়ন বাতিল করা হলো।
প্রসঙ্গত, সিটি করপোরেশন নির্বাচন আইন অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখে ঋণ খেলাপী হলেই মনোনয়নপত্র বা প্রার্থীতা বাতিল হবে।
বা/খ: জই

নিউজটি শেয়ার করুন

আপিল করেও মেয়র পদে প্রার্থীতা  ফিরে পাননি জাহাঙ্গীর

আপডেট সময় : ০৭:২০:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মে ২০২৩
কাজী মকবুল, গাজীপুর :
গাজীপুর সিটি করপোরেশন ২০২৩ নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ও সিটির সামায়িক বহিস্কৃত ও পরে পদত্যাগ করা মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম আপিল করেও প্রার্থীতা ফিরে পাননি। বাতিল হওয়া মনোনয়নপত্রের বৈধতা ফিরে পাওয়ার আশায় আপিল করলেও রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশ বহাল রেখেছে আপিল কর্তৃপক্ষ। আজ বৃহস্পতিবার (০৪ মে ২০২৩) বিকেলে আপিলের শুনানি শেষে আদেশ দিয়েছেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শুনানিতে অংশ নেওয়া রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রতিনিধি ও শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ নির্বাচন কর্মকর্তা মঞ্জুর হোসেন খান।
তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার বাছাইয়ে বাদ পড়া মোট ৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করেন। তাঁদের মধ্যে মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, একজন সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও ৫ জন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন।
আপিলের শুনানিতে দুজন আইনজীবীসহ জাহাঙ্গীর আলম নিজে উপস্থিত ছিলেন। শুনানিতে তারা পুন:তফসিলি করণের জন্য টাকা জমা দেওয়া এবং জামিনদার খেলাপি হয় না বলে দাবি করেন। কিন্তু শুনানিতে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি জানান, আপিলকারীগণ ব্যাংকের আইন অনুযায়ী এখনো ঋণ খেলাপি। জাহাঙ্গীর আলম যে প্রতিষ্ঠানের ঋণের জামিনদার সে ঋণ এখনো পুন: তফসিলিকরণ হয়নি। এসময় ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্য প্রার্থীগণ মনোনয়ন জমাদানের সময় ঋণ খেলাপি ছিলেন। তাই তাঁরা পরে টাকা জমা দিলেও তারা খেলাপি।
উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আপীলকারী কর্তৃপক্ষ ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমসহ ঋণ খেলাপীর কারণে মনোনয়ন বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তার দেওয়া আদেশ বহাল রাখেন।
এ সময় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম কাউন্সিলর পদে একজন প্রার্থীর টাকা জমার রশিদে কোড নম্বর ভুল থাকায় বাতিল হওয়া মনোনয়নটি বৈধ ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, বাছাইকালে  একটি খেলাপি ঋণ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের ঋণের জামিনদার হওয়ার কারণে জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল করেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। জাহাঙ্গীর আলমের উপস্থিতিতে ওই কর্মকর্তা এই আদেশ দেন। তবে তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত জাহাঙ্গীর আলম ও তার আইনজীবী রিটার্নিং কর্মকর্তার উদ্দেশে বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী জামিনদার কখনো ঋণখেলাপি হয় না। তা ছাড়া খেলাপি ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান ঋণ তফসিলিকরণের জন্য ইতিমধ্যে ডাউন পেমেন্টের টাকা জমা দেওয়া হয়েছে, ব্যাংক সেই টাকা বুঝে পেছে। ঋণটি পুন:তফসিলি করণের জন্য আবেদন করেছে।
এ সময় জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, শতভাগ রপ্তানিমুখী একটি কোরিয়ান শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানোর জন্য মানবিক কারণে আমার নিজের জমি বন্ধক রেখেছিলাম। আমি ওই টাকা নিজে নিইনি এবং প্রতিষ্ঠানটি ওই টাকা পরিশোধ করেছে।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ব্যাংকের কর্মকর্তা জানান, তিনি ডাউন পেমেন্টর টাকা জমা দিয়েছেন। আবেদন করেছেন। এর একটি প্রসিডিউর আছে। আজ ব্যাংকের বোর্ড সভা আছে। সেখানে বিষয়টি আলোচনার কথা রয়েছে। এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা তাঁর কাছে জানতে চান, ওই প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপি নয়, এটা আপনি বলতে পারেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, বোর্ড সভায় অনুমোদন হলে বলা যাবে।
এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম এই নির্বাচনে যে সমস্ত কাগজপত্র দাখিল করেছেন, তাঁর সবকিছু সঠিক পাওয়া গেছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি যে প্রতিষ্ঠানের জন্য জামিনদার হয়েছিলেন, সেই প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হওয়ায় তাঁর মনোনয়ন বাতিল করা হলো।
প্রসঙ্গত, সিটি করপোরেশন নির্বাচন আইন অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখে ঋণ খেলাপী হলেই মনোনয়নপত্র বা প্রার্থীতা বাতিল হবে।
বা/খ: জই