ঢাকা ০৯:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কসবায় প্রবাসীকে ছুরি মেরে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

মোঃ শরীফুল ইসলাম, কসবা (ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৭:১৪:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৪২৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার কসবায় ফসলী জমিতে ফুটবল পড়া নিয়ে বাক বিগি¦তিন্ডার জেরে হারুনর রশিদ নামের এক প্রবাসীকে রাতের আধারে বাড়ির বাইরে ডেকে এন ছুরিকাঘাত করে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শনিবার বিকালে উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের স্থানীয় খাদলা বাজার চৌমহনী এলাকায় এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসী এ মানববন্ধনের আয়োজন করেছেন। মানববন্ধনে বক্তারা দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তিসহ তাদের ফাঁসির দাবী জানিয়ে তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।

এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত হারুনুর রশিদের মহদেহ গত শুক্রবার বাদ আছর নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। নিহতের লাশ বাড়িতে নিয়ে গেলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা ঘটে।

আজ শনিবার বেলা চারটা থেকে শুরু করে প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলে এ মানববন্ধন। এতে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নেতৃবৃন্দসহ গ্রামবাসী যোগ দেয়। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বাজার এলাকার পদক্ষিন করেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বায়েক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, কসবা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহবায়ক এ.কে বাপ্পী, সাবেক ইউপি সদস্য মমিনুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা জাকির হোসেন, নিহতের চাচা উপাধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদ, এলাকার ফিরোজ সর্দার প্রমুখ।

নিহত হারুনুর রশিদ (৫০) কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের খাদলা গ্রামের মৃত আবুল হাসেমের ছেলে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, তিন ছেলে রেখে গেছেন। হারুনুর রশিদ কাতারে চাকুরী করতেন। প্রায় দুই বছর আগে একে বারে দেশে চলে এসেছেন। পরিবারের কথা চিন্তা করে আবারও মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য সকল কাগজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৫ মে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ফ্লাইট হওয়ার কথা ছিল।

নিহতের পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, হারুনুর রশিদের বাড়ির পাশেই জমি রয়েছে। এতে তিলের চাষ করেছেন। চারদিকে জাল দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছেন। রহমানের ছেলে বায়েজিদ ও ফিরোজ মিয়ার ছেলে সাগর মিয়াসহ কয়েকজন গত বুধবার বিকালে পাশেই ফুটবল খেলছেন। ওই ফুটবল তিলের জমিতে পড়ছেন। এ নিয়ে হারুনুর রশিদ তাদেরকে বকা দিলে তাদের মধ্যে তর্ক হয়।

এ ঘটনাকে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে বায়েজিদের দাতা আনু মিয়া মিমাংশা করে দেওয়ার জন্য হারুনুর রশিদকে খবর দেয়। এ সময় আনু মিয়ার বাড়িতে হারুনুর রশিদ যাওয়ার পথে বায়েজিদ ও সাগর মিয়াসহ কয়েকজন ব্যক্তি হারুনুর রশিদকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে। এতে গুরুতর আহত হয়ে পড়ে হারুনুর রশিদ। হারুনুর রশিদের চিৎকারে বাড়ির ও আশে-পাশের লোকজন দৌড়ে এসে হারুনুর রশিদকে উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

এ ঘটনায় গত শুক্রবার নিহতের স্ত্রী লাকি আক্তার বাদী হয়ে ফিরোজ মিয়ার ছেলে সাগর মিয়াকে প্রধান আসামী করে সাতজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় এজহার ভুক্ত আসামী মো. ফিরোজ মিয়া ও তার স্ত্রী রত্না আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজু আহমেদ বলেন, হারুনুর রশিদ হত্যার ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। নিহতের ময়নাতদন্তের পর তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় এজহার ভুক্ত আসামী মো. ফিরোজ মিয়া ও স্ত্রী রত্না আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

 

বাখ//আর

নিউজটি শেয়ার করুন

কসবায় প্রবাসীকে ছুরি মেরে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

আপডেট সময় : ০৭:১৪:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার কসবায় ফসলী জমিতে ফুটবল পড়া নিয়ে বাক বিগি¦তিন্ডার জেরে হারুনর রশিদ নামের এক প্রবাসীকে রাতের আধারে বাড়ির বাইরে ডেকে এন ছুরিকাঘাত করে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শনিবার বিকালে উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের স্থানীয় খাদলা বাজার চৌমহনী এলাকায় এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসী এ মানববন্ধনের আয়োজন করেছেন। মানববন্ধনে বক্তারা দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তিসহ তাদের ফাঁসির দাবী জানিয়ে তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।

এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত হারুনুর রশিদের মহদেহ গত শুক্রবার বাদ আছর নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। নিহতের লাশ বাড়িতে নিয়ে গেলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা ঘটে।

আজ শনিবার বেলা চারটা থেকে শুরু করে প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলে এ মানববন্ধন। এতে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নেতৃবৃন্দসহ গ্রামবাসী যোগ দেয়। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বাজার এলাকার পদক্ষিন করেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বায়েক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, কসবা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহবায়ক এ.কে বাপ্পী, সাবেক ইউপি সদস্য মমিনুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা জাকির হোসেন, নিহতের চাচা উপাধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদ, এলাকার ফিরোজ সর্দার প্রমুখ।

নিহত হারুনুর রশিদ (৫০) কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের খাদলা গ্রামের মৃত আবুল হাসেমের ছেলে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, তিন ছেলে রেখে গেছেন। হারুনুর রশিদ কাতারে চাকুরী করতেন। প্রায় দুই বছর আগে একে বারে দেশে চলে এসেছেন। পরিবারের কথা চিন্তা করে আবারও মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য সকল কাগজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৫ মে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ফ্লাইট হওয়ার কথা ছিল।

নিহতের পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, হারুনুর রশিদের বাড়ির পাশেই জমি রয়েছে। এতে তিলের চাষ করেছেন। চারদিকে জাল দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছেন। রহমানের ছেলে বায়েজিদ ও ফিরোজ মিয়ার ছেলে সাগর মিয়াসহ কয়েকজন গত বুধবার বিকালে পাশেই ফুটবল খেলছেন। ওই ফুটবল তিলের জমিতে পড়ছেন। এ নিয়ে হারুনুর রশিদ তাদেরকে বকা দিলে তাদের মধ্যে তর্ক হয়।

এ ঘটনাকে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে বায়েজিদের দাতা আনু মিয়া মিমাংশা করে দেওয়ার জন্য হারুনুর রশিদকে খবর দেয়। এ সময় আনু মিয়ার বাড়িতে হারুনুর রশিদ যাওয়ার পথে বায়েজিদ ও সাগর মিয়াসহ কয়েকজন ব্যক্তি হারুনুর রশিদকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে। এতে গুরুতর আহত হয়ে পড়ে হারুনুর রশিদ। হারুনুর রশিদের চিৎকারে বাড়ির ও আশে-পাশের লোকজন দৌড়ে এসে হারুনুর রশিদকে উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

এ ঘটনায় গত শুক্রবার নিহতের স্ত্রী লাকি আক্তার বাদী হয়ে ফিরোজ মিয়ার ছেলে সাগর মিয়াকে প্রধান আসামী করে সাতজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় এজহার ভুক্ত আসামী মো. ফিরোজ মিয়া ও তার স্ত্রী রত্না আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজু আহমেদ বলেন, হারুনুর রশিদ হত্যার ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। নিহতের ময়নাতদন্তের পর তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় এজহার ভুক্ত আসামী মো. ফিরোজ মিয়া ও স্ত্রী রত্না আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

 

বাখ//আর