ঢাকা ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:২৫:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৫৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের আটটি দানবাক্স এবার তিন মাস পর খোলা হয়েছে। এবার সেগুলোতে পাওয়া গেছে রেকর্ড ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা। এছাড়াও স্বর্ণ ও রূপাসহ বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রাও পাওয়া গেছে।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গণনা শেষে টাকার এ পরিমাণ জানা যায়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ঐতিহাসিক এ মসজিদটিতে আটটি লোহার দানবাক্স রয়েছে। প্রতি তিন মাস পরপর বাক্সগুলো খোলা হয়। এবার তিন মাস ছয়দিন পর শনিবার সকাল ৯টার দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে। এসময় বাক্সগুলোতে রেকর্ড ২০ বস্তা টাকা পাওয়া যায়।

টাকা গণনার কাজে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এটিএম ফরহাদ চৌধুরী, সিনিয়র সহাকরী কমিশনার অহনা জিন্নাত, শেখ জাবের আহমেদ, সুলতানা রাজিয়া, সহকারী কমিশনার মোছা. নাবিলা ফেরদৌস, মো. মাহমুদুল হাসান, রওশন কবীর, মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলামসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছিলেন।

dhakapost

এর আগে সর্বশেষ ২০২২ সালের ১ অক্টোবর ৩ মাস ১ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন রেকর্ড ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছিল। সঙ্গে ডায়মন্ডের একটি গহনাও পাওয়া গেছে। এবার ৩ মাস ৬ দিন পর দান আটটি দানবাক্স খোলা হলো।

মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। দানবাক্সগুলো খুলে দানের টাকাগুলো ২০টি বস্তায় ভরে আনা হয় গণনার জন্য। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে টাকা গণনার কাজ শেষ হয়। দানবাক্সগুলো খুলে গণনা শেষে নতুন এই রেকর্ড পরিমাণ টাকা পাওয়া গেলো।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাস রয়েছে, এখানে মানত করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। আর এ কারণেই মূলত দূর-দূরান্তের মানুষও এখানে মানত করতে আসেন। এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এ মসজিদে দান করেন।

dhakapost

মানুষের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ পাগলা মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়।

জনশ্রুতি রয়েছে, এক সময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে। মুসলিম-হিন্দু নির্বিশেষে সব ধর্মের লোকজনের যাতায়াত ছিল ওই সাধকের আস্তানায়। ওই পাগল সাধকের দেহাবসানের পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পিরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এলাকাবাসী।

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে আনুমানিক চার একর জায়গায় ‘পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স’ অবস্থিত। প্রায় আড়াইশ বছর আগে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয় বলে ইতিহাস সূত্রে জানা যায়। এই মসজিদের প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে, যা ভক্ত ও মুসল্লিদের আকর্ষণ করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা

আপডেট সময় : ০৮:২৫:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৩

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের আটটি দানবাক্স এবার তিন মাস পর খোলা হয়েছে। এবার সেগুলোতে পাওয়া গেছে রেকর্ড ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা। এছাড়াও স্বর্ণ ও রূপাসহ বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রাও পাওয়া গেছে।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গণনা শেষে টাকার এ পরিমাণ জানা যায়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ঐতিহাসিক এ মসজিদটিতে আটটি লোহার দানবাক্স রয়েছে। প্রতি তিন মাস পরপর বাক্সগুলো খোলা হয়। এবার তিন মাস ছয়দিন পর শনিবার সকাল ৯টার দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে। এসময় বাক্সগুলোতে রেকর্ড ২০ বস্তা টাকা পাওয়া যায়।

টাকা গণনার কাজে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এটিএম ফরহাদ চৌধুরী, সিনিয়র সহাকরী কমিশনার অহনা জিন্নাত, শেখ জাবের আহমেদ, সুলতানা রাজিয়া, সহকারী কমিশনার মোছা. নাবিলা ফেরদৌস, মো. মাহমুদুল হাসান, রওশন কবীর, মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলামসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছিলেন।

dhakapost

এর আগে সর্বশেষ ২০২২ সালের ১ অক্টোবর ৩ মাস ১ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন রেকর্ড ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছিল। সঙ্গে ডায়মন্ডের একটি গহনাও পাওয়া গেছে। এবার ৩ মাস ৬ দিন পর দান আটটি দানবাক্স খোলা হলো।

মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। দানবাক্সগুলো খুলে দানের টাকাগুলো ২০টি বস্তায় ভরে আনা হয় গণনার জন্য। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে টাকা গণনার কাজ শেষ হয়। দানবাক্সগুলো খুলে গণনা শেষে নতুন এই রেকর্ড পরিমাণ টাকা পাওয়া গেলো।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাস রয়েছে, এখানে মানত করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। আর এ কারণেই মূলত দূর-দূরান্তের মানুষও এখানে মানত করতে আসেন। এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এ মসজিদে দান করেন।

dhakapost

মানুষের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ পাগলা মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়।

জনশ্রুতি রয়েছে, এক সময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে। মুসলিম-হিন্দু নির্বিশেষে সব ধর্মের লোকজনের যাতায়াত ছিল ওই সাধকের আস্তানায়। ওই পাগল সাধকের দেহাবসানের পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পিরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এলাকাবাসী।

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে আনুমানিক চার একর জায়গায় ‘পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স’ অবস্থিত। প্রায় আড়াইশ বছর আগে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয় বলে ইতিহাস সূত্রে জানা যায়। এই মসজিদের প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে, যা ভক্ত ও মুসল্লিদের আকর্ষণ করে।