ঢাকা ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পদত্যাগ বিতর্কিত করতে সরকার সাত্তারকে নির্বাচনে এনেছে: রুমিন ফারহানা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:১৭:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৪৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি

সরকার বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগকে বিতর্কিত করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ-নির্বাচনে আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়াকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুনিয়াউটে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামলের বাসভবনে আয়োজিত এক সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রুমিন ফারহানা বলেন, আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকারের একটি চাপ আছে তার ওপর। সরকার যেকোনোভাবে আমাদের পদত্যাগকে বিতর্কিত করতে চায়। সরকার সেটা সফলভাবে করেছে। তাকে চাপ দিয়ে এই নির্বাচনে আনা হয়েছে।

বিএনপি নেত্রী রুমিন বলেন, ক্ষমতায় গেলে বিএনপি জুডিসিয়াল কমিশন গঠন করবে। আপনারা জানেন, কিছুদিন আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে যে ঘটনাটি হয়েছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। আওয়ামী লীগের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক, তিনি বারের সভাপতি। তিনি গিয়ে অকথ্য ভাষায় একজন বিচারককে গালাগাল করেছেন, তা কোনো অবস্থাতেই চলতে পারে না।

তিনি বলেন, বিএনপি আগামীতে জনগণের ভোটে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব যদি পায়, বিএনপি কী ধরনের রাষ্ট্র দেখতে চায় তা ২৭ দফার মধ্যে দেওয়া হয়েছে। এর আগে আমরা ১০ দফা দিয়েছি, সেই ১০ দফায় আমাদের সম্প্রতি যে কর্মসূচি তা বলেছি। আর ২৭ দফার শুরুতেই বলেছি, সংবিধান সংস্কার কমিশন করবো। কেন করবো? আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে বিনা ভোটের ক্ষমতা থেকে সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে তাদের দলীয় একটা বইয়ে পরিণত করেছে। সংবিধানের কিছু ধারা এমনভাবে পরিণত করেছে, যে ভবিষ্যতে কোনো সংসদে এটি পরিবর্তন করা যাবে না। বিনা ভোটে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সংবিধান সংস্কার করার এখতিয়ার রাখতে পারে না। এই ক্ষমতা আওয়ামী লীগের নেই।

রুমিন ফারহানা আরও বলেন, আমি একজন আইনজীবী হিসেবে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, এধরনের কোনো ধারা সংবিধানে যুক্ত করা সম্পূর্ণ বেআইনি। ভবিষ্যতে সংসদে কী আইন পাস হবে, সেই সংবিধান তারা কীভাবে রাখবে, সেই এখতিয়ার সংসদের আছে। আজকের সংসদ কোনোভাবেই সেই সংসদের হাত বেঁধে ফেলতে পারে না। কোনো অবস্থাতেই তারা ঠিক করে দিতে পারে না, ভবিষ্যতে একটি সংসদ কীভাবে সংবিধানকে সংশোধন করবে।

রুমিন ফারহানা বলেন, আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়বো। যে বাংলাদেশ হবে ধর্মনিরপেক্ষ। দল-মত নির্বিশেষে সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা এই দেশকে নতুন করে গড়ে তুলবো।

তিনি বলেন, বিগত সময়ে স্বাধীনতার স্বপক্ষকে ও বিপক্ষে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদকে সামনে এনে জাতিকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। আমরা জাতিকে বিভক্ত করা থেকে ফিরিয়ে আনবো। আমরা সকলকে দেখিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।

রুমিন ফারহানা বলেন, যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন না হবে, ততদিন পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোট হতে হবে। জনগণের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। সংবিধানের মালিক জনগণ। জনগণ তার মালিকানা হারিয়েছে। তাই আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, টেক ব্যাক বাংলাদেশ। এটি হোক জাতির মূলমন্ত্র।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আবারও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হবে। আওয়ামী লীগ ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সেই সময়কার নির্বাচনে প্রায় সকল আসনের জয়লাভ করেছিল। দু-একটিতে ন্যাপ ও জাসদের প্রার্থী জয়লাভ করলেও পড়ে তাদেরকে পরাজিত দেখানো হয়েছে। আমার পিতা অলি আহাদ সেই সময়ের নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে জয়লাভ করেছিলেন। কিন্তু পরে নির্বাচনের ফলাফল বদলে তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে বিজয়ী দেখানো হয়েছে। সেই থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ভোট কারচুপি করছে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার কথা জানিয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা এক ব্যক্তির হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর হাতে সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত। রাষ্ট্রপতির কোনও ক্ষমতা নেই। তিনি কেবল জানাজা পড়েন আর ফিতা কাটেন। এর বাইরে কোনও কাজ নেই। ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার মধ্য দিয়ে ফিতা কাটা আর জানাজা পড়া থেকে রাষ্ট্রপতিকে বের করে নিয়ে আসবো আমরা। একই ব্যক্তি টানা দুবারের বেশি রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। আমরা বলেছি, সংসদকে দুই কক্ষে বিভক্ত করবো। একটি হবে উচ্চকক্ষ অপরটি হবে নিম্নকক্ষ। সংসদকে কার্যকর করার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হবে।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কারাগারে থাকার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব অত্যন্ত সজ্জন রাজনীতিবিদ। তাকে রাত ৩টার দিকে তুলে নেওয়া হলো। চারদিন ধরে কারাগারে কোনও ডিভিশন দেওয়া হয়নি। হাইকোর্টে রিট করে ডিভিশন নিতে হয়েছে। মামলার এজাহারে তার নাম না থাকা সত্ত্বেও জামিন পাননি। এটাই আদালতের অবস্থা। আমরা ক্ষমতায় গেলে নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী বিচার বিভাগ গঠন করবো। সেই বিচার বিভাগ দলমত নির্বিশেষে আইনের সমান প্রয়োগ দেখাবে। আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা সংস্কার করবো। কারণ প্রশাসনে তো এখন লীগ ছাড়া কিছু নেই। তাদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে।

ক্ষমতায় গেলে মানবাধিকার কমিশন গঠন করবে বিএনপি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে যেসব গুম, খুন, নির্যাতন, হেফাজতে নির্যাতন, মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার প্রত্যেকটির বিচার হবে।

শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যখাতে জিডিপির পাঁচ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ চিকিৎসা করাতে গিয়ে ফকির হয়ে যাচ্ছে। তাদের জমিজমা বিক্রি করতে হচ্ছে। সে অবস্থা থেকে আমরা তাদের মুক্ত করবো।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান জিল্লুর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। এছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল হক সাঈদ, সদস্য রফিক শিকদার, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জহিরুল হক খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

পদত্যাগ বিতর্কিত করতে সরকার সাত্তারকে নির্বাচনে এনেছে: রুমিন ফারহানা

আপডেট সময় : ০৭:১৭:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি

সরকার বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগকে বিতর্কিত করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ-নির্বাচনে আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়াকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুনিয়াউটে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামলের বাসভবনে আয়োজিত এক সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রুমিন ফারহানা বলেন, আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকারের একটি চাপ আছে তার ওপর। সরকার যেকোনোভাবে আমাদের পদত্যাগকে বিতর্কিত করতে চায়। সরকার সেটা সফলভাবে করেছে। তাকে চাপ দিয়ে এই নির্বাচনে আনা হয়েছে।

বিএনপি নেত্রী রুমিন বলেন, ক্ষমতায় গেলে বিএনপি জুডিসিয়াল কমিশন গঠন করবে। আপনারা জানেন, কিছুদিন আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে যে ঘটনাটি হয়েছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। আওয়ামী লীগের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক, তিনি বারের সভাপতি। তিনি গিয়ে অকথ্য ভাষায় একজন বিচারককে গালাগাল করেছেন, তা কোনো অবস্থাতেই চলতে পারে না।

তিনি বলেন, বিএনপি আগামীতে জনগণের ভোটে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব যদি পায়, বিএনপি কী ধরনের রাষ্ট্র দেখতে চায় তা ২৭ দফার মধ্যে দেওয়া হয়েছে। এর আগে আমরা ১০ দফা দিয়েছি, সেই ১০ দফায় আমাদের সম্প্রতি যে কর্মসূচি তা বলেছি। আর ২৭ দফার শুরুতেই বলেছি, সংবিধান সংস্কার কমিশন করবো। কেন করবো? আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে বিনা ভোটের ক্ষমতা থেকে সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে তাদের দলীয় একটা বইয়ে পরিণত করেছে। সংবিধানের কিছু ধারা এমনভাবে পরিণত করেছে, যে ভবিষ্যতে কোনো সংসদে এটি পরিবর্তন করা যাবে না। বিনা ভোটে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সংবিধান সংস্কার করার এখতিয়ার রাখতে পারে না। এই ক্ষমতা আওয়ামী লীগের নেই।

রুমিন ফারহানা আরও বলেন, আমি একজন আইনজীবী হিসেবে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, এধরনের কোনো ধারা সংবিধানে যুক্ত করা সম্পূর্ণ বেআইনি। ভবিষ্যতে সংসদে কী আইন পাস হবে, সেই সংবিধান তারা কীভাবে রাখবে, সেই এখতিয়ার সংসদের আছে। আজকের সংসদ কোনোভাবেই সেই সংসদের হাত বেঁধে ফেলতে পারে না। কোনো অবস্থাতেই তারা ঠিক করে দিতে পারে না, ভবিষ্যতে একটি সংসদ কীভাবে সংবিধানকে সংশোধন করবে।

রুমিন ফারহানা বলেন, আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়বো। যে বাংলাদেশ হবে ধর্মনিরপেক্ষ। দল-মত নির্বিশেষে সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা এই দেশকে নতুন করে গড়ে তুলবো।

তিনি বলেন, বিগত সময়ে স্বাধীনতার স্বপক্ষকে ও বিপক্ষে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদকে সামনে এনে জাতিকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। আমরা জাতিকে বিভক্ত করা থেকে ফিরিয়ে আনবো। আমরা সকলকে দেখিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।

রুমিন ফারহানা বলেন, যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন না হবে, ততদিন পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোট হতে হবে। জনগণের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। সংবিধানের মালিক জনগণ। জনগণ তার মালিকানা হারিয়েছে। তাই আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, টেক ব্যাক বাংলাদেশ। এটি হোক জাতির মূলমন্ত্র।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আবারও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হবে। আওয়ামী লীগ ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সেই সময়কার নির্বাচনে প্রায় সকল আসনের জয়লাভ করেছিল। দু-একটিতে ন্যাপ ও জাসদের প্রার্থী জয়লাভ করলেও পড়ে তাদেরকে পরাজিত দেখানো হয়েছে। আমার পিতা অলি আহাদ সেই সময়ের নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে জয়লাভ করেছিলেন। কিন্তু পরে নির্বাচনের ফলাফল বদলে তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে বিজয়ী দেখানো হয়েছে। সেই থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ভোট কারচুপি করছে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার কথা জানিয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা এক ব্যক্তির হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর হাতে সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত। রাষ্ট্রপতির কোনও ক্ষমতা নেই। তিনি কেবল জানাজা পড়েন আর ফিতা কাটেন। এর বাইরে কোনও কাজ নেই। ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার মধ্য দিয়ে ফিতা কাটা আর জানাজা পড়া থেকে রাষ্ট্রপতিকে বের করে নিয়ে আসবো আমরা। একই ব্যক্তি টানা দুবারের বেশি রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। আমরা বলেছি, সংসদকে দুই কক্ষে বিভক্ত করবো। একটি হবে উচ্চকক্ষ অপরটি হবে নিম্নকক্ষ। সংসদকে কার্যকর করার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হবে।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কারাগারে থাকার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব অত্যন্ত সজ্জন রাজনীতিবিদ। তাকে রাত ৩টার দিকে তুলে নেওয়া হলো। চারদিন ধরে কারাগারে কোনও ডিভিশন দেওয়া হয়নি। হাইকোর্টে রিট করে ডিভিশন নিতে হয়েছে। মামলার এজাহারে তার নাম না থাকা সত্ত্বেও জামিন পাননি। এটাই আদালতের অবস্থা। আমরা ক্ষমতায় গেলে নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী বিচার বিভাগ গঠন করবো। সেই বিচার বিভাগ দলমত নির্বিশেষে আইনের সমান প্রয়োগ দেখাবে। আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা সংস্কার করবো। কারণ প্রশাসনে তো এখন লীগ ছাড়া কিছু নেই। তাদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে।

ক্ষমতায় গেলে মানবাধিকার কমিশন গঠন করবে বিএনপি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে যেসব গুম, খুন, নির্যাতন, হেফাজতে নির্যাতন, মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার প্রত্যেকটির বিচার হবে।

শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যখাতে জিডিপির পাঁচ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ চিকিৎসা করাতে গিয়ে ফকির হয়ে যাচ্ছে। তাদের জমিজমা বিক্রি করতে হচ্ছে। সে অবস্থা থেকে আমরা তাদের মুক্ত করবো।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান জিল্লুর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। এছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল হক সাঈদ, সদস্য রফিক শিকদার, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জহিরুল হক খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।