ঢাকা ০২:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নারী মুক্তিযোদ্ধারা আড়ালেই রয়ে গেলেন

শাওন মাহমুদ
  • আপডেট সময় : ১২:৪০:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০২৪
  • / ৪৫৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, শোকের পাহাড় পারায়ে গর্বিত বাংলাদেশের জন্মের কথা বলে। যারা এই শোকের পাহাড়ে নিজেকে উৎসর্গ করে আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ এনে দিয়েছেন, তাঁদের কথা ভুলে গেলে চলবে না। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই আলোকিত মানুষগুলো বেঁচে থাকুক আমাদের হৃদয়জুড়ে, প্রতিটি হৃদ্‌কম্পে।

২০১২ সালে এক বিবৃতিতে তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম বলেছেন, মোট গেজেটভুক্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ২০৩ জন। বর্তমানে মোট বীরাঙ্গনা নারী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৪১৬ জন।

দুঃখের বিষয় যে, নারী মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনার তালিকা আজও সম্পূর্ণ হয়নি। লাখ লাখ নারী রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির বাইরে রয়ে গেছেন। অনেকেই হয়তো এই উপেক্ষার জীবন যাপন শেষে মারা গেছেন। আর বাদবাকিরা জীবনের শেষ অধ্যায় পার করছেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ৪১ বীরাঙ্গনাকে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে প্রথম গেজেট প্রকাশ করে ২০১৫ সালে। কিন্তু ২০২২ সাল পর্যন্ত বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা পাওয়া যায় মাত্র ৪৪৮ জন।

যে সমস্ত নারী অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছিলেন, সংখ্যায় অল্প হলেও তাঁদের বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। যে সমস্ত নারী ধর্ষিতা হয়েছিলেন এবং পরে যুদ্ধশিশুর জন্ম দিয়েছিলেন, তাঁদের সংগ্রাম ছিল ভয়াবহতম। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্ষিত হয়েছেন দুই লাখেরও অধিক নারী। সুসান ব্রাউন মিলার রচিত Men, Women and Rape—বইটিতে এই তথ্য পাওয়া যায়। তাছাড়া যুদ্ধের ঠিক পরপর বাংলাদেশে এসেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার শল্যচিকিৎসক ডা. জিওফ্রে ডেভিস। লন্ডন গিয়ে তিনি বলেন, নয় মাসে যে নারীরা ধর্ষিত হয়েছে পাকিস্তানি বাহিনীর দ্বারা, তাঁদের অনেকেরই সম্ভাবনা আছে বন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার, অনেকে ভুগতে পারেন বারবার, জীবনভর। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, ১ লাখ ৭০ হাজার নারীর গর্ভপাত করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৩০ হাজারের মধ্যে কেউ আত্মহত্যা করেছেন, কেউ নিজেই পালন করেছেন সন্তানকে।

মুক্তিযুদ্ধে নারীর অংশগ্রহণকে ১০টি অংশে ভাগ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে নারীর এই বহুমাত্রিক অংশগ্রহণের ব্যাপ্তি ও বিভাজনটি এ রকম—
১) সশস্ত্র যোদ্ধা হিসেবে নারী;
২) আশ্রয়দাত্রী, অস্ত্র সংরক্ষণ ও সরবরাহকারিণী হিসেবে নারী;
৩) মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রান্নাবান্না, খাদ্য সংগ্রহ ও সরবরাহকারিণী হিসেবে নারী;
৪) সেবা-সুশ্রুষার কাজে নিয়োজিত নারী;
৫) তথ্য সরবরাহ ও যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে নারী;
৬) অর্থ, বস্ত্র, খাদ্য ও ওষুধ সংগ্রহ ও সরবরাহের কাজে নিয়োজিত নারী;
৭) রাজনীতিক ও সংগঠক হিসেবে নারী;
৮) অনুপ্রেরণার উৎসরূপে নারী;
৯) সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা ও দেশবাসীকে উজ্জীবিত করার কাজে নিয়োজিত নারী; এবং
১০) শরণার্থীদের সাহায্য সহযোগিতায় বাঙালি ও প্রবাসী নারী।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নারীদের বীরত্বগাঁথার কথা কখনোই জোরালো কণ্ঠে বলা হয় না। জীবিত মুক্তিযোদ্ধারাও শুধু নিজেদের পৌরুষদীপ্ত বীরত্বের গল্পে ভরিয়ে রাখেন। নারী মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ নারী বুদ্ধিজীবী হিসেবে বহু সাহসী নারী শিক্ষক, সংস্কৃতি কর্মী, সংগঠকের ভীষণ বলিষ্ঠ ভূমিকা থাকলেও, তাঁদের নাম কখনো সবার সামনে উঠে আসেনি। এবং যেহেতু তালিকাগুলো এখন পর্যন্ত সমাপ্ত হয়নি, সেহেতু অনেকের নাম ইতিহাসের পাতায় ক্রমে ঝাপসা হয়ে আসছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ, কালরাত্রিতে গণহত্যা শুরুর পর সারা দেশের মানুষ স্তম্ভিত হয়েছিল। অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে নিজ নিজ রাজনৈতিক অবস্থান কোনো বিষয় ছিল না। গণজোয়ারে ভেসে এসেছিল গণযুদ্ধের দাবি।

পিরোজপুরের সাহসী নারী ভাগীরথীর কাহিনি মুক্তিযুদ্ধের এক শিহরণ জাগানিয়া বীরত্বগাঁথা। ভিক্ষুক সেজে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন খোঁজ-খবর এনে দিতেন তিনি এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের। পরে রাজাকারেরা তাঁকে ধরিয়ে দেয় পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে। ভাগীরথীকে জিপের পেছনে বেঁধে টানতে টানতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে আঞ্জুমান আরাকে মালবাহী ট্রেনের গরম কয়লার চুল্লিতে নিক্ষেপ করে মেরেছিল বিহারিরা। তিনি এবং তাঁর স্বামীর অপরাধ—ওনারা অন্য বাঙালিদের আশ্রয় দিয়েছিলেন নিজেদের বাড়িতে। শিক্ষক হেলেনা মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতেন এবং তাঁর স্বামী কদর আলী সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। শুধু এ কারণে হেলেনাকে গুলি করে হত্যা করে রাজাকার এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনী। শহীদ হেলেনা নবগঙ্গা নদীর জলে চিরদিনের জন্য হারিয়ে গিয়েছিলেন, লাশ হয়ে। এমন শত শত নারী নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন আমাদের জন্য। কিছুই চাননি তাঁরা, একটি স্বাধীন অসম্প্রদায়িক ভূখন্ড ব্যতীত।

আমাদের এই আলোকিত মানুষগুলোকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়নি। তাঁদের বীরত্বগাঁথা শোনানো হয়নি আমাদের। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। মনে রাখতে হবে, ত্রিশ লাখ শহীদ যত সহজে বলা যায়, বিষয়টা তত সহজ নয়। ত্রিশ লাখ শহীদের প্রত্যেকে একজন মানুষ ছিল, তাঁরা কারও সন্তান ছিল, তাঁদের নাম ছিল, পরিচয় ছিল। এই বাংলার মাটিতেই তাঁদের জন্ম হয়েছিল।

বলতে পারেন, কয়জন জীবিত মুক্তিযোদ্ধা এসব কথা প্রজন্মকে জানিয়েছেন? রাষ্ট্র কয়জনকে স্বীকৃতি দিয়েছেন? তাঁদের কয়জনের বীরত্বগাঁথাকে ইতিহাসের পাতায় দৃষ্টান্ত করে রেখেছেন? কয়জনের আত্মত্যাগের কথা নতুন প্রজন্মকে বলেছেন? প্রশ্ন রেখে গেলাম।

লেখক: শহীদ আলতাফ মাহমুদের সন্তান ও কলাম লেখক

নিউজটি শেয়ার করুন

নারী মুক্তিযোদ্ধারা আড়ালেই রয়ে গেলেন

আপডেট সময় : ১২:৪০:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০২৪

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, শোকের পাহাড় পারায়ে গর্বিত বাংলাদেশের জন্মের কথা বলে। যারা এই শোকের পাহাড়ে নিজেকে উৎসর্গ করে আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ এনে দিয়েছেন, তাঁদের কথা ভুলে গেলে চলবে না। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই আলোকিত মানুষগুলো বেঁচে থাকুক আমাদের হৃদয়জুড়ে, প্রতিটি হৃদ্‌কম্পে।

২০১২ সালে এক বিবৃতিতে তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম বলেছেন, মোট গেজেটভুক্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ২০৩ জন। বর্তমানে মোট বীরাঙ্গনা নারী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৪১৬ জন।

দুঃখের বিষয় যে, নারী মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনার তালিকা আজও সম্পূর্ণ হয়নি। লাখ লাখ নারী রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির বাইরে রয়ে গেছেন। অনেকেই হয়তো এই উপেক্ষার জীবন যাপন শেষে মারা গেছেন। আর বাদবাকিরা জীবনের শেষ অধ্যায় পার করছেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ৪১ বীরাঙ্গনাকে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে প্রথম গেজেট প্রকাশ করে ২০১৫ সালে। কিন্তু ২০২২ সাল পর্যন্ত বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা পাওয়া যায় মাত্র ৪৪৮ জন।

যে সমস্ত নারী অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছিলেন, সংখ্যায় অল্প হলেও তাঁদের বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। যে সমস্ত নারী ধর্ষিতা হয়েছিলেন এবং পরে যুদ্ধশিশুর জন্ম দিয়েছিলেন, তাঁদের সংগ্রাম ছিল ভয়াবহতম। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্ষিত হয়েছেন দুই লাখেরও অধিক নারী। সুসান ব্রাউন মিলার রচিত Men, Women and Rape—বইটিতে এই তথ্য পাওয়া যায়। তাছাড়া যুদ্ধের ঠিক পরপর বাংলাদেশে এসেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার শল্যচিকিৎসক ডা. জিওফ্রে ডেভিস। লন্ডন গিয়ে তিনি বলেন, নয় মাসে যে নারীরা ধর্ষিত হয়েছে পাকিস্তানি বাহিনীর দ্বারা, তাঁদের অনেকেরই সম্ভাবনা আছে বন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার, অনেকে ভুগতে পারেন বারবার, জীবনভর। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, ১ লাখ ৭০ হাজার নারীর গর্ভপাত করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৩০ হাজারের মধ্যে কেউ আত্মহত্যা করেছেন, কেউ নিজেই পালন করেছেন সন্তানকে।

মুক্তিযুদ্ধে নারীর অংশগ্রহণকে ১০টি অংশে ভাগ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে নারীর এই বহুমাত্রিক অংশগ্রহণের ব্যাপ্তি ও বিভাজনটি এ রকম—
১) সশস্ত্র যোদ্ধা হিসেবে নারী;
২) আশ্রয়দাত্রী, অস্ত্র সংরক্ষণ ও সরবরাহকারিণী হিসেবে নারী;
৩) মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রান্নাবান্না, খাদ্য সংগ্রহ ও সরবরাহকারিণী হিসেবে নারী;
৪) সেবা-সুশ্রুষার কাজে নিয়োজিত নারী;
৫) তথ্য সরবরাহ ও যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে নারী;
৬) অর্থ, বস্ত্র, খাদ্য ও ওষুধ সংগ্রহ ও সরবরাহের কাজে নিয়োজিত নারী;
৭) রাজনীতিক ও সংগঠক হিসেবে নারী;
৮) অনুপ্রেরণার উৎসরূপে নারী;
৯) সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা ও দেশবাসীকে উজ্জীবিত করার কাজে নিয়োজিত নারী; এবং
১০) শরণার্থীদের সাহায্য সহযোগিতায় বাঙালি ও প্রবাসী নারী।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নারীদের বীরত্বগাঁথার কথা কখনোই জোরালো কণ্ঠে বলা হয় না। জীবিত মুক্তিযোদ্ধারাও শুধু নিজেদের পৌরুষদীপ্ত বীরত্বের গল্পে ভরিয়ে রাখেন। নারী মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ নারী বুদ্ধিজীবী হিসেবে বহু সাহসী নারী শিক্ষক, সংস্কৃতি কর্মী, সংগঠকের ভীষণ বলিষ্ঠ ভূমিকা থাকলেও, তাঁদের নাম কখনো সবার সামনে উঠে আসেনি। এবং যেহেতু তালিকাগুলো এখন পর্যন্ত সমাপ্ত হয়নি, সেহেতু অনেকের নাম ইতিহাসের পাতায় ক্রমে ঝাপসা হয়ে আসছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ, কালরাত্রিতে গণহত্যা শুরুর পর সারা দেশের মানুষ স্তম্ভিত হয়েছিল। অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে নিজ নিজ রাজনৈতিক অবস্থান কোনো বিষয় ছিল না। গণজোয়ারে ভেসে এসেছিল গণযুদ্ধের দাবি।

পিরোজপুরের সাহসী নারী ভাগীরথীর কাহিনি মুক্তিযুদ্ধের এক শিহরণ জাগানিয়া বীরত্বগাঁথা। ভিক্ষুক সেজে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন খোঁজ-খবর এনে দিতেন তিনি এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের। পরে রাজাকারেরা তাঁকে ধরিয়ে দেয় পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে। ভাগীরথীকে জিপের পেছনে বেঁধে টানতে টানতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে আঞ্জুমান আরাকে মালবাহী ট্রেনের গরম কয়লার চুল্লিতে নিক্ষেপ করে মেরেছিল বিহারিরা। তিনি এবং তাঁর স্বামীর অপরাধ—ওনারা অন্য বাঙালিদের আশ্রয় দিয়েছিলেন নিজেদের বাড়িতে। শিক্ষক হেলেনা মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতেন এবং তাঁর স্বামী কদর আলী সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। শুধু এ কারণে হেলেনাকে গুলি করে হত্যা করে রাজাকার এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনী। শহীদ হেলেনা নবগঙ্গা নদীর জলে চিরদিনের জন্য হারিয়ে গিয়েছিলেন, লাশ হয়ে। এমন শত শত নারী নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন আমাদের জন্য। কিছুই চাননি তাঁরা, একটি স্বাধীন অসম্প্রদায়িক ভূখন্ড ব্যতীত।

আমাদের এই আলোকিত মানুষগুলোকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়নি। তাঁদের বীরত্বগাঁথা শোনানো হয়নি আমাদের। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। মনে রাখতে হবে, ত্রিশ লাখ শহীদ যত সহজে বলা যায়, বিষয়টা তত সহজ নয়। ত্রিশ লাখ শহীদের প্রত্যেকে একজন মানুষ ছিল, তাঁরা কারও সন্তান ছিল, তাঁদের নাম ছিল, পরিচয় ছিল। এই বাংলার মাটিতেই তাঁদের জন্ম হয়েছিল।

বলতে পারেন, কয়জন জীবিত মুক্তিযোদ্ধা এসব কথা প্রজন্মকে জানিয়েছেন? রাষ্ট্র কয়জনকে স্বীকৃতি দিয়েছেন? তাঁদের কয়জনের বীরত্বগাঁথাকে ইতিহাসের পাতায় দৃষ্টান্ত করে রেখেছেন? কয়জনের আত্মত্যাগের কথা নতুন প্রজন্মকে বলেছেন? প্রশ্ন রেখে গেলাম।

লেখক: শহীদ আলতাফ মাহমুদের সন্তান ও কলাম লেখক