ঢাকা ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গ্রামে বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার হার বেশি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:২৫:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৪৩১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে লোডশেডিং ফিরে এসেছে। শহরের তুলনায় গ্রামে বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার হার বেশি। গেল এক সপ্তাহে সারাদেশে গড়ে ৮শ’ থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হয়েছে। ডলার আর জ্বালানির সংকটকে দুষছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

মূলত এপ্রিল মাস এলেই দেশে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। রাজধানীতে কিছুটা ভোগান্তি কম হলেও গ্রামে বাড়ে লোডশেডিং। গত বছরও এ সময় কয়েকহাজার মেগাওয়াট ঘাটতির ফলে লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে দেশ। এ বছর এখনও তেমনটা দেখা না গেলেও ক্রমশ বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে মঙ্গলবার থেকে চাহিদার বিপরীতে লোডশেডিং হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে।

সর্বোচ্চ লোডশেডিং ছিল বুধবার দিবাগত রাত ১টায়, প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট। এ সময় চাহিদা ছিল ১৫ হাজার ৮৫০ মেগাওয়াট। এছাড়া একইদিনে রাত ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং ছিল। যার পরিমাণ গড়ে ১১শ’ থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট।

যদিও এই মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ডলার আর জ্বালানি সংকটের কথা স্বীকার করে বিদ্যুৎ বিভাগের পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন জানান, সামাল দিতে গ্রামে লোডশেডিং বেড়েছে সঙ্গে শপিংমলগুলো ৮টার মধ্যে বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে তারা।

খাত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি আমদানি নির্ভরতা উৎপাদন ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এতে অর্থনৈতিক চাপ দেখা দিলে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও সংকট তৈরি হয়। তাই জ্বালানি অনুসন্ধান করে উত্তোলনের দিকে আরও মনোযোগী হতে হবে সরকারকে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম তামিম বলেন, ‘জ্বালানি আমদানি নির্ভরতা উৎপাদন ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এতে অর্থনৈতিক চাপ দেখা দিলে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও সংকট তৈরি হয়। তাই জ্বালানি অনুসন্ধান করে উত্তোলনের দিকে আরও মনোযোগী হতে হবে সরকারকে।’

দেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৬ হাজার ৮৮৪ মেগাওয়াট। এর মধ্যে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আসে ১২ হাজার মেগাওয়াট। আর প্রায় ১১ হাজার মেগাওয়াট ফার্নেস অয়েল ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আসে।

চাহিদা কিংবা উৎপাদন, জ্বালানির ব্যবস্থাপনার এসব কঠিন সমীকরণ জানা নেই ফরিদপুরের কৃষক শেখ ইউনুসের। তিনি শুধু এটাই জানেন, এ মৌসুমে কিছুটা হলেও বিপদে পড়তে হচ্ছে তাকে। কারণ সবুজ ধানগুলো পরিপক্ক হতে এখন যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার সেটিই নেই। তাপপ্রবাহের এই কাঠফাটা রোদে তার মতো শঙ্কায়, ধান উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ এই জেলার অনেক কৃষক।

শেখ ইউনুস বলেন, ‘কারেন্টের অভাবে চাষের জমি ছেড়ে দিতে হচ্ছে। কারণ, চাষাবাদ করতে পারছি না। এখন অল্প জমিতে ধান চাষ করছি। আর সবসময় কারেন্ট থাকলে আমিও বেশি চাষাবাদ করতে পারতাম।’

তাপপ্রবাহের এই সময়ে গ্রামের বাসিন্দারা যে খুব বেশি ভালো আছেন তা নয়। দিন-রাতের হিসেব মিললেও বিদ্যুতের আসা যাওয়ার হিসাব পান না গ্রাহকরা। অসহনীয় গরমে তাদের আক্ষেপও অনেক।

বাসিন্দারা বলেন, ‘গরমে বাচ্চারা পড়াশোনা করতে পারছে না। আমরা কাজকাম করতে পারছি না। আর কারেন্ট না থাকলে রাতে ‍খুব কষ্ট হয়। সবমিলিয়ে আমরা চাহিদার তুলনায় তেমন বিদ্যুৎ পাচ্ছি না।’

নিউজটি শেয়ার করুন

গ্রামে বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার হার বেশি

আপডেট সময় : ০২:২৫:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে লোডশেডিং ফিরে এসেছে। শহরের তুলনায় গ্রামে বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার হার বেশি। গেল এক সপ্তাহে সারাদেশে গড়ে ৮শ’ থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হয়েছে। ডলার আর জ্বালানির সংকটকে দুষছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

মূলত এপ্রিল মাস এলেই দেশে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। রাজধানীতে কিছুটা ভোগান্তি কম হলেও গ্রামে বাড়ে লোডশেডিং। গত বছরও এ সময় কয়েকহাজার মেগাওয়াট ঘাটতির ফলে লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে দেশ। এ বছর এখনও তেমনটা দেখা না গেলেও ক্রমশ বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে মঙ্গলবার থেকে চাহিদার বিপরীতে লোডশেডিং হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে।

সর্বোচ্চ লোডশেডিং ছিল বুধবার দিবাগত রাত ১টায়, প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট। এ সময় চাহিদা ছিল ১৫ হাজার ৮৫০ মেগাওয়াট। এছাড়া একইদিনে রাত ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং ছিল। যার পরিমাণ গড়ে ১১শ’ থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট।

যদিও এই মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ডলার আর জ্বালানি সংকটের কথা স্বীকার করে বিদ্যুৎ বিভাগের পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন জানান, সামাল দিতে গ্রামে লোডশেডিং বেড়েছে সঙ্গে শপিংমলগুলো ৮টার মধ্যে বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে তারা।

খাত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি আমদানি নির্ভরতা উৎপাদন ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এতে অর্থনৈতিক চাপ দেখা দিলে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও সংকট তৈরি হয়। তাই জ্বালানি অনুসন্ধান করে উত্তোলনের দিকে আরও মনোযোগী হতে হবে সরকারকে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম তামিম বলেন, ‘জ্বালানি আমদানি নির্ভরতা উৎপাদন ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এতে অর্থনৈতিক চাপ দেখা দিলে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও সংকট তৈরি হয়। তাই জ্বালানি অনুসন্ধান করে উত্তোলনের দিকে আরও মনোযোগী হতে হবে সরকারকে।’

দেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৬ হাজার ৮৮৪ মেগাওয়াট। এর মধ্যে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আসে ১২ হাজার মেগাওয়াট। আর প্রায় ১১ হাজার মেগাওয়াট ফার্নেস অয়েল ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আসে।

চাহিদা কিংবা উৎপাদন, জ্বালানির ব্যবস্থাপনার এসব কঠিন সমীকরণ জানা নেই ফরিদপুরের কৃষক শেখ ইউনুসের। তিনি শুধু এটাই জানেন, এ মৌসুমে কিছুটা হলেও বিপদে পড়তে হচ্ছে তাকে। কারণ সবুজ ধানগুলো পরিপক্ক হতে এখন যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার সেটিই নেই। তাপপ্রবাহের এই কাঠফাটা রোদে তার মতো শঙ্কায়, ধান উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ এই জেলার অনেক কৃষক।

শেখ ইউনুস বলেন, ‘কারেন্টের অভাবে চাষের জমি ছেড়ে দিতে হচ্ছে। কারণ, চাষাবাদ করতে পারছি না। এখন অল্প জমিতে ধান চাষ করছি। আর সবসময় কারেন্ট থাকলে আমিও বেশি চাষাবাদ করতে পারতাম।’

তাপপ্রবাহের এই সময়ে গ্রামের বাসিন্দারা যে খুব বেশি ভালো আছেন তা নয়। দিন-রাতের হিসেব মিললেও বিদ্যুতের আসা যাওয়ার হিসাব পান না গ্রাহকরা। অসহনীয় গরমে তাদের আক্ষেপও অনেক।

বাসিন্দারা বলেন, ‘গরমে বাচ্চারা পড়াশোনা করতে পারছে না। আমরা কাজকাম করতে পারছি না। আর কারেন্ট না থাকলে রাতে ‍খুব কষ্ট হয়। সবমিলিয়ে আমরা চাহিদার তুলনায় তেমন বিদ্যুৎ পাচ্ছি না।’