ঢাকা ০৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

মহিপুরে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার সরকারী জমি দখলের অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৫৭:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ৪৪৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :

মহিপুরে নদীর তীর লাগোয়া ২একর সরকারী খাস জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ছগির খান’র বিরুদ্ধে। শুক্রবার মহিপুর সদর ইউপির নিজাপুর গ্রামে বেড়িবাঁধের বাইরে দলবল নিয়ে ওই জমি দখল করে সাইনবোর্ড সাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। এসময় স্থানীয় শুঁটকি মাছ প্রক্রিয়াজাতকারী শ্রমিকদের হুমকি দিয়ে ওই জমি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ একাধিক জেলেদের। এছাড়া ছগির খাঁন পটুয়াখালী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পদ পাওয়ার পর থেকেই তিনি মহিপুর এলাকায় শালিস বাণিজ্য থেকে শুরু করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় আওয়ামী লীগ সহযোগী সংগঠর নেতাদের।
সরেজমিনে গিয়ে ঘুরে দেখা য়ায়, প্রায় দুই যুগ ধরে শীত মৌসুমে নদী লাগোয়া ওই জমিতে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত করে জীবীকা নির্বাহ করে আসছেন শতাধিক মৎস্যজীবীরা। হঠাৎ ছগির খানের নেতৃত্বে ২০থেকে ২৫ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী ওই জমিতে গিয়ে সাইনবোর্ড সাটিয়ে দেন। এ সময় স্থানীয় শুঁটকি ব্যবসায়ীদের শুঁটকি শুকানো বেশ কিছু জাল ছিড়ে ফেলা হয়। ওই সাইবোর্ডে লেখা রয়েছে ক্রয় সূত্রে জমির মালিক মো. ছগির খান। নিজামুপর মৌজা, জে.এল নং-২৫, এস.এ খতিয়ান নং-৩০৪, দাগ নং-২৮,৫০। জমির পরিমান-২.০০ একর। তবে প্রকৃত পক্ষে ওই জমি সরকারী বলে দাবি স্থানীয়দের। স্থানীয় শুটকি ব্যবসায়ী হান্নান মিয়া জানান, এ জমিটা মূলত আমাদের রেকর্ডীয় জমির পাশে। প্রায় ২০ বছর যাবৎ আমরা ওই জমিতে শুটকি শুকিয়ে রোজগার করছি। কিন্তু গতকাল হঠাৎ যে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালানো হয়েছে তাতে আমরা অনেকটা আতংকিত হয়ে পড়েছি।

একই এলাকার দেলোয়ার মিয়া জানান, প্রায় ২০ বছর পর্যনত্ম জেনে আসছি এটা সরকারী ১ নং খাস খতিয়ানের জমি। কিন্তু কিভাবে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ক্রয় সূত্রে মালিক হয়েছেন সেটাই বুঝতে পারছিনা। আসলে মনে হয় জোর যার মুল্লুক তার।

মহিপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক জামাল মিয়া জানান, তার কর্মকান্ডে আমরা বিব্রত। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। লতাচাপলি ইউনিয়ান সেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদ রাসেল জানান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ছগির খান কমিটি পাওয়ার কয়েক দিন পরে তিনি আমাদের উপর হামলা চালায় সে বিষয় মহিপুর থানায় অভিযোগ দেয়া আছে।

মহিপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ফেরদৌস হাওলাদার জানান, সে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি হওয়ার পরই জমি দখল ও সাধারন মানুষদের হুমকি ধামকি সহ নানা অপকর্ম করে আসছে। আমরা ছোট থেকে জানি নিজাপুর খেয়াঘাট সংলগ্ন জায়গাটি ১নং খাস খতিয়ানের যায়গা। ওখানে গরীব শেণির জেলেরা মাছ শুকিয়ে শুঁটকি তৈরী করে জীবীকা নির্বাহ করে। কিন্তু গতকাল স্থানীয়দের মাধ্যমে শুনলাম সে নাকি ওই যায়গা দখলে নিছে।

পটুয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ছগির খান জানান, ১৯৫২ সালে তরিবুলস্নাহ নামের এক ব্যক্তির নামে সরকার বন্দোবসত্ম দিছে। আমি তার কাছ থেকে ক্রয় করেছি। আমি কোন সরকারী জমি দখল করিনি।

মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার রফিক মিয়া জানান, ওই জমি নিজামপুর মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানের ৩, ৪ ও ৫ নম্বর দাগের জমি। ওই জমি আমাদের দখলমুক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য জানান, এ বিষয়ে তহসিলদারকে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

মহিপুরে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার সরকারী জমি দখলের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০২:৫৭:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২২

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :

মহিপুরে নদীর তীর লাগোয়া ২একর সরকারী খাস জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ছগির খান’র বিরুদ্ধে। শুক্রবার মহিপুর সদর ইউপির নিজাপুর গ্রামে বেড়িবাঁধের বাইরে দলবল নিয়ে ওই জমি দখল করে সাইনবোর্ড সাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। এসময় স্থানীয় শুঁটকি মাছ প্রক্রিয়াজাতকারী শ্রমিকদের হুমকি দিয়ে ওই জমি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ একাধিক জেলেদের। এছাড়া ছগির খাঁন পটুয়াখালী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পদ পাওয়ার পর থেকেই তিনি মহিপুর এলাকায় শালিস বাণিজ্য থেকে শুরু করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় আওয়ামী লীগ সহযোগী সংগঠর নেতাদের।
সরেজমিনে গিয়ে ঘুরে দেখা য়ায়, প্রায় দুই যুগ ধরে শীত মৌসুমে নদী লাগোয়া ওই জমিতে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত করে জীবীকা নির্বাহ করে আসছেন শতাধিক মৎস্যজীবীরা। হঠাৎ ছগির খানের নেতৃত্বে ২০থেকে ২৫ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী ওই জমিতে গিয়ে সাইনবোর্ড সাটিয়ে দেন। এ সময় স্থানীয় শুঁটকি ব্যবসায়ীদের শুঁটকি শুকানো বেশ কিছু জাল ছিড়ে ফেলা হয়। ওই সাইবোর্ডে লেখা রয়েছে ক্রয় সূত্রে জমির মালিক মো. ছগির খান। নিজামুপর মৌজা, জে.এল নং-২৫, এস.এ খতিয়ান নং-৩০৪, দাগ নং-২৮,৫০। জমির পরিমান-২.০০ একর। তবে প্রকৃত পক্ষে ওই জমি সরকারী বলে দাবি স্থানীয়দের। স্থানীয় শুটকি ব্যবসায়ী হান্নান মিয়া জানান, এ জমিটা মূলত আমাদের রেকর্ডীয় জমির পাশে। প্রায় ২০ বছর যাবৎ আমরা ওই জমিতে শুটকি শুকিয়ে রোজগার করছি। কিন্তু গতকাল হঠাৎ যে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালানো হয়েছে তাতে আমরা অনেকটা আতংকিত হয়ে পড়েছি।

একই এলাকার দেলোয়ার মিয়া জানান, প্রায় ২০ বছর পর্যনত্ম জেনে আসছি এটা সরকারী ১ নং খাস খতিয়ানের জমি। কিন্তু কিভাবে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ক্রয় সূত্রে মালিক হয়েছেন সেটাই বুঝতে পারছিনা। আসলে মনে হয় জোর যার মুল্লুক তার।

মহিপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক জামাল মিয়া জানান, তার কর্মকান্ডে আমরা বিব্রত। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। লতাচাপলি ইউনিয়ান সেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদ রাসেল জানান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ছগির খান কমিটি পাওয়ার কয়েক দিন পরে তিনি আমাদের উপর হামলা চালায় সে বিষয় মহিপুর থানায় অভিযোগ দেয়া আছে।

মহিপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ফেরদৌস হাওলাদার জানান, সে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি হওয়ার পরই জমি দখল ও সাধারন মানুষদের হুমকি ধামকি সহ নানা অপকর্ম করে আসছে। আমরা ছোট থেকে জানি নিজাপুর খেয়াঘাট সংলগ্ন জায়গাটি ১নং খাস খতিয়ানের যায়গা। ওখানে গরীব শেণির জেলেরা মাছ শুকিয়ে শুঁটকি তৈরী করে জীবীকা নির্বাহ করে। কিন্তু গতকাল স্থানীয়দের মাধ্যমে শুনলাম সে নাকি ওই যায়গা দখলে নিছে।

পটুয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ছগির খান জানান, ১৯৫২ সালে তরিবুলস্নাহ নামের এক ব্যক্তির নামে সরকার বন্দোবসত্ম দিছে। আমি তার কাছ থেকে ক্রয় করেছি। আমি কোন সরকারী জমি দখল করিনি।

মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার রফিক মিয়া জানান, ওই জমি নিজামপুর মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানের ৩, ৪ ও ৫ নম্বর দাগের জমি। ওই জমি আমাদের দখলমুক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য জানান, এ বিষয়ে তহসিলদারকে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।