ঢাকা ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সূর্যমুখী’র সাথে হাঁসছে কৃষক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৪:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩
  • / ৪৬৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আশরাফুল ইসলাম রনি,তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য উপযোগী হওয়ায় প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। কম সময় ও অর্থ ব্যয় করে সূর্যমুখী চাষ করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে বিনামুল্যে সার ও বীজ প্রণোদনা দিয়ে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী কৃষকদের সহযোগীতা করা হয়েছে। সূর্যমুখী ফুলের হাঁসি ফুটে উঠেছে উপজেলার মাঠগুলোতে। আর সেই সাথে কৃষকের মুখেও হাঁসি ফুঁটেছে ।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ, তাড়াশ সদর ইউনিয়নের খুটিগাছা ও মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের নাদোসৈয়দুপর এলাকায় প্রথমবারের পরীক্ষামূলকভাবে ২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। সাধারনত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের দিকে সারিবদ্ধভাবে বীজ বপন করা হয়। বীজ বপনের ৯০-১০০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দুবার সেঁচ দিতে হয় এ ফসলে। প্রতি একর জমিতে ২০-২২ হাজার টাকা খরচ হয়। আর এক একর জমির উৎপাদিত বীজ থেকে ৬০-৬৫ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। সূর্যমুখী গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। তেল জাতীয় অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখীর চাষ অনেক সহজলভ্য ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় কৃষকেরা এতে উৎসাহিত হয়ে উঠেবেন বলে মনে করছেন তারা।

সূর্যমুখীর জমিতে দেখা যায়, ফুঁটে থাকা হলুদ সূর্যমুখী ফুলের সমাহারে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। চারদিকে হলুদ রঙের ফুলের মন মাতানো ঘ্রাণ আর মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে কৃষকের জমি। মূলতঃ ভোজ্য তেল উৎপাদনের মাধ্যমে খাদ্য চাহিদা মেটাতে এ চাষ করা হচ্ছে।

উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ গ্রামের সূর্যমুখী চাষি আনোয়ার হোসেন জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি ১৮ কাঠা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। ফলনও হয়েছে বাম্পার। মুলত সূর্যমুখী বীজ রোপন থেকে ফল সংগ্রহ করতে ৯০ দিন থেকে ১২০ দিন সময় লাগে। তার জমির সূর্যমুখী থেকে ফল সংগ্রহ করতে আরো ১০-১৫দিন সময় লাগবে। বর্তমানে বাজারে ভোজ্য তেলের আকাশ ছোঁয়া দাম হওয়ার কারণে চাহিদা বেড়েছে সরিষা ও সূর্যমুখী তেলের। এছাড়া সূর্যমুখী ফুলের তেল অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। তাই ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের জন্য এই তেল অন্যান্য তেলের চেয়ে অনেক উপকারী ও স্বাস্থ্যসম্মত।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তাড়াশ উপজেলায় প্রথমবারের মতো সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। আগামীতে সূর্যমুখীর চাষ করবে কৃষকরা। সূর্যমুখীর বীজ থেকে যে তেল উৎপন্ন হয় তা স্বাস্থ্যসম্মত ও মানসম্পন্ন। অলিভ ওয়েলের পরেই সূর্যমুখী তেলের অবস্থান। সয়াবিন ও সরিষার তেলের ঘাটতি পূরণ করবে সূর্যমুখী তেল। বেশি লাভজনক ফসল সূর্যমুখী। আশা করছি ভালে ফলন হবে এবং আগামীতে এই উপজেলায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ ব্যাপক হারে আরও সম্প্রসারিত হবে বলে আমি আশাবাদী।

বা/খ: এসআর।

নিউজটি শেয়ার করুন

সূর্যমুখী’র সাথে হাঁসছে কৃষক

আপডেট সময় : ০৫:৪৪:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩

আশরাফুল ইসলাম রনি,তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য উপযোগী হওয়ায় প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। কম সময় ও অর্থ ব্যয় করে সূর্যমুখী চাষ করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে বিনামুল্যে সার ও বীজ প্রণোদনা দিয়ে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী কৃষকদের সহযোগীতা করা হয়েছে। সূর্যমুখী ফুলের হাঁসি ফুটে উঠেছে উপজেলার মাঠগুলোতে। আর সেই সাথে কৃষকের মুখেও হাঁসি ফুঁটেছে ।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ, তাড়াশ সদর ইউনিয়নের খুটিগাছা ও মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের নাদোসৈয়দুপর এলাকায় প্রথমবারের পরীক্ষামূলকভাবে ২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। সাধারনত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের দিকে সারিবদ্ধভাবে বীজ বপন করা হয়। বীজ বপনের ৯০-১০০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দুবার সেঁচ দিতে হয় এ ফসলে। প্রতি একর জমিতে ২০-২২ হাজার টাকা খরচ হয়। আর এক একর জমির উৎপাদিত বীজ থেকে ৬০-৬৫ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। সূর্যমুখী গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। তেল জাতীয় অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখীর চাষ অনেক সহজলভ্য ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় কৃষকেরা এতে উৎসাহিত হয়ে উঠেবেন বলে মনে করছেন তারা।

সূর্যমুখীর জমিতে দেখা যায়, ফুঁটে থাকা হলুদ সূর্যমুখী ফুলের সমাহারে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। চারদিকে হলুদ রঙের ফুলের মন মাতানো ঘ্রাণ আর মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে কৃষকের জমি। মূলতঃ ভোজ্য তেল উৎপাদনের মাধ্যমে খাদ্য চাহিদা মেটাতে এ চাষ করা হচ্ছে।

উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ গ্রামের সূর্যমুখী চাষি আনোয়ার হোসেন জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি ১৮ কাঠা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। ফলনও হয়েছে বাম্পার। মুলত সূর্যমুখী বীজ রোপন থেকে ফল সংগ্রহ করতে ৯০ দিন থেকে ১২০ দিন সময় লাগে। তার জমির সূর্যমুখী থেকে ফল সংগ্রহ করতে আরো ১০-১৫দিন সময় লাগবে। বর্তমানে বাজারে ভোজ্য তেলের আকাশ ছোঁয়া দাম হওয়ার কারণে চাহিদা বেড়েছে সরিষা ও সূর্যমুখী তেলের। এছাড়া সূর্যমুখী ফুলের তেল অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। তাই ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের জন্য এই তেল অন্যান্য তেলের চেয়ে অনেক উপকারী ও স্বাস্থ্যসম্মত।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তাড়াশ উপজেলায় প্রথমবারের মতো সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। আগামীতে সূর্যমুখীর চাষ করবে কৃষকরা। সূর্যমুখীর বীজ থেকে যে তেল উৎপন্ন হয় তা স্বাস্থ্যসম্মত ও মানসম্পন্ন। অলিভ ওয়েলের পরেই সূর্যমুখী তেলের অবস্থান। সয়াবিন ও সরিষার তেলের ঘাটতি পূরণ করবে সূর্যমুখী তেল। বেশি লাভজনক ফসল সূর্যমুখী। আশা করছি ভালে ফলন হবে এবং আগামীতে এই উপজেলায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ ব্যাপক হারে আরও সম্প্রসারিত হবে বলে আমি আশাবাদী।

বা/খ: এসআর।