ঢাকা ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

মানুষ যেভাবে গণসমাবেশে যাচ্ছে তা অভ্যুত্থানের মতোই : মান্না

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:১৭:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ নভেম্বর ২০২২
  • / ৪৩৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির চলমান বিভাগীয় গণসমাবেশের দিকে ইঙ্গিত করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, মানুষ যেভাবে সমাবেশগুলোতে অংশ নিচ্ছে, এগুলো অভ্যুত্থানের মতোই। সব কিছু বন্ধ, তারপরও মানুষ যাচ্ছে। এরা সবাই বিএনপির সমর্থক নয়। এখানে সাধারণ মানুষও আছে, যারা মনে করেন জিনিসপত্রের দাম কমা দরকার।

শুক্রবার (০৪ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে ৫০তম সংবিধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘সংবিধান সংস্কার কেন প্রয়োজন এবং কিভাবে সম্ভব’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় মান্না এ কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মানুষ এখনকার ক্ষমতাসীনদের অত্যাচারে জর্জরিত। দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে যাকে পায় তাকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছে, কারণ তাদের তো বাঁচতে হবে।

গণতন্ত্র মঞ্চ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, গণতন্ত্র মোর্চার যে বইগুলো আছে সেগুলো নিশ্চয় পড়ে দেখেছেন। যেগুলো বলেছি, তার ভিত্তিতে থাকতে চাই, লড়াইটা করতে চাই। লাগাতারভাবে এই কথাগুলো বলতে চাই। জনগণের ভাষায় কথা বলতে হবে। এই জোট সম্পর্কে মানুষের মধ্যে যেন সবচাইতে ভালো আগ্রহ জন্মে। মানুষ মনে করবে মুক্তি এরাই (গণতন্ত্র মঞ্চ) দিতে পারে, ওরা (অনান্য রাজনৈতিক দল) যতোই বড় দল হোক বড় বড় কথা বলুক ওদের দিয়ে হবে না।

সংবিধানে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন জানিয়ে মান্না বলেন, সংবিধান পরিবর্তন করতে হলে জেনে-বুঝে ধীরে এগিয়ে যেতে হবে। এই সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে জারের মতো ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ লোকই সংবিধানের ধারা সম্পর্কে জানে না। সংবিধানের ৭ ধারা থাকলে এই সরকারের বিরুদ্ধে কোথাও কিছু বলা যাবে না। ৭ ধারা থাকলে মানুষের অধিকার থাকবে না। সুতরাং মানুষকে সংবিধান সম্পর্কে সহজ করে বলতে হবে, যাতে মানুষ বিশ্বাস করে এই সংবিধান পরিবর্তন করা দরকার।

তিনি আরও বলেন, মানুষকে সংবিধান বুঝিয়ে আন্দোলনে আনা কষ্ট। মানুষকে ‘দ্রব্যমূল্য বেশি রাখা হচ্ছে’, ‘এরা (ক্ষমতাসীনরা) চোর’ বলে আনতে পারবেন।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশে স্বাধীনতা এলো, দেখা গেলো শাসকরা সেটার উপযোগী রাষ্ট্র ব্যবস্থা করার ব্যাপারে আগ্রহী নন। প্রচণ্ড এক স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে রয়ে গেছে। সংবিধান প্রণয়নের মূল দৃষ্টিভঙ্গি দেখলে মনে হবে একটা দল তাদের কাছে চিরদিন ক্ষমতা রাখতে হবে, তারাই চিরদিন দেশ চালিয়ে যাবে। একজন ব্যক্তি কি চিরদিন থাকবেন? নানা কারণেই তো না থাকতে পারেন তিনি। ফলে, এই যে পুরো সংবিধান নির্মাণের প্রক্রিয়া, তাতে একটা গৌরব তো আছেই, কিন্তু পাশাপাশি যে গলদ আছে, সেটা আমাদের তুলতে হবে। এ কারণেই ইতিহাস অতীত নয়, ইতিহাস আমাদের বর্তমানের দিশা তৈরি করে। বর্তমান রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা একটা কর্তৃত্ববাদী মডেল, যা ৯০ এর দশক থেকে বিভিন্ন দেশে চালু আছে। তবে, দেশে বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে এই মডেল চালু হয়েছে। কাজেই আমরা এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে ফ্যাসিবাদকে আমাদের ভবিতব্য হিসেবে চিন্তা করা হচ্ছে। ফলে, এই অবস্থায় এই অবস্থায় পরিবর্তন আসতে হলে, আমাদের সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে, সংস্কার করতে হবে। সরকার যদি নিরাপত্তা চায়, তাহলে অবশ্যই সংবিধান পরিবর্তন করেই সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের বিভিন্ন স্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

মানুষ যেভাবে গণসমাবেশে যাচ্ছে তা অভ্যুত্থানের মতোই : মান্না

আপডেট সময় : ০৮:১৭:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির চলমান বিভাগীয় গণসমাবেশের দিকে ইঙ্গিত করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, মানুষ যেভাবে সমাবেশগুলোতে অংশ নিচ্ছে, এগুলো অভ্যুত্থানের মতোই। সব কিছু বন্ধ, তারপরও মানুষ যাচ্ছে। এরা সবাই বিএনপির সমর্থক নয়। এখানে সাধারণ মানুষও আছে, যারা মনে করেন জিনিসপত্রের দাম কমা দরকার।

শুক্রবার (০৪ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে ৫০তম সংবিধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘সংবিধান সংস্কার কেন প্রয়োজন এবং কিভাবে সম্ভব’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় মান্না এ কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মানুষ এখনকার ক্ষমতাসীনদের অত্যাচারে জর্জরিত। দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে যাকে পায় তাকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছে, কারণ তাদের তো বাঁচতে হবে।

গণতন্ত্র মঞ্চ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, গণতন্ত্র মোর্চার যে বইগুলো আছে সেগুলো নিশ্চয় পড়ে দেখেছেন। যেগুলো বলেছি, তার ভিত্তিতে থাকতে চাই, লড়াইটা করতে চাই। লাগাতারভাবে এই কথাগুলো বলতে চাই। জনগণের ভাষায় কথা বলতে হবে। এই জোট সম্পর্কে মানুষের মধ্যে যেন সবচাইতে ভালো আগ্রহ জন্মে। মানুষ মনে করবে মুক্তি এরাই (গণতন্ত্র মঞ্চ) দিতে পারে, ওরা (অনান্য রাজনৈতিক দল) যতোই বড় দল হোক বড় বড় কথা বলুক ওদের দিয়ে হবে না।

সংবিধানে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন জানিয়ে মান্না বলেন, সংবিধান পরিবর্তন করতে হলে জেনে-বুঝে ধীরে এগিয়ে যেতে হবে। এই সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে জারের মতো ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ লোকই সংবিধানের ধারা সম্পর্কে জানে না। সংবিধানের ৭ ধারা থাকলে এই সরকারের বিরুদ্ধে কোথাও কিছু বলা যাবে না। ৭ ধারা থাকলে মানুষের অধিকার থাকবে না। সুতরাং মানুষকে সংবিধান সম্পর্কে সহজ করে বলতে হবে, যাতে মানুষ বিশ্বাস করে এই সংবিধান পরিবর্তন করা দরকার।

তিনি আরও বলেন, মানুষকে সংবিধান বুঝিয়ে আন্দোলনে আনা কষ্ট। মানুষকে ‘দ্রব্যমূল্য বেশি রাখা হচ্ছে’, ‘এরা (ক্ষমতাসীনরা) চোর’ বলে আনতে পারবেন।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশে স্বাধীনতা এলো, দেখা গেলো শাসকরা সেটার উপযোগী রাষ্ট্র ব্যবস্থা করার ব্যাপারে আগ্রহী নন। প্রচণ্ড এক স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে রয়ে গেছে। সংবিধান প্রণয়নের মূল দৃষ্টিভঙ্গি দেখলে মনে হবে একটা দল তাদের কাছে চিরদিন ক্ষমতা রাখতে হবে, তারাই চিরদিন দেশ চালিয়ে যাবে। একজন ব্যক্তি কি চিরদিন থাকবেন? নানা কারণেই তো না থাকতে পারেন তিনি। ফলে, এই যে পুরো সংবিধান নির্মাণের প্রক্রিয়া, তাতে একটা গৌরব তো আছেই, কিন্তু পাশাপাশি যে গলদ আছে, সেটা আমাদের তুলতে হবে। এ কারণেই ইতিহাস অতীত নয়, ইতিহাস আমাদের বর্তমানের দিশা তৈরি করে। বর্তমান রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা একটা কর্তৃত্ববাদী মডেল, যা ৯০ এর দশক থেকে বিভিন্ন দেশে চালু আছে। তবে, দেশে বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে এই মডেল চালু হয়েছে। কাজেই আমরা এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে ফ্যাসিবাদকে আমাদের ভবিতব্য হিসেবে চিন্তা করা হচ্ছে। ফলে, এই অবস্থায় এই অবস্থায় পরিবর্তন আসতে হলে, আমাদের সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে, সংস্কার করতে হবে। সরকার যদি নিরাপত্তা চায়, তাহলে অবশ্যই সংবিধান পরিবর্তন করেই সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের বিভিন্ন স্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।