নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে পারবে না বিএনপি।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে মিরপুর চিড়িয়াখানা সড়কের শাহ আলী ঈদগাহ মাঠ এলাকায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে একথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা (আওয়ামী লীগ) বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টিতে যেতে চাই না। তারা আমাদের সঙ্গে পারবে না। এখনও সময় আছে পাল্টাপাল্টি বন্ধ করুন। বিএনপি রাজপথ দখলে মাঠে নামবে, তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগও রাস্তায় নামবে। খেলা হবে রাজপথে।

তিনি আরো বলেন, বিএনপি যতই অপপ্রচার করুক না কেন, কোনো লাভ হবে না। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে, আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হলে, আওয়ামী লীগ সরকারকে নির্বাচনে জিতিয়ে আনতে হবে।

এসময় বিএনপির গণসমাবেশের প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি মানেই ভুয়া দল। তারা ১০ ডিসেম্বর সরকারকে গদি থেকে নামিয়ে দিতে চেয়েছিল কিন্তু পারেনি। তারা অনেক কথাই বলেছে, তার কোনোটাই সঠিক নয়। বিএনপি যা বলে তা ভুয়া। মির্জা ফখরুল যা বলেন তা-ও ভুয়া। ১০ ডিসেম্বর তো এই নগরীতে বিজয় মিছিল হওয়ার কথা ছিল। ১০ ডিসেম্বর তো এমনও কথা ছিল তারেক রহমান এসে নেতৃত্ব দেবেন। ১০ ডিসেম্বর এমনও কথা ছিল বেগম জিয়া জেল থেকে এসে বিজয় মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন, সরকারের পতন অনিবার্য। কি হলো? ১০ ডিসেম্বর ভুয়া, ৩০ ডিসেম্বর ভুয়া।

বিএনপির সঙ্গে পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে না জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) আমাদের কেন্দ্র কর্মসূচি পালন করেছে, আজকে মহানগর এবং অন্যান্য সংগঠন করছে। এটা আমাদের কর্মসূচি, এখানে পাল্টা পাল্টির কোনও বিষয় নেই। কার সঙ্গে পাল্টা-পাল্টি করবো।

বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবির প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে আদালত আদেশ দিয়ে মিউজিয়ামে পাঠিয়ে দিয়েছেন। একটা মৃত ইস্যুকে জীবন্ত করবেন? -এটা অসাংবিধানিক, অস্বাভাবিক। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমরা চাই না, জনগণ চায় না। বিএনপিকে এখন তত্ত্বাবধায়কের ভূত মাথা থেকে নামাতে হবে। তত্ত্বাবধায়কের ভূত নামিয়ে ফেলুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বপ্ন দেখলে হবে না। স্বপ্ন কর্পূরের মতো উবে যাবে। বাস্তবায়ন হবে না। এখনও সময় আছে এসব স্বপ্ন দেখা বাদ দিয়ে সঠিক পথে নির্বাচনে আসুন।

তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, আমাদেরও সেভাবে হবে। সরকার শুধু রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ সরকার নির্বাচনে করবে না। ফাইনাল খেলা আগামী বছর এই জানুয়ারি মাসে হবে।

কাদের বলেন, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুরে বিএনপির ওপর হামলার দাবি ভুয়া, মির্জা ফখরুল ভুল তথ্য দিয়েছেন। উল্টো বিএনপির কর্মসূচি থেকে পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে।

বিভিন্ন থানা ওয়ার্ড কমিটি দ্রুত দেওয়া নির্দেশ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বজলু (শেখ বজলুর রহমান) ও কচিকে (এসএ মান্নান কচি) বলবো, যে কমিটিগুলো দেওয়া হয়নি দ্রুত দিয়ে দাও। কারণ, ভেতরে ভেতরে নেতাকর্মীরা হতাশ হলে যে জোয়ার আপনারা তুলেছেন সেটা ভাটা পড়ে যাবে।

বঙ্গবন্ধু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি স্বদেশে এসেছিলেন বলেই স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছিল।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাদেক খান, আগা খান মিন্টু। আলোচনা সভায়টি সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএ মান্নান কচি।