ঢাকা ০৮:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পাকিস্তানজুড়ে সহিংসতায় নিহত ৪

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:০১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মে ২০২৩
  • / ৪৫১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে ছড়িয়ে পরা সহিংসতার দ্বিতীয় দিনে পেশোয়ারে চারজন নিহত হয়েছে।

খাইবার পাখতুনখোয়া, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান ও রাজধানী ইসলামাবাদে সেনা মোতায়েনের দাবি উঠেছে। সেই সঙ্গে সিন্ধু প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

দেশটির সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে এমনটি উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে।

দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সংঘাতের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইমরান খানের কয়েক হাজার সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাঞ্জাবেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৯৪৫ জনকে।

লেডি রিডিং হাসপাতালের মুখপাত্র জানিয়েছেন, জরুরি কক্ষের চিকিৎসকরা গুলিবিদ্ধ চারটি মরদেহ গ্রহণ করেছেন। এছাড়া আহত অন্তত ২৭ জনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

মোবাইল ইন্টারনেট সেবা দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টু্‌ইটার, ইউটিউব এবং ফেসবুকও বন্ধ রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর ছড়িয়ে পরা সংঘর্ষে এক জন নিহতের ঘটনায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয় দেশজুড়ে।

একই দিন বুধবার বিকেলে আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ইমরান খানের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। এর আগে দেশটির জাতীয় দুর্নীতি দমন সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) ইমরান খানকে ১৪ দিনের রিমান্ডে চায়।

ইমরান খানকে আদালতে তোলার আগে এনএবি সূত্র জানায়, তারা আদালতের কাছে ইমরান খানের সর্বোচ্চসংখ্যক ১৪ দিনের রিমান্ড চায়।

ইমরান খানের পর তেহরিক-ই-ইনসাফের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা মহাসচিব আসাদ ওমরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের সদস্যরা তাকে ইসলামাবাদের আদালত চত্বর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখানে তিনি ইমরান খানের আগাম জামিনের আবেদন করতে গিয়েছিলেন।

পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মেহমুদ কুরেশিকেও ইসলামাবাদ হাইকোর্টের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

খাইবার পাখতুনখোয়া রাজ্য কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনী আহ্বান করেছে। এর আগে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১০ কোম্পানি সেনা মোতায়েনের অনুমতি চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করলে তা অনুমোদন করা হয়।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা ও শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনী স্থানীয় জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি কাজ করবে।

এদিকে, এক বিবৃতিতে পাঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে, প্রদেশে সরকারি সম্পত্তি, পুলিশ ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার ওপর হামলার ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রদেশজুড়ে সহিংস কর্মকাণ্ড, ভাঙচুর, সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষতিতে জড়িত দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দুর্বৃত্তের হামলায় ১৩০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। প্রদেশজুড়ে ৯৪৫ জন আইন ভঙ্গকারী ও দুর্বৃত্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পাঞ্জাব পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, পুলিশ ও সরকারি সংস্থার ২৫টিরও বেশি গাড়ি ধ্বংস ও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ১৪টিরও বেশি সরকারি ভবনে হামলা চালিয়েছেন, লুটপাট করেছেন ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করেছে।

অন্যদিকে, পেশোয়ারে সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ২৭ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পেশোয়ারে কমপক্ষে ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি, যানবাহন, মেট্রো বাস এবং সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ক্ষতি করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অগ্নিসংযোগ, পাথর নিক্ষেপ, ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগও আনা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য উৎস থেকে হামলাকারীদের শনাক্ত করা হচ্ছে।

ইমরান খানকে মঙ্গলবার (৯ মে) বিকেলে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট চত্বর থেকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় ইমরানকে হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পাকিস্তান।

রাজধানী ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা অমান্য করে বিক্ষোভ করেন পিটিআই দলের সমর্থকরা। এ ছাড়া করাচি, লাহোর, পেশোয়ারসহ ছোট-বড় সব শহরে বিক্ষোভ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেছে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে বিক্ষোভকারীদের। সূত্র: জিও নিউজ

নিউজটি শেয়ার করুন

পাকিস্তানজুড়ে সহিংসতায় নিহত ৪

আপডেট সময় : ১১:০১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মে ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে ছড়িয়ে পরা সহিংসতার দ্বিতীয় দিনে পেশোয়ারে চারজন নিহত হয়েছে।

খাইবার পাখতুনখোয়া, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান ও রাজধানী ইসলামাবাদে সেনা মোতায়েনের দাবি উঠেছে। সেই সঙ্গে সিন্ধু প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

দেশটির সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে এমনটি উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে।

দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সংঘাতের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইমরান খানের কয়েক হাজার সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাঞ্জাবেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৯৪৫ জনকে।

লেডি রিডিং হাসপাতালের মুখপাত্র জানিয়েছেন, জরুরি কক্ষের চিকিৎসকরা গুলিবিদ্ধ চারটি মরদেহ গ্রহণ করেছেন। এছাড়া আহত অন্তত ২৭ জনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

মোবাইল ইন্টারনেট সেবা দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টু্‌ইটার, ইউটিউব এবং ফেসবুকও বন্ধ রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর ছড়িয়ে পরা সংঘর্ষে এক জন নিহতের ঘটনায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয় দেশজুড়ে।

একই দিন বুধবার বিকেলে আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ইমরান খানের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। এর আগে দেশটির জাতীয় দুর্নীতি দমন সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) ইমরান খানকে ১৪ দিনের রিমান্ডে চায়।

ইমরান খানকে আদালতে তোলার আগে এনএবি সূত্র জানায়, তারা আদালতের কাছে ইমরান খানের সর্বোচ্চসংখ্যক ১৪ দিনের রিমান্ড চায়।

ইমরান খানের পর তেহরিক-ই-ইনসাফের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা মহাসচিব আসাদ ওমরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের সদস্যরা তাকে ইসলামাবাদের আদালত চত্বর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখানে তিনি ইমরান খানের আগাম জামিনের আবেদন করতে গিয়েছিলেন।

পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মেহমুদ কুরেশিকেও ইসলামাবাদ হাইকোর্টের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

খাইবার পাখতুনখোয়া রাজ্য কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনী আহ্বান করেছে। এর আগে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১০ কোম্পানি সেনা মোতায়েনের অনুমতি চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করলে তা অনুমোদন করা হয়।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা ও শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনী স্থানীয় জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি কাজ করবে।

এদিকে, এক বিবৃতিতে পাঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে, প্রদেশে সরকারি সম্পত্তি, পুলিশ ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার ওপর হামলার ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রদেশজুড়ে সহিংস কর্মকাণ্ড, ভাঙচুর, সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষতিতে জড়িত দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দুর্বৃত্তের হামলায় ১৩০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। প্রদেশজুড়ে ৯৪৫ জন আইন ভঙ্গকারী ও দুর্বৃত্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পাঞ্জাব পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, পুলিশ ও সরকারি সংস্থার ২৫টিরও বেশি গাড়ি ধ্বংস ও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ১৪টিরও বেশি সরকারি ভবনে হামলা চালিয়েছেন, লুটপাট করেছেন ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করেছে।

অন্যদিকে, পেশোয়ারে সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ২৭ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পেশোয়ারে কমপক্ষে ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি, যানবাহন, মেট্রো বাস এবং সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ক্ষতি করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অগ্নিসংযোগ, পাথর নিক্ষেপ, ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগও আনা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য উৎস থেকে হামলাকারীদের শনাক্ত করা হচ্ছে।

ইমরান খানকে মঙ্গলবার (৯ মে) বিকেলে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট চত্বর থেকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় ইমরানকে হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পাকিস্তান।

রাজধানী ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা অমান্য করে বিক্ষোভ করেন পিটিআই দলের সমর্থকরা। এ ছাড়া করাচি, লাহোর, পেশোয়ারসহ ছোট-বড় সব শহরে বিক্ষোভ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেছে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে বিক্ষোভকারীদের। সূত্র: জিও নিউজ