ঢাকা ০১:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৯:২৩:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪
  • / ৫০৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, দেশের সব হাসপাতালগুলো যেন প্রস্তুত রাখা হয়। রোগীরা যখন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন বা জ্বর হয় তারা যেন অতি দ্রুত হাসপাতালে আসেন। অনেক সময় দেখা যায় অনেক দেরিতে আসেন। তখন কিছু করা যায় না। এই ম্যাসেজগুলো আমরা দিচ্ছি। ডেঙ্গুর প্রজনন ও বিস্তার কীভাবে হয় সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে আমরা প্রিভেনশন নেব প্রতি ওয়ার্ডে।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সচিবালয়ে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূলে করণীয় বিষয়াদি নিয়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে আন্তঃমন্ত্রণাল বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ডেঙ্গু প্রতিরোধের বিষয়ে কাজ করতে হবে। কিভাবে কাজ করতে পারি সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশের সকল হাসপাতালও প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। আক্রান্তের লক্ষণ দেখা গেলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে আসার অনুরোধ থাকবে। কেননা দেরি করলে ঝুঁকি বাড়ে। সমন্বয় যেন ভালো হয় তাই এ সভার আয়োজন করা।

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, দেশে বিগত ২৩ বছরে যত ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছে গত ২০২৩ সালে এক বছরেই তার থেকে বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছে। অর্থাৎ গত ২৩ বছরে দেশে মোট ডেঙ্গু রোগী ছিল প্রায় আড়াই লাখ। কিন্তু গত ২০২৩ সালে মাত্র এক বছরেই আক্রান্ত হয় প্রায় ৩ লাখ।

তিনি আরও বলেন, এই সংখ্যা শুধু হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের। এর বাইরে তো আরও রোগী ছিলই। এতেই বোঝা যায়, ডেঙ্গু রোগী নিয়ে আমাদের এবার আগে থেকেই সতর্ক না হয়ে কোন উপায় নেই।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে আমাদেরকে এক দিকে যেমন মশা মারতে হবে, আবার অন্যদিকে প্রাদুর্ভাব কমাতে আমাদেরকে আগে থেকেই সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। সবার আগে আমাদের নিজ নিজ এলাকার কমিউনিটি সম্পৃক্ততা ও সচেতনতা বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, মশা মারার জন্য ওষুধ যেমন মান সম্পন্ন কিনতে হবে তেমনি আমাদেরকে ভালো ট্রিটমেন্ট ব্যাবস্থাও রাখতে হবে। তবে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আজ থেকে যেভাবে উদ্যোগ নেওয়া শুরু হলো, এটিকে চলমান রেখে সব সেক্টরকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

সভায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে লার্ভার তথ্য জানতে হবে। নিয়ম না মানলে জরিমানার ব্যাবস্থা করতে হবে। দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় যারা বাধা হবে তাদেরকে জরিমানা করাসহ আরও কঠোর নিয়ম হাতে নিতে হবে।

সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত সব রোগীর সময় মতো চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। কোনো রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পাঠানো যাবে না। ২০২৩ সালের ডেঙ্গুতে নারী ও শিশু বেশি কেন মারা গেল সেটি নিয়ে গবেষণা করে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর মানুষকে সঠিক তথ্য জানাতে হবে।

এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ করতে আমাদেরকে এক হয়ে মাঠে নেমে কাজ করতে হবে। কোনো ভেদাভেদ যেন আমাদের মধ্যে না হয়। করোনা যেভাবে আমরা সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করেছি, ডেঙ্গুও আমরা এক হয়ে সমন্বিতভাবে প্রতিরোধ করবো। একইসঙ্গে এ বছর আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করে পরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই করে আমাদেরকে ওষুধ কেনার উদ্যোগ নিতে হবে।

সভায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, করোনার মতো ডেঙ্গু প্রতিরোধে এবছর আমরা আগেভাগেই এই সমন্বয় সভার আয়োজন করেছি। আশা করছি, এ বছর সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে এক যোগে কাজ করে আক্রান্ত ও মৃত্যুহার অনেক কমিয়ে আনতে সক্ষম হবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশ

আপডেট সময় : ০৯:২৩:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, দেশের সব হাসপাতালগুলো যেন প্রস্তুত রাখা হয়। রোগীরা যখন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন বা জ্বর হয় তারা যেন অতি দ্রুত হাসপাতালে আসেন। অনেক সময় দেখা যায় অনেক দেরিতে আসেন। তখন কিছু করা যায় না। এই ম্যাসেজগুলো আমরা দিচ্ছি। ডেঙ্গুর প্রজনন ও বিস্তার কীভাবে হয় সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে আমরা প্রিভেনশন নেব প্রতি ওয়ার্ডে।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সচিবালয়ে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূলে করণীয় বিষয়াদি নিয়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে আন্তঃমন্ত্রণাল বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ডেঙ্গু প্রতিরোধের বিষয়ে কাজ করতে হবে। কিভাবে কাজ করতে পারি সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশের সকল হাসপাতালও প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। আক্রান্তের লক্ষণ দেখা গেলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে আসার অনুরোধ থাকবে। কেননা দেরি করলে ঝুঁকি বাড়ে। সমন্বয় যেন ভালো হয় তাই এ সভার আয়োজন করা।

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, দেশে বিগত ২৩ বছরে যত ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছে গত ২০২৩ সালে এক বছরেই তার থেকে বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছে। অর্থাৎ গত ২৩ বছরে দেশে মোট ডেঙ্গু রোগী ছিল প্রায় আড়াই লাখ। কিন্তু গত ২০২৩ সালে মাত্র এক বছরেই আক্রান্ত হয় প্রায় ৩ লাখ।

তিনি আরও বলেন, এই সংখ্যা শুধু হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের। এর বাইরে তো আরও রোগী ছিলই। এতেই বোঝা যায়, ডেঙ্গু রোগী নিয়ে আমাদের এবার আগে থেকেই সতর্ক না হয়ে কোন উপায় নেই।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে আমাদেরকে এক দিকে যেমন মশা মারতে হবে, আবার অন্যদিকে প্রাদুর্ভাব কমাতে আমাদেরকে আগে থেকেই সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। সবার আগে আমাদের নিজ নিজ এলাকার কমিউনিটি সম্পৃক্ততা ও সচেতনতা বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, মশা মারার জন্য ওষুধ যেমন মান সম্পন্ন কিনতে হবে তেমনি আমাদেরকে ভালো ট্রিটমেন্ট ব্যাবস্থাও রাখতে হবে। তবে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আজ থেকে যেভাবে উদ্যোগ নেওয়া শুরু হলো, এটিকে চলমান রেখে সব সেক্টরকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

সভায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে লার্ভার তথ্য জানতে হবে। নিয়ম না মানলে জরিমানার ব্যাবস্থা করতে হবে। দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় যারা বাধা হবে তাদেরকে জরিমানা করাসহ আরও কঠোর নিয়ম হাতে নিতে হবে।

সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত সব রোগীর সময় মতো চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। কোনো রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পাঠানো যাবে না। ২০২৩ সালের ডেঙ্গুতে নারী ও শিশু বেশি কেন মারা গেল সেটি নিয়ে গবেষণা করে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর মানুষকে সঠিক তথ্য জানাতে হবে।

এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ করতে আমাদেরকে এক হয়ে মাঠে নেমে কাজ করতে হবে। কোনো ভেদাভেদ যেন আমাদের মধ্যে না হয়। করোনা যেভাবে আমরা সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করেছি, ডেঙ্গুও আমরা এক হয়ে সমন্বিতভাবে প্রতিরোধ করবো। একইসঙ্গে এ বছর আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করে পরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই করে আমাদেরকে ওষুধ কেনার উদ্যোগ নিতে হবে।

সভায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, করোনার মতো ডেঙ্গু প্রতিরোধে এবছর আমরা আগেভাগেই এই সমন্বয় সভার আয়োজন করেছি। আশা করছি, এ বছর সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে এক যোগে কাজ করে আক্রান্ত ও মৃত্যুহার অনেক কমিয়ে আনতে সক্ষম হবো।