ঢাকা ০৭:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

চলতি বোরো মৌসুমে পানির তীব্র সঙ্কট : কৃষকেরা হতাশায়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:২২:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৪৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
মোঃ হেলাল উদ্দিন কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলায়  চলতি বোরো মৌসুমে চলছে সেঁচের পানির তীব্র সঙ্কট। স্থানীয় কৃষকদের দাবি, প্রায় ১৫ হাজার একর জমির ফসল উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে উপজেলার বড় হাওরের কৃষকরা হতাশায় ভুগছেন। এক ফসলের ওপর নির্ভরশীল হাওরের কৃষকরা জমিতে কোনো রকমে ধানের চারা রোপণ করতে পারলেও পানির অভাবে ফসল উৎপাদনের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম হতাশায় মধ্যে পড়েছেন।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, চলতি বোরো মৌসুমে কোনরকমে জমিতে চারা রোপণ করলেও বর্তমানে মেঘনা নদীর শাখা নদী ইকুরদিয়া ও মাকসা নদীতে পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে উপজেলার বড় হাওর ও তার আশপাশের জমিতে সেঁচ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। পানির তীব্র সঙ্কটের কারণে চরম হাহাকারের মধ্যে আছেন এখানকার কৃষকরা।

এ বিষয়ে কৃষি অধিদফতর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও উপজেলা সেঁচ কমিটির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না বলে কৃষকদের অভিযোগ।

৩১ ডিসেম্বর সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এই হাওরে সেচের জন্য বিএডিসির উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন আটটি সেঁচ প্রকল্পসহ মোট ১৬টি সেঁচ প্রকল্পের পাম্প রয়েছে। এছাড়াও কৃষকদের ব্যক্তিগত আরো প্রায় ৩২টি সেঁচের পাম্প থাকলেও নদীতে পানির অভাবে বেশ কয়েকটি সেচ প্রকল্প বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাছাড়াও আরো কয়েকটি পাম্প বন্ধ হওয়ার পথে। এর ফলে অনেক বোরো জমিতে পানির তীব্র সঙ্কট বলেও কৃষকরা জানান।

কৃষক আব্দুল আহাদ হতাশার সুরে বলেন, এ সময়ে পানি না থাকায় সামনের দিনগুলোতে কি অবস্থা হবে তা জানি না। কৃষক বজলু মিয়া বলেন, ১৫ একর জমি আবাদ করেছি। এখনই যেভাবে সেচের পানির অভাব দেখা দিয়েছে, বাকি দিন কিভাবে যাবে! কৃষক শাহিন মিয়া জানান, এ সময় বোরো জমিতে পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নদীতে পানি না থাকায় সেঁচের পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় একাধিক কৃষকের মতে, এখানে প্রায় ১৫ হাজার একর বোরো আবাদের জমি রয়েছে। সেঁচের পানির অভাবে এই বিস্তীর্ণ জমির ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যহত হতে পারে। জরুরি ভিত্তিতে এখানকার নদীটি খননের দাবিও জানান তারা। এখানকার মানুষের সারা বছর খাদ্য ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে এই বোর চাষ। এই অঞ্চলের আবাদি জমির শতকরা ৮৫ থেকে ৯০ ভাগ জমিতেই বোরো ধান উৎপাদন হয়। উৎপাদিত ধানে স্থানীয় খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপশি পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জের ভৈরব অঞ্চল হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খাদ্য চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে।

অষ্টগ্রাম ঘায়েলা ২৫ কিউসেক সেঁচ প্রকল্পের ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম টিপু বলেন, প্রায় ১২’শ একর জমি এই সেঁচ প্রকল্পের আওতাভুক্ত। এই সময়েই নদীতে পানি নেই। প্রায় মাস যাবত নদী সেঁচের পাম্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্টদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ দিকে কৃষকরা দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন পার করছে! নদীতে পানির অভাবে বেকায়দায় আছে এখানকার কৃষকরা।

অষ্টগ্রাম উপজেলার দায়িত্বে থাকা বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী রওকন জাহান জানান, সার্বিক পরিস্থিতির বিষয় তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মতিউর রহমানের কাছে হাওরে কৃষকদের পানি সঙ্কটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত থাকার কথা জানিয়ে বলেন, এ বিষয়ে আমি পরে কথা বলব।

বা/খ : এসআর।

নিউজটি শেয়ার করুন

চলতি বোরো মৌসুমে পানির তীব্র সঙ্কট : কৃষকেরা হতাশায়

আপডেট সময় : ০৮:২২:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
মোঃ হেলাল উদ্দিন কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলায়  চলতি বোরো মৌসুমে চলছে সেঁচের পানির তীব্র সঙ্কট। স্থানীয় কৃষকদের দাবি, প্রায় ১৫ হাজার একর জমির ফসল উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে উপজেলার বড় হাওরের কৃষকরা হতাশায় ভুগছেন। এক ফসলের ওপর নির্ভরশীল হাওরের কৃষকরা জমিতে কোনো রকমে ধানের চারা রোপণ করতে পারলেও পানির অভাবে ফসল উৎপাদনের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম হতাশায় মধ্যে পড়েছেন।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, চলতি বোরো মৌসুমে কোনরকমে জমিতে চারা রোপণ করলেও বর্তমানে মেঘনা নদীর শাখা নদী ইকুরদিয়া ও মাকসা নদীতে পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে উপজেলার বড় হাওর ও তার আশপাশের জমিতে সেঁচ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। পানির তীব্র সঙ্কটের কারণে চরম হাহাকারের মধ্যে আছেন এখানকার কৃষকরা।

এ বিষয়ে কৃষি অধিদফতর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও উপজেলা সেঁচ কমিটির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না বলে কৃষকদের অভিযোগ।

৩১ ডিসেম্বর সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এই হাওরে সেচের জন্য বিএডিসির উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন আটটি সেঁচ প্রকল্পসহ মোট ১৬টি সেঁচ প্রকল্পের পাম্প রয়েছে। এছাড়াও কৃষকদের ব্যক্তিগত আরো প্রায় ৩২টি সেঁচের পাম্প থাকলেও নদীতে পানির অভাবে বেশ কয়েকটি সেচ প্রকল্প বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাছাড়াও আরো কয়েকটি পাম্প বন্ধ হওয়ার পথে। এর ফলে অনেক বোরো জমিতে পানির তীব্র সঙ্কট বলেও কৃষকরা জানান।

কৃষক আব্দুল আহাদ হতাশার সুরে বলেন, এ সময়ে পানি না থাকায় সামনের দিনগুলোতে কি অবস্থা হবে তা জানি না। কৃষক বজলু মিয়া বলেন, ১৫ একর জমি আবাদ করেছি। এখনই যেভাবে সেচের পানির অভাব দেখা দিয়েছে, বাকি দিন কিভাবে যাবে! কৃষক শাহিন মিয়া জানান, এ সময় বোরো জমিতে পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নদীতে পানি না থাকায় সেঁচের পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় একাধিক কৃষকের মতে, এখানে প্রায় ১৫ হাজার একর বোরো আবাদের জমি রয়েছে। সেঁচের পানির অভাবে এই বিস্তীর্ণ জমির ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যহত হতে পারে। জরুরি ভিত্তিতে এখানকার নদীটি খননের দাবিও জানান তারা। এখানকার মানুষের সারা বছর খাদ্য ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে এই বোর চাষ। এই অঞ্চলের আবাদি জমির শতকরা ৮৫ থেকে ৯০ ভাগ জমিতেই বোরো ধান উৎপাদন হয়। উৎপাদিত ধানে স্থানীয় খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপশি পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জের ভৈরব অঞ্চল হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খাদ্য চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে।

অষ্টগ্রাম ঘায়েলা ২৫ কিউসেক সেঁচ প্রকল্পের ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম টিপু বলেন, প্রায় ১২’শ একর জমি এই সেঁচ প্রকল্পের আওতাভুক্ত। এই সময়েই নদীতে পানি নেই। প্রায় মাস যাবত নদী সেঁচের পাম্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্টদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ দিকে কৃষকরা দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন পার করছে! নদীতে পানির অভাবে বেকায়দায় আছে এখানকার কৃষকরা।

অষ্টগ্রাম উপজেলার দায়িত্বে থাকা বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী রওকন জাহান জানান, সার্বিক পরিস্থিতির বিষয় তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মতিউর রহমানের কাছে হাওরে কৃষকদের পানি সঙ্কটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত থাকার কথা জানিয়ে বলেন, এ বিষয়ে আমি পরে কথা বলব।

বা/খ : এসআর।