ঢাকা ০১:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এপ্রিলে পানিতে ডুবে ১৬ জনের মৃত্যু

মোঃ হায়দার আলী, নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৮:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৪২৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
রাজশাহী অঞ্চলে চলতি এপ্রিল মাসের শুরু থেকে চলছে তাপপ্রবাহ। এই তাপপ্রবাহ কখনও মাঝারি আবার কখনও তীব্ররূপ ধারণ করছে। এই তাপদাহ থেকে রক্ষা পেতে গোসলে নামছে শিশু-কিশোররা। অসতর্কতায় যাচ্ছে প্রাণও। রাজশাহী অঞ্চলে চলতি মাসে পানিতে ডুবে প্রাণ গেছে ১৬ জনের। যার অধিকাংশ শিশু-কিশোর। সবশেষ মঙ্গলবার পানিতে ডুবে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। আর এ মাসে পদ্মা নদীতে ডুবে মারা গেছে ৯ জন।
পদ্মা নদীর শ্যামপুর ঘাটে গোসল করতে নেমে মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল তিন কিশোর মারা গেছে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে তাদের লাশ উদ্ধার করে। তারা হলো- কাটাখালী বাখরাবাজ এলাকার রেন্টুর ছেলে যুবরাজ (১২), লিটনের ছেলে আরিফ (১৩) ও নুর ইসলামের ছেলে জামাল (১২)।
শুক্রবার ১৯ এপ্রিল পদ্মা নদীর মুর্শিদপুর এলাকার খেয়াহাটের ডুবে মারা যায় উপজেলার খায়েরহাট গ্রামের সুজন আলীর ১০ বছরের ছেলে সিয়াম হোসেন সজিব (১০) শনিবার ২০ এপ্রিল বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদীতে নৌকায় করে গোসল করতে গিয়ে মারা যান আসাদ হোসেন (১৮) নামে এক তরুণ।
রোববার ২১ এপ্রিল পবায় পদ্মা নদীতে গোসল করতে নামেন বাপ্পি হোসেন (১৬) ও মনির হোসেন (২০)। পরে ডুবে মারা যান তারাও। গোসল করতে নেমে আল আমিন (১২) নামের এক শিশু এবং পুকুরে সাঁতার শিখতে গিয়ে রানা মিয়া (২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
১৪ এপ্রিল রাজশাহীর বাঘায় বিয়ে বাড়িতে এসে পানিতে ডুবে মারা যায় জান্নাত খাতুন (৮)। তবে এখনও ঝিলিক খাতুন (১২) নামের আরেক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। তাকে উদ্ধার করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। মঙ্গলবার ২ এপ্রিল দুপুরে ও বিকালে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রামনাথপুর এবং খয়েরবাড়ি গ্রামে পৃথক এ দুর্ঘটনা ঘটে। আল আমিন উপজলার মুলাডুলি ইউনিয়নের রামনাথপুর গ্রামের খায়রুল ইসলাম বাশারের ছেলে। আর ঈশ্বরদী শহরের পূর্বটেংরী ঈদগাহ পাড়া এলাকার কাশেম আলীর ছেলে রানা মিয়া এবং খয়েরবাড়ি গ্রামের ফোরকান শেখের জামাই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক ঘটনায় নদীতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার ৬ এপ্রিল দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার তর্ত্তিপুরে এক ও ভোলাহাটের গোহালবাড়িতে দুই শিশুর মৃত্যু হয়। মারা যাওয়ারা হলো- প্রিয়াঙ্কা (১১) শিবগঞ্জ উপজেলার রাণীহাটি ইউনিয়ন’র কামারপাড়ার রূপ কুমারের মেয়ে ও মো. আজিজুল হক (১১) ভোলাহাট উপজেলার গোহালবাড়ি ইউনিয়নের রাধানগর কলোনির সুবোধ মিস্ত্রির ছেলে এবং মো. জিহাদ (১১) আব্দুল কাদিরের ছেলে।
রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা আবু সামা বলেন, রাজশাহীতে গত কয়েকদিন ধরে পানিতে ডুবে মৃত্যু ঘটনা বেড়েছে। আমারা ধারণা করছি, গরম থেকে পরিত্রাণ পেতে কিশোররা নদীতে গোসল করতে গিয়ে মারা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যারা মারা যাচ্ছেন তাদের অনেকেই সাঁতার জানতেন না। আবার অনেকেই সাঁতার জানতেন। কিন্তু একজন ডুবে যাচ্ছে দেখে আরেকজন ধরতে গিয়ে দুজনই ডুবে মারা যাচ্ছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। শিশু-কিশোর যারা সাঁতার জানে না তারা যাতে নদীতে গোসলে না যায়, সেদিকে নজর দিতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এটি করা গেলে মৃত্যু অনেকটাই কমে আসবে। সাঁতার না জানার কারণে দেশে প্রতি বছরই বহু মানুষ মারা যায়। শিক্ষার পাশাপাশি শিশুদের সাঁতারও শেখাতে হবে। কোনো শিশু ডুবে মারা গেলে তার শিক্ষার কোনো দাম থাকবে না। জীবন বাঁচাতে তাই সাঁতার শেখাতে হবে। মানুষের মধ্যে আগ্রহ কম। অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।
বাখ//আর

নিউজটি শেয়ার করুন

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এপ্রিলে পানিতে ডুবে ১৬ জনের মৃত্যু

আপডেট সময় : ০৮:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
রাজশাহী অঞ্চলে চলতি এপ্রিল মাসের শুরু থেকে চলছে তাপপ্রবাহ। এই তাপপ্রবাহ কখনও মাঝারি আবার কখনও তীব্ররূপ ধারণ করছে। এই তাপদাহ থেকে রক্ষা পেতে গোসলে নামছে শিশু-কিশোররা। অসতর্কতায় যাচ্ছে প্রাণও। রাজশাহী অঞ্চলে চলতি মাসে পানিতে ডুবে প্রাণ গেছে ১৬ জনের। যার অধিকাংশ শিশু-কিশোর। সবশেষ মঙ্গলবার পানিতে ডুবে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। আর এ মাসে পদ্মা নদীতে ডুবে মারা গেছে ৯ জন।
পদ্মা নদীর শ্যামপুর ঘাটে গোসল করতে নেমে মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল তিন কিশোর মারা গেছে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে তাদের লাশ উদ্ধার করে। তারা হলো- কাটাখালী বাখরাবাজ এলাকার রেন্টুর ছেলে যুবরাজ (১২), লিটনের ছেলে আরিফ (১৩) ও নুর ইসলামের ছেলে জামাল (১২)।
শুক্রবার ১৯ এপ্রিল পদ্মা নদীর মুর্শিদপুর এলাকার খেয়াহাটের ডুবে মারা যায় উপজেলার খায়েরহাট গ্রামের সুজন আলীর ১০ বছরের ছেলে সিয়াম হোসেন সজিব (১০) শনিবার ২০ এপ্রিল বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদীতে নৌকায় করে গোসল করতে গিয়ে মারা যান আসাদ হোসেন (১৮) নামে এক তরুণ।
রোববার ২১ এপ্রিল পবায় পদ্মা নদীতে গোসল করতে নামেন বাপ্পি হোসেন (১৬) ও মনির হোসেন (২০)। পরে ডুবে মারা যান তারাও। গোসল করতে নেমে আল আমিন (১২) নামের এক শিশু এবং পুকুরে সাঁতার শিখতে গিয়ে রানা মিয়া (২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
১৪ এপ্রিল রাজশাহীর বাঘায় বিয়ে বাড়িতে এসে পানিতে ডুবে মারা যায় জান্নাত খাতুন (৮)। তবে এখনও ঝিলিক খাতুন (১২) নামের আরেক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। তাকে উদ্ধার করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। মঙ্গলবার ২ এপ্রিল দুপুরে ও বিকালে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রামনাথপুর এবং খয়েরবাড়ি গ্রামে পৃথক এ দুর্ঘটনা ঘটে। আল আমিন উপজলার মুলাডুলি ইউনিয়নের রামনাথপুর গ্রামের খায়রুল ইসলাম বাশারের ছেলে। আর ঈশ্বরদী শহরের পূর্বটেংরী ঈদগাহ পাড়া এলাকার কাশেম আলীর ছেলে রানা মিয়া এবং খয়েরবাড়ি গ্রামের ফোরকান শেখের জামাই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক ঘটনায় নদীতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার ৬ এপ্রিল দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার তর্ত্তিপুরে এক ও ভোলাহাটের গোহালবাড়িতে দুই শিশুর মৃত্যু হয়। মারা যাওয়ারা হলো- প্রিয়াঙ্কা (১১) শিবগঞ্জ উপজেলার রাণীহাটি ইউনিয়ন’র কামারপাড়ার রূপ কুমারের মেয়ে ও মো. আজিজুল হক (১১) ভোলাহাট উপজেলার গোহালবাড়ি ইউনিয়নের রাধানগর কলোনির সুবোধ মিস্ত্রির ছেলে এবং মো. জিহাদ (১১) আব্দুল কাদিরের ছেলে।
রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা আবু সামা বলেন, রাজশাহীতে গত কয়েকদিন ধরে পানিতে ডুবে মৃত্যু ঘটনা বেড়েছে। আমারা ধারণা করছি, গরম থেকে পরিত্রাণ পেতে কিশোররা নদীতে গোসল করতে গিয়ে মারা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যারা মারা যাচ্ছেন তাদের অনেকেই সাঁতার জানতেন না। আবার অনেকেই সাঁতার জানতেন। কিন্তু একজন ডুবে যাচ্ছে দেখে আরেকজন ধরতে গিয়ে দুজনই ডুবে মারা যাচ্ছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। শিশু-কিশোর যারা সাঁতার জানে না তারা যাতে নদীতে গোসলে না যায়, সেদিকে নজর দিতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এটি করা গেলে মৃত্যু অনেকটাই কমে আসবে। সাঁতার না জানার কারণে দেশে প্রতি বছরই বহু মানুষ মারা যায়। শিক্ষার পাশাপাশি শিশুদের সাঁতারও শেখাতে হবে। কোনো শিশু ডুবে মারা গেলে তার শিক্ষার কোনো দাম থাকবে না। জীবন বাঁচাতে তাই সাঁতার শেখাতে হবে। মানুষের মধ্যে আগ্রহ কম। অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।
বাখ//আর