ঢাকা ১০:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য গতিশীলতা আসবে

বেড়া পাম্পিংষ্টেশন-বাঘাবাড়ি সড়ক সম্প্রসারণ ও পূনঃনির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে

শফিউল আযম, বিশেষ প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৮:১৩:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৬৩৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পাবনার বেড়া পাম্পিং ষ্টেশন থেকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ির রাম খারুয়া পর্যন্ত বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাম সড়ক সম্প্রসারণ পূণঃনির্মাণ সমাপ্তির পথে। দীর্ঘ ৩ দশক পর সাড়ে ১৯ কোটি ব্যয়ে সড়কটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে বেড়া পানি উন্নয়ন বিভাগ। সড়কটি নির্মিত হলে পাবনা ও সিরাজগঞ্জের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধিতে ব্যাপক পরিবর্তন সুচিত হবে। এতে বেড়া, শাহজাদপুর, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহর উপজেলার চার লাক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগের দীর্ঘকালের দূর্ভোগের যেমন অবসান হবে তেমনি এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে গতিশীলতা আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বেড়া অফিস সুত্রে জানা যায়, পাবনা সেঁচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১৯৮০ সালে বেড়া পাম্পিং স্টেশনে বাঘাবাড়ি পর্যন্ত বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে যানবাহন চলাচলের জন্য সড়কটি পাঁকা করা হয়। বেড়া পাম্পিং সেন্টশন থেকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ির রাম খারুয়া পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাম সড়কটির দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার। দীর্ঘদিন ধরে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সড়কটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। গত বর্ষা মওসুমে নদীর প্রবল স্রোতে বাঁধের স্রোপ ভেঙে যায়। অবৈধভাবে দখল করে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাম সড়কের ঢালুতে শতাধিক বসতি গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন চেষ্টার পর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শেষে সড়কটি সম্প্রসারণ ও পূনঃনির্মাণ কাজ একেবারে শেষের পথে।

দীর্ঘ প্রায় তিন দশক সড়কটি সংস্কার না করায় বেড়া পাম্পিং ষ্টেশন থেকে রাম খাড়ুয়া পর্যন্ত ৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার অংশ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ায় কৃষকরা কৃষিপণ্য হাট-বাজারে আনা-নেয়া করতে না পারায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয়। এলাকার অসুস্থ রোগিকে এ সড়ক দিয়ে হাসপাতালে নিতে আমাদের নানা বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। এলাকার ছেলে মেয়েরা বিপর্যস্থ এ সড়কে দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে স্কুল কলেজে যেতে হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘের সড়ক নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। কুড়িগ্রামের মেসার্স সালেহ এন্ড মেসার্স বেলাল কন্সট্রাকশন (জেভি) নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এই কাজ বাস্তবায়ন করছে। ইতোমধ্যে সড়ক পূনঃনির্মাণ কাজ ৯৯ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। সড়কটি চালু হলে বেড়া থেকে বাঘাবাড়ির দূরত্ব ৫ কিলোমিটার কমবে। সময় ও জ্বালানী সাশ্রয়ের পাশাপাশি, বেড়া সিএনবি মোড় ও বাঘাবাড়ি তিনমাথা মোড়ে অসহনীয় যানজট থেকে রেহাই পাবেন যাত্রীরা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য তুষার আহমেদ সাচ্চু (মেম্বর) বলেন, ৩০ বছর ব্যবহারের অনুপযোগী সড়কটি নির্মাণ করায় যাতায়াত, কৃষিপণ্য পরিবহণ ও অসুস্থ মানুষকে খুব দ্রুত হাসপাতালে আনা নেয়ায় ব্যাপক পরির্তন সাধিত হবে। আগে কৃষিপণ্য হাট-বাজারে নেয়া ছিল খুব কষ্টসাধ্য কাজ। তাই কৃষকরা বাড়িতেই ফড়িয়াদের কাছে কম দামে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হতেন। এতে তারা ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতো। অসুস্থ রোগীকে খাটিয়ায় তুলে কাঁধে করে হাসপাতালে নিতে হতো। এ সমস্যা থেকে আমরা মুক্তি পাওয়ায় আমরা আনন্দিত।

স্থানীয় বাসিন্দা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাবেক প্রকৌশলী আব্দুর রউফ জানান, সড়ক পাঁকাকরণে গুরুত্বপূর্ণ হলো সাব গ্রেড, ইমপ্রুভ গ্রেড, সাব বেজ, বেস টাইপ-১, কার্পেটিং, সিল কোট ও ম্যাকানিক্যাল কম্পেকশন ডিজাইন ও এষ্টিমেট অনুয়ায়ী সঠিকভাবে করায় কাজের মান অনেক ভাল হয়েছে। ট্রাক চালক আব্দুর রহমান, সিএনজি চালক লুৎফর, বোরাক চালক খবির উদ্দিন বলেন, বেড়া ও বাঘাবাড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কে অনেক যানজট হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কাজে আমাদের অনেক সময় বাঁচবে, জ্বালানী কম লাগবে। আরামে যাতায়াত করতে পারবো।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আকমল হোসেন বলেন, আগে এই সড়কে যাতাযাত করা অনেক কষ্টকর ছিল। আমরা এখন অনায়াসে মালামাল পরিবহনসহ যাতায়াতে অনেক সহজ হবে। সময় কম লাগবে, পথ কম হবে। বাঘাবাড়ি তিন মাথা ও বেড়া সিঅ্যান্ডবি এলাকায় অনেক যানজট পরতে হয় এখন সেটা লাঘব হবে।

নতুন চয়ড়া গ্রামের কৃষক আদর মিয়া প্রামানিক বলেন, রাস্তার কাজ শেষ হচ্ছে। আমাগরে অনেক ভালো হচ্ছে। রুগী নিয়ে যেতে পারবো। হাট-বাজারে ন্যায্যমূল্যে ফসল বেচতে পারবো। ছেলেমেয়ে স্কুলে যেতে পারবে সময়মতো। অসুখ বিসুখ হলে দ্রুত হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া যাবে।

বেড়া-বাঘাবাড়ি সড়ক সম্প্রসারণ ও পূনঃনির্মাণ তদারকিতে নিয়োজিত বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ সাদেকুল ইসলাম সাইটে এ প্রতিনিধিকে বলেন, আশির দশকে বেড়া পাম্পিং স্টেশন ও বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ৩০ বছর পর নতুন করে পূনঃনির্মাণ ও মেরামত করা হচ্ছে। ৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার এই সড়ক বাঘাবাড়ি থেকে বেড়া পাম্পিং স্টেশন পর্যন্ত নির্মাণ করতে প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সড়ক নির্মাণে ব্যবহৃত পাথর, খোয়া, সিসি ব্লক, বিটুমিনসহ অন্যান্য উপকরণ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরোটারি থেকে পরীক্ষা করার পর পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পর সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। গত বন্যায় বাঁধের ধসে পড়া স্লোপে সুরক্ষার জন্য নতুন চয়ড়ায় ৩৫০ মিটার নদীর তীর প্রতিরক্ষা কাজ করা হয়েছে বিকেলে এখানে ভ্রমণ পিপাসুদের ভীড় দেখা যাচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বলেন, এডিপিভুক্ত প্রকল্পের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাম সড়ক নির্মাণে এই প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছিল। ৩০ বছর এটি জড়াজীর্ণ অবস্থায় ছিলো। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের কথা মাথায় রেখে এটি পূনঃনির্মাণ ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো ভারী যানবাহন চলাচল ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করা। এছাড়াও এ অঞ্চলের মানুষের উপকারসহ যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হবে এবং সময় কমে আসবে। এটি নির্মাণের মাধ্যমে একদিকে সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ হবে অন্যদিকে এলাকাবাসী এর সুফল পাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য গতিশীলতা আসবে

বেড়া পাম্পিংষ্টেশন-বাঘাবাড়ি সড়ক সম্প্রসারণ ও পূনঃনির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে

আপডেট সময় : ০৮:১৩:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩

পাবনার বেড়া পাম্পিং ষ্টেশন থেকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ির রাম খারুয়া পর্যন্ত বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাম সড়ক সম্প্রসারণ পূণঃনির্মাণ সমাপ্তির পথে। দীর্ঘ ৩ দশক পর সাড়ে ১৯ কোটি ব্যয়ে সড়কটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে বেড়া পানি উন্নয়ন বিভাগ। সড়কটি নির্মিত হলে পাবনা ও সিরাজগঞ্জের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধিতে ব্যাপক পরিবর্তন সুচিত হবে। এতে বেড়া, শাহজাদপুর, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহর উপজেলার চার লাক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগের দীর্ঘকালের দূর্ভোগের যেমন অবসান হবে তেমনি এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে গতিশীলতা আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বেড়া অফিস সুত্রে জানা যায়, পাবনা সেঁচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১৯৮০ সালে বেড়া পাম্পিং স্টেশনে বাঘাবাড়ি পর্যন্ত বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে যানবাহন চলাচলের জন্য সড়কটি পাঁকা করা হয়। বেড়া পাম্পিং সেন্টশন থেকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ির রাম খারুয়া পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাম সড়কটির দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার। দীর্ঘদিন ধরে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সড়কটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। গত বর্ষা মওসুমে নদীর প্রবল স্রোতে বাঁধের স্রোপ ভেঙে যায়। অবৈধভাবে দখল করে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাম সড়কের ঢালুতে শতাধিক বসতি গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন চেষ্টার পর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শেষে সড়কটি সম্প্রসারণ ও পূনঃনির্মাণ কাজ একেবারে শেষের পথে।

দীর্ঘ প্রায় তিন দশক সড়কটি সংস্কার না করায় বেড়া পাম্পিং ষ্টেশন থেকে রাম খাড়ুয়া পর্যন্ত ৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার অংশ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ায় কৃষকরা কৃষিপণ্য হাট-বাজারে আনা-নেয়া করতে না পারায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয়। এলাকার অসুস্থ রোগিকে এ সড়ক দিয়ে হাসপাতালে নিতে আমাদের নানা বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। এলাকার ছেলে মেয়েরা বিপর্যস্থ এ সড়কে দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে স্কুল কলেজে যেতে হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘের সড়ক নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। কুড়িগ্রামের মেসার্স সালেহ এন্ড মেসার্স বেলাল কন্সট্রাকশন (জেভি) নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এই কাজ বাস্তবায়ন করছে। ইতোমধ্যে সড়ক পূনঃনির্মাণ কাজ ৯৯ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। সড়কটি চালু হলে বেড়া থেকে বাঘাবাড়ির দূরত্ব ৫ কিলোমিটার কমবে। সময় ও জ্বালানী সাশ্রয়ের পাশাপাশি, বেড়া সিএনবি মোড় ও বাঘাবাড়ি তিনমাথা মোড়ে অসহনীয় যানজট থেকে রেহাই পাবেন যাত্রীরা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য তুষার আহমেদ সাচ্চু (মেম্বর) বলেন, ৩০ বছর ব্যবহারের অনুপযোগী সড়কটি নির্মাণ করায় যাতায়াত, কৃষিপণ্য পরিবহণ ও অসুস্থ মানুষকে খুব দ্রুত হাসপাতালে আনা নেয়ায় ব্যাপক পরির্তন সাধিত হবে। আগে কৃষিপণ্য হাট-বাজারে নেয়া ছিল খুব কষ্টসাধ্য কাজ। তাই কৃষকরা বাড়িতেই ফড়িয়াদের কাছে কম দামে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হতেন। এতে তারা ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতো। অসুস্থ রোগীকে খাটিয়ায় তুলে কাঁধে করে হাসপাতালে নিতে হতো। এ সমস্যা থেকে আমরা মুক্তি পাওয়ায় আমরা আনন্দিত।

স্থানীয় বাসিন্দা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাবেক প্রকৌশলী আব্দুর রউফ জানান, সড়ক পাঁকাকরণে গুরুত্বপূর্ণ হলো সাব গ্রেড, ইমপ্রুভ গ্রেড, সাব বেজ, বেস টাইপ-১, কার্পেটিং, সিল কোট ও ম্যাকানিক্যাল কম্পেকশন ডিজাইন ও এষ্টিমেট অনুয়ায়ী সঠিকভাবে করায় কাজের মান অনেক ভাল হয়েছে। ট্রাক চালক আব্দুর রহমান, সিএনজি চালক লুৎফর, বোরাক চালক খবির উদ্দিন বলেন, বেড়া ও বাঘাবাড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কে অনেক যানজট হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কাজে আমাদের অনেক সময় বাঁচবে, জ্বালানী কম লাগবে। আরামে যাতায়াত করতে পারবো।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আকমল হোসেন বলেন, আগে এই সড়কে যাতাযাত করা অনেক কষ্টকর ছিল। আমরা এখন অনায়াসে মালামাল পরিবহনসহ যাতায়াতে অনেক সহজ হবে। সময় কম লাগবে, পথ কম হবে। বাঘাবাড়ি তিন মাথা ও বেড়া সিঅ্যান্ডবি এলাকায় অনেক যানজট পরতে হয় এখন সেটা লাঘব হবে।

নতুন চয়ড়া গ্রামের কৃষক আদর মিয়া প্রামানিক বলেন, রাস্তার কাজ শেষ হচ্ছে। আমাগরে অনেক ভালো হচ্ছে। রুগী নিয়ে যেতে পারবো। হাট-বাজারে ন্যায্যমূল্যে ফসল বেচতে পারবো। ছেলেমেয়ে স্কুলে যেতে পারবে সময়মতো। অসুখ বিসুখ হলে দ্রুত হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া যাবে।

বেড়া-বাঘাবাড়ি সড়ক সম্প্রসারণ ও পূনঃনির্মাণ তদারকিতে নিয়োজিত বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ সাদেকুল ইসলাম সাইটে এ প্রতিনিধিকে বলেন, আশির দশকে বেড়া পাম্পিং স্টেশন ও বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ৩০ বছর পর নতুন করে পূনঃনির্মাণ ও মেরামত করা হচ্ছে। ৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার এই সড়ক বাঘাবাড়ি থেকে বেড়া পাম্পিং স্টেশন পর্যন্ত নির্মাণ করতে প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সড়ক নির্মাণে ব্যবহৃত পাথর, খোয়া, সিসি ব্লক, বিটুমিনসহ অন্যান্য উপকরণ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরোটারি থেকে পরীক্ষা করার পর পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পর সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। গত বন্যায় বাঁধের ধসে পড়া স্লোপে সুরক্ষার জন্য নতুন চয়ড়ায় ৩৫০ মিটার নদীর তীর প্রতিরক্ষা কাজ করা হয়েছে বিকেলে এখানে ভ্রমণ পিপাসুদের ভীড় দেখা যাচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বলেন, এডিপিভুক্ত প্রকল্পের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাম সড়ক নির্মাণে এই প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছিল। ৩০ বছর এটি জড়াজীর্ণ অবস্থায় ছিলো। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের কথা মাথায় রেখে এটি পূনঃনির্মাণ ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো ভারী যানবাহন চলাচল ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করা। এছাড়াও এ অঞ্চলের মানুষের উপকারসহ যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হবে এবং সময় কমে আসবে। এটি নির্মাণের মাধ্যমে একদিকে সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ হবে অন্যদিকে এলাকাবাসী এর সুফল পাবে।