ঢাকা ০১:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বাইডেনকে ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৪৩:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ জুন ২০২৩
  • / ৪৫৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বন্ধে এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচনের সুযোগ তৈরিতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের ৬ সদস্য।

শুক্রবার (২ জুন) নিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ২৫ মে লেখা চিঠিটিসহ একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন মার্কিন কংগ্রেস সদস্য বব গুড। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী বাকি কংগ্রেস সদস্যরা হলেন- স্কট পেরি, ব্যারি মুর, টিম বারচেট, ওয়ারেন ডেভিডসন এবং কিথ সেল্ফ। তারা সবাই বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির সদস্য।

চিঠিতে বাংলাদেশকে অবাধ নির্বাচনের একটি সর্বোত্তম সুযোগ করে দেওয়ার জন্য কঠোর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সেনাদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউস ও জাতিসংঘের প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কংগ্রেস সদস্যরা চিঠিতে বাংলাদেশে ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ক্রমাগত প্রত্যাখ্যান করে আসা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন, বাকস্বাধীনতার জায়গা সংকুচিত হয়ে আসা এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারীদের ওপর হামলার মতো বিষয়গুলোর কথা বলেছেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তার সরকার কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শত শত উদাহরণ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউস, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা ও এনজিও তাদের প্রতিবেদনে নথিভুক্ত করেছে। যাতে দেখা যায়, শেখ হাসিনার সরকার ক্রমবর্ধমানভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অস্বীকার করেছে। তার নাগরিকদের ওপর নির্যাতন করেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সাংবাদিকদের কারাগারে বন্দি করেছে, বিরোধীদের গুম করেছে এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের লাঞ্ছিত করেছে বা হত্যা করেছে। এ ঘটনা শুধু তার রাজনৈতিক বিরোধীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরাও নিপীড়নের শিকার হয়েছে।

শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা অর্ধেক হয়ে গেছে। লুটপাট ও বাড়িঘর পোড়ানো, মন্দির ও ধর্মীয় মূর্তি ধ্বংস, হত্যা, ধর্ষণ এবং জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করার কারণে হিন্দুদের বাংলাদেশ থেকে পালাতে বাধ্য করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠীও নিপীড়নের শিকার হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হাজার হাজার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারী সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য বিক্ষোভ করেছে, যা হাসিনা সরকারের পরিবর্তনের জন্য জনগণের একমাত্র আশা। এর জবাবে বাংলাদেশের র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করেছে, এমনকি হত্যা করেছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বেশ কিছু এনজিও র‍্যাবকে একটি সরকারি ‘ডেথ স্কোয়াড’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। জার্মানির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম ডয়চে ভেলে এবং সুইডেনভিত্তিক সংবাদ সংস্থা নেত্রা নিউজের সাম্প্রতিক তদন্তে বলা হয়েছে, র‍্যাবের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও বলপূর্বক গুমের এসব ঘটনা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন ছাড়া সম্ভব ছিল না।

চিঠিতে মার্কিন কংগ্রেস সদস্যরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এক বছরেরও বেশি সময় আগে র‍্যাবকে একটি ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং হত্যাকাণ্ডসহ অন্যান্য নৃশংসতার জন্য দায়ী একাধিক আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

তারা বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা শেখ হাসিনার সরকারের সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণকে ধীর করার জন্য যথেষ্ট কাজ করেনি। উলটো তারা আমেরিকার জাতীয় স্বার্থে আঘাত করার জন্য চীন ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। সূত্র: বাসস

নিউজটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বাইডেনকে ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠি

আপডেট সময় : ১১:৪৩:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ জুন ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বন্ধে এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচনের সুযোগ তৈরিতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের ৬ সদস্য।

শুক্রবার (২ জুন) নিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ২৫ মে লেখা চিঠিটিসহ একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন মার্কিন কংগ্রেস সদস্য বব গুড। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী বাকি কংগ্রেস সদস্যরা হলেন- স্কট পেরি, ব্যারি মুর, টিম বারচেট, ওয়ারেন ডেভিডসন এবং কিথ সেল্ফ। তারা সবাই বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির সদস্য।

চিঠিতে বাংলাদেশকে অবাধ নির্বাচনের একটি সর্বোত্তম সুযোগ করে দেওয়ার জন্য কঠোর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সেনাদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউস ও জাতিসংঘের প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কংগ্রেস সদস্যরা চিঠিতে বাংলাদেশে ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ক্রমাগত প্রত্যাখ্যান করে আসা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন, বাকস্বাধীনতার জায়গা সংকুচিত হয়ে আসা এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারীদের ওপর হামলার মতো বিষয়গুলোর কথা বলেছেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তার সরকার কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শত শত উদাহরণ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউস, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা ও এনজিও তাদের প্রতিবেদনে নথিভুক্ত করেছে। যাতে দেখা যায়, শেখ হাসিনার সরকার ক্রমবর্ধমানভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অস্বীকার করেছে। তার নাগরিকদের ওপর নির্যাতন করেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সাংবাদিকদের কারাগারে বন্দি করেছে, বিরোধীদের গুম করেছে এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের লাঞ্ছিত করেছে বা হত্যা করেছে। এ ঘটনা শুধু তার রাজনৈতিক বিরোধীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরাও নিপীড়নের শিকার হয়েছে।

শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা অর্ধেক হয়ে গেছে। লুটপাট ও বাড়িঘর পোড়ানো, মন্দির ও ধর্মীয় মূর্তি ধ্বংস, হত্যা, ধর্ষণ এবং জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করার কারণে হিন্দুদের বাংলাদেশ থেকে পালাতে বাধ্য করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠীও নিপীড়নের শিকার হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হাজার হাজার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারী সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য বিক্ষোভ করেছে, যা হাসিনা সরকারের পরিবর্তনের জন্য জনগণের একমাত্র আশা। এর জবাবে বাংলাদেশের র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করেছে, এমনকি হত্যা করেছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বেশ কিছু এনজিও র‍্যাবকে একটি সরকারি ‘ডেথ স্কোয়াড’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। জার্মানির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম ডয়চে ভেলে এবং সুইডেনভিত্তিক সংবাদ সংস্থা নেত্রা নিউজের সাম্প্রতিক তদন্তে বলা হয়েছে, র‍্যাবের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও বলপূর্বক গুমের এসব ঘটনা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন ছাড়া সম্ভব ছিল না।

চিঠিতে মার্কিন কংগ্রেস সদস্যরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এক বছরেরও বেশি সময় আগে র‍্যাবকে একটি ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং হত্যাকাণ্ডসহ অন্যান্য নৃশংসতার জন্য দায়ী একাধিক আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

তারা বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা শেখ হাসিনার সরকারের সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণকে ধীর করার জন্য যথেষ্ট কাজ করেনি। উলটো তারা আমেরিকার জাতীয় স্বার্থে আঘাত করার জন্য চীন ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। সূত্র: বাসস