ঢাকা ০২:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বাংলাদেশকে বিধ্বস্ত করে হোয়াইটওয়াশ এড়াল ভারত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:১২:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ৪৪৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

স্পোর্টস ডেস্ক : 

শুরুর দুই ম্যাচেই রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ভারতকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে বিরাট কোহলিদের সামনে ছিল হোয়াইটওয়াশ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা। তবে শেষ ম্যাচে যেভাবে খেলল ভারত, তাতে কে বলবে এই ম্যাচটা স্রেফ নিয়ম রক্ষার, আদতে ভারত খেলছে ধবলধোলাই এড়াতে?

ভারতের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করলেও তাদের হোয়াইটওয়াশ করার দুর্লভ সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে তাতো হলোই না। ভারতের রান পাহাড়ে পিষ্ট হয়ে ২২৭ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে স্বাগতিক দল।

শনিবার (১০ ডিসেম্বর) চট্রগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইশান কিষানের ডাবল সেঞ্চুরি ও বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৪০৯ রানের পাহাড়সম সংগ্রহ পায় ভারত। ৪১০ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৮২ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ।

চট্টগ্রামের ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে শুরুটা খারাপ ছিল না দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও লিটন দাসের। ৪ ওভারে ৩৩ রান যোগ করেন তারা। পঞ্চম ওভারে আক্রমণে এসেই ওপেনিং জুটি ভেঙে দেন অক্ষর প্যাটেল। এনামুল ক্যাচ দিয়ে ৮ রানে ফিরেছেন।

সবচেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক লিটনের ইনিংসটাও বেশি দূর যায়নি। দলীয় ৪৭ রানে সিরাজের বলে লিটন ক্যাচ তুলে ২৯ রানে ফিরেছেন। এমন সময় বাড়তি প্রত্যাশা ছিল মুশফিকের ওপর। কিন্তু টানা ব্যর্থ এই ব্যাটার তৃতীয় ম্যাচেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। চাপ কমানোর বদলে উল্টো দলকে বিপদেই ফেলে গেছেন। অক্ষরের বলে ৭ রানে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন তিনি।

তার পর চাপে পড়ে যাওয়া দলটাকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছেন সাকিব আল হাসান। প্রথমে ইয়াসিরকে সঙ্গে নিয়ে ৩৪ রান যোগ করেছেন। ইয়াসিরকে (২৫) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে এই জুটি ভেঙেছেন উমরান মালিক। তার পর মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গে নিয়েও লড়াইয়ের প্রত্যয় ছিল। কিন্তু হাফসেঞ্চুরি থেকে আর ৭ রান দূরে থাকতেই সাকিবকে বোল্ড করেছেন কুলদীপ যাদব। জায়গা বের করে খেলতে গিয়ে ব্যাটের কোনায় বল লেগে সাকিব বোল্ড হয়েছেন। তার ৫০ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৪টি চার।

সাকিবের ফেরার পর পরই মূলত প্রতিরোধ দুর্বল হয়ে যায় বাংলাদেশের। তার পর বাকি ব্যাটাররা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি। দ্রুত সময়ের মাঝে মাহমুদউল্লাহ (২০), আফিফ হোসেন (৮), মেহেদী মিরাজ (৩) সহজেই ভারতীয় বোলিংয়ের কাছে পরাস্ত হয়েছেন। শেষ দিকে তাসকিন দৃষ্টিনন্দন দুটি ছক্কা মেরে দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করলেও মোস্তাফিজকে বোল্ড করে বাংলাদেশের লেজ ছেঁটে দিয়েছেন উমরান মালিক।

৩০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার ছিলেন শার্দুল ঠাকুর। ২২ রানে দুটি নেন অক্ষর প্যাটেল, ৪৩ রানে দুটি নেন উমরান মালিকও। এছাড়া একটি করে নিয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজ, কুলদীপ যাদব ও ওয়াশিংটন সুন্দর।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করা ভারত হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বাঁচতে রানের পাহাড় গড়েছে। ইশান কিশানের দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরি ও বিরাট কোহলির আক্রমণাত্মক সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে করে ৪০৯ রান। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে যে কোনও দলের সর্বোচ্চ স্কোর এটি।

রোহিত শর্মার জায়গায় খেলতে এসে সুযোগটা ভালো মতোই কাজে লাগিয়েছেন কিশান। গড়েছেন বেশ কয়েকটি রেকর্ড। ওয়ানডের দ্রুততম ডাবলসেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন ১২৬ বলে।

এই প্রথম কোনও ব্যাটার তার ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিকে ডাবলে রূপ দিতে পেরেছেন। পূর্বে প্রথম সেঞ্চুরি তোলা কোনও ব্যাটারের সর্বোচ্চ স্কোরটি ছিল ১৯৪*। জিম্বাবুয়ের চার্লস কভেন্ট্রি সেটা করেছিলেন বাংলাদেশেরই বিপক্ষে।

বয়সের দিক থেকেও সর্বকনিষ্ঠ (২৪ বছর ১৪৫ দিন) ডাবল সেঞ্চুরিয়ান এখন কিশান। এই সময় কোহলিকে নিয়ে গড়েন ২৯০ রানের অসাধারণ একটি জুটি। এই জুটিই চারশো রানের ভিত তৈরি করেছে। তবে ১ রানে কোহলির ক্যাচ না ছাড়লে ম্যাচের গতিপ্রকৃতি ভিন্ন হলেও হতে পারতো!

নিউজটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশকে বিধ্বস্ত করে হোয়াইটওয়াশ এড়াল ভারত

আপডেট সময় : ০৮:১২:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২২

স্পোর্টস ডেস্ক : 

শুরুর দুই ম্যাচেই রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ভারতকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে বিরাট কোহলিদের সামনে ছিল হোয়াইটওয়াশ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা। তবে শেষ ম্যাচে যেভাবে খেলল ভারত, তাতে কে বলবে এই ম্যাচটা স্রেফ নিয়ম রক্ষার, আদতে ভারত খেলছে ধবলধোলাই এড়াতে?

ভারতের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করলেও তাদের হোয়াইটওয়াশ করার দুর্লভ সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে তাতো হলোই না। ভারতের রান পাহাড়ে পিষ্ট হয়ে ২২৭ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে স্বাগতিক দল।

শনিবার (১০ ডিসেম্বর) চট্রগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইশান কিষানের ডাবল সেঞ্চুরি ও বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৪০৯ রানের পাহাড়সম সংগ্রহ পায় ভারত। ৪১০ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৮২ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ।

চট্টগ্রামের ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে শুরুটা খারাপ ছিল না দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও লিটন দাসের। ৪ ওভারে ৩৩ রান যোগ করেন তারা। পঞ্চম ওভারে আক্রমণে এসেই ওপেনিং জুটি ভেঙে দেন অক্ষর প্যাটেল। এনামুল ক্যাচ দিয়ে ৮ রানে ফিরেছেন।

সবচেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক লিটনের ইনিংসটাও বেশি দূর যায়নি। দলীয় ৪৭ রানে সিরাজের বলে লিটন ক্যাচ তুলে ২৯ রানে ফিরেছেন। এমন সময় বাড়তি প্রত্যাশা ছিল মুশফিকের ওপর। কিন্তু টানা ব্যর্থ এই ব্যাটার তৃতীয় ম্যাচেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। চাপ কমানোর বদলে উল্টো দলকে বিপদেই ফেলে গেছেন। অক্ষরের বলে ৭ রানে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন তিনি।

তার পর চাপে পড়ে যাওয়া দলটাকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছেন সাকিব আল হাসান। প্রথমে ইয়াসিরকে সঙ্গে নিয়ে ৩৪ রান যোগ করেছেন। ইয়াসিরকে (২৫) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে এই জুটি ভেঙেছেন উমরান মালিক। তার পর মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গে নিয়েও লড়াইয়ের প্রত্যয় ছিল। কিন্তু হাফসেঞ্চুরি থেকে আর ৭ রান দূরে থাকতেই সাকিবকে বোল্ড করেছেন কুলদীপ যাদব। জায়গা বের করে খেলতে গিয়ে ব্যাটের কোনায় বল লেগে সাকিব বোল্ড হয়েছেন। তার ৫০ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৪টি চার।

সাকিবের ফেরার পর পরই মূলত প্রতিরোধ দুর্বল হয়ে যায় বাংলাদেশের। তার পর বাকি ব্যাটাররা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি। দ্রুত সময়ের মাঝে মাহমুদউল্লাহ (২০), আফিফ হোসেন (৮), মেহেদী মিরাজ (৩) সহজেই ভারতীয় বোলিংয়ের কাছে পরাস্ত হয়েছেন। শেষ দিকে তাসকিন দৃষ্টিনন্দন দুটি ছক্কা মেরে দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করলেও মোস্তাফিজকে বোল্ড করে বাংলাদেশের লেজ ছেঁটে দিয়েছেন উমরান মালিক।

৩০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার ছিলেন শার্দুল ঠাকুর। ২২ রানে দুটি নেন অক্ষর প্যাটেল, ৪৩ রানে দুটি নেন উমরান মালিকও। এছাড়া একটি করে নিয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজ, কুলদীপ যাদব ও ওয়াশিংটন সুন্দর।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করা ভারত হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বাঁচতে রানের পাহাড় গড়েছে। ইশান কিশানের দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরি ও বিরাট কোহলির আক্রমণাত্মক সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে করে ৪০৯ রান। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে যে কোনও দলের সর্বোচ্চ স্কোর এটি।

রোহিত শর্মার জায়গায় খেলতে এসে সুযোগটা ভালো মতোই কাজে লাগিয়েছেন কিশান। গড়েছেন বেশ কয়েকটি রেকর্ড। ওয়ানডের দ্রুততম ডাবলসেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন ১২৬ বলে।

এই প্রথম কোনও ব্যাটার তার ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিকে ডাবলে রূপ দিতে পেরেছেন। পূর্বে প্রথম সেঞ্চুরি তোলা কোনও ব্যাটারের সর্বোচ্চ স্কোরটি ছিল ১৯৪*। জিম্বাবুয়ের চার্লস কভেন্ট্রি সেটা করেছিলেন বাংলাদেশেরই বিপক্ষে।

বয়সের দিক থেকেও সর্বকনিষ্ঠ (২৪ বছর ১৪৫ দিন) ডাবল সেঞ্চুরিয়ান এখন কিশান। এই সময় কোহলিকে নিয়ে গড়েন ২৯০ রানের অসাধারণ একটি জুটি। এই জুটিই চারশো রানের ভিত তৈরি করেছে। তবে ১ রানে কোহলির ক্যাচ না ছাড়লে ম্যাচের গতিপ্রকৃতি ভিন্ন হলেও হতে পারতো!