ঢাকা ০৭:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ফরিদপুরে ইউএনওর উপর হামলা : ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৪

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৩০:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩
  • / ৪৪৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
// বিশেষ প্রতিনিধি, ফরিদপুর //
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের চরপাড়ায় হামলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আনসার সদস্য আহত এবং সরকারি গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে থানায়। পুলিশ এ ঘটনায় একজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদিকে গ্রেফতার আতঙ্কে ওই গ্রামের নারী-পুরুষেরা গা ঢাকা দিয়েছে।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে মধুখালী থানায় হামলা, মারধর ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা করা হয়েছে।
মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান তপনকে প্রধান আসামি করে এসব মামলায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর মধ্যে মধুখালী থানার এসআই প্রবীর কুমার বিশ্বাসের করা মামলায় পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা এবং হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়িচালক সুমন শেখের করা মামলায় সরকারি কাজে বাধা, ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করে জখম করা ও সরকারি সম্পত্তি ভাংচুর ও চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে এসব মামলায় ডুমাইন ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান তপন, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মো: মাহাফুজ মোল্যার ছেলে মো: প্রিন্স মোল্যা, শুকুর আলী মৃধার ছেলে ইব্রাহিম মোল্যা ও কবিরুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বিকেলে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ফরিদপুরের মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার স্থানীয়দের হামলায় থানার এসআই প্রবীর কুমার বিশ্বাস ও কনস্টেবল মো: আলী হোসেন, মাহমুদ খান ও আবু হানিফ আহত হন। এ ঘটনায় থানায় দুটি মামলায় চারজন আসামিকে গ্রেফতার করে শুক্রবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনার পর নিশ্চিন্তপুর গ্রামের চরপাড়া পুরোপুরি জনমানবশূন্য হয়ে পড়েছে। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছে আশেপাশের গ্রামের মানুষ। মধুখালীতে মধুমতি নদীর অববাহিকায় চরাঞ্চলের ওই চরপাড়ায় গোটা ৩০ নিম্নজীবী পরিবারের বসতি। পুরো গ্রামে জনসংখ্যা সর্বোচ্চ ৫০০ মতো। তবে এরা প্রভাবশালী কেউ নয়। এর মধ্যে অনেকে জীবীকার তাগিদে বাইরে থাকে। এদের একটি অংশ কামারখালী ব্রিজের নিচে চরের জমিতে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বছরের ছয় মাস ওই জমি পানিতে ডুবে থাকে। স্থানীয় প্রশাসন বাঁধ দিয়ে জমি ভরাট করে সেখানে গৃহহীনদের জন্য ঘর তৈরির উদ্যোগ নিলে স্থানীয়রা তাতে আপত্তি জানায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীদের বেশিরভাগই ছিলেন নারী। তারা গাছের ডাল, বাশ ও লাঠি নিয়ে হামলা চালায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ,  বৃহস্পতিবার দুপুরে চরপাড়ার ওই জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করার কথা ছিল। এর প্রতিবাদে চরপাড়ার নিম্নজীবি পরিবারের এসব লোক একটি ব্যানার নিয়ে প্রতিবাদ জানায়। তারা রাস্তার পাশে মানববন্ধনে দাড়িয়ে প্রতিবাদ জানানোর সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি থেকে নেমে কয়েকজন আনসার তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সেখানে উপস্থিত নারীদের সাথে উপস্থিত  আইরিন নামে এক নারীকে রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাতের অভিযোগ করা হয় আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে। এরপরই তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এ সময় গাড়ি থেকে নেমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিকুর রহমান চৌধুরী তাদের সরে যেতে নির্দেশ দিলে একপর্যায়ে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ইউএনওসহ তার গাড়ির চালক, দেহরক্ষী, কাজের ঠিকাদার, চারজন নারী ও পুলিশ সদস্যসহ প্রায় ১৫ জন আহত হন।
বা/খ: এসআর।

নিউজটি শেয়ার করুন

ফরিদপুরে ইউএনওর উপর হামলা : ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৪

আপডেট সময় : ০২:৩০:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩
// বিশেষ প্রতিনিধি, ফরিদপুর //
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের চরপাড়ায় হামলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আনসার সদস্য আহত এবং সরকারি গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে থানায়। পুলিশ এ ঘটনায় একজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদিকে গ্রেফতার আতঙ্কে ওই গ্রামের নারী-পুরুষেরা গা ঢাকা দিয়েছে।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে মধুখালী থানায় হামলা, মারধর ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা করা হয়েছে।
মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান তপনকে প্রধান আসামি করে এসব মামলায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর মধ্যে মধুখালী থানার এসআই প্রবীর কুমার বিশ্বাসের করা মামলায় পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা এবং হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়িচালক সুমন শেখের করা মামলায় সরকারি কাজে বাধা, ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করে জখম করা ও সরকারি সম্পত্তি ভাংচুর ও চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে এসব মামলায় ডুমাইন ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান তপন, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মো: মাহাফুজ মোল্যার ছেলে মো: প্রিন্স মোল্যা, শুকুর আলী মৃধার ছেলে ইব্রাহিম মোল্যা ও কবিরুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বিকেলে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ফরিদপুরের মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার স্থানীয়দের হামলায় থানার এসআই প্রবীর কুমার বিশ্বাস ও কনস্টেবল মো: আলী হোসেন, মাহমুদ খান ও আবু হানিফ আহত হন। এ ঘটনায় থানায় দুটি মামলায় চারজন আসামিকে গ্রেফতার করে শুক্রবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনার পর নিশ্চিন্তপুর গ্রামের চরপাড়া পুরোপুরি জনমানবশূন্য হয়ে পড়েছে। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছে আশেপাশের গ্রামের মানুষ। মধুখালীতে মধুমতি নদীর অববাহিকায় চরাঞ্চলের ওই চরপাড়ায় গোটা ৩০ নিম্নজীবী পরিবারের বসতি। পুরো গ্রামে জনসংখ্যা সর্বোচ্চ ৫০০ মতো। তবে এরা প্রভাবশালী কেউ নয়। এর মধ্যে অনেকে জীবীকার তাগিদে বাইরে থাকে। এদের একটি অংশ কামারখালী ব্রিজের নিচে চরের জমিতে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বছরের ছয় মাস ওই জমি পানিতে ডুবে থাকে। স্থানীয় প্রশাসন বাঁধ দিয়ে জমি ভরাট করে সেখানে গৃহহীনদের জন্য ঘর তৈরির উদ্যোগ নিলে স্থানীয়রা তাতে আপত্তি জানায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীদের বেশিরভাগই ছিলেন নারী। তারা গাছের ডাল, বাশ ও লাঠি নিয়ে হামলা চালায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ,  বৃহস্পতিবার দুপুরে চরপাড়ার ওই জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করার কথা ছিল। এর প্রতিবাদে চরপাড়ার নিম্নজীবি পরিবারের এসব লোক একটি ব্যানার নিয়ে প্রতিবাদ জানায়। তারা রাস্তার পাশে মানববন্ধনে দাড়িয়ে প্রতিবাদ জানানোর সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি থেকে নেমে কয়েকজন আনসার তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সেখানে উপস্থিত নারীদের সাথে উপস্থিত  আইরিন নামে এক নারীকে রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাতের অভিযোগ করা হয় আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে। এরপরই তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এ সময় গাড়ি থেকে নেমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিকুর রহমান চৌধুরী তাদের সরে যেতে নির্দেশ দিলে একপর্যায়ে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ইউএনওসহ তার গাড়ির চালক, দেহরক্ষী, কাজের ঠিকাদার, চারজন নারী ও পুলিশ সদস্যসহ প্রায় ১৫ জন আহত হন।
বা/খ: এসআর।