ঢাকা ১২:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পাইকগাছার মধুমিতা পার্ক দলখমুক্ত করতে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৯:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩
  • / ৪৪৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি :
খুলনার পাইকগাছা পৌরসভার প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত মধুমিতা পার্ক যা জনৈক মাদার মন্ডল তার স্বত্ব দখলীয় বাতিখালি মৌজার সাবেক ৯১ খতিয়ানের ১৭১,১৭২ দাগের  ১.০৭ একর জমি সরকারের নামে লিখে দেন। এরপর ওই জমিতে পুকুর খননের মাধ্যমে এলাকার মানুষের মিষ্টি পানির অভাব দূর হতে থাকে। ওই পুকুরের পানি মিষ্টি হওয়ায় এলাকার লোকজন পুকুরটির নাম দেন মিষ্টি পুকুর। গত ১৯৮০ সালে তৎকালিন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মিষ্টি পানির পুকুরটির সংরক্ষনের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মান করেন। পরবর্তীতে খুলনার জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম পুকুরটির প্রাচীরের মধ্যে চলাচলের জন্য চারিপাশে রাস্তা নির্মান, লোকজনের বসার জন্য পাঁকা বেঞ্চ, পাঁকা ঘাটসহ চারপাশে বিভিন্ন ফল ও ফুলের গাছ রোপনের মাধ্যমে মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করেন। এরপর স্হানটির নাম হয় মধুমিতা পার্ক। যা উদ্বোধন করেন তৎকালিন খুলনার জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম। ওই সময় থেকে পৌরবাসীর একমাত্র চিত্তবিনোদন কেন্দ্র হয় মধুমিতা পার্ক এবং পার্কের অভ্যান্তরে থাকা মিষ্টি পানির পুকুরটি পৌরবাসীর মিষ্টি পানির অভাব দূরীকরনের একমাত্র আধার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ অবস্থায় মধুমিতা পার্ক ও মিষ্টি পুকুরের উপর কু-নজর পড়ে এক শ্রেণির প্রভাবশালী, ভূমিখেকো, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও ব্যবসায়ীদের।তারা খুলনা জেলা পরিষদের অসৎ কর্মচারীদের সাথে যোগাযোগে করে পার্কের প্রাচীর ও রাস্তা ভেঙ্গে পাঁকা দোকানঘর নির্মান করে। তখন পৌরসভায় সচেতন মহল মধুমিতা পার্ক সংরক্ষণ কমিটি গঠন করে প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পার্কটি সংরক্ষণের জন্য আবেদন-নিবেদন করতে থাকেন। ব্যর্থ হয়ে সহাকারি জর্জ আদালত পাইকগাছায় অবৈধ বন্দোবস্ত ও দখলকারিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে একটি মামলা করেন ও নিষেধাজ্ঞা পান।
অপরদিকে, পাইকগাছার অবৈধ দখলকাররা তা অমান্য করে দোকানঘর নির্মান করে ব্যবসা করতে থাকেন। পরবর্তীতে পার্ক সংরক্ষণ কমিটি তৎকালিন জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকারের স্মরণাপন্ন হন এবং তাঁর পরামর্শে গত ২০০৫ সালে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন (যার নং- ৩৫৯০/০৫)। মহামান্য হাইকোর্ট মামলাটির শুনানি অন্তে গত ২০০৫ সালের ২৪ মে মধুমিতা পার্কের অভ্যান্তরে অবৈধ নির্মান কাজ বন্ধ করার আদেশ দেন। দীর্ঘদিনেও সরকারি কর্মকর্তা এবং অবৈধ দখলদাররা মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে অবৈধ স্থাপনা রেখে কেউ কেউ নিজে দোকান দিয়ে ব্যবসা করেছেন। আবার কেউ কেউ অগ্রিম মোটা
অংকের টাকা ভাড়া নিয়ে দোকানঘর ভাড়া দিয়ে তাদের অবৈধ স্থাপনাসহ দখল বজায় রেখেছেন যা মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের রীতিমতো অবমাননা ও গুরুতর অপরাধের শামিল।
উক্ত বিষয় উল্লেখ করে মধুমিতা পার্ক সংরক্ষণ কমিটি মহামান্য হাইকোর্ট কোর্ট অব কন্টেম পিটিশন দাখিল করেন (যার নং ১০২/২২)। উক্ত পিটিশন কয়েক দফায় শুনানি অন্তে সর্বশেষ চলতি বছরের ১৩ মার্চ মহামান্য হাইকোর্ট মামলার বিবাদীদের আগামী ২০ দিনের মধ্যে মধুমিতা পার্কের সকল অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিয়ে মধুমিতা পার্কটিকে পূর্বের অবস্থায় দখলমুক্ত করতে  নির্দেশ দিয়েছেন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পৌরবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।
ঘটনার বিষয়ে মধুমিতা পার্ক সংরক্ষণ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা জ্যৈষ্ঠ আইনজীবী এ্যাড.  জি,এ সবুর ও পার্ক সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি এ্যাড. এফ,এম,এ রাজ্জাক জানান, উল্লেখিত ঘটনাটি সত্য এবং অতি দ্রুত মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ সংশ্লিষ্টরা বাস্তবায়ন করবেন বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ পাওয়া মাত্রই কার্যকরী করতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বা/খ: এসআর।

নিউজটি শেয়ার করুন

পাইকগাছার মধুমিতা পার্ক দলখমুক্ত করতে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ

আপডেট সময় : ০৪:৩৯:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি :
খুলনার পাইকগাছা পৌরসভার প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত মধুমিতা পার্ক যা জনৈক মাদার মন্ডল তার স্বত্ব দখলীয় বাতিখালি মৌজার সাবেক ৯১ খতিয়ানের ১৭১,১৭২ দাগের  ১.০৭ একর জমি সরকারের নামে লিখে দেন। এরপর ওই জমিতে পুকুর খননের মাধ্যমে এলাকার মানুষের মিষ্টি পানির অভাব দূর হতে থাকে। ওই পুকুরের পানি মিষ্টি হওয়ায় এলাকার লোকজন পুকুরটির নাম দেন মিষ্টি পুকুর। গত ১৯৮০ সালে তৎকালিন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মিষ্টি পানির পুকুরটির সংরক্ষনের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মান করেন। পরবর্তীতে খুলনার জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম পুকুরটির প্রাচীরের মধ্যে চলাচলের জন্য চারিপাশে রাস্তা নির্মান, লোকজনের বসার জন্য পাঁকা বেঞ্চ, পাঁকা ঘাটসহ চারপাশে বিভিন্ন ফল ও ফুলের গাছ রোপনের মাধ্যমে মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করেন। এরপর স্হানটির নাম হয় মধুমিতা পার্ক। যা উদ্বোধন করেন তৎকালিন খুলনার জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম। ওই সময় থেকে পৌরবাসীর একমাত্র চিত্তবিনোদন কেন্দ্র হয় মধুমিতা পার্ক এবং পার্কের অভ্যান্তরে থাকা মিষ্টি পানির পুকুরটি পৌরবাসীর মিষ্টি পানির অভাব দূরীকরনের একমাত্র আধার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ অবস্থায় মধুমিতা পার্ক ও মিষ্টি পুকুরের উপর কু-নজর পড়ে এক শ্রেণির প্রভাবশালী, ভূমিখেকো, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও ব্যবসায়ীদের।তারা খুলনা জেলা পরিষদের অসৎ কর্মচারীদের সাথে যোগাযোগে করে পার্কের প্রাচীর ও রাস্তা ভেঙ্গে পাঁকা দোকানঘর নির্মান করে। তখন পৌরসভায় সচেতন মহল মধুমিতা পার্ক সংরক্ষণ কমিটি গঠন করে প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পার্কটি সংরক্ষণের জন্য আবেদন-নিবেদন করতে থাকেন। ব্যর্থ হয়ে সহাকারি জর্জ আদালত পাইকগাছায় অবৈধ বন্দোবস্ত ও দখলকারিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে একটি মামলা করেন ও নিষেধাজ্ঞা পান।
অপরদিকে, পাইকগাছার অবৈধ দখলকাররা তা অমান্য করে দোকানঘর নির্মান করে ব্যবসা করতে থাকেন। পরবর্তীতে পার্ক সংরক্ষণ কমিটি তৎকালিন জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকারের স্মরণাপন্ন হন এবং তাঁর পরামর্শে গত ২০০৫ সালে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন (যার নং- ৩৫৯০/০৫)। মহামান্য হাইকোর্ট মামলাটির শুনানি অন্তে গত ২০০৫ সালের ২৪ মে মধুমিতা পার্কের অভ্যান্তরে অবৈধ নির্মান কাজ বন্ধ করার আদেশ দেন। দীর্ঘদিনেও সরকারি কর্মকর্তা এবং অবৈধ দখলদাররা মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে অবৈধ স্থাপনা রেখে কেউ কেউ নিজে দোকান দিয়ে ব্যবসা করেছেন। আবার কেউ কেউ অগ্রিম মোটা
অংকের টাকা ভাড়া নিয়ে দোকানঘর ভাড়া দিয়ে তাদের অবৈধ স্থাপনাসহ দখল বজায় রেখেছেন যা মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের রীতিমতো অবমাননা ও গুরুতর অপরাধের শামিল।
উক্ত বিষয় উল্লেখ করে মধুমিতা পার্ক সংরক্ষণ কমিটি মহামান্য হাইকোর্ট কোর্ট অব কন্টেম পিটিশন দাখিল করেন (যার নং ১০২/২২)। উক্ত পিটিশন কয়েক দফায় শুনানি অন্তে সর্বশেষ চলতি বছরের ১৩ মার্চ মহামান্য হাইকোর্ট মামলার বিবাদীদের আগামী ২০ দিনের মধ্যে মধুমিতা পার্কের সকল অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিয়ে মধুমিতা পার্কটিকে পূর্বের অবস্থায় দখলমুক্ত করতে  নির্দেশ দিয়েছেন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পৌরবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।
ঘটনার বিষয়ে মধুমিতা পার্ক সংরক্ষণ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা জ্যৈষ্ঠ আইনজীবী এ্যাড.  জি,এ সবুর ও পার্ক সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি এ্যাড. এফ,এম,এ রাজ্জাক জানান, উল্লেখিত ঘটনাটি সত্য এবং অতি দ্রুত মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ সংশ্লিষ্টরা বাস্তবায়ন করবেন বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ পাওয়া মাত্রই কার্যকরী করতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বা/খ: এসআর।