ঢাকা ০১:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

থামছেই না দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৪:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ মে ২০২৩
  • / ৪৮৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক: থামছেই না দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি। একটা পণ্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আরেকটির দাম। নৈরাজ্য থামছেই না আদার বাজারে। বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজিতে। বিক্রেতারা বলছেন বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পণ্যটি। একই দশা পেঁয়াজ ও রসুনেও। আমদানি না হওয়া পর্যন্ত সুখবর মিলবে না বলে জানান বিক্রেতারা। বাজারে দেশি আদা নেই। বিদেশি আদার সরবরাহও কম, তাই দামও বেশি। পেঁয়াজ, জিরা, আলুসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যও বিক্রি হচ্ছে চড়াদামে। সবজি কিংবা মাছ-মাংসের দামও বাড়ছেই। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ।

পর্যাপ্ত পণ্য থাকলেও দাম কমার কোন লক্ষণই নেই বাজারে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এমন সারি সারি সাজানো আদা দেখলে মনেই হবেনা পণ্যটির কোন সংকট আছে। তবুও লাফিয়ে বাড়ছে মসলাটির দাম। মিয়ানমারের আদা কেজিপ্রতি ৩০০, ইন্দোনেশিয়ার ও ভিয়েতনামের আদা ৩২০ ও ভারতের আদা ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, চীন থেকে আদা আমদানি না হওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারে।

এদিকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, কিছুদিন আগেও আমদানি করা আদা বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকায়। আর এক মাস আগে এই আদা বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ২৫০ টাকায়। সেই সঙ্গে গত বছরের এই সময় আদা বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়।

চট্টগ্রাম কাস্টমস ও টেকনাফ শুল্ক স্টেশনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মে মাসে ইন্দোনেশিয়ার আদার গড় আমদানি মূল্য শুল্কসহ ১০৯ টাকা, ভিয়েতনামের আদা ৯৯ টাকা, ভারতের আদা প্রতি কেজি শুল্কসহ খরচ হয়েছে ৫৭ টাকা। মিয়ানমারের আদার আমদানি মূল্য প্রতি কেজি ৫৮ টাকা। গত ২২ দিনে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে ১ হাজার ৮১৭ টন আদা আমদানি করা হয়েছে। গত ১৭ এপ্রিল সর্বশেষ চীন থেকে ৫৪ টন আদা আমদানি হয়।

খাতুনগঞ্জের ফারুক ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ফারুক আহমেদ জানান, চীনে আদার ফলন ভালো না হওয়ায় তারা উল্টো ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনাম থেকে আদা আমদানি করছে।

মিয়ানমার থেকে আদা আমদানিকারক রাফা ট্রেডার্স এর মালিক ওমর ফারুক বলেন, ফরেন ড্রাফটের মাধ্যমে এক চালানে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার ডলারের নিত্যপণ্য আমদানি করা যায়। ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকটের কারণে আদা আমদানি বাড়ানো যাচ্ছে না।

এমন দামে ক্ষুদ্ধ ক্রেতারা বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙ্গার দাবি জানিয়েছেন। ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে কীভাবে চলছে জীবন? প্রশ্ন ছিল স্বামীহারা জায়েদা আক্তার, দিনমজুর শহীদ মিয়া আর আবুল কাশেমের কাছে। জবাব দিতে গিয়ে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরলেন তারা তিনজনই। নাভিঃশ্বাস অবস্থা তাদের।

স্বস্তি নেই পেয়াজের বাজারেও। বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে। দেশি রসুন (ছোট) প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন (বড়) প্রতি ১৬০ টাকা থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এদিন কারওয়ান বাজারে মসলার দোকানে অভিযান পরিচালনা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। মূল্য তালিকা না টাঙানো, অযৌক্তিক দামে পণ্য বিক্রি রোধে মাঠে নেমেছে সংস্থাটি।

অন্যদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে ২ লাখ ৪১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করার পর উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ টন। প্রতিকূল আবহাওয়াসহ নানা কারণে প্রায় ৩৫ শতাংশের মতো পেঁয়াজ নষ্ট হলেও বর্তমানে মজুত আছে প্রায় ১৮ লাখ টন। সে হিসাবে পেঁয়াজের সংকট হওয়ার কথা নয় তবুও এক মাসের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুন হয়ে প্রতি কেজির দাম ৮০ টাকায় গিয়ে ঠেকে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকায় এক সপ্তাহ আগে এর দাম ছিল ৮০ টাকা। এক মাসে আগে এই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকায়। ফলে এক মাসে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৮১.২৫ শতাংশ।

ঊর্দ্ধমুখি সবজি বাজারও। ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন সবজি। শুক্রবারের বাজারে বরবটি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, পটল প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, মূলা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁকড়ল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গাজর প্রতি কেজি ১০০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৮০-১০০ টাকা, জালি কুমড়ার পিস ৬০ টাকা এবং কাঁচাকলা প্রতি হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অস্বস্তি আছে মাছ বাজারেও। পাবদা, কাচকি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি দরে। রূপালি ইলিশ তো ধরাছোঁয়ারও বাইরে। এক হাজার ৬০০ থেকে শুরু করে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৪০০ টাকা কেজি দরে। রুইমাছ প্রতি কেজি ২৮০-৩০০ টাকা, তেলাপিয়া, ১৮০-২০০ টাকা, কার্প ২৫০-৩০০ টাকা, মলা ৪৫০-৫০০ টাকা, শিং ৩৮০-৪২০ টাকা, পাবদা ৩০০-৩৫০ টাকা এবং কই মাছ ৩৫০-৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রবার (২৬ মে) বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ২৩০ থেকে ২৫০ টাকার নিচে ব্রয়লার মুরগি মিলছে না। সোনালি মুরগির দাম ছুঁয়েছে ৩৩০-৩৫০ টাকা।

মাংসের পাশাপাশি মুরগির ডিমের দামও এখন বাড়তি। ডিমের ডজন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। আর হাঁসের ডিম প্রতি ডজন ২০০-২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পোলট্রি বাজারের এমন পরিস্থিতির জন্য বড় বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়ী করছেন ক্ষুদ্র খামারিরা।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুইমাস আগেও ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে যে ব্রয়লার মুরগি কেনা যেতো এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২৩০ টাকায়। কোথাও কোথাও ২৫০ টাকা। এক কেজি সোনালী মুরগি কিনতে লাগছে ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা। দেশি মুরগির দর উঠেছে ৫৫০ টাকা কেজি।

অন্যদিকে, এই সময়ের ব্যবধানে কেজিতে ২০০ টাকা বেড়ে খাসির মাংস এখন বিক্রি হচ্ছে ১,১০০ টাকা। আর ১০০ টাকা বেড়ে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। মুরগীর বাড়তি দামও এখন সাধারণ ক্রেতাদের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মহাখালী কাঁচা বাজার এলাকায় মাংস কিনছিলেন আবদুর রহিম। তিনি বলেন, ব্রয়লারের দাম বেড়েছে তো বেড়েছেই। আর কমার নাম নেই। ২৩০ টাকা কেজি দরে কিনলাম আজ। বিকেলে আসলেই হয়ত দেখবো ২৫০ টাকা। এটাই ম্যাজিক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

থামছেই না দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি

আপডেট সময় : ০৫:৪৪:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: থামছেই না দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি। একটা পণ্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আরেকটির দাম। নৈরাজ্য থামছেই না আদার বাজারে। বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজিতে। বিক্রেতারা বলছেন বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পণ্যটি। একই দশা পেঁয়াজ ও রসুনেও। আমদানি না হওয়া পর্যন্ত সুখবর মিলবে না বলে জানান বিক্রেতারা। বাজারে দেশি আদা নেই। বিদেশি আদার সরবরাহও কম, তাই দামও বেশি। পেঁয়াজ, জিরা, আলুসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যও বিক্রি হচ্ছে চড়াদামে। সবজি কিংবা মাছ-মাংসের দামও বাড়ছেই। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ।

পর্যাপ্ত পণ্য থাকলেও দাম কমার কোন লক্ষণই নেই বাজারে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এমন সারি সারি সাজানো আদা দেখলে মনেই হবেনা পণ্যটির কোন সংকট আছে। তবুও লাফিয়ে বাড়ছে মসলাটির দাম। মিয়ানমারের আদা কেজিপ্রতি ৩০০, ইন্দোনেশিয়ার ও ভিয়েতনামের আদা ৩২০ ও ভারতের আদা ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, চীন থেকে আদা আমদানি না হওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারে।

এদিকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, কিছুদিন আগেও আমদানি করা আদা বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকায়। আর এক মাস আগে এই আদা বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ২৫০ টাকায়। সেই সঙ্গে গত বছরের এই সময় আদা বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়।

চট্টগ্রাম কাস্টমস ও টেকনাফ শুল্ক স্টেশনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মে মাসে ইন্দোনেশিয়ার আদার গড় আমদানি মূল্য শুল্কসহ ১০৯ টাকা, ভিয়েতনামের আদা ৯৯ টাকা, ভারতের আদা প্রতি কেজি শুল্কসহ খরচ হয়েছে ৫৭ টাকা। মিয়ানমারের আদার আমদানি মূল্য প্রতি কেজি ৫৮ টাকা। গত ২২ দিনে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে ১ হাজার ৮১৭ টন আদা আমদানি করা হয়েছে। গত ১৭ এপ্রিল সর্বশেষ চীন থেকে ৫৪ টন আদা আমদানি হয়।

খাতুনগঞ্জের ফারুক ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ফারুক আহমেদ জানান, চীনে আদার ফলন ভালো না হওয়ায় তারা উল্টো ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনাম থেকে আদা আমদানি করছে।

মিয়ানমার থেকে আদা আমদানিকারক রাফা ট্রেডার্স এর মালিক ওমর ফারুক বলেন, ফরেন ড্রাফটের মাধ্যমে এক চালানে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার ডলারের নিত্যপণ্য আমদানি করা যায়। ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকটের কারণে আদা আমদানি বাড়ানো যাচ্ছে না।

এমন দামে ক্ষুদ্ধ ক্রেতারা বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙ্গার দাবি জানিয়েছেন। ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে কীভাবে চলছে জীবন? প্রশ্ন ছিল স্বামীহারা জায়েদা আক্তার, দিনমজুর শহীদ মিয়া আর আবুল কাশেমের কাছে। জবাব দিতে গিয়ে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরলেন তারা তিনজনই। নাভিঃশ্বাস অবস্থা তাদের।

স্বস্তি নেই পেয়াজের বাজারেও। বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে। দেশি রসুন (ছোট) প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন (বড়) প্রতি ১৬০ টাকা থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এদিন কারওয়ান বাজারে মসলার দোকানে অভিযান পরিচালনা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। মূল্য তালিকা না টাঙানো, অযৌক্তিক দামে পণ্য বিক্রি রোধে মাঠে নেমেছে সংস্থাটি।

অন্যদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে ২ লাখ ৪১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করার পর উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ টন। প্রতিকূল আবহাওয়াসহ নানা কারণে প্রায় ৩৫ শতাংশের মতো পেঁয়াজ নষ্ট হলেও বর্তমানে মজুত আছে প্রায় ১৮ লাখ টন। সে হিসাবে পেঁয়াজের সংকট হওয়ার কথা নয় তবুও এক মাসের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুন হয়ে প্রতি কেজির দাম ৮০ টাকায় গিয়ে ঠেকে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকায় এক সপ্তাহ আগে এর দাম ছিল ৮০ টাকা। এক মাসে আগে এই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকায়। ফলে এক মাসে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৮১.২৫ শতাংশ।

ঊর্দ্ধমুখি সবজি বাজারও। ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন সবজি। শুক্রবারের বাজারে বরবটি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, পটল প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, মূলা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁকড়ল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গাজর প্রতি কেজি ১০০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৮০-১০০ টাকা, জালি কুমড়ার পিস ৬০ টাকা এবং কাঁচাকলা প্রতি হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অস্বস্তি আছে মাছ বাজারেও। পাবদা, কাচকি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি দরে। রূপালি ইলিশ তো ধরাছোঁয়ারও বাইরে। এক হাজার ৬০০ থেকে শুরু করে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৪০০ টাকা কেজি দরে। রুইমাছ প্রতি কেজি ২৮০-৩০০ টাকা, তেলাপিয়া, ১৮০-২০০ টাকা, কার্প ২৫০-৩০০ টাকা, মলা ৪৫০-৫০০ টাকা, শিং ৩৮০-৪২০ টাকা, পাবদা ৩০০-৩৫০ টাকা এবং কই মাছ ৩৫০-৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রবার (২৬ মে) বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ২৩০ থেকে ২৫০ টাকার নিচে ব্রয়লার মুরগি মিলছে না। সোনালি মুরগির দাম ছুঁয়েছে ৩৩০-৩৫০ টাকা।

মাংসের পাশাপাশি মুরগির ডিমের দামও এখন বাড়তি। ডিমের ডজন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। আর হাঁসের ডিম প্রতি ডজন ২০০-২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পোলট্রি বাজারের এমন পরিস্থিতির জন্য বড় বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়ী করছেন ক্ষুদ্র খামারিরা।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুইমাস আগেও ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে যে ব্রয়লার মুরগি কেনা যেতো এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২৩০ টাকায়। কোথাও কোথাও ২৫০ টাকা। এক কেজি সোনালী মুরগি কিনতে লাগছে ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা। দেশি মুরগির দর উঠেছে ৫৫০ টাকা কেজি।

অন্যদিকে, এই সময়ের ব্যবধানে কেজিতে ২০০ টাকা বেড়ে খাসির মাংস এখন বিক্রি হচ্ছে ১,১০০ টাকা। আর ১০০ টাকা বেড়ে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। মুরগীর বাড়তি দামও এখন সাধারণ ক্রেতাদের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মহাখালী কাঁচা বাজার এলাকায় মাংস কিনছিলেন আবদুর রহিম। তিনি বলেন, ব্রয়লারের দাম বেড়েছে তো বেড়েছেই। আর কমার নাম নেই। ২৩০ টাকা কেজি দরে কিনলাম আজ। বিকেলে আসলেই হয়ত দেখবো ২৫০ টাকা। এটাই ম্যাজিক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের।