ঢাকা ০৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

তাড়াশে ঐতিহ্য ধরে রেখেছে তিনশ’ বছরের পুরোনো রাধা গোবিন্দ মন্দির

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৯:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ মার্চ ২০২৩
  • / ৪৬৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আশরাফুল ইসলাম রনি, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দীর্ঘদিন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাধা গোবিন্দ মন্দির সংস্কার করায় অপরুপে সেজেছে। ৩শ’ ২৪ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী এ রাধা গোবিন্দ মন্দিরটির দেশ ও দেশের বাইরে থেকে নিয়মিত দর্শনার্থীরা দেখতে আসেন । এ মন্দিরটির কারণে সারা বিশ্বের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে তাড়াশ ‘গুপ্ত বৃন্দাবন’ নামে খ্যাতি রয়েছে।

জানা যায়, এক সময়ের হিন্দু প্রধান তাড়াশের জমিদার বনওয়ারী লাল রায় বাহাদুর ১১০৫ বঙ্গাব্দে মন্দিরটি নির্মাণ করেন। এটি উপজেলা শহরের মধ্যে ২একর ৬শতক জায়গা জুড়ে স্থাপন মন্দিরটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মন্দির হিসেবে খ্যাত।

তাড়াশ উপজেলা সনাতন সংস্থার সভাপতি সঞ্জিত কর্মকার বলেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তাড়াশ রাধা গোবিন্দ মন্দিরটি বর্ণিল কারুকাজে চারকোণ ও দ্বিতল বিশিষ্ট দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০০ ফুট, প্রস্থ প্রায় ১৮০ ফুট, উচ্চতা প্রায় ৬০ ফুট। এর অভ্যন্তরে রয়েছে বর্ণিল কারুকাজে খচিত ২৫টি গোলাকৃতি স্তম্ভ। মন্দিরের ভেতরে রয়েছে রাধা-গোবিন্দ, বাসুদেব, গৌর-নিতাই ও নারায়ণ শিলা মূর্তি। দর্শনীয় এই মন্দিরে পূজা দিয়ে ধর্মীয় তুষ্টি মেটান সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। দীর্ঘদিন মন্দিরটির সংস্কার কাজ না হলেও, সনাতন সংস্থার বর্তমানে কমিটির অক্লান্ত প্রচেষ্টায় মন্দিরটির সংস্কার কাজ করা হয়েছে।

উপজেলা সনাতন সংস্থার সভাপতি আরো বলেন, আমরা জেনেছি যিনি এটা প্রতিষ্ঠা করেছেন, তিনি বৃন্দাবনে এই মন্দিরের একটা ছবি রেখেছেন বা সেই সমকক্ষ একটা মন্দির তৈরী করেছেন, যার জন্য একে গুপ্ত বৃন্দাবন বলা হয়। একবার কিছু সংস্কার করা হয়েছিল তাও ২০ থেকে ২৫ বছর পূর্বে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে মন্দিরটির বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। আমি সনাতন সংস্থার দায়িত্বে আসার পর ও পূর্বেও মন্দিরের সংস্কার কাজ করেছি বর্তমানেও সংস্কার করেছি। দেশ বিদেশ থেকে এখানে পর্যটক আসে তাই এই রাধা গোবিন্দ মন্দিরের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য সরকারের দৃষ্টি কামনা করছি।

তাড়াশ পৌর সদরের বাসিন্দা মৃনাল সরকার মিলু বলেন, বাপ দাদার কাছে শুনেছি আমাদের এই মন্দির বহু পুরাতন। রং করার ফলে মন্দিরের সুন্দর্য বেড়ে গেছে। বহু দুর দুরান্ত থেকে ভক্ত বৃন্দ আসে এমনকি ভারত থেকেও। ৩২৪ বছরের পুরাতন এ মন্দিরটি আজও তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। নানা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে তীর্থস্থানে পরিণত হয় এ মন্দির। তিনি আরো বলেন, ‘এখানে এক সময় ভারতবর্ষের বিখ্যাত মনীষী জগৎবন্ধু, মহানাম ব্রত ব্রহ্মচারী, নিগমানন্দ স্বামীজির মত মনীষীরা আসতেন। এখনো দেশ বিদেশের অসংখ্য পর্যটকদের আগমন ঘটে রাধা গোবিন্দ মন্দিরে। কালের সাক্ষী মূল্যবান প্রতœসম্পদ রাধা গোবিন্দ মন্দিরটির স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি দ্বারা নিরাপত্তা, তত্ববধান ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এখানে হাজার হাজার ভক্তবৃন্দ উপস্থিত হন।

 

বা/খ: জই

নিউজটি শেয়ার করুন

তাড়াশে ঐতিহ্য ধরে রেখেছে তিনশ’ বছরের পুরোনো রাধা গোবিন্দ মন্দির

আপডেট সময় : ০৭:৫৯:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ মার্চ ২০২৩

আশরাফুল ইসলাম রনি, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দীর্ঘদিন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাধা গোবিন্দ মন্দির সংস্কার করায় অপরুপে সেজেছে। ৩শ’ ২৪ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী এ রাধা গোবিন্দ মন্দিরটির দেশ ও দেশের বাইরে থেকে নিয়মিত দর্শনার্থীরা দেখতে আসেন । এ মন্দিরটির কারণে সারা বিশ্বের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে তাড়াশ ‘গুপ্ত বৃন্দাবন’ নামে খ্যাতি রয়েছে।

জানা যায়, এক সময়ের হিন্দু প্রধান তাড়াশের জমিদার বনওয়ারী লাল রায় বাহাদুর ১১০৫ বঙ্গাব্দে মন্দিরটি নির্মাণ করেন। এটি উপজেলা শহরের মধ্যে ২একর ৬শতক জায়গা জুড়ে স্থাপন মন্দিরটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মন্দির হিসেবে খ্যাত।

তাড়াশ উপজেলা সনাতন সংস্থার সভাপতি সঞ্জিত কর্মকার বলেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তাড়াশ রাধা গোবিন্দ মন্দিরটি বর্ণিল কারুকাজে চারকোণ ও দ্বিতল বিশিষ্ট দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০০ ফুট, প্রস্থ প্রায় ১৮০ ফুট, উচ্চতা প্রায় ৬০ ফুট। এর অভ্যন্তরে রয়েছে বর্ণিল কারুকাজে খচিত ২৫টি গোলাকৃতি স্তম্ভ। মন্দিরের ভেতরে রয়েছে রাধা-গোবিন্দ, বাসুদেব, গৌর-নিতাই ও নারায়ণ শিলা মূর্তি। দর্শনীয় এই মন্দিরে পূজা দিয়ে ধর্মীয় তুষ্টি মেটান সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। দীর্ঘদিন মন্দিরটির সংস্কার কাজ না হলেও, সনাতন সংস্থার বর্তমানে কমিটির অক্লান্ত প্রচেষ্টায় মন্দিরটির সংস্কার কাজ করা হয়েছে।

উপজেলা সনাতন সংস্থার সভাপতি আরো বলেন, আমরা জেনেছি যিনি এটা প্রতিষ্ঠা করেছেন, তিনি বৃন্দাবনে এই মন্দিরের একটা ছবি রেখেছেন বা সেই সমকক্ষ একটা মন্দির তৈরী করেছেন, যার জন্য একে গুপ্ত বৃন্দাবন বলা হয়। একবার কিছু সংস্কার করা হয়েছিল তাও ২০ থেকে ২৫ বছর পূর্বে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে মন্দিরটির বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। আমি সনাতন সংস্থার দায়িত্বে আসার পর ও পূর্বেও মন্দিরের সংস্কার কাজ করেছি বর্তমানেও সংস্কার করেছি। দেশ বিদেশ থেকে এখানে পর্যটক আসে তাই এই রাধা গোবিন্দ মন্দিরের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য সরকারের দৃষ্টি কামনা করছি।

তাড়াশ পৌর সদরের বাসিন্দা মৃনাল সরকার মিলু বলেন, বাপ দাদার কাছে শুনেছি আমাদের এই মন্দির বহু পুরাতন। রং করার ফলে মন্দিরের সুন্দর্য বেড়ে গেছে। বহু দুর দুরান্ত থেকে ভক্ত বৃন্দ আসে এমনকি ভারত থেকেও। ৩২৪ বছরের পুরাতন এ মন্দিরটি আজও তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। নানা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে তীর্থস্থানে পরিণত হয় এ মন্দির। তিনি আরো বলেন, ‘এখানে এক সময় ভারতবর্ষের বিখ্যাত মনীষী জগৎবন্ধু, মহানাম ব্রত ব্রহ্মচারী, নিগমানন্দ স্বামীজির মত মনীষীরা আসতেন। এখনো দেশ বিদেশের অসংখ্য পর্যটকদের আগমন ঘটে রাধা গোবিন্দ মন্দিরে। কালের সাক্ষী মূল্যবান প্রতœসম্পদ রাধা গোবিন্দ মন্দিরটির স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি দ্বারা নিরাপত্তা, তত্ববধান ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এখানে হাজার হাজার ভক্তবৃন্দ উপস্থিত হন।

 

বা/খ: জই