ঢাকা ০৬:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

এমভি আব্দুল্লাহ উদ্ধার অভিযান নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন!

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৩:১৭:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪
  • / ৪৫৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে উদ্ধার করতে দেশটির পুলিশ ও বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীর সদস্যরা অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড অঞ্চলের পুলিশের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর প্রকাশ করেছে। তবে জাহাজটির মালিকপক্ষ সামরিক কোন অভিযান চায় না। নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ওপরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন এম আনাম চৌধুরী বলেন, হামলা চালানোর সময় বা এর পরপরই হয়ত অভিযান চালানো যেত। এখন মুক্তিপণের পথ এড়িয়ে জোর করে কিছু করতে যাওয়া হবে আত্মঘাতী।

গেলা ১২ই মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটি এখন সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূলের কাছে নোঙর করা আছে। জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে নেয়া পর্যন্ত সেটির কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান নিয়ে অনুসরণ করেছিল ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ। এরমধ্যে শনিবার ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যরা সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে মাল্টার পতাকাবাহী কার্গো জাহাজ এমভি রুয়েন উদ্ধার করে।

এর দুই দিনের মাথায় সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড পুলিশ জানায়, এমভি আবদুল্লাহকে দখল করে রাখা জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নিতে প্রস্তুত রয়েছে তারা। এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনী যৌথভাবে অভিযানের পরিকল্পনা করছে। তবে জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান কবির গ্র“পের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানান, নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনাই প্রধান লক্ষ্য। এ ধরনের সামরিক অভিযান চান না জানিয়ে মালিকপক্ষ বলছে, সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নৌবাহিনীর কাছে এ বিষয়ে বার্তা দেয়া রয়েছে।

এমভি আব্দুল্লায় বিশেষ অভিযান চালানো যৌক্তিক হবে কি না-উঠেছে এমন প্রশ্ন। এক্ষেত্রে সামনে এসেছে কয়েকটি বিষয়। যেমন, আব্দুল্লাহর অবস্থান তীর থেকে মাত্র ৫ নটিক্যাল মাইল দূরে। যা পুরোপুরি দস্যুদের নিয়ন্ত্রণে। বিপরীতে রুয়েন ছিল ওপেন সি-তে। যেখানে বিদেশি নৌবাহিনীর অভিযানের সুযোগ ছিল। এ ছাড়া জাহাজে থাকা পণ্যের ঝুঁকির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।

আব্দুল্লাহর বিষয়টি শুরু থেকে পর্যবেক্ষণ করছেন, এমন একজন জ্যেষ্ঠ মেরিনার ক্যাপ্টেন আতিক ইউ এ খান বলছেন, ২৩ নাবিকের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিবেচনায় অভিযান চালানো সমীচীন হবে না। তিনি বলেন, ইউরোপিয়ান নেভি কমান্ড অপারেশন চালাতে চেয়েছিল। এর জন্যে তারা অনুমতি চাইলে বাংলাদেশ সরকার ও জাহাজের মালিকপক্ষ সায় দেয়নি। কারণ এতে নাবিকদের জীবন রিস্কে পরে যেত।

তিনি আরও বলেন, জাহাজটির বর্তমান অবস্থান, নিয়ন্ত্রণ আর জাহাজে থাকা পণ্যের ধরণ বিবেচনায় অভিযান চালানো কোনোভাবেই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না। মুক্তিপণের পথে হাঁটাই হবে সমীচীন। তা না হলে তৈরি হবে প্রাণহানির শঙ্কা।

এর আগে ১৪ই মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে নাবিকদের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে বাংলাদেশ সরকার তাতে সম্মতি দেয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এমভি আব্দুল্লাহ উদ্ধার অভিযান নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন!

আপডেট সময় : ০৩:১৭:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে উদ্ধার করতে দেশটির পুলিশ ও বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীর সদস্যরা অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড অঞ্চলের পুলিশের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর প্রকাশ করেছে। তবে জাহাজটির মালিকপক্ষ সামরিক কোন অভিযান চায় না। নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ওপরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন এম আনাম চৌধুরী বলেন, হামলা চালানোর সময় বা এর পরপরই হয়ত অভিযান চালানো যেত। এখন মুক্তিপণের পথ এড়িয়ে জোর করে কিছু করতে যাওয়া হবে আত্মঘাতী।

গেলা ১২ই মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটি এখন সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূলের কাছে নোঙর করা আছে। জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে নেয়া পর্যন্ত সেটির কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান নিয়ে অনুসরণ করেছিল ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ। এরমধ্যে শনিবার ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যরা সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে মাল্টার পতাকাবাহী কার্গো জাহাজ এমভি রুয়েন উদ্ধার করে।

এর দুই দিনের মাথায় সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড পুলিশ জানায়, এমভি আবদুল্লাহকে দখল করে রাখা জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নিতে প্রস্তুত রয়েছে তারা। এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনী যৌথভাবে অভিযানের পরিকল্পনা করছে। তবে জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান কবির গ্র“পের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানান, নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনাই প্রধান লক্ষ্য। এ ধরনের সামরিক অভিযান চান না জানিয়ে মালিকপক্ষ বলছে, সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নৌবাহিনীর কাছে এ বিষয়ে বার্তা দেয়া রয়েছে।

এমভি আব্দুল্লায় বিশেষ অভিযান চালানো যৌক্তিক হবে কি না-উঠেছে এমন প্রশ্ন। এক্ষেত্রে সামনে এসেছে কয়েকটি বিষয়। যেমন, আব্দুল্লাহর অবস্থান তীর থেকে মাত্র ৫ নটিক্যাল মাইল দূরে। যা পুরোপুরি দস্যুদের নিয়ন্ত্রণে। বিপরীতে রুয়েন ছিল ওপেন সি-তে। যেখানে বিদেশি নৌবাহিনীর অভিযানের সুযোগ ছিল। এ ছাড়া জাহাজে থাকা পণ্যের ঝুঁকির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।

আব্দুল্লাহর বিষয়টি শুরু থেকে পর্যবেক্ষণ করছেন, এমন একজন জ্যেষ্ঠ মেরিনার ক্যাপ্টেন আতিক ইউ এ খান বলছেন, ২৩ নাবিকের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিবেচনায় অভিযান চালানো সমীচীন হবে না। তিনি বলেন, ইউরোপিয়ান নেভি কমান্ড অপারেশন চালাতে চেয়েছিল। এর জন্যে তারা অনুমতি চাইলে বাংলাদেশ সরকার ও জাহাজের মালিকপক্ষ সায় দেয়নি। কারণ এতে নাবিকদের জীবন রিস্কে পরে যেত।

তিনি আরও বলেন, জাহাজটির বর্তমান অবস্থান, নিয়ন্ত্রণ আর জাহাজে থাকা পণ্যের ধরণ বিবেচনায় অভিযান চালানো কোনোভাবেই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না। মুক্তিপণের পথে হাঁটাই হবে সমীচীন। তা না হলে তৈরি হবে প্রাণহানির শঙ্কা।

এর আগে ১৪ই মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে নাবিকদের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে বাংলাদেশ সরকার তাতে সম্মতি দেয়নি।