ঢাকা ০৭:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ঈদুল আযহায় পর্যটক খরায় কুয়াকাটা : নেই অগ্রীম বুকিংয়ের হিড়িক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৫০:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ জুন ২০২৩
  • / ৭৭৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// এ এম মিজানুর রহমান বুলেট, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি //

আর মাত্র দুইদিন পরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা। ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে ২৭ তারিখ থেকে টানা পাঁচ দিনের ছুটির ফাঁদে দেশ তারপরও অগ্রিম বুকিংয়ের হিড়িক নেই কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ও রিসোর্টে। ঈদ মৌসুমকে ঘিরে ইতিমধ্য প্রস্তুতি শেষ করেছে পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীরা। রংয়ের তুলিতে নতুনত্ব ফিরিয়ে আনছে বিভিন্ন হোটেল মোটেলের কর্তৃপক্ষ। গত ঈদুল ফিতরের ছুটির পর থেকে তেমন কোন পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল না কুয়াকাটায় তাই এবারের ঈদকে সামনে রেখে ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে। বিগত মাসের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছে পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীরা। গত বছরের এমন সময় কুয়াকাটার হোটেল মোটেলের রুম অগ্রিম বুকিং হয়েছিল প্রায় ৭০% কিন্তু এবারের চিত্র একেবারেই উল্টো। এখন পর্যন্ত ৩০% অগ্রিম বুকিং হয়েছে প্রথম সারির কিছু হোটেল মোটেলের কক্ষ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় মানের হোটেল মোটেলের রুম ফাঁকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষরা।

এবারের ঈদের সময় পর্যটক খরায় থাকতে পারে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু হওয়ার ফলে সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা দিনে দিনে পর্যটকদের কাছে প্রধান আকর্ষণীয় স্থানে পরিনত হয়েছে। এক সময় ঢাকা থেকে কুয়াকাটা আসতে সময় নিত ১০/১২ ঘন্টা সেখানে পদ্মাসেতু হওয়ার ফলে ৫/৬ ঘন্টায় পৌঁছানো যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার পাশাপাশি সময় কম লাগায় পর্যটকদের উপস্থিতি এখন চোখে পড়ার মত। সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় একই জায়গায় দাড়িয়ে উপভোগ করা যায় বলে এখন সারা মাসই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে কুয়াকাটায়। গত বছর পদ্মাসেতু হওয়ার পর পরই বর্ষামৌসুমে কানায় কানায় পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল। ব্যস্থতা ছিল পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীদের মাঝে। অগ্রীম বুকিং না করার ফলে গত ঈদুল ফিতরের মৌসুমে বেগ পেতে হয়েছিল হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষকে। ফলে কমিউনিটি ট্যুরিজমের মাধ্যমে রাত্রি যাপন করতে হয়েছিল। এবারে তেমনটা অগ্রিম বুকিংয়ের সাড়া মেলেনা বলে জানিয়েছেন হোটেল মোটেলের কর্তৃপক্ষ।

 

ঈদুল আযহায় পর্যটক খরায় কুয়াকাটা : নেই অগ্রীম বুকিংয়ের হিড়িক

 

এবারের ঈদে অগ্রিম বুকিং নেই কেন এমন প্রশ্নে আবাসিক হোটেল খাঁন প্যালেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল খাঁন বলেন, গত বছর এমন সময় আমাদের রুম রিজার্ভড হয়েছিল প্রায় ৮০% এবারে এখন পর্যন্ত ৪০% হয়েছে। আশা করি আরো কিছু রুম বুকিং সম্পন্ন হবে শীঘ্রই। তবে আমি মনে করি রাজনৈতিক ইস্যু আর অর্থনৈতিক মন্দা ইতোমধ্যে ট্যুরিজমে ইফেক্ট পড়তে শুরু করছে পাশাপাশি বন্ধটা যদি শুক্রবার ও শনিবারের পরে পড়তো হয়ত পর্যটকদের চাপ বাড়ত। এক্ষেত্রে বন্ধটা আগে হয়েছে তাই অগ্রিম বুকিং কম হয়েছে।

কুয়াকাটার অভিজাত হোটেল সিকদার রিসোর্ট ও ভিলার্সের এজিএম আলআমিন উজ্জ্বল আপন বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে হয়ত পর্যটকদের চাপ বাড়বে কুয়াকাটায়। এখনো অনেক পর্যটক খোঁজ খবর নিয়ে রাখছেন। প্লান করে হয়ত বুকিং কাজটা শেরে ফেলবেন। আপাতত: আমাদের রুম রিজার্ভড হয়েছে প্রায় ৫০%।

কনফিডেন্স ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইদুর রহমান বলেন, এবারে এখন পর্যন্ত তেমন ফোন আসেনি তাই বলে পর্যটকদের উপস্থিতি কম হবে এমনটা বলে মনে করছিনা। এখন অনেক পর্যটক সরেজমিনে এসে খোঁজ খবর নিয়ে রুম বুকিং সম্পন্ন করে। আবার অনেকেই সকালে এসে কুয়াকাটা ভ্রমন করে বিকালেই ফিরে যায় ফলে অনেকেই হোটেলের সাথে যোগাযোগ কম করে এখন।

কুয়াকাটা সি ট্যুর ট্রাভেলসের পরিচালক হোসাইন আমির বলেন, এবারের ঈদে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পর্যটকদের উপস্থিতি বাড়বে। এমনি জাতীয় নির্বাচনের প্রভাব ইতিমধ্যে পর্যটনে লাগতে শুরু করছে। এ বছর হয়তো আরো খরায় পড়তে হবে আমাদের।

পর্যটন উন্নয়ন কর্মী ও হোটেল সমুদ্র বিলাসের ব্যবস্থাপনা পরিচাল ডা. ঈসমাইল ইমন বলেন, সরকার যে পরিমানে রাজস্ব নিচ্ছে কুয়াকাটা থেকে সে পরিমানে সরকার উন্নয়ন করেনি। যা যা হয়েছে তা কেবল ব্যক্তি মালিকানায় হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন হওয়ার জন্য সরকারের আরো নজর দেওয়া দরকার বলে মনে করছি। সৈকত রক্ষায় এখনি পদক্ষেপ না নেওয়া হলে মূখ ফিরিয়ে নিতে পারে বিনিয়োগকারীরা।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পর্যটক আগমন বাড়বে। সেটা মাথায় রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অপরাধ দমনে কয়েকটি ভাগে সাজানো হয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশকে। যেহেতু রিজিওনের কাজগুলো কুয়াকাটা জোন থেকে পরিচালিত হয় সেক্ষেত্রে আমাদের সেবা দিতে বেগ পেতে হবেনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ঈদুল আযহায় পর্যটক খরায় কুয়াকাটা : নেই অগ্রীম বুকিংয়ের হিড়িক

আপডেট সময় : ০২:৫০:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ জুন ২০২৩

// এ এম মিজানুর রহমান বুলেট, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি //

আর মাত্র দুইদিন পরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা। ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে ২৭ তারিখ থেকে টানা পাঁচ দিনের ছুটির ফাঁদে দেশ তারপরও অগ্রিম বুকিংয়ের হিড়িক নেই কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ও রিসোর্টে। ঈদ মৌসুমকে ঘিরে ইতিমধ্য প্রস্তুতি শেষ করেছে পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীরা। রংয়ের তুলিতে নতুনত্ব ফিরিয়ে আনছে বিভিন্ন হোটেল মোটেলের কর্তৃপক্ষ। গত ঈদুল ফিতরের ছুটির পর থেকে তেমন কোন পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল না কুয়াকাটায় তাই এবারের ঈদকে সামনে রেখে ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে। বিগত মাসের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছে পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীরা। গত বছরের এমন সময় কুয়াকাটার হোটেল মোটেলের রুম অগ্রিম বুকিং হয়েছিল প্রায় ৭০% কিন্তু এবারের চিত্র একেবারেই উল্টো। এখন পর্যন্ত ৩০% অগ্রিম বুকিং হয়েছে প্রথম সারির কিছু হোটেল মোটেলের কক্ষ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় মানের হোটেল মোটেলের রুম ফাঁকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষরা।

এবারের ঈদের সময় পর্যটক খরায় থাকতে পারে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু হওয়ার ফলে সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা দিনে দিনে পর্যটকদের কাছে প্রধান আকর্ষণীয় স্থানে পরিনত হয়েছে। এক সময় ঢাকা থেকে কুয়াকাটা আসতে সময় নিত ১০/১২ ঘন্টা সেখানে পদ্মাসেতু হওয়ার ফলে ৫/৬ ঘন্টায় পৌঁছানো যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার পাশাপাশি সময় কম লাগায় পর্যটকদের উপস্থিতি এখন চোখে পড়ার মত। সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় একই জায়গায় দাড়িয়ে উপভোগ করা যায় বলে এখন সারা মাসই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে কুয়াকাটায়। গত বছর পদ্মাসেতু হওয়ার পর পরই বর্ষামৌসুমে কানায় কানায় পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল। ব্যস্থতা ছিল পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীদের মাঝে। অগ্রীম বুকিং না করার ফলে গত ঈদুল ফিতরের মৌসুমে বেগ পেতে হয়েছিল হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষকে। ফলে কমিউনিটি ট্যুরিজমের মাধ্যমে রাত্রি যাপন করতে হয়েছিল। এবারে তেমনটা অগ্রিম বুকিংয়ের সাড়া মেলেনা বলে জানিয়েছেন হোটেল মোটেলের কর্তৃপক্ষ।

 

ঈদুল আযহায় পর্যটক খরায় কুয়াকাটা : নেই অগ্রীম বুকিংয়ের হিড়িক

 

এবারের ঈদে অগ্রিম বুকিং নেই কেন এমন প্রশ্নে আবাসিক হোটেল খাঁন প্যালেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল খাঁন বলেন, গত বছর এমন সময় আমাদের রুম রিজার্ভড হয়েছিল প্রায় ৮০% এবারে এখন পর্যন্ত ৪০% হয়েছে। আশা করি আরো কিছু রুম বুকিং সম্পন্ন হবে শীঘ্রই। তবে আমি মনে করি রাজনৈতিক ইস্যু আর অর্থনৈতিক মন্দা ইতোমধ্যে ট্যুরিজমে ইফেক্ট পড়তে শুরু করছে পাশাপাশি বন্ধটা যদি শুক্রবার ও শনিবারের পরে পড়তো হয়ত পর্যটকদের চাপ বাড়ত। এক্ষেত্রে বন্ধটা আগে হয়েছে তাই অগ্রিম বুকিং কম হয়েছে।

কুয়াকাটার অভিজাত হোটেল সিকদার রিসোর্ট ও ভিলার্সের এজিএম আলআমিন উজ্জ্বল আপন বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে হয়ত পর্যটকদের চাপ বাড়বে কুয়াকাটায়। এখনো অনেক পর্যটক খোঁজ খবর নিয়ে রাখছেন। প্লান করে হয়ত বুকিং কাজটা শেরে ফেলবেন। আপাতত: আমাদের রুম রিজার্ভড হয়েছে প্রায় ৫০%।

কনফিডেন্স ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইদুর রহমান বলেন, এবারে এখন পর্যন্ত তেমন ফোন আসেনি তাই বলে পর্যটকদের উপস্থিতি কম হবে এমনটা বলে মনে করছিনা। এখন অনেক পর্যটক সরেজমিনে এসে খোঁজ খবর নিয়ে রুম বুকিং সম্পন্ন করে। আবার অনেকেই সকালে এসে কুয়াকাটা ভ্রমন করে বিকালেই ফিরে যায় ফলে অনেকেই হোটেলের সাথে যোগাযোগ কম করে এখন।

কুয়াকাটা সি ট্যুর ট্রাভেলসের পরিচালক হোসাইন আমির বলেন, এবারের ঈদে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পর্যটকদের উপস্থিতি বাড়বে। এমনি জাতীয় নির্বাচনের প্রভাব ইতিমধ্যে পর্যটনে লাগতে শুরু করছে। এ বছর হয়তো আরো খরায় পড়তে হবে আমাদের।

পর্যটন উন্নয়ন কর্মী ও হোটেল সমুদ্র বিলাসের ব্যবস্থাপনা পরিচাল ডা. ঈসমাইল ইমন বলেন, সরকার যে পরিমানে রাজস্ব নিচ্ছে কুয়াকাটা থেকে সে পরিমানে সরকার উন্নয়ন করেনি। যা যা হয়েছে তা কেবল ব্যক্তি মালিকানায় হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন হওয়ার জন্য সরকারের আরো নজর দেওয়া দরকার বলে মনে করছি। সৈকত রক্ষায় এখনি পদক্ষেপ না নেওয়া হলে মূখ ফিরিয়ে নিতে পারে বিনিয়োগকারীরা।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পর্যটক আগমন বাড়বে। সেটা মাথায় রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অপরাধ দমনে কয়েকটি ভাগে সাজানো হয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশকে। যেহেতু রিজিওনের কাজগুলো কুয়াকাটা জোন থেকে পরিচালিত হয় সেক্ষেত্রে আমাদের সেবা দিতে বেগ পেতে হবেনা।