ঢাকা ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বেলকুচি-এনায়েতপুরে থামছেনা প্রভাবশালীদের বালু উত্তোলন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:১৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মার্চ ২০২৩
  • / ৪৬৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
সিনিয়র রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ :
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার বেতিল-আশাননগরে প্রভাবশালী চক্রের জোড় করে কৃষি জমি হতে বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত বেকু গাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেবার ঘটনা ঘঠেছে। তার পরও থামছে না বেতিল স্পার বাধের দক্ষিন পাশ থেকে ট্রাক দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন। স্থানীয়দের অভিযোগ, বেলকুচি বড়ধুলে বেলিরচর ও এনায়েতপুরে বেতিল-আশাননগরে মান্নান ফকির, বেতিলের রুহুল আমিন, স্থলের লাল মিয়র নেতৃত্বে চলা বালু লুট বন্ধে প্রশাসন কার্যকরি পদক্ষেপ না নেয়ায় এলাকাবাসী অসহায় হয়ে পড়েছে। এদিকে বালু খেকো মান্নান ফকির, রুহুল,  লাল মিয়া ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, এনায়েতপুর থানার আজগড়া গ্রামের মান্নান ফকির, রুহুল, লাল মিয়া গত ৩ বছর ধরে প্রভাব খাটিয়ে বেতিল স্পার বাঁধের দক্ষিণ পাশের আশাননগরে কৃষকের জমি থেকে জোড় করে বালু উত্তোলন করছে। বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে নামমাত্র জরিমানা করায় আবারো তা অব্যাহত থাকছে দীর্ঘ দিন ধরে। বালুদস্যুদের অত্যাচারে অসহায় হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের কৃষকেরা।

 এ ব্যাপারে মাজগ্রামের কৃষক আব্দুল হাই জানান, আমাদের কারো কথা কর্ণপাত করেন না সন্ত্রাসী মান্নান ফকির। আমাদের কৃষকদের অন্তত শত বিঘা কৃষি জমি থেকে তার লোকজন সারা দিন জোর করে মাটি কাটছে। প্রশাসনসহ সবাইকে ম্যানেজ করেই এসব চলে, বলে বেড়ায়। কেউ যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। আমরা চাই এ ব্যাপারে দ্রুত যেন পদক্ষেপ নেয়া হয়। তিনি আরো জানান, অব্যাহতভাবে মাটিবাহী ট্রাক চলাচলে ২০০ সালে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেতিল স্পারটি চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে মান্নান ফকিরের বালু লুটের কাজে ব্যবহৃত বেকু গাড়ি গত শুক্রবার রাতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পরে জানতে পেরে বেকুর চালক তা নিভিয়ে ফেলে। বালু উত্তোলন নিয়ে এখন এলাকাবাসীসহ তাদের ২টি গ্রুপ এখন মুখোমুখি। মাঝে-মাঝেই সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হচ্ছে জনপ্রতিনিধিসহ লোকজন। যেকোন সময় তা আরো বড় আকার ধারণ করার আশংকা করছে স্থানীয়রা।
বিষয়টি নিয়ে এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান জানান, বেলকুচির বড়ধুলে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে ভুমি অফিসের তহশিলদার তারেক হোসেন বাদী হয়ে মান্নান ফকির, সদিয়াচাঁদপুর চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির হোসেন জাহিদের ভাই রুহুল হোসেন, ইউপি সদস্য লাল মিয়া এনায়েতপুর থানা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক শেখ হাফিজসহ ৪ জন আসামী করে মামলা দায়ের করেছে।
এছাড়া চৌহালীর সদিয়াচাঁদপুর ইউনিয়নের মহেশপুরের ইউপি সদস্য লাল মিয়ার উপর বালু উত্তোলন দ্বন্দ্বে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মান্নান ফকির ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের হয়েছে। উভয় মামলায় তাদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে মান্নান ফকির জানান, বালু উত্তোলনের সাথে আমি একা নই, অনেকেই জড়িত। তবে আমি পরে যুক্ত হয়েছি।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান জানান, বালু দস্যুদের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। বেলকুচি ও এনায়েতপুরের কোথাও অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করতে দেয়া হবেনা। আমরা দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছি।
বা/খ: এসআর।

নিউজটি শেয়ার করুন

বেলকুচি-এনায়েতপুরে থামছেনা প্রভাবশালীদের বালু উত্তোলন

আপডেট সময় : ১০:১৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মার্চ ২০২৩
সিনিয়র রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ :
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার বেতিল-আশাননগরে প্রভাবশালী চক্রের জোড় করে কৃষি জমি হতে বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত বেকু গাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেবার ঘটনা ঘঠেছে। তার পরও থামছে না বেতিল স্পার বাধের দক্ষিন পাশ থেকে ট্রাক দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন। স্থানীয়দের অভিযোগ, বেলকুচি বড়ধুলে বেলিরচর ও এনায়েতপুরে বেতিল-আশাননগরে মান্নান ফকির, বেতিলের রুহুল আমিন, স্থলের লাল মিয়র নেতৃত্বে চলা বালু লুট বন্ধে প্রশাসন কার্যকরি পদক্ষেপ না নেয়ায় এলাকাবাসী অসহায় হয়ে পড়েছে। এদিকে বালু খেকো মান্নান ফকির, রুহুল,  লাল মিয়া ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, এনায়েতপুর থানার আজগড়া গ্রামের মান্নান ফকির, রুহুল, লাল মিয়া গত ৩ বছর ধরে প্রভাব খাটিয়ে বেতিল স্পার বাঁধের দক্ষিণ পাশের আশাননগরে কৃষকের জমি থেকে জোড় করে বালু উত্তোলন করছে। বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে নামমাত্র জরিমানা করায় আবারো তা অব্যাহত থাকছে দীর্ঘ দিন ধরে। বালুদস্যুদের অত্যাচারে অসহায় হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের কৃষকেরা।

 এ ব্যাপারে মাজগ্রামের কৃষক আব্দুল হাই জানান, আমাদের কারো কথা কর্ণপাত করেন না সন্ত্রাসী মান্নান ফকির। আমাদের কৃষকদের অন্তত শত বিঘা কৃষি জমি থেকে তার লোকজন সারা দিন জোর করে মাটি কাটছে। প্রশাসনসহ সবাইকে ম্যানেজ করেই এসব চলে, বলে বেড়ায়। কেউ যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। আমরা চাই এ ব্যাপারে দ্রুত যেন পদক্ষেপ নেয়া হয়। তিনি আরো জানান, অব্যাহতভাবে মাটিবাহী ট্রাক চলাচলে ২০০ সালে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেতিল স্পারটি চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে মান্নান ফকিরের বালু লুটের কাজে ব্যবহৃত বেকু গাড়ি গত শুক্রবার রাতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পরে জানতে পেরে বেকুর চালক তা নিভিয়ে ফেলে। বালু উত্তোলন নিয়ে এখন এলাকাবাসীসহ তাদের ২টি গ্রুপ এখন মুখোমুখি। মাঝে-মাঝেই সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হচ্ছে জনপ্রতিনিধিসহ লোকজন। যেকোন সময় তা আরো বড় আকার ধারণ করার আশংকা করছে স্থানীয়রা।
বিষয়টি নিয়ে এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান জানান, বেলকুচির বড়ধুলে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে ভুমি অফিসের তহশিলদার তারেক হোসেন বাদী হয়ে মান্নান ফকির, সদিয়াচাঁদপুর চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির হোসেন জাহিদের ভাই রুহুল হোসেন, ইউপি সদস্য লাল মিয়া এনায়েতপুর থানা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক শেখ হাফিজসহ ৪ জন আসামী করে মামলা দায়ের করেছে।
এছাড়া চৌহালীর সদিয়াচাঁদপুর ইউনিয়নের মহেশপুরের ইউপি সদস্য লাল মিয়ার উপর বালু উত্তোলন দ্বন্দ্বে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মান্নান ফকির ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের হয়েছে। উভয় মামলায় তাদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে মান্নান ফকির জানান, বালু উত্তোলনের সাথে আমি একা নই, অনেকেই জড়িত। তবে আমি পরে যুক্ত হয়েছি।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান জানান, বালু দস্যুদের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। বেলকুচি ও এনায়েতপুরের কোথাও অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করতে দেয়া হবেনা। আমরা দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছি।
বা/খ: এসআর।