নেছারাবাদ উপজেলার পূর্ব কামারকাঠি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মুনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিরিন আখতারসহ সহকারি শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ে একক আধিপত্য বিস্তার , স্বেচ্ছাচারিতা, শ্রেণিকক্ষের পাঠদানে বিঘ্ন ঘটানো, শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার, শিক্ষকদের হয়রানি, বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক বরাদ্দ থেকে স্বার্থ হাসিলের পায়তারাসহ নানা অভিযোগ এনে সভাপতি মুনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে শিক্ষকরা ওই অভিযোগ করেছেন। গতকাল রোববার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিরিন আখতারসহ বিদ্যালয়ের অন্যান্যে শিক্ষিকাদের স্বাক্ষরিত অভিযোগ ইউএনও, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা অফিস বরাবর জমা দিয়েছেন। সোমবার সকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিরিন আখতার অভিযোগ জমা দেয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষিকা শিরিন আখতার অভিযোগে জানান, গত ১২ মে ২০২২ সালে তার বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটিতে স্থানীয় এইচ,এম মুনিরুজ্জামান সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। কমিটির সভাপতি হওয়া মাত্রই মুনিরুজ্জামান বিদ্যালয়ের দাপ্তরিক নানা কাজে অসহযোগীতা করে আসছেন। এতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে বিঘ্ন ঘটছে। তিনি জানান, সভাপতি মুনিরুজ্জামান সে তার ইচ্ছেনুযায়ি সরকারি বিধি-বর্হিভূতভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করতে চাপ প্রয়োগ করেন। শিক্ষকরা তা মেনে না চললে সভাপতি মুনিরুজ্জামান নিজস্ব লোকজন দ্ধারা তাদের অপমান করছেন। আবার নিজেও শিক্ষিকাদের শাসিয়ে থাকেন। বিদ্যালয়ের সরকারি অনুদানে উন্নয়নমূলক কাজ থেকে তার স্বার্থ চরিতার্থ না হওয়াতে তিনি আমার বিরুদ্ধে নানা মহলে অভিযোগ করেন। যা আমাদের এবং আমার বিদ্যালয়ের জন্য খুবই অপমানজনক।
প্রধান শিক্ষিকা শিরিন আখতার অভিযোগে আরো বলেন, গত ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ একমাস পর্যন্ত তিনি (সভাপতি) বাচ্চাদের ক্লাস নিতে না দিয়ে ক্রীড়া অনুষ্ঠানের কথা বলে বাচ্চাদের প্রশিক্ষণের জন্য নির্দেশ দেন। অনুষ্ঠানের সবকিছুর আয়োজন করে হটাৎ তিনি তার খাম-খেয়ালিবসত সে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন।
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা রুশিয়া খাতুন অভিযোগ করেন, সভাপতি সে তার ইচ্ছে অনুযায়ি আমাদের বিদ্যালয় পরিচালনা করতে বলেন যা আমাদের জন্য খুবই অপমানজনক। এছাড়াও তিনি বিদ্যালয়ে নানান সমস্যা তৈরী করছেন। এ থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অভিযুক্ত মুনিরুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয়ে সরকারি অনুদানের উন্নয়নমুলকের বড় একটি টাকা থেকে তিনি (প্রধান শিক্ষিকা) আত্মসাতের চেষ্টা করেছিলেন। যা আমার শক্ত অবস্থানের কারণে পারেননি। এ নিয়ে আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসে অভিযোগ করেছিলাম। একটি তদন্ত হয়েছিল। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের স্লীপের টাকায় প্রধান শিক্ষিকি শিরিন আখতারের একক কর্তৃত্বের জন্য আমার স্বাক্ষর নিতে এসেছিলেন। আমি না জেনে তাতে সই না করায় তিনি আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা নাটক সাজাচ্ছেন।
উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হক বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে একটি অভিযোগ এসেছে। অতি শীগ্রই একটি তদন্ত কমিটি করে দেয়া হবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত একতরফা অভিযোগ পেয়ে আর কিছু বলা যাবেনা।