শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ০৮:০২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
কলমাকান্দায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ বিতরণ  পরকীয়ার জেরে রূপপুর এনপিপি নিকিমথ কোম্পানির পরিচালকের গাড়ি চালক খুন : এক নারী আটক পানির অভাবে সেচ সঙ্কটে ধুকছে বাংলাদেশ সিশেলসকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ রমজানে পণ্যের দাম বৃদ্ধির যৌক্তিক কারণ নেই : তথ্যমন্ত্রী আওয়ামী লীগ নতুন পরিকল্পিত খেলায় নেমেছে : মির্জা ফখরুল ‘পরাশক্তিরা পাকিস্তানের পক্ষ নেওয়ায় গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি’ প্রতিদিন মার্কিন ঘাঁটির উপর দিয়ে উড়ছে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ‘স্যার’ সম্বোধন ঔপনিবেশিক, এটা বদলাতে হবে–আ স ম রব   পাঁচ দশকেও গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পাওয়া হতাশাব্যাঞ্জক : রাবি উপাচার্য  চিতলমারীতে ৬ টি মামলায় ১২ হাজার টাকা অর্থদন্ড মীরসরাইয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ১১টি দোকানকে জরিমানা ৯৩টি দলের বেশিরভাগেরই কাগজপত্র ঠিক নেই: ইসি কাপ্তাইয়ে স্বাধীনতা দিবস শুটিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত  আফগানিস্তানকে ৫১ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশের যুবারা

দফায় দফায় মহড়া, জনমনে আতঙ্ক, দোকানপাট বন্ধ

দফায় দফায় মহড়া, জনমনে আতঙ্ক, দোকানপাট বন্ধ

বাগেরহাট ও চিতলমারী প্রতিনিধি :

বাগেরহাটের চিতলমারীতে দোকান ঘর ভাড়া দিয়ে বিপাকে পড়েছেন অশীতিপর বৃদ্ধ মোঃ সুলতান আহম্মেদ মুন্সি (১০২) ও তার পরিবার। এ ঘটনায় স্থানীয় সালিসদারদের একাধিক সালিস বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে। ফলে দুই পক্ষের দফায় দফায় মহড়ায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীরা দেকানপাঠ বন্ধ করে দেন। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১ টায় মোঃ সুলতান আহম্মেদ মুন্সির ছেলে মোঃ উজ্জল মুন্সি বাদী হয়ে চিতলমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
অভিযোগকারী মোঃ উজ্জল মুন্সি বলেন, ‘চিতলমারী উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মোঃ নিয়ামত খান ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে আমার পিতা মোঃ সুলতান আহম্মেদ মুন্সির নিকট হতে ৫০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে দুইটি দোকান ঘর ভাড়া নেন। পরে তার চাচা আব্দুস ছত্তার খান আরও দুইটি ঘর ৫০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে ভাড়া নেন। চুক্তিপত্রে ৪ টি ঘরের মেয়াদ ২ বছর করে উল্লেখ ছিল। আব্দুস ছত্তার খান মারা যাওয়ায় ৪ টি ঘরই নেয়ামত আলী খান ব্যবহার করেন। আরও দুইটি ঘর খালি হলে নিয়ামত খান সেই ঘর দুটিও ভাড়া নেন। মোট ৬টি ঘর তাকে ভাড়া দেওয়া হয়। ঘর গুলোর মধ্য একটি ঘরে সে স্বেচ্ছাসেবক দলের অফিস শুরু করে এবং অফিস কক্ষে রাষ্ট্র বিরোধী কার্যক্রম শুরু করে। এজন্য আমরা তাকে ঘর ছাড়তে বলি। গত বছরের ৩ নভেম্বর আমার বড় ভাই মাসুদ মুন্সি নিয়ামত খানকে ফোনে ৩১ ডিসেম্বর মধ্যে ঘর ছাড়ার জন্য বলেন। পরে আমিসহ আমার ভাইয়েরা তাকে ঘর ছাড়ার জন্য বলি। তখন নিয়ামত খান জানান, তিনি নাশকতার মামলায় পলাতক। জামিনে এসে ঘর ছাড়বেন। ১৩ জানুয়ারি গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে তার সাথে ৪ টি ঘরের জামানতের এক লাখ টাকা ঘর ছাড়ার সময় ফেরত পাবে বলেও আলোচনা হয়। তিনি বিপদে পড়ে গেছে বলে আমাদের কাছে ঘর ছাড়ার জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় চান। ২৪ ফেব্রুয়ারি দেখি নেয়ামত খান ঘরে ব্যবসার জন্য আরও ফ্রিজ ও মালামাল উঠাচ্ছে। তখন তাকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ঘর ছাড়ার কথা বলা হলে তিনি ও তার স্ত্রী লাকি খানম রড দিয়ে আমাদের মারতে আসে এবং বলে আমার ঘরে আমি মাল উঠাবো তাতে তোদের কি ? ঘরের কাছে আসলে মেরে ফেলবো। মোঃ নিয়ামতের মুরব্বী চিতলমারী আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ বাবুল হোসেন খান বিষয়টি মিমাংসা করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং ওইদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় গণ্যমান্যদের সমন্বয়ে একটি সালিসির ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে নিয়ামত খান ২৫ লাখ টাকার একটি বন্ধকী চুক্তিনামা দেখায়। সেটি স্থানীয় মুরব্বীরা পরীক্ষা করে নকল (কম্পিউটারে সৃজন) বলে সাব্যস্ত করেন। মোঃ বাবুল হোসেন খান আরও ২ দিনের সময় নেন। কিন্তু কোন সমাধান দিতে পারেননি। এ পর্যন্ত তিনবার সালিসি বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানে মোঃ নিয়ামত খানের সন্ত্রাসীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র-শস্ত্রসহ আমাদের ঘরের সামনে মহড়া দিচ্ছে। এতে জনমনে আতংক বিরাজ করছে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা ভয়ে দোকানপাট বন্ধ করে দিচ্ছে। বর্তমানে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা সেচ্ছাসেবক দল আহবায়ক মোঃ নিয়ামত খান বলেন, ‘সুলতান আহমেদ মুন্সি দোকান ঘর বন্ধক রেখে আমার কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। এই টাকা ফেরত দিলে আমি ঘর ছেড়ে দিব।’ তবে এই টাকা দেওয়ার বিষয়টি এত পরে কেন জানাজানি হল এ বিষয়ে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।
চিতলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ বাবুল হোসেন খান বলেন, ‘সুলতান আহমেদ মুন্সির রেকর্ডীয় জমিতে এই ঘর। নিয়ামত খানের দাবি করার কোন সুযোগ নেই। এছাড়া ২৫ লাখ টাকা দেয়ার যে বিষয়টি সেটা আমার কাছে গ্রহনযোগ্য মনে হয় না। ঘর ভাড়া নেওয়ার সময় যদি কোন অগ্রীম নিয়ে থাকে সেই স্বপক্ষে কোন কাগজ থাকলে সেটা দেখাতে পারে। কিন্তু ২৫ লাখ টাকা দেওয়ার যে কাগজ এটা কোথাও গ্রহনযোগ্য হবে না।’

শনিবার (৪ ফেব্রয়ারি) দুপুর ৩ টায় চিতলমারী থানার পরিদর্শক (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান জানান, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় আগামী বৃহস্পতিবার স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে সালিস বৈঠক হবে। আশা করি বৈঠকে একটা সুন্দর সমাধান হবে। যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে পুলিশের নজর রয়েছে।

বা/খ :  এসআর।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *