নিজস্ব প্রতিবেদক :
চলতি বছরের প্রথমার্ধে যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসির) বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি ) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ তথ্য জানান।
‘বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্ক’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পানি সংকট সমাধানে ভারত ছাড়াও চীন ও ভুটানের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে হবে। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে পানি সঙ্কট সমাধানে দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় পর গত বছর জেআরসির বৈঠক হয়েছে। চলতি বছরে প্রথমার্ধে জেআরসির বৈঠক হবে।
প্রতিবেশী নীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গেম চেঞ্জার হিসেবে আখ্যা দেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি ১৫ বছর আগের ট্রানজিট ইস্যু নিয়ে হওয়া রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ১৫ বছর আগে ট্রানজিট ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশে সস্তা রাজনীতি হয়েছে। শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ঝুঁকির মধ্যে রেখে ট্রানজিট করেছিলেন। যেটার সুফল আমরা এখন পাচ্ছি। যারা বিষয়টি নিয়ে সস্তা রাজনীতি করেছে তারা কিন্তু বেশি দূর এগোতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ খুব ভালো প্রতিবেশী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিবেশী নীতি ‘গেম চেঞ্জার’। আর বিশ্বের সব দেশই ভালো প্রতিবেশীই প্রত্যাশা করে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে হাইড্রো রিসোর্স নেই। সে কারণেই প্রতিবেশী দেশের কাছ থেকে এনার্জি সহযোগিতা নিতে চাই। আমরা এনার্জি সহযোগিতা শুধু ভারত থেকে নয়, নেপাল ও ভুটান থেকেও নিয়ে নিচ্ছি।
জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কখনো আপস করবে না বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, পাশাপাশি বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে যাই ঘটুক না কেন, নিজেদের পররাষ্ট্রনীতিতে অটল থাকারও বার্তা দিয়েছেন তিনি।
শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। বৈশ্বিক পরিস্থিতি যে দিকেই যাক না কেন, আমাদের এই অবস্থান অক্ষত থাকবে। তাছাড়া জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ কখনো আপস করবে না। এসব অক্ষত রেখে বাংলাদেশ তার নিজস্ব সম্পদকে অব্যাহতভাবে কাজে লাগাবে।
বাংলাদেশকে আদর্শ প্রতিবেশী হিসেবে আখ্যা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর প্রতিটি দেশই ভালো প্রতিবেশীর প্রত্যাশা করে। ভালো প্রতিবেশীর উদাহরণ দিতে গেলে বাংলাদেশকে নিতে হবে। বাংলাদেশ ভালো প্রতিবেশী হিসেবে তার অন্য প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক সম্প্রসারণ অব্যাহত রাখবে। আশা করি, আমাদের প্রতিবেশীরা সেটার যথাযথ মূল্যায়ন করতে সক্ষম হবে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, বিশ্ব যখন কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন প্রতিবেশীর গুরুত্ব খুব বেশি প্রাসঙ্গিক। বাংলাদেশ সরকার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি এবং পারস্পরিক উন্নয়নের জন্য প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক সুসংহত করতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।
জ্বালানি প্রসঙ্গে শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশ তার নিজস্ব সম্পদ কাজে লাগাচ্ছে। জ্বালানি সম্পদের কথা উঠলে বলতে হয়, আমাদের হাইড্রো রিসোর্স নেই। আমরা প্রতিবেশী দেশের কাছ থেকে জ্বালানি সহযোগিতা নিতে চাই। এক্ষেত্রে আমরা ভারত ছাড়াও নেপাল ও ভুটান থেকেও সহযোগিতা নিচ্ছি।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. লাইলাফুর ইয়াসমিন, বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির ও বিআইআইএসএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো এম আশিক রহমান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শেখ পাশা হাবিব উদ্দিন। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির।