ঢাকা ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে এই সরকারকে প্রত্যাহার করতে হবে : গয়েশ্বর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৪০:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মার্চ ২০২৩
  • / ৪৪৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমার মনে হয় এখন মুক্তি বা মামলা প্রত্যাহারের দাবি আমাদের কাছে মুখ্য নয়। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে এই সরকারকে প্রত্যাহার করতে হবে। সেই দাবিটাই আমাদের মুখ্য হওয়া দরকার। এই সরকারকে সরাতে হবে। তারপর একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধির সমন্বয়ে নতুন সরকার গঠন করতে হবে।

শুক্রবার (৩ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি এবং ডা. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার প্রতিবাদে পেশাজীবী সমাবেশে তিনি এই কথা বলেন।

তিনি বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়লে সবকিছুর দাম বাড়বে। বিদ্যুৎ উৎপাদন হোক বা না হোক ভারতের আদানিকে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুৎ খাতে লুটপাট করে দেশকে ধ্বংসের শেষ সীমানায় নিয়ে গেছে।

সরকারের সমালোচনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। এক্ষেত্রে যারা শামিল হতে পারবেন ভালো। আর যারা বিরোধিতা করবেন তারা একাত্তরের রাজাকারের খাতায় নাম লেখাবেন। একাত্তরে একটি ‘শান্তি কমিটি’ করেছিল ইয়াহিয়া খান। তখন যেখানে মুক্তিযোদ্ধা সেখানে শান্তি কমিটির উৎপাত। এখন আবার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) আরেকটি ‘শান্তি কমিটি’ করেছেন। যেখানেই আমরা আন্দোলন করতে যাই সেখানেই এই ‘শান্তি কমিটি’ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। আর এই শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

এসময় তিনি তার কথিত শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে ওবায়দুল কাদেরকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামী দিনে এই শান্তি কমিটিও আওয়ামী লীগকে রক্ষা করতে পারবে না।

১৯৭১ সালে শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন আওয়ামী লীগও আরেকটি শান্তি কমিটি করছে। যেদিন আমরা কর্মসূচি করি, সেদিন এই শান্তি কমিটিও কর্মসূচি দেয়। আমার মনে হয়, ওবায়দুল কাদের তার পারিবারিক সূত্রের অভিজ্ঞতা পাওয়া। তবে কোনো কমিটি এই সরকারকে রক্ষা করতে পারবে না।

চলমান গণতান্ত্রিক যুদ্ধে সবাইকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, দেশের কথা চিন্তা করেন, ১৯৭১ সালের মতো গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের রুখে দাঁড়ান। ১৯৭১ সালে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি; সেই গণতন্ত্রের জন্য আমরা যুদ্ধ করছি। এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবেন, নাকি বিরোধিতা করবেন? করলে ভালো, না করলে ১৯৭১ সালের মতো রাজকারের খাতায় নাম লেখাবেন।

বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক নয় বলে তারা জনগণের কথা ভাবে না, এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, কালকে একজন চেয়ারম্যান একটি বক্তব্য দিলো, সেটি হলো-জনগণ থাকবে ঘরে, ভোট দিবেন প্রশাসনে, সন্ধ্যা বেলায় ফলাফল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। অর্থাৎ জনগণকে ভোট কেন্দ্রে যেতে দিবে না। ভোট দিবে কে? প্রশাসন। প্রশাসন মানে ডিসি, এসপি, পুলিশ। যেটা আপনারা দেখেছেন ২০১৮ সালের নির্বাচনে। প্রতিযোগিতা কত প্রকার ও কী কী। অর্থাৎ কে কত বেশি ভোট চুরি করতে পারে সেটাই প্রতিযোগিতা! ভোট রক্ষার দায়িত্ব পুলিশ-প্রশাসনের, সেই পুলিশকে দিয়ে তারা (আওয়ামী লীগ) ভোট চুরি করায়। তা না হলে তাদের চাকরি থাকবে না।

সরকারকে নিরাপদ এক্সিটের ব্যবস্থা করে দিতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, যারা সরকারি চাকরি করেন, মনে রাখবেন আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। জনগণের টাকায় আপনারা চলেন। দেশটা আমার বা আপনাদের একার নয়। আপনাদেরও সন্তান আছে। তাই দেশের কথা চিন্তা করে একাত্তরের মতো স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশপ্রেমিক নয় দাবি করে তিনি বলেন, আজকে সবাইকে বুঝতে হবে, এই সরকার জাতীয়তাবাদী নয়, দেশপ্রেমিক নয় এবং গণতান্ত্রিক নয়। যার কারণে জনগণের কথা তোয়াক্কা করে না।

এই কর্মসূচিতে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যা এবং বিডিআর বিদ্রোহে নিহত ৫৭ সেনা কর্মকর্তা হত্যা প্রসঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত সাগর-রুনির হত্যা প্রকৃত বিচার পাওয়া যাবে না। পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। যা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধেও এত সেনাকর্মকর্তা শহীদ হননি।

পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, সাংবাদিক নেতা আমিরুল ইসলাম কাগজী ও আইনজীবী আবেদ রাজা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে এই সরকারকে প্রত্যাহার করতে হবে : গয়েশ্বর

আপডেট সময় : ০৩:৪০:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমার মনে হয় এখন মুক্তি বা মামলা প্রত্যাহারের দাবি আমাদের কাছে মুখ্য নয়। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে এই সরকারকে প্রত্যাহার করতে হবে। সেই দাবিটাই আমাদের মুখ্য হওয়া দরকার। এই সরকারকে সরাতে হবে। তারপর একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধির সমন্বয়ে নতুন সরকার গঠন করতে হবে।

শুক্রবার (৩ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি এবং ডা. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার প্রতিবাদে পেশাজীবী সমাবেশে তিনি এই কথা বলেন।

তিনি বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়লে সবকিছুর দাম বাড়বে। বিদ্যুৎ উৎপাদন হোক বা না হোক ভারতের আদানিকে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুৎ খাতে লুটপাট করে দেশকে ধ্বংসের শেষ সীমানায় নিয়ে গেছে।

সরকারের সমালোচনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। এক্ষেত্রে যারা শামিল হতে পারবেন ভালো। আর যারা বিরোধিতা করবেন তারা একাত্তরের রাজাকারের খাতায় নাম লেখাবেন। একাত্তরে একটি ‘শান্তি কমিটি’ করেছিল ইয়াহিয়া খান। তখন যেখানে মুক্তিযোদ্ধা সেখানে শান্তি কমিটির উৎপাত। এখন আবার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) আরেকটি ‘শান্তি কমিটি’ করেছেন। যেখানেই আমরা আন্দোলন করতে যাই সেখানেই এই ‘শান্তি কমিটি’ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। আর এই শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

এসময় তিনি তার কথিত শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে ওবায়দুল কাদেরকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামী দিনে এই শান্তি কমিটিও আওয়ামী লীগকে রক্ষা করতে পারবে না।

১৯৭১ সালে শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন আওয়ামী লীগও আরেকটি শান্তি কমিটি করছে। যেদিন আমরা কর্মসূচি করি, সেদিন এই শান্তি কমিটিও কর্মসূচি দেয়। আমার মনে হয়, ওবায়দুল কাদের তার পারিবারিক সূত্রের অভিজ্ঞতা পাওয়া। তবে কোনো কমিটি এই সরকারকে রক্ষা করতে পারবে না।

চলমান গণতান্ত্রিক যুদ্ধে সবাইকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, দেশের কথা চিন্তা করেন, ১৯৭১ সালের মতো গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের রুখে দাঁড়ান। ১৯৭১ সালে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি; সেই গণতন্ত্রের জন্য আমরা যুদ্ধ করছি। এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবেন, নাকি বিরোধিতা করবেন? করলে ভালো, না করলে ১৯৭১ সালের মতো রাজকারের খাতায় নাম লেখাবেন।

বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক নয় বলে তারা জনগণের কথা ভাবে না, এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, কালকে একজন চেয়ারম্যান একটি বক্তব্য দিলো, সেটি হলো-জনগণ থাকবে ঘরে, ভোট দিবেন প্রশাসনে, সন্ধ্যা বেলায় ফলাফল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। অর্থাৎ জনগণকে ভোট কেন্দ্রে যেতে দিবে না। ভোট দিবে কে? প্রশাসন। প্রশাসন মানে ডিসি, এসপি, পুলিশ। যেটা আপনারা দেখেছেন ২০১৮ সালের নির্বাচনে। প্রতিযোগিতা কত প্রকার ও কী কী। অর্থাৎ কে কত বেশি ভোট চুরি করতে পারে সেটাই প্রতিযোগিতা! ভোট রক্ষার দায়িত্ব পুলিশ-প্রশাসনের, সেই পুলিশকে দিয়ে তারা (আওয়ামী লীগ) ভোট চুরি করায়। তা না হলে তাদের চাকরি থাকবে না।

সরকারকে নিরাপদ এক্সিটের ব্যবস্থা করে দিতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, যারা সরকারি চাকরি করেন, মনে রাখবেন আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। জনগণের টাকায় আপনারা চলেন। দেশটা আমার বা আপনাদের একার নয়। আপনাদেরও সন্তান আছে। তাই দেশের কথা চিন্তা করে একাত্তরের মতো স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশপ্রেমিক নয় দাবি করে তিনি বলেন, আজকে সবাইকে বুঝতে হবে, এই সরকার জাতীয়তাবাদী নয়, দেশপ্রেমিক নয় এবং গণতান্ত্রিক নয়। যার কারণে জনগণের কথা তোয়াক্কা করে না।

এই কর্মসূচিতে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যা এবং বিডিআর বিদ্রোহে নিহত ৫৭ সেনা কর্মকর্তা হত্যা প্রসঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত সাগর-রুনির হত্যা প্রকৃত বিচার পাওয়া যাবে না। পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। যা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধেও এত সেনাকর্মকর্তা শহীদ হননি।

পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, সাংবাদিক নেতা আমিরুল ইসলাম কাগজী ও আইনজীবী আবেদ রাজা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।