মেসি-নেইমারের কাছে রোনালদোদের হার
- আপডেট সময় : ১২:৩৭:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৩
- / ৪৪৯ বার পড়া হয়েছে
স্পোর্টস ডেস্ক :
মরুর বুকে মেসি বনাম রোনালদোর লড়াই। প্রীতি ম্যাচের আড়ালে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও হলো বেশ। গোলের দেখা পেলেন মেসি-নেইমার-রোনালদো-এমবাপেরা। ৯ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে প্যারিস সেন্ট জার্মেই জয়ের উৎসব করেছে। প্যারিসের সেরা দলটি একজন কম নিয়েও ৫-৪ গোলে হারিয়েছে রিয়াল অল-স্টার একাদশকে।
লিওনেল মেসি-নেইমারদের বিপক্ষে জোড়া গোল করেও দলকে জয় উপহার দিতে পারেননি পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। প্রীতি ম্যাচের আড়ালে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও হলো বেশ। গোলের দেখা পেলেন মেসি-রোনালদো-এমবাপ্পেরা।
সৌদি আরবের রিয়াদের কিং ফাহাদ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার রাতে মুখোমুখি হয়েছিল পিএসজি এবং সৌদি আরবের দুই ক্লাবের খেলোয়াড়দের নিয়ে সেরা একাদশটি। রোনালদোর মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম কোনও দলে খেলা উপলক্ষে প্রীতি ম্যাচটি আয়োজিত হয়েছিল। দর্শকরা চড়া দামে টিকিট কিনে অপেক্ষায় ছিল বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের ম্যাচ দেখতে। মেসি-রোনালদোরা তাদের হতাশ করেননি। একের পর এক গোল করে প্রীতি ম্যাচটি করে রেখেছেন স্মরণীয়।
শুধু যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে তা নয়। ম্যাচ শুরুর আগে মাঠে প্রবেশের আগে রোনালদো-রামোসরা বন্ধুত্বের সম্পর্কটা আবারও ঝালিয়ে নিয়েছেন। উৎসবমুখর পরিবেশেই রেফারির বাঁশি বেজেছে। ৯০ মিনিট জুড়ে আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ নির্ভর খেলা হয়েছে।
ম্যাচ ঘড়ির তিন মিনিটে নেইমারের তুলে দেওয়া বলে মেসি বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলকিপারের পাশ দিয়ে আলতো করে জড়িয়ে দেন জালে।
৬ মিনিটেই গোল শোধ দিতে পারতো সৌদি অল স্টার একাদশ। সতীর্থের পাসে রোনালদোর বক্সের প্রান্ত থেকে নেওয়া শট গোলকিপার বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন।
১২ মিনিটে রোনালদোর পাসে লুইস গুস্তাভো বাম পায়ের শট গোলকিপার প্রতিহত করেন। ১৬ মিনিটে আশরাফ হাকিমির ক্রসে নেইমার বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ছয় গজ দূরত্বে শট নিলেও গোলকিপার গোল হতে দেননি।
৩৪ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে উড়ে আসা বল নার্ভাস হাত দিয়ে ক্লিয়ার করতে গিয়ে রোনালদোকে আঘাত করে বসেন। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। স্পট কিক থেকে রোনালদো জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করতে ভুল করেননি। গোলকিপার বলের লাইনে ঝাঁপালেও নাগাল পাননি।
৩৯ মিনিটে পিএসজি ১০ জনের দলে পরিণত। হুয়ান বার্নাট ফেলে দেন সালেম আল দাসারিকে। রেফারি সরাসরি বার্নাটকে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার নির্দেশ দেন। ১০ জন নিয়েও পিএসজির ধার মোটেও কমেনি। ৪৩ মিনিটে এমবাপের বাম প্রান্তের ক্রসে মারকুইনহোস বুটের ডগা দিয়ে গোলকিপারকে পরাস্ত করেন।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে নেইমারের পেনাল্টি থেকে দুর্বল শট গোলকিপার সহজেই রুখে দিয়ে পিএসজির ব্যবধান আর বাড়তে দেননি। যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে সতীর্তের ক্রসে রোনালদোর হেড বারে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে রোনালদোই বাঁ পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করে সমতা আনেন। ড্রেসিংরুম থেকে ফিরে এসে দুই দলের খেলায় ধার আরও বাড়ে।
৫৩ মিনিটে একজনকে কাটিয়ে এমবাপের ছোট পাসে রামোস ছয় গজ দূরত্বের মধ্যে থেকে শুধু বলের দিক পরিবর্তন করে দিয়ে দলকে ৩-২ এ এগিয়ে নেন। ৫৬ মিনিটে স্কোর লাইন ৩-৩। মার্টিনেজের কর্নার থেকে গোলপোস্টের কাছাকাছি থেকে জ্যাং হুয়ান সু নিঁখুত হেডে সমতায় ফেরান সৌদি অল স্টারকে।
চার মিনিট পর মেসির শট এক ডিফেন্ডারের হাতে লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বেজে ওঠে। এমবাপে গোলকিপারের বিপরীত দিক দিয়ে জাল কাঁপিয়ে পিএসজিকে ৪-৩ এ এগিয়ে নেন।
ম্যাচের ৬১তম মিনিটে রোনালদোকে তুলে নেন অল-স্টার কোচ। প্রীতি ম্যাচ হওয়ায় পিএসজি কোচও কিছুক্ষণের ব্যবধানে বদলি করেন মেসি, নেইমার, এমবাপে, রামোসদের। তাতে উত্তেজনা কমে গেলেও গোলের অভাব হয়নি। ৭৮তম মিনিটে স্কোরলাইন ৫-৩ করেন এমবাপের বদলি নামা একিতিকে। মাঝমাঠের কাছে সতীর্থের রক্ষণচেরা পাসে বল পেয়ে যান তিনি। এরপর অনেকটা দৌড়ে ডি-বক্সে ঢুকে জাল কাঁপান। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে দূর থেকে নেওয়া শটে ব্যবধান কমান তালিস্কা। শেষ পর্যন্ত মরুর বুকে ঝড় তুলে প্যারিসের সেরা দলটি জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে।
শেষবার মেসি ও রোনালদোর দেখা হয়েছিল ২০২০ সালের ডিসেম্বরে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে। মেসির বার্সেলোনার বিপক্ষে ৩-০ গোলে জেতা ম্যাচে জুভেন্টাসের হয়ে জোড়া গোল করেছিলেন রোনালদো। এবারও ৩৭ বছর বয়সী রোনালদো জোড়া গোল করলেন। তবে জয়ের হাসি হাসলেন ৩৫ বছর বয়সী মেসি।