ঢাকা ০৬:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ভোক্তা অধিকার রক্ষায় আইনের বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৩:০১:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪
  • / ৪৬০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রোজা চলমান থাকায় বসন্তের বাজার সয়লাব গ্রীষ্মের রসালো ফল তরমুজে। ইফতারে এ ফলের ক্রেতাচাহিদা সর্বোচ্চ। তাই মৌসুম শুরুর আগেই তরমুজ এসেছে বাজারে। রাজধানীর মিরপুর-১ ফলের আড়তে বড় আকারের তরমুজের শ’ ৩৮-৪০ হাজার টাকা, মাঝারি আকারের ফল ২৮-৩০ হাজার আর ছোট আকারের তরমুজ ১৭-১৮ হাজার। অথচ দুই কিলোমিটারের দূরত্বে প্রতি পিসের তরমুজ উঠছে পাল্লায়। তাও ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে। ঢাকার সবখানেই একই দৃশ্য। তাই প্রশ্ন উঠেছে, ভোক্তার অধিকার রক্ষায় আইনের বাস্তবায়ন নিয়ে।

ভোক্তারা বলেন, ‘তাদের বাজার মনিটরিং সঠিকভাবে হচ্ছে না। তাই তরমুজ কেজি হিসেবে বিক্রি করছে, পিস হিসেবে বিক্রি করছে না। সব দোকানে একই অবস্থা।’

বেশি দামে পণ্য কেনা, ভেজাল, মিথ্যা বিজ্ঞাপন, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ক্রয়, পণ্যের গায়ের দাম কেটে বাড়তি অংক বসানো এ দেশে প্রতিদিনকার ঘটনা। এছাড়াও রেস্তোরাঁয় বাসি খাবার, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সেবা বঞ্চিত হওয়াসহ নানাভাবে প্রতারিত হয়ে থাকেন ক্রেতা বা ভোক্তারা।

এদিকে ভোক্তারা যেন না ঠকে, প্রতারিত না হয় সেজন্য ১৯৮৩ সাল থেকে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে আসছে ভোক্তা অধিকার দিবস। বাংলাদেশে ২০০৯ সালে ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন’ করার পরে গঠিত হয়েছে অধিদপ্তর। দিনে দিনে বাড়ছে এ প্রতিষ্ঠানের পরিসর।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাজার নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে ৭২ হাজার ৯৩৭ অভিযান পরিচালনা করেছে সংস্থাটি। যেখানে অনিয়মের অভিযোগে জরিমানা করা হয়েছে ১২০ কোটি টাকার ওপরে। একই সঙ্গে পণ্য কিনে বা সেবা নিয়ে প্রতারিত হওয়া ভোক্তার অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে ৯ হাজার ১৫০টি। তবুও কমছে না অনিয়ম।

নিত্যপণ্যের বাজার, সুপারশপ, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানেও ভোক্তা স্বার্থহানি হচ্ছে। তবে কি পুরোপুরি কাজে আসছে না ভোক্তা অধিকার আইন?

ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘১৪-১৫ বছরে যেখানে ভোক্তাদের স্বার্থহানি হচ্ছে সেখানে আইনের সংশোধন করা দরকার। এরই মধ্যে এটার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ভোক্তাদের অধিকারের বিষয়ে সেখানে নির্দিষ্ট করে বলা আছে।’

ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় নতুন আইন নয়, বরং বাস্তবায়নে কঠোর হবার আহ্বান জানান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির।

তিনি বলেন, ‘শুধু রমজান নয়; সারাবছর এটা অব্যাহত থাকলে মজুতদাররা সাবধান হয়ে যাবে। যারা বিভিন্ন কারসাজিতে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

রাজনৈতিক সদিচ্ছার সঙ্গে উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও সেবাদান প্রতিষ্ঠানগুলো ভোক্তা স্বার্থকে ঠিকঠাক গুরুত্ব না দিলে সুফল মিলবে ভোক্তার অধিকার প্রতিষ্ঠায়। তাই প্রতিটি মহলে সচেতনতা বৃদ্ধি ও মানবিক হবার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

ভোক্তা অধিকার রক্ষায় আইনের বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন

আপডেট সময় : ০৩:০১:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪

রোজা চলমান থাকায় বসন্তের বাজার সয়লাব গ্রীষ্মের রসালো ফল তরমুজে। ইফতারে এ ফলের ক্রেতাচাহিদা সর্বোচ্চ। তাই মৌসুম শুরুর আগেই তরমুজ এসেছে বাজারে। রাজধানীর মিরপুর-১ ফলের আড়তে বড় আকারের তরমুজের শ’ ৩৮-৪০ হাজার টাকা, মাঝারি আকারের ফল ২৮-৩০ হাজার আর ছোট আকারের তরমুজ ১৭-১৮ হাজার। অথচ দুই কিলোমিটারের দূরত্বে প্রতি পিসের তরমুজ উঠছে পাল্লায়। তাও ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে। ঢাকার সবখানেই একই দৃশ্য। তাই প্রশ্ন উঠেছে, ভোক্তার অধিকার রক্ষায় আইনের বাস্তবায়ন নিয়ে।

ভোক্তারা বলেন, ‘তাদের বাজার মনিটরিং সঠিকভাবে হচ্ছে না। তাই তরমুজ কেজি হিসেবে বিক্রি করছে, পিস হিসেবে বিক্রি করছে না। সব দোকানে একই অবস্থা।’

বেশি দামে পণ্য কেনা, ভেজাল, মিথ্যা বিজ্ঞাপন, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ক্রয়, পণ্যের গায়ের দাম কেটে বাড়তি অংক বসানো এ দেশে প্রতিদিনকার ঘটনা। এছাড়াও রেস্তোরাঁয় বাসি খাবার, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সেবা বঞ্চিত হওয়াসহ নানাভাবে প্রতারিত হয়ে থাকেন ক্রেতা বা ভোক্তারা।

এদিকে ভোক্তারা যেন না ঠকে, প্রতারিত না হয় সেজন্য ১৯৮৩ সাল থেকে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে আসছে ভোক্তা অধিকার দিবস। বাংলাদেশে ২০০৯ সালে ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন’ করার পরে গঠিত হয়েছে অধিদপ্তর। দিনে দিনে বাড়ছে এ প্রতিষ্ঠানের পরিসর।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাজার নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে ৭২ হাজার ৯৩৭ অভিযান পরিচালনা করেছে সংস্থাটি। যেখানে অনিয়মের অভিযোগে জরিমানা করা হয়েছে ১২০ কোটি টাকার ওপরে। একই সঙ্গে পণ্য কিনে বা সেবা নিয়ে প্রতারিত হওয়া ভোক্তার অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে ৯ হাজার ১৫০টি। তবুও কমছে না অনিয়ম।

নিত্যপণ্যের বাজার, সুপারশপ, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানেও ভোক্তা স্বার্থহানি হচ্ছে। তবে কি পুরোপুরি কাজে আসছে না ভোক্তা অধিকার আইন?

ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘১৪-১৫ বছরে যেখানে ভোক্তাদের স্বার্থহানি হচ্ছে সেখানে আইনের সংশোধন করা দরকার। এরই মধ্যে এটার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ভোক্তাদের অধিকারের বিষয়ে সেখানে নির্দিষ্ট করে বলা আছে।’

ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় নতুন আইন নয়, বরং বাস্তবায়নে কঠোর হবার আহ্বান জানান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির।

তিনি বলেন, ‘শুধু রমজান নয়; সারাবছর এটা অব্যাহত থাকলে মজুতদাররা সাবধান হয়ে যাবে। যারা বিভিন্ন কারসাজিতে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

রাজনৈতিক সদিচ্ছার সঙ্গে উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও সেবাদান প্রতিষ্ঠানগুলো ভোক্তা স্বার্থকে ঠিকঠাক গুরুত্ব না দিলে সুফল মিলবে ভোক্তার অধিকার প্রতিষ্ঠায়। তাই প্রতিটি মহলে সচেতনতা বৃদ্ধি ও মানবিক হবার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।