ঢাকা ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলে ইউএনও’র উদ্যোগে ছড়াচ্ছে শিক্ষার আলো

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:২৩:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩
  • / ৪৭৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
// ফয়সাল হক,  চিলমারী (কুড়িগ্রাম) থেকে //
শিক্ষা গ্রহণের আগেই ঝরে পড়তে শুরু করছে চিলমারী উপজেলার আমতলা চরের শিশুরা। শিক্ষা আলোয় আলোকিত হওয়া থেকেও বঞ্চিত আমতলা চরের শতশত শিশুরা। শিশুরা যেন শিক্ষা গ্রহণের আগেই ঝরে না পড়ে, শিক্ষার আলোয় যেন আলোকিত হতে পারে; এজন্য ব্যতিক্রম উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমানের উদ্যোগে শিশুদের শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া রোধে স্থানীয়দের সহযোগীতায় প্রাথমিকভাবে শুরু করা হয়েছে একটি ভ্রাম্যমান প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ও পাঠদান শুরু হওয়ায় শিশুদের মাঝে ফিরছে শিক্ষা, দেখতে শুরু করেছে তারা আলোর মুখ। অভিভাবদের মাঝেও দেখা দিয়েছে প্রশান্তি।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের একটি চর আমতলার চর। বেশ কয়েক বছর থেকে চরটি স্থায়ীরূপ ধারণ করেছে এবং প্রায় ৪’শতাধিক পরিবার সেখানে বসবাস করছে। বছরের পর বছর চরটি স্থায়ীভাবে থাকায় সেখানে ২০১৭ সালে গড়ে তোলা হয় একটি আশ্রয়ণ কেন্দ্র। শতশত পরিবারের বাস সাথে গড়ে তোলা হয় একটি আশ্রয়ণ কেন্দ্র কিন্তু উক্ত চরের মানুষজন চিকিৎসা, শিক্ষাসহ বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত থাকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় শতশত শিশুরা শিক্ষা গ্রহণের আগেই ঝড়ে পড়তে শুরু করে। শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত শিশুরা বিভিন্ন শিশুশ্রমে ঝুঁকে পড়ে। বিষয়টি বিভিন্নভাবে জানতে পেরে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান। পরিদর্শন শেষে স্থানীয় অভিভাবক ও শিশুদের দাবির পেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে স্থানীয়দের সহযোগীতায় আমতলা আশ্রয়ণ কেন্দ্রের একটি ঘরে ভ্রাম্যমান ভাবে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করেন। বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয় আমতলা শহিদ মুক্তিযোদ্ধা প্রাথমিক বিদ্যালয়। চলতি বছরের শুরু থেকে বিদ্যালয়ের পাঠদান শুরু হওয়ায় এলাকার শিশুদের মাঝে বইতে শুরু করেছে শিক্ষার সু-বাতাস। বর্তমানে শিশু শ্রেণি, ১ম ও ২য় শ্রেণি তিনটি ক্লাসে ৫০ শিশু শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাচ্ছেন স্থানীয় দুই নারী শিক্ষিকা। বর্তমানে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চলছে।
চরাঞ্চলের শিশুদের ঝরে পড়া রোধে ইউএনও’র ব্যতিক্রম উদ্যোগ
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, স্কুলটি হয়ে আমরা শিখতে শুরু করছি, আমরা সরকারীভাবে সকল সহযোগী চাই এবং শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে চাই। শিক্ষিকা নাজমা আক্তার বলেন, ইএনও স্যারের উদ্যোগে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় আমরা চেষ্টা করছি পাঠদানের মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষাদানের। দ্রুত আমতলা চরে সরকারীভাবে বিদ্যালয় গড়ে তোলার আহব্বান জানান এলাকাবাসী।
এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ রশিদ বলেন, এই চরে প্রায় চারশ’ পরিবারের বসবাস। শতশত শিশু রয়েছে কিন্তু কোন বিদ্যালয় নাই। যার কারণে শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। তিনি আরো জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উদ্যোগে আপতাত শিশুদের ঝোড়ে পড়া রোধে ভ্রাম্যমান হিসাবে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করা হয়েছে তবে এখানে সরকারী ভাবে বিদ্যালয় খুবই প্রয়োজন।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, কোন শিশু যেন শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয় তাই আমরা চেষ্টা করছি এবং যে এলাকায় বিদ্যালয় নাই সেখানে স্থানীয়দের সচেতন মহলের সহযোগীতায় শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। আমি চাই এ অঞ্চলের শিশুরা একদিন চিলমারীর মুখ উজ্জ্বল করবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলে ইউএনও’র উদ্যোগে ছড়াচ্ছে শিক্ষার আলো

আপডেট সময় : ১২:২৩:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩
// ফয়সাল হক,  চিলমারী (কুড়িগ্রাম) থেকে //
শিক্ষা গ্রহণের আগেই ঝরে পড়তে শুরু করছে চিলমারী উপজেলার আমতলা চরের শিশুরা। শিক্ষা আলোয় আলোকিত হওয়া থেকেও বঞ্চিত আমতলা চরের শতশত শিশুরা। শিশুরা যেন শিক্ষা গ্রহণের আগেই ঝরে না পড়ে, শিক্ষার আলোয় যেন আলোকিত হতে পারে; এজন্য ব্যতিক্রম উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমানের উদ্যোগে শিশুদের শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া রোধে স্থানীয়দের সহযোগীতায় প্রাথমিকভাবে শুরু করা হয়েছে একটি ভ্রাম্যমান প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ও পাঠদান শুরু হওয়ায় শিশুদের মাঝে ফিরছে শিক্ষা, দেখতে শুরু করেছে তারা আলোর মুখ। অভিভাবদের মাঝেও দেখা দিয়েছে প্রশান্তি।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের একটি চর আমতলার চর। বেশ কয়েক বছর থেকে চরটি স্থায়ীরূপ ধারণ করেছে এবং প্রায় ৪’শতাধিক পরিবার সেখানে বসবাস করছে। বছরের পর বছর চরটি স্থায়ীভাবে থাকায় সেখানে ২০১৭ সালে গড়ে তোলা হয় একটি আশ্রয়ণ কেন্দ্র। শতশত পরিবারের বাস সাথে গড়ে তোলা হয় একটি আশ্রয়ণ কেন্দ্র কিন্তু উক্ত চরের মানুষজন চিকিৎসা, শিক্ষাসহ বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত থাকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় শতশত শিশুরা শিক্ষা গ্রহণের আগেই ঝড়ে পড়তে শুরু করে। শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত শিশুরা বিভিন্ন শিশুশ্রমে ঝুঁকে পড়ে। বিষয়টি বিভিন্নভাবে জানতে পেরে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান। পরিদর্শন শেষে স্থানীয় অভিভাবক ও শিশুদের দাবির পেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে স্থানীয়দের সহযোগীতায় আমতলা আশ্রয়ণ কেন্দ্রের একটি ঘরে ভ্রাম্যমান ভাবে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করেন। বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয় আমতলা শহিদ মুক্তিযোদ্ধা প্রাথমিক বিদ্যালয়। চলতি বছরের শুরু থেকে বিদ্যালয়ের পাঠদান শুরু হওয়ায় এলাকার শিশুদের মাঝে বইতে শুরু করেছে শিক্ষার সু-বাতাস। বর্তমানে শিশু শ্রেণি, ১ম ও ২য় শ্রেণি তিনটি ক্লাসে ৫০ শিশু শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাচ্ছেন স্থানীয় দুই নারী শিক্ষিকা। বর্তমানে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চলছে।
চরাঞ্চলের শিশুদের ঝরে পড়া রোধে ইউএনও’র ব্যতিক্রম উদ্যোগ
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, স্কুলটি হয়ে আমরা শিখতে শুরু করছি, আমরা সরকারীভাবে সকল সহযোগী চাই এবং শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে চাই। শিক্ষিকা নাজমা আক্তার বলেন, ইএনও স্যারের উদ্যোগে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় আমরা চেষ্টা করছি পাঠদানের মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষাদানের। দ্রুত আমতলা চরে সরকারীভাবে বিদ্যালয় গড়ে তোলার আহব্বান জানান এলাকাবাসী।
এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ রশিদ বলেন, এই চরে প্রায় চারশ’ পরিবারের বসবাস। শতশত শিশু রয়েছে কিন্তু কোন বিদ্যালয় নাই। যার কারণে শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। তিনি আরো জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উদ্যোগে আপতাত শিশুদের ঝোড়ে পড়া রোধে ভ্রাম্যমান হিসাবে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করা হয়েছে তবে এখানে সরকারী ভাবে বিদ্যালয় খুবই প্রয়োজন।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, কোন শিশু যেন শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয় তাই আমরা চেষ্টা করছি এবং যে এলাকায় বিদ্যালয় নাই সেখানে স্থানীয়দের সচেতন মহলের সহযোগীতায় শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। আমি চাই এ অঞ্চলের শিশুরা একদিন চিলমারীর মুখ উজ্জ্বল করবেন।