ঢাকা ০৬:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বিমানবন্দর সড়কে নড়ছেই না গাড়ি, তীব্র যানজট

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:১৭:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৪৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) ভয়াবহ যানজট রাজধানীতে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রোড, উত্তরা ও কালশীর রোডে গাড়ি বলতে গেলে নড়ছেই না। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রীসহ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বনানী থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যানবাহনের সারি খিলক্ষেত থেকে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়।

বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে দলে দলে মানুষ গাজীপুরের টঙ্গীতে আসছেন, এর প্রভাব পড়েছে রাজধানী ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বনানী থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী লেনে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে খিলক্ষেত এলাকায় যানজটে আটকে থাকা গাড়ির সারি কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা ছাড়িয়ে যায়। সকাল থেকে তীব্র এই যানজটের কারণে ওইসব এলাকা দিয়ে যাতায়াতকারীরা পড়েছেন বিপাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় তাদের রাস্তায় পার করতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখায় যায়, সকাল থেকে কার্যত এয়ারপোর্টমুখি সড়কে যানচলাচল স্থবির হয়ে রয়েছে। বিশেষ করে মহাখালী বা প্রগতি সরণি থেকে বিমানবন্দর হয়ে উত্তরাগামী রাস্তায় যানচলাচল একদম বন্ধ রয়েছে। এর ফলে বিমানবন্দর হয়ে এই যানজটে একদিকে পৌঁছেছে মহাখালী ফ্লাইওভার পর্যন্ত আর অন্যদিকে পৌঁছেছে রামপুরা পর্যন্ত। ঘণ্টা পর ঘণ্টা গাড়িতে বসে থেকে অতিষ্ট হয়ে অনেক যাত্রী হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওয়ানা হয়েছেন।

বিমানবন্দর সড়কে গাড়ির চাকা ঘুরছে না, যাত্রীদের দুর্ভোগ

ফার্মগেটগামী যাত্রী আমানত আলী বলেন, আমি ফার্মগেট যাওয়ার জন্য কালশীর মোড়ে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করেছিলাম। দেখলাম কালশী মোড় হয়ে ইসিবি পর্যন্ত জ্যাম। কোনো গাড়ি সামনে যাচ্ছিল না। বৃহস্পতিবার দিন শেষ কর্ম দিবস হওয়ার রাস্তা একটু জ্যাম থাকে। কিন্তু আজ বেশি। বিশ্ব ইজতেমা শুরু হওয়ায় উত্তরা ও এয়ারপোর্ট রোডে যানজট সৃষ্টি হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। রাস্তা পরিবর্তন করে বাসে যাচ্ছি ফার্মগেট।

মিরপুর ১৪ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত হেঁটে আসা আয়শা আক্তার তৃষ্ণা বলেন, সাড়ে ৮টায় বাসে রওনা দিয়ে ইসিবি পর্যন্ত আসি সোয়া ৯টায়। এরপর সোয়া এক ঘণ্টা হেঁটে অফিসে পৌঁছেছি। ব্যস্ত সড়কে যেন গাড়ি নড়ছেই না। এমন অবস্থা যে, ঠিকঠাক পায়ে হেঁটে আসারও উপায় নেই।

বসুন্ধরাগামী যাত্রী মো. মামুন বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাস্তায় অনেক যানজট। এ কারণে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল যেতে চাইছে না। বাধ্য হয়ে উঠেছি গণপরিবহনে। এখন ভেঙে-ভেঙে যেতে হবে বসুন্ধরা। কালশীর মোড়ে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে জ্যামে বসে আছি। একটুও বাস এগোচ্ছে না। আমার অফিস ডিউটি ছিল ৯টা থেকে। আজ দেরি হয়ে যাবে অফিস যেতে।

মহাখালী থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত মোটরসাইকেলে আসা সাঈদ আল হাসান শিমুল বলেন, চরম ভোগান্তি যাকে বলে। মহাখালী থেকে বিশ্বরোড হয়ে প্রগতি সরণি বড়জোর ৯ কিলোমিটার। এই পথ মোটরসাইকেলে আসতে আমার আড়াই ঘণ্টা লেগেছে। মহাখালী থেকে বনানী ফুটওভার ব্রিজ পর্যন্ত এই এক কিলোমিটারের কম রাস্তা আসতেই লেগে গেছে এক ঘণ্টা। এরপর বনানী ফ্লাইওভারের নিচে গাড়ির চাকা আধাঘণ্টা ধরে এক ইঞ্চিও নড়েনি। এমন জ্যাম কি শুধু ইজতেমার জন্য? ঠিক বুঝতে পারছি না।

অসহনীয় এ যানজটে আটকা ভিক্টর ক্লাসিক বাসের চালক আমিনুল বলেন, কুড়িল বিশ্বরোড পার হয়ে কোনোভাবে বিমানবন্দর এলাকায় এসেছি। এখানে ১ ঘণ্টা ধরে আটকে আছি। এখন আর গাড়ি সামনে যাচ্ছে না।

এদিকে বিমানবন্দর এলাকায় কর্মরত ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের (উত্তরা) একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে দেশ ও বিদেশে থেকে হাজার হাজার মুসল্লি তুরাগ নদীর পাড় এসে হাজারি হচ্ছেন। এর কারণে মূলত রাস্তায় অনেক চাপ বেড়ে গেছে। ফলে বিমানবন্দর এলাকা থেকে উত্তরার দিকে বা গাজীপুরের দিকে কোনও গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না।

এ বিষয়ে উত্তরা ট্রাফিক বিভাগের উত্তরা পূর্ব জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এবং বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ এসে তুরাগ পাড়ে জড়ো হচ্ছেন বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে। গতকাল থেকে মানুষজন আসা শুরু করেছে। ফলে হাজার হাজার মানুষের চাপে উত্তরা থেকে টঙ্গী এলাকায় যান চলাচল স্থবির। এদিক দিয়ে উত্তরাতে গাড়ি প্রবেশ করতে না পারায় এই যানজটের রেশ বিমানবন্দর এলাকা ছাড়িয়ে গেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিমানবন্দর সড়কে নড়ছেই না গাড়ি, তীব্র যানজট

আপডেট সময় : ১২:১৭:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) ভয়াবহ যানজট রাজধানীতে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রোড, উত্তরা ও কালশীর রোডে গাড়ি বলতে গেলে নড়ছেই না। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রীসহ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বনানী থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যানবাহনের সারি খিলক্ষেত থেকে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়।

বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে দলে দলে মানুষ গাজীপুরের টঙ্গীতে আসছেন, এর প্রভাব পড়েছে রাজধানী ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বনানী থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী লেনে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে খিলক্ষেত এলাকায় যানজটে আটকে থাকা গাড়ির সারি কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা ছাড়িয়ে যায়। সকাল থেকে তীব্র এই যানজটের কারণে ওইসব এলাকা দিয়ে যাতায়াতকারীরা পড়েছেন বিপাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় তাদের রাস্তায় পার করতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখায় যায়, সকাল থেকে কার্যত এয়ারপোর্টমুখি সড়কে যানচলাচল স্থবির হয়ে রয়েছে। বিশেষ করে মহাখালী বা প্রগতি সরণি থেকে বিমানবন্দর হয়ে উত্তরাগামী রাস্তায় যানচলাচল একদম বন্ধ রয়েছে। এর ফলে বিমানবন্দর হয়ে এই যানজটে একদিকে পৌঁছেছে মহাখালী ফ্লাইওভার পর্যন্ত আর অন্যদিকে পৌঁছেছে রামপুরা পর্যন্ত। ঘণ্টা পর ঘণ্টা গাড়িতে বসে থেকে অতিষ্ট হয়ে অনেক যাত্রী হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওয়ানা হয়েছেন।

বিমানবন্দর সড়কে গাড়ির চাকা ঘুরছে না, যাত্রীদের দুর্ভোগ

ফার্মগেটগামী যাত্রী আমানত আলী বলেন, আমি ফার্মগেট যাওয়ার জন্য কালশীর মোড়ে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করেছিলাম। দেখলাম কালশী মোড় হয়ে ইসিবি পর্যন্ত জ্যাম। কোনো গাড়ি সামনে যাচ্ছিল না। বৃহস্পতিবার দিন শেষ কর্ম দিবস হওয়ার রাস্তা একটু জ্যাম থাকে। কিন্তু আজ বেশি। বিশ্ব ইজতেমা শুরু হওয়ায় উত্তরা ও এয়ারপোর্ট রোডে যানজট সৃষ্টি হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। রাস্তা পরিবর্তন করে বাসে যাচ্ছি ফার্মগেট।

মিরপুর ১৪ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত হেঁটে আসা আয়শা আক্তার তৃষ্ণা বলেন, সাড়ে ৮টায় বাসে রওনা দিয়ে ইসিবি পর্যন্ত আসি সোয়া ৯টায়। এরপর সোয়া এক ঘণ্টা হেঁটে অফিসে পৌঁছেছি। ব্যস্ত সড়কে যেন গাড়ি নড়ছেই না। এমন অবস্থা যে, ঠিকঠাক পায়ে হেঁটে আসারও উপায় নেই।

বসুন্ধরাগামী যাত্রী মো. মামুন বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাস্তায় অনেক যানজট। এ কারণে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল যেতে চাইছে না। বাধ্য হয়ে উঠেছি গণপরিবহনে। এখন ভেঙে-ভেঙে যেতে হবে বসুন্ধরা। কালশীর মোড়ে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে জ্যামে বসে আছি। একটুও বাস এগোচ্ছে না। আমার অফিস ডিউটি ছিল ৯টা থেকে। আজ দেরি হয়ে যাবে অফিস যেতে।

মহাখালী থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত মোটরসাইকেলে আসা সাঈদ আল হাসান শিমুল বলেন, চরম ভোগান্তি যাকে বলে। মহাখালী থেকে বিশ্বরোড হয়ে প্রগতি সরণি বড়জোর ৯ কিলোমিটার। এই পথ মোটরসাইকেলে আসতে আমার আড়াই ঘণ্টা লেগেছে। মহাখালী থেকে বনানী ফুটওভার ব্রিজ পর্যন্ত এই এক কিলোমিটারের কম রাস্তা আসতেই লেগে গেছে এক ঘণ্টা। এরপর বনানী ফ্লাইওভারের নিচে গাড়ির চাকা আধাঘণ্টা ধরে এক ইঞ্চিও নড়েনি। এমন জ্যাম কি শুধু ইজতেমার জন্য? ঠিক বুঝতে পারছি না।

অসহনীয় এ যানজটে আটকা ভিক্টর ক্লাসিক বাসের চালক আমিনুল বলেন, কুড়িল বিশ্বরোড পার হয়ে কোনোভাবে বিমানবন্দর এলাকায় এসেছি। এখানে ১ ঘণ্টা ধরে আটকে আছি। এখন আর গাড়ি সামনে যাচ্ছে না।

এদিকে বিমানবন্দর এলাকায় কর্মরত ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের (উত্তরা) একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে দেশ ও বিদেশে থেকে হাজার হাজার মুসল্লি তুরাগ নদীর পাড় এসে হাজারি হচ্ছেন। এর কারণে মূলত রাস্তায় অনেক চাপ বেড়ে গেছে। ফলে বিমানবন্দর এলাকা থেকে উত্তরার দিকে বা গাজীপুরের দিকে কোনও গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না।

এ বিষয়ে উত্তরা ট্রাফিক বিভাগের উত্তরা পূর্ব জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এবং বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ এসে তুরাগ পাড়ে জড়ো হচ্ছেন বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে। গতকাল থেকে মানুষজন আসা শুরু করেছে। ফলে হাজার হাজার মানুষের চাপে উত্তরা থেকে টঙ্গী এলাকায় যান চলাচল স্থবির। এদিক দিয়ে উত্তরাতে গাড়ি প্রবেশ করতে না পারায় এই যানজটের রেশ বিমানবন্দর এলাকা ছাড়িয়ে গেছে।