ঢাকা ০৩:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পানিশূন্য কাপ্তাই লেকের কাপ্তাই-বিলাইছড়ি নৌপথ সচলে চলছে কর্মসৃজন প্রকল্প

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:০৬:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৪৬৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
// মো: আজগর আলী খান, রাজস্থলী-কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি //
শুষ্ক মৌসুমে  রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে পানির স্তর সর্বনিন্ম পর্যায়ে নেমে আসায় কাপ্তাই-বিলাইছড়ি নৌপথে বোট চলাচলে বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন চালক এবং যাত্রীরা।
 বিশেষ করে বিলাইছড়ি উপজেলার কেংড়াছড়ি হতে ফারুয়া ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ৫০ কি: মি: নৌপথে পানির স্তর এতই নীচে নেমে গেছে যে অনেক জায়গায় ছোট ছোট বোট দিয়ে চলাচলরত যাত্রীদের বোট থেকে নামিয়ে দিয়ে টেনে টেনে বোট চালাতে হচ্ছে।
বুধবার (১৯ এপ্রিল)  সকাল ১০ টায় বিলাইছড়ি উপজেলার ১ নং বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়ন এবং ২ নং কেংড়াছড়ি ইউনিয়ন এর মধ্যবর্তী কেরনছড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এই অংশে কাপ্তাই লেকের পানির স্তর এতই কমে গেছে যে, ছোট বোট হতে যাত্রীদেরকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সময় চালক ও যাত্রীরা একসাথে বোটকে টেনে নিয়ে ওই অংশটুকু পাড় করছেন। শুধু কেরংছড়ি এলাকা নয়, এই নৌপথে এসবেন, কেংড়াছড়ি, গাছকাটছড়া, বিলাইছড়ি সদরসহ অনেক জায়গায় পানির স্বল্পতায় নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
এদিন কেরনছড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক পাহাড়ি বাঙালী নারী ও পুরুষ  শ্রমিক কাপ্তাই লেক হতে মাটি অপসারণ করে লেকের গভীরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। আবার অনেক শ্রমিক নৌ চলাচলে সহযোগীতা করছেন।
তাদের একজন গোপাল দাশ জানান, সরকারের ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচীর আওতায় আমরা সকাল হতে এই কেরনছড়ি এলাকায় লেক হতে মাটি অপসারণ করে লেকের গভীরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। কথা হয় মহিলা শ্রমিক আনোয়ার বেগম এবং অমর কান্তি চাকমা ও সোনারাম চাকমার সাথে। তারা জানান, আমরা বিলাইছড়ি উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে লেকের যে অংশে পানি কমে গেছে সেই অংশে মাটি তোলার কাজ করছি।
এই নৌ পথে চলাচলকারী যাত্রী মো: শহীদ মাইজভান্ডারি ও নৃত্য শিল্পী সঙ্গীতা দত্ত এনি জানান, বিশেষ করে জানুয়ারি হতে মে মাস পর্যন্ত কাপ্তাই লেকে পানির স্তর কমে যাওয়ায় আমাদের চলাচলে বেশ অসুবিধা পোহাতে হয়।
বোট চালক মো: নয়ন জানান, বেশ কয়েকমাস ধরে লেকে পানি স্বল্পতায় আমরা স্বাভাবিক গতিতে বোট চলাচল করতে পারছি না।
এই কাজের অন্যতম উদ্যোক্তা  ১ নং বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান জানান,
এই মৌসুমে কাপ্তাই – বিলাইছড়ি ও রাঙামাটি নৌ পথে চলাচলকারী যাত্রীরা বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হন। তাই ৪০ দিনের কর্মসূচী সৃজন প্রকল্পের মাধ্যমে কাপ্তাই লেকের যেখানে নাব্যতা কমে গেছে সেইখানে শ্রমিক দিয়ে লেক হতে মাটি অপসারণ এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও নৌ চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিগত কয়েক বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড হতে জরিপ করে গেছে যেখানে নাব্যতা কম, সেইখানে ড্রেজিং করবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কার্যক্রম দৃশ্যমান হয় নাই।
বিলাইছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: শামসুদ্দিন জানান, কেরনছড়ি ওই এলাকায় ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচীতে সর্বমোট  ১শ’ ৬৮ জন শ্রমিক কাজ করে প্রানান্তকর চেষ্টা করছেন যাতে নৌ চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান জানান, বিলাইছড়ি উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও সাধারন মানুষের উদ্যোগে ব্যহত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করার প্রয়াস অব্যাহত আছে। এই কাজে সংশ্লিষ্ট সাধারন মানুষ, শ্রমিক ও জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই দুঃসাধ্য কাজ সাধিত হচ্ছে।  এইজন্য আমি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সকলকে ধন্যবাদ জানাই।
বা/খ: এসআর।

নিউজটি শেয়ার করুন

পানিশূন্য কাপ্তাই লেকের কাপ্তাই-বিলাইছড়ি নৌপথ সচলে চলছে কর্মসৃজন প্রকল্প

আপডেট সময় : ০৮:০৬:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৩
// মো: আজগর আলী খান, রাজস্থলী-কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি //
শুষ্ক মৌসুমে  রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে পানির স্তর সর্বনিন্ম পর্যায়ে নেমে আসায় কাপ্তাই-বিলাইছড়ি নৌপথে বোট চলাচলে বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন চালক এবং যাত্রীরা।
 বিশেষ করে বিলাইছড়ি উপজেলার কেংড়াছড়ি হতে ফারুয়া ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ৫০ কি: মি: নৌপথে পানির স্তর এতই নীচে নেমে গেছে যে অনেক জায়গায় ছোট ছোট বোট দিয়ে চলাচলরত যাত্রীদের বোট থেকে নামিয়ে দিয়ে টেনে টেনে বোট চালাতে হচ্ছে।
বুধবার (১৯ এপ্রিল)  সকাল ১০ টায় বিলাইছড়ি উপজেলার ১ নং বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়ন এবং ২ নং কেংড়াছড়ি ইউনিয়ন এর মধ্যবর্তী কেরনছড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এই অংশে কাপ্তাই লেকের পানির স্তর এতই কমে গেছে যে, ছোট বোট হতে যাত্রীদেরকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সময় চালক ও যাত্রীরা একসাথে বোটকে টেনে নিয়ে ওই অংশটুকু পাড় করছেন। শুধু কেরংছড়ি এলাকা নয়, এই নৌপথে এসবেন, কেংড়াছড়ি, গাছকাটছড়া, বিলাইছড়ি সদরসহ অনেক জায়গায় পানির স্বল্পতায় নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
এদিন কেরনছড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক পাহাড়ি বাঙালী নারী ও পুরুষ  শ্রমিক কাপ্তাই লেক হতে মাটি অপসারণ করে লেকের গভীরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। আবার অনেক শ্রমিক নৌ চলাচলে সহযোগীতা করছেন।
তাদের একজন গোপাল দাশ জানান, সরকারের ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচীর আওতায় আমরা সকাল হতে এই কেরনছড়ি এলাকায় লেক হতে মাটি অপসারণ করে লেকের গভীরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। কথা হয় মহিলা শ্রমিক আনোয়ার বেগম এবং অমর কান্তি চাকমা ও সোনারাম চাকমার সাথে। তারা জানান, আমরা বিলাইছড়ি উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে লেকের যে অংশে পানি কমে গেছে সেই অংশে মাটি তোলার কাজ করছি।
এই নৌ পথে চলাচলকারী যাত্রী মো: শহীদ মাইজভান্ডারি ও নৃত্য শিল্পী সঙ্গীতা দত্ত এনি জানান, বিশেষ করে জানুয়ারি হতে মে মাস পর্যন্ত কাপ্তাই লেকে পানির স্তর কমে যাওয়ায় আমাদের চলাচলে বেশ অসুবিধা পোহাতে হয়।
বোট চালক মো: নয়ন জানান, বেশ কয়েকমাস ধরে লেকে পানি স্বল্পতায় আমরা স্বাভাবিক গতিতে বোট চলাচল করতে পারছি না।
এই কাজের অন্যতম উদ্যোক্তা  ১ নং বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান জানান,
এই মৌসুমে কাপ্তাই – বিলাইছড়ি ও রাঙামাটি নৌ পথে চলাচলকারী যাত্রীরা বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হন। তাই ৪০ দিনের কর্মসূচী সৃজন প্রকল্পের মাধ্যমে কাপ্তাই লেকের যেখানে নাব্যতা কমে গেছে সেইখানে শ্রমিক দিয়ে লেক হতে মাটি অপসারণ এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও নৌ চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিগত কয়েক বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড হতে জরিপ করে গেছে যেখানে নাব্যতা কম, সেইখানে ড্রেজিং করবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কার্যক্রম দৃশ্যমান হয় নাই।
বিলাইছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: শামসুদ্দিন জানান, কেরনছড়ি ওই এলাকায় ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচীতে সর্বমোট  ১শ’ ৬৮ জন শ্রমিক কাজ করে প্রানান্তকর চেষ্টা করছেন যাতে নৌ চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান জানান, বিলাইছড়ি উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও সাধারন মানুষের উদ্যোগে ব্যহত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করার প্রয়াস অব্যাহত আছে। এই কাজে সংশ্লিষ্ট সাধারন মানুষ, শ্রমিক ও জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই দুঃসাধ্য কাজ সাধিত হচ্ছে।  এইজন্য আমি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সকলকে ধন্যবাদ জানাই।
বা/খ: এসআর।