ঢাকা ০৪:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নিকলীতে প্রাথমিক স্কুলের মাঠে গরুর হাট : দেখার কেউ নেই

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৫:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ মে ২০২৩
  • / ৪৮৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// মোঃ হেলাল উদ্দিন, কিশোরগঞ্জ থেকে //

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের আঠারবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে প্রতি বুধবারই জমে উঠছে গরুর ছাগলের বিরাট হাট। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এটি জেলার বড় হাট। মাঠে একটুও ফাঁকা জায়গা নেই। খুঁটিতে বাঁধা শত শত গরু। এমনকি চলার রাস্তায় ও তার আশপাশ জায়গায় এলোপাথাড়িভাবে দাঁড়িয়ে কেনাবেচা হচ্ছে গরু-ছাগল। রয়েছে হাজারো মানুষের কোলাহল। গরু ছাগলের বর্জ লেদা মল-মুত্র ইত্যাদির দুর্গন্ধ বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। হাটের কারণে প্রতি বুধবারই স্কুলটি নামেমাত্র খোলা থাকে। আর এদিন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অন্যান্য দিনের চেয়ে অনেক কম থাকে। সেদিন স্কুলে ক্লাসের পরিবেশ থাকে বললেই চলে । চারদিকে এতো হাকডাকের ভিতর স্কুলে ক্লাস চলবে কি ভাবে । বাজারের হৈ,চৈ শব্দে ক্লাসের প্রতি মনোযোগ থাকেনা শিক্ষার্থীদের।

২০০৯ সালে উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের সাজনপুর গোপীরায়ের বাজারের কাছে এ মাঠটিকে ঘিরেই গরুর হাট গড়ে ওঠে। গত ১৪ বছরে জেলার সবচেয়ে বড় গরুর হাটে পরিণত হয়েছে এটি। ইদানিং স্কুল মাঠে নামে মাত্র কাপড়ের পর্দা দিয়ে চলছে গরুর হাট। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। শিক্ষার সুষ্ঠু ও নিরিবিলি পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসন থেকে শুরু করে স্কুল কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত কারোই পদক্ষেপ নেই। এদিকে বিষয়টি নিয়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় একের পর এক সংবাদ প্রকাশির হলেও এ নিয়ে তোয়াক্কা করার সময় কারো নেই। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে বাণিজ্য করে যাচ্ছে একটি মহল।

এ নিয়ে কথা হয় স্থানীয় লোকজনের সাথে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক কর্তৃপক্ষ জেনেও না জানার ভান ধরে আছে বছরের পর বছর। কোনো এক অদৃশ্য লাভে কেউ কথা বলছে না শিক্ষার পক্ষে। স্থানীয় রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে প্রশাসন পর্যন্ত অদৃশ্য শক্তি ও লাভবান হয়ে মুখ খুলছে না এমনকি ব্যবস্থাও গ্রহণ করছে না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় স্কুলের চারপাশেই গরু আর গরু। এমনকি স্কুলের বারান্দায় দাড়িয়ে কেউ কেউ সিগারেট টানছেন মনের সুখে। স্কুলের মূল গেট দখল করে শত শত গরু বিক্রি হচ্ছে হরহামেশা। স্বাভাবিকভাবেই হাটা যায় না যেখানে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা গেইট দিয়ে বের হবে কিভাবে। বুধবার আসলেই স্কুল ফাঁকি দেয়ার হিড়িক পরে যায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মাঝে। এমনকি ক্লাস চলাকালীন সময়ে স্থানীয়দের ধান শুকানোর কাজে মাঠ দখল করতেও দেখা গেছে। এক সময় এ স্কুল থেকে বৃত্তি পাওয়াসহ শতশত মেধাবী শিক্ষার্থী বের হতো এ বিদ্যালয় থেকে। গরুর হাট চালু হওয়ার পর মেধাবী শিক্ষার্থীদের এ স্কুলে ভর্তি করতে অভিভাবকরা অনীহা প্রকাশ করছেন। গরুর হাটটি যেনো অতি দ্রুত স্কুল গেইট ও মাঠ থেকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে ক্লাসের নিরব পরিবেশ সৃষ্টি করা হয় এমনটাই দাবি শিক্ষাবিদ ও গ্রাম বাসীর ।

বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষক আঃ আউয়ালের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, গরুর হাট সম্পর্কে প্রশাসনের সবাই দেখছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ শাকিলা পারভীন বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি স্কুলের পক্ষে। আমি চাই না যে, স্কুলের মাঠে হাট বসুক।

বাজারের ইজারাদার আলম মিয়া বলেন, আমরা স্কুলের মাঠে হাট বসাই না। স্কুলের মাঠে গরুর হাট থেকে মাঝে মধ্যে গরু ডুকে যায়। জারুইতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আজমল হোসেন বলেন, গরুর হাটকে স্কুল মাঠ থেকে পৃথক করা হয়েছে, স্কুল মাঠে গরু প্রবেশ করতে পারবে না। ডুকে যায়। জারুইতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আজমল হোসেন বলেন,গরুর হাটকে স্কুল মাঠ থেকে পৃথক করা হয়েছে, স্কুল মাঠে গরু প্রবেশ করতে পারবে না।

বা/খ: এসআর।

নিউজটি শেয়ার করুন

নিকলীতে প্রাথমিক স্কুলের মাঠে গরুর হাট : দেখার কেউ নেই

আপডেট সময় : ০৩:৩৫:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ মে ২০২৩

// মোঃ হেলাল উদ্দিন, কিশোরগঞ্জ থেকে //

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের আঠারবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে প্রতি বুধবারই জমে উঠছে গরুর ছাগলের বিরাট হাট। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এটি জেলার বড় হাট। মাঠে একটুও ফাঁকা জায়গা নেই। খুঁটিতে বাঁধা শত শত গরু। এমনকি চলার রাস্তায় ও তার আশপাশ জায়গায় এলোপাথাড়িভাবে দাঁড়িয়ে কেনাবেচা হচ্ছে গরু-ছাগল। রয়েছে হাজারো মানুষের কোলাহল। গরু ছাগলের বর্জ লেদা মল-মুত্র ইত্যাদির দুর্গন্ধ বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। হাটের কারণে প্রতি বুধবারই স্কুলটি নামেমাত্র খোলা থাকে। আর এদিন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অন্যান্য দিনের চেয়ে অনেক কম থাকে। সেদিন স্কুলে ক্লাসের পরিবেশ থাকে বললেই চলে । চারদিকে এতো হাকডাকের ভিতর স্কুলে ক্লাস চলবে কি ভাবে । বাজারের হৈ,চৈ শব্দে ক্লাসের প্রতি মনোযোগ থাকেনা শিক্ষার্থীদের।

২০০৯ সালে উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের সাজনপুর গোপীরায়ের বাজারের কাছে এ মাঠটিকে ঘিরেই গরুর হাট গড়ে ওঠে। গত ১৪ বছরে জেলার সবচেয়ে বড় গরুর হাটে পরিণত হয়েছে এটি। ইদানিং স্কুল মাঠে নামে মাত্র কাপড়ের পর্দা দিয়ে চলছে গরুর হাট। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। শিক্ষার সুষ্ঠু ও নিরিবিলি পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসন থেকে শুরু করে স্কুল কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত কারোই পদক্ষেপ নেই। এদিকে বিষয়টি নিয়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় একের পর এক সংবাদ প্রকাশির হলেও এ নিয়ে তোয়াক্কা করার সময় কারো নেই। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে বাণিজ্য করে যাচ্ছে একটি মহল।

এ নিয়ে কথা হয় স্থানীয় লোকজনের সাথে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক কর্তৃপক্ষ জেনেও না জানার ভান ধরে আছে বছরের পর বছর। কোনো এক অদৃশ্য লাভে কেউ কথা বলছে না শিক্ষার পক্ষে। স্থানীয় রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে প্রশাসন পর্যন্ত অদৃশ্য শক্তি ও লাভবান হয়ে মুখ খুলছে না এমনকি ব্যবস্থাও গ্রহণ করছে না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় স্কুলের চারপাশেই গরু আর গরু। এমনকি স্কুলের বারান্দায় দাড়িয়ে কেউ কেউ সিগারেট টানছেন মনের সুখে। স্কুলের মূল গেট দখল করে শত শত গরু বিক্রি হচ্ছে হরহামেশা। স্বাভাবিকভাবেই হাটা যায় না যেখানে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা গেইট দিয়ে বের হবে কিভাবে। বুধবার আসলেই স্কুল ফাঁকি দেয়ার হিড়িক পরে যায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মাঝে। এমনকি ক্লাস চলাকালীন সময়ে স্থানীয়দের ধান শুকানোর কাজে মাঠ দখল করতেও দেখা গেছে। এক সময় এ স্কুল থেকে বৃত্তি পাওয়াসহ শতশত মেধাবী শিক্ষার্থী বের হতো এ বিদ্যালয় থেকে। গরুর হাট চালু হওয়ার পর মেধাবী শিক্ষার্থীদের এ স্কুলে ভর্তি করতে অভিভাবকরা অনীহা প্রকাশ করছেন। গরুর হাটটি যেনো অতি দ্রুত স্কুল গেইট ও মাঠ থেকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে ক্লাসের নিরব পরিবেশ সৃষ্টি করা হয় এমনটাই দাবি শিক্ষাবিদ ও গ্রাম বাসীর ।

বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষক আঃ আউয়ালের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, গরুর হাট সম্পর্কে প্রশাসনের সবাই দেখছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ শাকিলা পারভীন বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি স্কুলের পক্ষে। আমি চাই না যে, স্কুলের মাঠে হাট বসুক।

বাজারের ইজারাদার আলম মিয়া বলেন, আমরা স্কুলের মাঠে হাট বসাই না। স্কুলের মাঠে গরুর হাট থেকে মাঝে মধ্যে গরু ডুকে যায়। জারুইতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আজমল হোসেন বলেন, গরুর হাটকে স্কুল মাঠ থেকে পৃথক করা হয়েছে, স্কুল মাঠে গরু প্রবেশ করতে পারবে না। ডুকে যায়। জারুইতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আজমল হোসেন বলেন,গরুর হাটকে স্কুল মাঠ থেকে পৃথক করা হয়েছে, স্কুল মাঠে গরু প্রবেশ করতে পারবে না।

বা/খ: এসআর।