ঢাকা ০৬:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

জবি শিক্ষক সাহেদ ইমন বহিষ্কার, জুনায়েদ হালিমকে অব্যাহতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১১:৩৪:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪
  • / ৫০১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীকে অসহযোগিতা করায় ওই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জুনায়েদ হালিমকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিন্ডিকেট সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান।

বহিষ্কার ও অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষক প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে এবং অভিযুক্ত অপর শিক্ষক অধ্যাপক জুনায়েদ আহমদ হালিমকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এর আগে এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন ও অসহযোগিতার অভিযোগ আনেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ফিল্স এন্ড টেলিভিশন বিভাগের ৩য় ব্যাচের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম।

এ নিয়ে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাষ্ট্রপতি বরাবর লিখিত আবেদনও করেন মিম। রাষ্ট্রপতি বরাবর আবেদনে মিম লিখেন-

‘‘মহামান্য,
আমি আপনার সুনামধন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ফিল্স এন্ড টেলিভিশন বিভাগের ৩য় ব্যাচের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। ২০২১ সাথের ডিসেম্বর মাসে উপাচার্য মহোদয় বরাবর আমার সাথে ঘটে যাওয়া বুলিং ও যৌন নির্যাতনের বিচার চেয়ে একটি আবেদন দায়ের করি। বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় আমার যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলের দায়িত্বে ছিলেন। এটার বিচার আমি এখনো পাইনি, উল্টো আমাকে যৌন নিপীড়নকারী শিক্ষক এবং তার সমর্থনে বিভাগের চেয়ারম্যান, অনার্স পরীক্ষায় একাধিক বিষয়ে ফেইল করিয়েছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকেরা আমাকে ভীষণরকম বহিষ্কার ভয়ভীতি, পরীক্ষার ফেইল করানো, অনান্য শিক্ষার্থীদের থেকে আমাকে বিচ্ছিন্ন করে মানসিকভাবে নির্যাতন করে, মৃত্যুহুমকি দিয়েই যাচ্ছে, আমাকে আত্মহত্যার পথে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে আমি নিউজ মিডিয়াতে বিষয়টি প্রকাশ করি।

এমতাবস্থায়, মহামান্য আপনার কাছে সর্বশেষ আশা ভরসা নিয়ে আবেদন জানাচ্ছি। আপনার পক্ষ থেকে আমার এই বুলিং ও যৌন নিপীড়নের দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং প্রশাসনের জবাবদিহিতার ব্যবস্থার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছি এবং আমাকে ফেইল করানো বিষয়গুলো আপনার নির্ধারিত বিশেষ কমিটির মাধ্যমে পুনঃবিবেচনা পূর্বক আমার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে আমার জীবনটাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য আকুল আর্জি জানাচ্ছি।

বিনীত নিবেদক,

কাজী ফারজানা মিম।’’

তারও আগে, সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ দিতে যান মিম। সে সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের মীম বলেন, ‘আমার বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন আমাকে যৌন হেনস্তা করে। এই অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে বিভাগের চেয়ারম্যান ও অভিযুক্ত শিক্ষক আমাকে সেটি তুলে নিতে নানাভাবে চাপ দিতে থাকে। এতে আমি রাজি না হওয়ায় তারা আমকে হাত-পা কেটে হত্যা করাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন। আমাকে এক ঘরে করে দেওয়া হয়। আমাকে বিভিন্ন পরীক্ষায় শূন্য শূন্য নম্বর দিয়ে ফেল করানো হয়। আমার অনার্সের ফাইনাল ভাইভায় আমাকে ফেল করানো হয়।’

তিনি বলেন, আমাকে এক ঘরে করে দেওয়া হয়েছে। আমি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছি না। কখন আমাকে মেরে ফেলা হয়, সেটা জানি না। শুধু আমি না, তারা আমার পরিবারকেও নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে এবং হেনস্তা করছে। বর্তমান এই অবস্থা থেকে বাঁচতে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ নিয়ে এসেছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

জবি শিক্ষক সাহেদ ইমন বহিষ্কার, জুনায়েদ হালিমকে অব্যাহতি

আপডেট সময় : ১১:৩৪:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪

শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীকে অসহযোগিতা করায় ওই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জুনায়েদ হালিমকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিন্ডিকেট সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান।

বহিষ্কার ও অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষক প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে এবং অভিযুক্ত অপর শিক্ষক অধ্যাপক জুনায়েদ আহমদ হালিমকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এর আগে এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন ও অসহযোগিতার অভিযোগ আনেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ফিল্স এন্ড টেলিভিশন বিভাগের ৩য় ব্যাচের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম।

এ নিয়ে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাষ্ট্রপতি বরাবর লিখিত আবেদনও করেন মিম। রাষ্ট্রপতি বরাবর আবেদনে মিম লিখেন-

‘‘মহামান্য,
আমি আপনার সুনামধন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ফিল্স এন্ড টেলিভিশন বিভাগের ৩য় ব্যাচের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। ২০২১ সাথের ডিসেম্বর মাসে উপাচার্য মহোদয় বরাবর আমার সাথে ঘটে যাওয়া বুলিং ও যৌন নির্যাতনের বিচার চেয়ে একটি আবেদন দায়ের করি। বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় আমার যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলের দায়িত্বে ছিলেন। এটার বিচার আমি এখনো পাইনি, উল্টো আমাকে যৌন নিপীড়নকারী শিক্ষক এবং তার সমর্থনে বিভাগের চেয়ারম্যান, অনার্স পরীক্ষায় একাধিক বিষয়ে ফেইল করিয়েছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকেরা আমাকে ভীষণরকম বহিষ্কার ভয়ভীতি, পরীক্ষার ফেইল করানো, অনান্য শিক্ষার্থীদের থেকে আমাকে বিচ্ছিন্ন করে মানসিকভাবে নির্যাতন করে, মৃত্যুহুমকি দিয়েই যাচ্ছে, আমাকে আত্মহত্যার পথে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে আমি নিউজ মিডিয়াতে বিষয়টি প্রকাশ করি।

এমতাবস্থায়, মহামান্য আপনার কাছে সর্বশেষ আশা ভরসা নিয়ে আবেদন জানাচ্ছি। আপনার পক্ষ থেকে আমার এই বুলিং ও যৌন নিপীড়নের দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং প্রশাসনের জবাবদিহিতার ব্যবস্থার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছি এবং আমাকে ফেইল করানো বিষয়গুলো আপনার নির্ধারিত বিশেষ কমিটির মাধ্যমে পুনঃবিবেচনা পূর্বক আমার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে আমার জীবনটাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য আকুল আর্জি জানাচ্ছি।

বিনীত নিবেদক,

কাজী ফারজানা মিম।’’

তারও আগে, সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ দিতে যান মিম। সে সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের মীম বলেন, ‘আমার বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন আমাকে যৌন হেনস্তা করে। এই অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে বিভাগের চেয়ারম্যান ও অভিযুক্ত শিক্ষক আমাকে সেটি তুলে নিতে নানাভাবে চাপ দিতে থাকে। এতে আমি রাজি না হওয়ায় তারা আমকে হাত-পা কেটে হত্যা করাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন। আমাকে এক ঘরে করে দেওয়া হয়। আমাকে বিভিন্ন পরীক্ষায় শূন্য শূন্য নম্বর দিয়ে ফেল করানো হয়। আমার অনার্সের ফাইনাল ভাইভায় আমাকে ফেল করানো হয়।’

তিনি বলেন, আমাকে এক ঘরে করে দেওয়া হয়েছে। আমি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছি না। কখন আমাকে মেরে ফেলা হয়, সেটা জানি না। শুধু আমি না, তারা আমার পরিবারকেও নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে এবং হেনস্তা করছে। বর্তমান এই অবস্থা থেকে বাঁচতে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ নিয়ে এসেছি।