ঢাকা ০২:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আসছে পৌনে আট লাখ কোটি টাকার বাজেট

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:২৫:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৪৭৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার হতে পারে ৭ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বাজেট ঘাটতি ৫.২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, আগামীকাল বুধবার (৫ এপ্রিল) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ‘আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল’ এবং ‘বাজেট ব্যবস্থাপনা ও সম্পদ কমিটি’র সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে এই সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত হতে পারে। সম্পূর্ণ ভার্চুয়ালি এই সভাটি চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় সভা। প্রথম সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বরে।

ধারণা করা হয়েছিলো আগামী অর্থবছরের জন্য একটি সম্প্রসারণমূলক বাজেট প্রণয়ন করা হবে। যার আকার হবে পৌনে আট লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন, অর্থবছরের শেষ দিকে এসে দেখা গেলে বড় বাজেট তৈরি করার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে তা সঙ্কুলান করা সম্ভব হবে না। বিশেষ করে নির্বাচনী বছরের বাস্তবতার নিরিখে তা করা সম্ভব হবে না। কারণ এই সময় শুল্ক হার বৃদ্ধি যতটা সম্ভব কম করা হবে। ফলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষে বড় বাজেটের অর্থ জোগান দেওয়া সম্ভব হবে না। তাই আগামী অর্থবছরের জন্য একটি মাঝারি আকারের বাজেট প্রণয়নের কাজ প্রায় চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

সূত্র জানায়, আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৭ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা, যা কি না চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে ১১ ভাগ বেশি। আবার সংশোধিত বাজেট থেকে এর আকার বাড়বে ১৪ ভাগ। কিন্তু গত অর্থবছরে বাজেটের আকার বেড়েছিল পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় ১৪ ভাগ বেশি।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৬৪ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা। জিডিপির অংশ হিসাবে এই ঘাটতির পরিমাণ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ধরা ছিল সাড়ে ৫ শতাংশ আর সংশোধিত বাজেটে এই ঘাটতি ৫ দশমিক ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

এদিকে, আগামী অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা রয়েছে দুই লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির একই হার নির্ধারিত রয়েছে। জানা গেছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমিয়ে সাড়ে ৬ ভাগে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর মূল্যস্ফীতির হার প্রক্ষেপণ করা হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ।

বুধবারের অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, সভায় আগামী অর্থবছরের বাজেটের প্রাক্কলিত একটি আকার নির্ধারণ করা হবে। এটিই চূড়ান্ত আকার নয়। এরপর আগামী মে মাসের ৫ থেকে ৯ তারিখের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাজেট নিয়ে অর্থমন্ত্রী আলোচনা করবেন। আর সেখানেই আগামী অর্থবছরের বাজেটের প্রকৃত আকার নির্ধারণ করা হবে।

এদিকে আগামী অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের টার্গেট ধরা হয়েছে চার লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আদায় করতে হবে চার লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্য রয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরকে রাজস্ব আয়ের টার্গেট দেওয়া রয়েছে তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা।

সভার আলোচ্য সূচির মধ্যে রয়েছে, অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের অগ্রগতি এবং বিশ্ব ও জাতীয় অর্থনীতিতে ইতোমধ্যে সূচিত পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো (এমটিএমএফ) পর্যালোচনা এবং দ্বিতীয় বিষয় চলতি অর্থবছরসহ মধ্যমেয়াদি (২০২৩-২০২৪ হতে ২০২৫-২০২৬) সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোর (এমটিএমএফ) সূচকসমূহের প্রক্ষেপণের ওপর আলোচনা ও অনুমোদন।

জানা গেছে, কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের সভায় অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন আগামী অর্থবছরের বাজেট ও দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির একটি সার্বিক চিত্র তুলে ধরবেন। এর সঙ্গে দেশের মুদ্রাবাজারসহ আরও কিছু বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। দেশে রফতানি বাণিজ্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে পারেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুল মান্নান উপস্থিত থাকতে পারেন বলে সূত্র জানিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আসছে পৌনে আট লাখ কোটি টাকার বাজেট

আপডেট সময় : ১২:২৫:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার হতে পারে ৭ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বাজেট ঘাটতি ৫.২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, আগামীকাল বুধবার (৫ এপ্রিল) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ‘আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল’ এবং ‘বাজেট ব্যবস্থাপনা ও সম্পদ কমিটি’র সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে এই সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত হতে পারে। সম্পূর্ণ ভার্চুয়ালি এই সভাটি চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় সভা। প্রথম সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বরে।

ধারণা করা হয়েছিলো আগামী অর্থবছরের জন্য একটি সম্প্রসারণমূলক বাজেট প্রণয়ন করা হবে। যার আকার হবে পৌনে আট লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন, অর্থবছরের শেষ দিকে এসে দেখা গেলে বড় বাজেট তৈরি করার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে তা সঙ্কুলান করা সম্ভব হবে না। বিশেষ করে নির্বাচনী বছরের বাস্তবতার নিরিখে তা করা সম্ভব হবে না। কারণ এই সময় শুল্ক হার বৃদ্ধি যতটা সম্ভব কম করা হবে। ফলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষে বড় বাজেটের অর্থ জোগান দেওয়া সম্ভব হবে না। তাই আগামী অর্থবছরের জন্য একটি মাঝারি আকারের বাজেট প্রণয়নের কাজ প্রায় চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

সূত্র জানায়, আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৭ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা, যা কি না চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে ১১ ভাগ বেশি। আবার সংশোধিত বাজেট থেকে এর আকার বাড়বে ১৪ ভাগ। কিন্তু গত অর্থবছরে বাজেটের আকার বেড়েছিল পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় ১৪ ভাগ বেশি।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৬৪ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা। জিডিপির অংশ হিসাবে এই ঘাটতির পরিমাণ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ধরা ছিল সাড়ে ৫ শতাংশ আর সংশোধিত বাজেটে এই ঘাটতি ৫ দশমিক ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

এদিকে, আগামী অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা রয়েছে দুই লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির একই হার নির্ধারিত রয়েছে। জানা গেছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমিয়ে সাড়ে ৬ ভাগে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর মূল্যস্ফীতির হার প্রক্ষেপণ করা হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ।

বুধবারের অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, সভায় আগামী অর্থবছরের বাজেটের প্রাক্কলিত একটি আকার নির্ধারণ করা হবে। এটিই চূড়ান্ত আকার নয়। এরপর আগামী মে মাসের ৫ থেকে ৯ তারিখের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাজেট নিয়ে অর্থমন্ত্রী আলোচনা করবেন। আর সেখানেই আগামী অর্থবছরের বাজেটের প্রকৃত আকার নির্ধারণ করা হবে।

এদিকে আগামী অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের টার্গেট ধরা হয়েছে চার লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আদায় করতে হবে চার লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্য রয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরকে রাজস্ব আয়ের টার্গেট দেওয়া রয়েছে তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা।

সভার আলোচ্য সূচির মধ্যে রয়েছে, অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের অগ্রগতি এবং বিশ্ব ও জাতীয় অর্থনীতিতে ইতোমধ্যে সূচিত পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো (এমটিএমএফ) পর্যালোচনা এবং দ্বিতীয় বিষয় চলতি অর্থবছরসহ মধ্যমেয়াদি (২০২৩-২০২৪ হতে ২০২৫-২০২৬) সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোর (এমটিএমএফ) সূচকসমূহের প্রক্ষেপণের ওপর আলোচনা ও অনুমোদন।

জানা গেছে, কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের সভায় অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন আগামী অর্থবছরের বাজেট ও দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির একটি সার্বিক চিত্র তুলে ধরবেন। এর সঙ্গে দেশের মুদ্রাবাজারসহ আরও কিছু বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। দেশে রফতানি বাণিজ্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে পারেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুল মান্নান উপস্থিত থাকতে পারেন বলে সূত্র জানিয়েছে।