ঢাকা ০১:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আপাতত উচ্ছেদ হচ্ছে না হাতিরঝিলের স্থাপনা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৪১:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ নভেম্বর ২০২২
  • / ৪৪২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 
রাজধানীর হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পে সব ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদসহ ৪ দফা নির্দেশনা ও ৯ দফা সুপারিশ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ।হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজউকের করা এ সংক্রান্ত লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই স্থিতাবস্থা থাকবে। ফলে আপাতত হাতিরঝিলের স্থাপনা উচ্ছেদ হচ্ছে না।

সোমবার (৭ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাজউকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন ও ব্যারিস্টার ইমাম হাসান। রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

এর আগে ১৯ জুন হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পে সব ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদসহ চার দফা নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। এছাড়া নয় দফা সুপারিশ করেন। এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাজউজ।

আদালতে রাজউকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমাম হাসান। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

রায়ে চার দফা নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, ঢাকার ফুসফুস বেগুনবাড়ী খালসহ হাতিরঝিল এলাকা জাতীয় সম্পত্তি। এই এলাকায় হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ এবং নির্মাণ সংবিধান, পরিবেশ আইন, পানি আইন ও তুরাগ নদের রায় অনুযায়ী বেআইনি এবং অবৈধ। আর হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় বরাদ্দ করা সব হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অবৈধ এবং এখতিয়ারবহির্ভূত মর্মে এসব বরাদ্দ বাতিল ঘোষণা করা হলো।

এ ছাড়া আদালত হাতিরঝিলের বিষয়ে ৯ দফা পরামর্শ দেন। সেগুলো হলো-১. হাতিরঝিল ও বেগুনবাড়ী সম্পূর্ণ প্রকল্পটি সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য একটি পৃথক কর্তৃপক্ষ, তথা হাতিরঝিল লেক সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সরাসরি অধীন গঠন করা। ২. বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪তম ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডকে যৌথভাবে হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকার স্থায়ী পরামর্শক নিয়োগ করা। ৩. জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য মাটির নিচে আন্তর্জাতিক মানের টয়লেট স্থাপন করা। ৪. নির্ধারিত দূরত্বে বিনা মূল্যে সব জনসাধারণের জন্য পান করার পানির ব্যবস্থা করা। ৫. পায়ে চলার রাস্তা, বাইসাইকেল লেন এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক লেন তৈরি করা। ৬. পানির জন্য ক্ষতিকর লেকে এমন সব ধরনের যান্ত্রিক যান তথা ওয়াটার ট্যাক্সি সার্ভিস ব্যবহার নিষিদ্ধ করা। ৭. লেকে মাছের অভয়ারণ্য করা। ৮. হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ী প্রকল্পটি বাংলাদেশের প্রথম বাঙালি বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে নামকরণ করা। ৯. হাতিরঝিল ও বেগুনবাড়ী সম্পূর্ণ প্রকল্পটি সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও পরিচালনার ব্যয় রেভিনিউ (রাজস্ব) বাজেট থেকে বরাদ্দ করা।

এর আগে হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রজেক্টে লে-আউট প্লানের নির্দেশনার বাইরে কতিপয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধে রাজউকের নিষ্ক্রিয় থাকার প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) হাইকোর্টে রিট দায়ের করে। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পরে ২০২১ সালের ৩০ জুন ওই রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপাতত উচ্ছেদ হচ্ছে না হাতিরঝিলের স্থাপনা

আপডেট সময় : ০২:৪১:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : 
রাজধানীর হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পে সব ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদসহ ৪ দফা নির্দেশনা ও ৯ দফা সুপারিশ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ।হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজউকের করা এ সংক্রান্ত লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই স্থিতাবস্থা থাকবে। ফলে আপাতত হাতিরঝিলের স্থাপনা উচ্ছেদ হচ্ছে না।

সোমবার (৭ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাজউকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন ও ব্যারিস্টার ইমাম হাসান। রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

এর আগে ১৯ জুন হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পে সব ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদসহ চার দফা নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। এছাড়া নয় দফা সুপারিশ করেন। এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাজউজ।

আদালতে রাজউকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমাম হাসান। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

রায়ে চার দফা নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, ঢাকার ফুসফুস বেগুনবাড়ী খালসহ হাতিরঝিল এলাকা জাতীয় সম্পত্তি। এই এলাকায় হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ এবং নির্মাণ সংবিধান, পরিবেশ আইন, পানি আইন ও তুরাগ নদের রায় অনুযায়ী বেআইনি এবং অবৈধ। আর হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় বরাদ্দ করা সব হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অবৈধ এবং এখতিয়ারবহির্ভূত মর্মে এসব বরাদ্দ বাতিল ঘোষণা করা হলো।

এ ছাড়া আদালত হাতিরঝিলের বিষয়ে ৯ দফা পরামর্শ দেন। সেগুলো হলো-১. হাতিরঝিল ও বেগুনবাড়ী সম্পূর্ণ প্রকল্পটি সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য একটি পৃথক কর্তৃপক্ষ, তথা হাতিরঝিল লেক সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সরাসরি অধীন গঠন করা। ২. বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪তম ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডকে যৌথভাবে হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকার স্থায়ী পরামর্শক নিয়োগ করা। ৩. জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য মাটির নিচে আন্তর্জাতিক মানের টয়লেট স্থাপন করা। ৪. নির্ধারিত দূরত্বে বিনা মূল্যে সব জনসাধারণের জন্য পান করার পানির ব্যবস্থা করা। ৫. পায়ে চলার রাস্তা, বাইসাইকেল লেন এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক লেন তৈরি করা। ৬. পানির জন্য ক্ষতিকর লেকে এমন সব ধরনের যান্ত্রিক যান তথা ওয়াটার ট্যাক্সি সার্ভিস ব্যবহার নিষিদ্ধ করা। ৭. লেকে মাছের অভয়ারণ্য করা। ৮. হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ী প্রকল্পটি বাংলাদেশের প্রথম বাঙালি বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে নামকরণ করা। ৯. হাতিরঝিল ও বেগুনবাড়ী সম্পূর্ণ প্রকল্পটি সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও পরিচালনার ব্যয় রেভিনিউ (রাজস্ব) বাজেট থেকে বরাদ্দ করা।

এর আগে হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রজেক্টে লে-আউট প্লানের নির্দেশনার বাইরে কতিপয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধে রাজউকের নিষ্ক্রিয় থাকার প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) হাইকোর্টে রিট দায়ের করে। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পরে ২০২১ সালের ৩০ জুন ওই রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।