ঢাকা ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সাঁথিয়ায় ২০ গ্রামের মানুষের ভরসা বাঁশের সাঁকো

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৩০:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩
  • / ৪৪৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শফিউল আযম, বিশেষ প্রতিনিধি :

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের নন্দনপুরবাজার সংলগ্ন ইছামতি নদীর উপর ব্রিজ না থাকায় ওপারের প্রায় ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বাঁশের সাঁকো পার হয়ে উপজেলা জেলা সড়কে উঠতে হচ্ছে। ইছামতির এপারে স্কুল কলেজ হাটবাজার, উপজেলা কার্যালয় হওয়ায় ওপারের মানুষদের প্রতিদিন সাঁকো পার হতে হয়। তবে দুগ্ধ খামারী ও কৃষকদের ইছামতি পারাপারে সবচে’ বড় সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে বলে ভুক্তভুগিরা জানান।
নন্দনপুর বাজার সংলগ্ন ইছামতি নদীর ওপারে খানমাহমুদপুর, নন্দনপুর, সড়প, তেথুলিয়া, ধোপাদহ, পোরাট, উজান খানমাহমুদপুর, ভাটো, হলুদঘর, দয়রামপুর, চকমধুপুর, খিদিরগ্রাম, আটিয়াপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম অবস্থিত। ওপারের গ্রামগুলির হাটবাজার করতে হলে ইছামতি পার হয়ে ধোপাদহ ও নন্দনপুর বাজারে পোঁছাতে হয়। ইছামতি নদীর এ স্থানটি ধোপাদহ ও নন্দনপুর বাজারের সংযোগস্থল। ওপারের গ্রামের ছাত্রদের প্রতিদিন সাঁকো পার হয়ে নন্দনপুর কেটিএম আয়শা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়, সাঁথিয়া স্কুল কলেজ, জোড়দহ কলেজ, ছোনদহ কলেজ ও মাদ্রাসায় যাতায়াত করতে হয়। কৃষি প্রধান ওপারের গ্রামে বেশকিছু দুগ্ধ খামার অবস্থিত। এসব খামার থেকে বাঘাবাড়ি মিল্কভিটা, ব্রাক, আকিজসহ বেশ কয়েকটি চিলিং সেন্টারে প্রতিদিন ২ বেলা দুধ সরবরাহ করা হয়। দুগ্ধখামারীরা উৎপাদিত দুধ সাঁকোয় ইছামতি পার করে নন্দনপুর রোডে তোলেন তার পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চিলিং সেন্টারে তা পৌঁছে দেন। সাঁকো পার করতে তাদের নানা দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।

এছাড়াও ওপারে প্রচুর শাকসব্জি চাষ হয়। এ শাকসব্জি কৃষকরা সাঁকো পার করে সাঁথিয়া সদরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করেন। অন্যদিকে, এ পাড়ের কৃষকের জমি ওপারে আবার ওপারের জমি এপারের মালিক হওয়ায় দুপারের ফসল চাষে মারাত্মক বিড়ম্বনা সহ্য করতে হচ্ছে।

খানমাহমুদ গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, ‘আমাদের এখানে শাকসব্জিসহ বিভিন্ন ফসল প্রচুর পরিমানে চাষ হলেও বিক্রি করতে হাটবাজারে যেতে হয়। আবার নন্দনপুর এলাকার অনেক কৃষকের জমি তাদের এলাকায় পড়ায় ফসল পারাপার খুবই কষ্টকর হয়ে উঠেছে।’

নন্দনপুর গ্রামের দুগ্ধ খামারী মাসুদুর রহমান কমল, রফিকুল ইসলাম ও সোহেল রানা জানান, ‘তাদের প্রতিদিন দু’বেলা হাজার হাজার লিটার দুধ সাঁকো পার করে চিলিং সেন্টারে পৌঁছাতে হয়। একটু অসতর্ক হলেই পা ফসকে দুধসহ তাদের ইছামতি নদীতে পড়তে হচ্ছে। তারা অবিলম্বে ইছামতির উপর ব্রিজ নির্মাণে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মাহমুদপুরের বাসিন্দরা আরও জানান, এর আগে তারা নৌকায় ইছামতি পার হলেও কয়েক বছর আগে বর্তমান ডেপুটি স্পিকার টাকা দিয়ে বাঁশের চড়াটের সাঁকো নির্মাণ করেন। প্রতিবছর টিআর প্রকল্প সহায়তাসহ সাধারন মানুষ অর্থসহায়তা দিয়ে এ সাঁকো পারাপার সচল রাখা হয়েছে বলেও তারা দাবি করেন।

এ ব্যাপারে ধোপাদহ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো: সাইদুজ্জামান বাবুল জানান, ‘ইছামতি নদীর উপর এ ব্রিজটি আমাদের প্রাণের দাবি। এজন্য আমি অনেক চেষ্টা করেছি। স্থানীয় সংসদ সদস্য ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর চেষ্টায় ব্রিজটি একনেকে পাস হয়েছে; এখন ডিজাইনের কাজ চলছে। কয়েক মাসের মধ্যে ব্রিজটির কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান।

বা/খ: এসআর।

নিউজটি শেয়ার করুন

সাঁথিয়ায় ২০ গ্রামের মানুষের ভরসা বাঁশের সাঁকো

আপডেট সময় : ০৩:৩০:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩

শফিউল আযম, বিশেষ প্রতিনিধি :

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের নন্দনপুরবাজার সংলগ্ন ইছামতি নদীর উপর ব্রিজ না থাকায় ওপারের প্রায় ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বাঁশের সাঁকো পার হয়ে উপজেলা জেলা সড়কে উঠতে হচ্ছে। ইছামতির এপারে স্কুল কলেজ হাটবাজার, উপজেলা কার্যালয় হওয়ায় ওপারের মানুষদের প্রতিদিন সাঁকো পার হতে হয়। তবে দুগ্ধ খামারী ও কৃষকদের ইছামতি পারাপারে সবচে’ বড় সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে বলে ভুক্তভুগিরা জানান।
নন্দনপুর বাজার সংলগ্ন ইছামতি নদীর ওপারে খানমাহমুদপুর, নন্দনপুর, সড়প, তেথুলিয়া, ধোপাদহ, পোরাট, উজান খানমাহমুদপুর, ভাটো, হলুদঘর, দয়রামপুর, চকমধুপুর, খিদিরগ্রাম, আটিয়াপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম অবস্থিত। ওপারের গ্রামগুলির হাটবাজার করতে হলে ইছামতি পার হয়ে ধোপাদহ ও নন্দনপুর বাজারে পোঁছাতে হয়। ইছামতি নদীর এ স্থানটি ধোপাদহ ও নন্দনপুর বাজারের সংযোগস্থল। ওপারের গ্রামের ছাত্রদের প্রতিদিন সাঁকো পার হয়ে নন্দনপুর কেটিএম আয়শা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়, সাঁথিয়া স্কুল কলেজ, জোড়দহ কলেজ, ছোনদহ কলেজ ও মাদ্রাসায় যাতায়াত করতে হয়। কৃষি প্রধান ওপারের গ্রামে বেশকিছু দুগ্ধ খামার অবস্থিত। এসব খামার থেকে বাঘাবাড়ি মিল্কভিটা, ব্রাক, আকিজসহ বেশ কয়েকটি চিলিং সেন্টারে প্রতিদিন ২ বেলা দুধ সরবরাহ করা হয়। দুগ্ধখামারীরা উৎপাদিত দুধ সাঁকোয় ইছামতি পার করে নন্দনপুর রোডে তোলেন তার পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চিলিং সেন্টারে তা পৌঁছে দেন। সাঁকো পার করতে তাদের নানা দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।

এছাড়াও ওপারে প্রচুর শাকসব্জি চাষ হয়। এ শাকসব্জি কৃষকরা সাঁকো পার করে সাঁথিয়া সদরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করেন। অন্যদিকে, এ পাড়ের কৃষকের জমি ওপারে আবার ওপারের জমি এপারের মালিক হওয়ায় দুপারের ফসল চাষে মারাত্মক বিড়ম্বনা সহ্য করতে হচ্ছে।

খানমাহমুদ গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, ‘আমাদের এখানে শাকসব্জিসহ বিভিন্ন ফসল প্রচুর পরিমানে চাষ হলেও বিক্রি করতে হাটবাজারে যেতে হয়। আবার নন্দনপুর এলাকার অনেক কৃষকের জমি তাদের এলাকায় পড়ায় ফসল পারাপার খুবই কষ্টকর হয়ে উঠেছে।’

নন্দনপুর গ্রামের দুগ্ধ খামারী মাসুদুর রহমান কমল, রফিকুল ইসলাম ও সোহেল রানা জানান, ‘তাদের প্রতিদিন দু’বেলা হাজার হাজার লিটার দুধ সাঁকো পার করে চিলিং সেন্টারে পৌঁছাতে হয়। একটু অসতর্ক হলেই পা ফসকে দুধসহ তাদের ইছামতি নদীতে পড়তে হচ্ছে। তারা অবিলম্বে ইছামতির উপর ব্রিজ নির্মাণে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মাহমুদপুরের বাসিন্দরা আরও জানান, এর আগে তারা নৌকায় ইছামতি পার হলেও কয়েক বছর আগে বর্তমান ডেপুটি স্পিকার টাকা দিয়ে বাঁশের চড়াটের সাঁকো নির্মাণ করেন। প্রতিবছর টিআর প্রকল্প সহায়তাসহ সাধারন মানুষ অর্থসহায়তা দিয়ে এ সাঁকো পারাপার সচল রাখা হয়েছে বলেও তারা দাবি করেন।

এ ব্যাপারে ধোপাদহ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো: সাইদুজ্জামান বাবুল জানান, ‘ইছামতি নদীর উপর এ ব্রিজটি আমাদের প্রাণের দাবি। এজন্য আমি অনেক চেষ্টা করেছি। স্থানীয় সংসদ সদস্য ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর চেষ্টায় ব্রিজটি একনেকে পাস হয়েছে; এখন ডিজাইনের কাজ চলছে। কয়েক মাসের মধ্যে ব্রিজটির কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান।

বা/খ: এসআর।