ঢাকা ০৪:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সরকারের পতন ছাড়া ঘরে ফিরবো না : ফখরুল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ নভেম্বর ২০২২
  • / ৪৩৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 
আরও ত্যাগ স্বীকার করতে দলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসুন আমরা এই ৭ নভেম্বরে এই শপথ গ্রহন করি যে, আমরা সেই লক্ষ্যকে অর্জন না করে, এই সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত না করে, আমরা গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে না এনে, আমাদের অধিকারকে ফিরিয়ে না এনে আমরা আর ঘরে ফিরে যাবো না।

সোমবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক উন্মুক্ত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ‘বিপ্লব ও সংহতি’ দিবস উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ওপর স্টিম রোলার চালিয়ে ছেলে-মেয়ে হত্যা, গুম এবং মা-বোনদের নির্যাতন ও অসংখ্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আজকে আবার বাংলাদেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে চায় তারা। তাদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য আজকে সেই পতাকা তুলে ধরেছে জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে আমাদের নেতা তারেক রহমান।

তিনি আরও বলেন, ৭ নভেম্বর দেশের মানুষের কাছে আমাদের স্বাধীনতা রক্ষা করার অঙ্গীকার। সেই আন্দোলন শুরু হয়েছে। আন্দোলনে ইতোমধ্যে ৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগীয় সমাবেশে ৩ থেকে ৪ দিন আগে হেঁটে গিয়ে অংশ নিচ্ছে নেতাকর্মীরা। তাদের একটাই দাবি, সেটা হচ্ছে শেখ হাসিনা কবে যাবি।

এসময় মির্জা ফখরুল স্লোগান ধরেন, ‘এক দফা, এক দাবি, শেখ হাসিনা কবে যাবি। দফা এক, দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ।’

সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলছি, পদত্যাগ করুন আপনারা। সংসদ বিলুপ্ত করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকাররের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়ে নতুন একটা নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন করুন। সেই নির্বাচনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।

তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। অনেকে গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যাচ্ছে, নিহত হচ্ছেন। আমাদের আরও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। গণতন্ত্র পেতে হলে, স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হলে ত্যাগের মাধ্যমে সামনে এগিয়ে গিয়ে পতাকা ওপরে তুলে ধরতে হবে। আমাদের স্বাধীনতা রক্ষার করার পতাকা তুলে ধরতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি বলতে চাই, গণতন্ত্রকে পেতে হলে, স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হলে, আমাদের অধিকারগুলো ফিরে পেতে হলে এই ত্যাগ স্বীকার করেই এর মধ্য দিয়ে আমাদেরকে সামনের দিকে আমাদের পতাকাকে উর্ধেব তুলে ধরতে হবে। ৭ নভেম্বরের পতাকা, আমাদের স্বাধীনতার পতাকাকে রক্ষা করতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

এই ব্য্যাপারে সকলে একমত কিনা জানতে চেয়ে নেতা-কর্মীদের ‘হ্যা’ সূচক জবাবের পর বিএনপি মহাসচিব বলেন, চলেন আমরা সেই পথে এগিয়ে চলি। ৭ নভেম্বরের এই শপথ সফল হউক।

৭ নভেম্বরকে তাতপর্য্পূর্ণ দিন হিসেবে অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই দিনটিতে দ্বিতীয়বার আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে সুসংহত করেছিলাম। ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে বের করে নিয়ে এসে তারা এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করা হয়েছিলো এবং সেই সঙ্গে এক নতুন অধ্যায় সৃষ্টি হয়েছিলো সেটা ছিলো সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণের, একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ তৈরি করবার।

আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান সেই কাজটি মাত্র চার বছরের মধ্যে তিনি সমস্ত বিভক্ত বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন, তিনি বদ্ধ অর্থনীতি থেকে মুক্ত অর্থনীতি নিয়ে এসেছিলেন, তিনি একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিলেন এবং দেশে তিনি বাক স্বাধীনতা, কথা বলার স্বাধীনতা, সংগঠনের স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি এই অল্প সময়ের মধ্যে সমগ্রজাতিকে নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। সেই স্বপ্নটা হচ্ছে একটা জাতি হিসেবে তৈরি হওয়ার স্বপ্ন।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান স্বপরিবারের নিহত হওয়ার পর সেনা প্রধানের দায়িত্ব আসেন জিয়াউর রহমান। এরপর মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সেনা বাহিনীতে একটি অভ্যুত্থান হয়, জিয়া হন গৃহবন্দী। ৭ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের আরেক সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থানে আটকাবস্থা থেকে মুক্ত হন জিয়া। এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে চলে আসেন জিয়া।বিএনপি ৭ নভেম্বর দিবসটিকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে অলিখিত বাকশাল চলছে। এই সরকারের পতনের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ৭১ সালে রাজনৈতিক নেতারা যখন ব্যর্থ হয়েছিলেন, তখন স্বাধীনতা আনতে মেজর জিয়া সফল হয়েছিলেন। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। ৭৫ সালেও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ব্যর্থতায় জিয়াউর রহমান সফল হয়ে ৭ নভেম্বরের স্বাধীনতা রক্ষা করেছিলেন। আজকে আমাদের সেই চেতনায় দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।

চলমান আন্দোলনে নেতাকর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়ে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এই লুটেরা সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজধানীতে ১০ তারিখের সমাবেশের আগেই ঢাকার আশপাশে মামলা হামলা হচ্ছে। এভাবে জনগণের আন্দোলন স্তব্ধ করা যায় না। কাউকে স্তব্ধ করার এখতিয়ার সরকারি সংস্থার নাই।

খুব তাড়াতাড়ি ব্যাংকগুলো দেউলিয়া ঘোষণা করবে দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, তখন আমানতকারীরা রাস্তায় নামবে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে উপলক্ষে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই উন্মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি। কার্যালয়ের সামনে অস্থায়ী মঞ্চ নির্মাণ করা হয়। সড়কে বিছানো মাদুরে বসে নেতা-কর্মীরা আলোচকদের বক্তব্য শুনে। নেতা-কর্মীদের অনেকের হাতে জাতীয় পতাকা ছিলো।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম প্রমুখ। এছাড়া কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. ইবরাহিমও বক্তব্য রাখেন।

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

সরকারের পতন ছাড়া ঘরে ফিরবো না : ফখরুল

আপডেট সময় : ০৯:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : 
আরও ত্যাগ স্বীকার করতে দলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসুন আমরা এই ৭ নভেম্বরে এই শপথ গ্রহন করি যে, আমরা সেই লক্ষ্যকে অর্জন না করে, এই সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত না করে, আমরা গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে না এনে, আমাদের অধিকারকে ফিরিয়ে না এনে আমরা আর ঘরে ফিরে যাবো না।

সোমবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক উন্মুক্ত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ‘বিপ্লব ও সংহতি’ দিবস উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ওপর স্টিম রোলার চালিয়ে ছেলে-মেয়ে হত্যা, গুম এবং মা-বোনদের নির্যাতন ও অসংখ্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আজকে আবার বাংলাদেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে চায় তারা। তাদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য আজকে সেই পতাকা তুলে ধরেছে জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে আমাদের নেতা তারেক রহমান।

তিনি আরও বলেন, ৭ নভেম্বর দেশের মানুষের কাছে আমাদের স্বাধীনতা রক্ষা করার অঙ্গীকার। সেই আন্দোলন শুরু হয়েছে। আন্দোলনে ইতোমধ্যে ৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগীয় সমাবেশে ৩ থেকে ৪ দিন আগে হেঁটে গিয়ে অংশ নিচ্ছে নেতাকর্মীরা। তাদের একটাই দাবি, সেটা হচ্ছে শেখ হাসিনা কবে যাবি।

এসময় মির্জা ফখরুল স্লোগান ধরেন, ‘এক দফা, এক দাবি, শেখ হাসিনা কবে যাবি। দফা এক, দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ।’

সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলছি, পদত্যাগ করুন আপনারা। সংসদ বিলুপ্ত করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকাররের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়ে নতুন একটা নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন করুন। সেই নির্বাচনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।

তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। অনেকে গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যাচ্ছে, নিহত হচ্ছেন। আমাদের আরও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। গণতন্ত্র পেতে হলে, স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হলে ত্যাগের মাধ্যমে সামনে এগিয়ে গিয়ে পতাকা ওপরে তুলে ধরতে হবে। আমাদের স্বাধীনতা রক্ষার করার পতাকা তুলে ধরতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি বলতে চাই, গণতন্ত্রকে পেতে হলে, স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হলে, আমাদের অধিকারগুলো ফিরে পেতে হলে এই ত্যাগ স্বীকার করেই এর মধ্য দিয়ে আমাদেরকে সামনের দিকে আমাদের পতাকাকে উর্ধেব তুলে ধরতে হবে। ৭ নভেম্বরের পতাকা, আমাদের স্বাধীনতার পতাকাকে রক্ষা করতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

এই ব্য্যাপারে সকলে একমত কিনা জানতে চেয়ে নেতা-কর্মীদের ‘হ্যা’ সূচক জবাবের পর বিএনপি মহাসচিব বলেন, চলেন আমরা সেই পথে এগিয়ে চলি। ৭ নভেম্বরের এই শপথ সফল হউক।

৭ নভেম্বরকে তাতপর্য্পূর্ণ দিন হিসেবে অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই দিনটিতে দ্বিতীয়বার আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে সুসংহত করেছিলাম। ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে বের করে নিয়ে এসে তারা এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করা হয়েছিলো এবং সেই সঙ্গে এক নতুন অধ্যায় সৃষ্টি হয়েছিলো সেটা ছিলো সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণের, একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ তৈরি করবার।

আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান সেই কাজটি মাত্র চার বছরের মধ্যে তিনি সমস্ত বিভক্ত বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন, তিনি বদ্ধ অর্থনীতি থেকে মুক্ত অর্থনীতি নিয়ে এসেছিলেন, তিনি একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিলেন এবং দেশে তিনি বাক স্বাধীনতা, কথা বলার স্বাধীনতা, সংগঠনের স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি এই অল্প সময়ের মধ্যে সমগ্রজাতিকে নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। সেই স্বপ্নটা হচ্ছে একটা জাতি হিসেবে তৈরি হওয়ার স্বপ্ন।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান স্বপরিবারের নিহত হওয়ার পর সেনা প্রধানের দায়িত্ব আসেন জিয়াউর রহমান। এরপর মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সেনা বাহিনীতে একটি অভ্যুত্থান হয়, জিয়া হন গৃহবন্দী। ৭ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের আরেক সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থানে আটকাবস্থা থেকে মুক্ত হন জিয়া। এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে চলে আসেন জিয়া।বিএনপি ৭ নভেম্বর দিবসটিকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে অলিখিত বাকশাল চলছে। এই সরকারের পতনের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ৭১ সালে রাজনৈতিক নেতারা যখন ব্যর্থ হয়েছিলেন, তখন স্বাধীনতা আনতে মেজর জিয়া সফল হয়েছিলেন। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। ৭৫ সালেও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ব্যর্থতায় জিয়াউর রহমান সফল হয়ে ৭ নভেম্বরের স্বাধীনতা রক্ষা করেছিলেন। আজকে আমাদের সেই চেতনায় দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।

চলমান আন্দোলনে নেতাকর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়ে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এই লুটেরা সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজধানীতে ১০ তারিখের সমাবেশের আগেই ঢাকার আশপাশে মামলা হামলা হচ্ছে। এভাবে জনগণের আন্দোলন স্তব্ধ করা যায় না। কাউকে স্তব্ধ করার এখতিয়ার সরকারি সংস্থার নাই।

খুব তাড়াতাড়ি ব্যাংকগুলো দেউলিয়া ঘোষণা করবে দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, তখন আমানতকারীরা রাস্তায় নামবে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে উপলক্ষে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই উন্মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি। কার্যালয়ের সামনে অস্থায়ী মঞ্চ নির্মাণ করা হয়। সড়কে বিছানো মাদুরে বসে নেতা-কর্মীরা আলোচকদের বক্তব্য শুনে। নেতা-কর্মীদের অনেকের হাতে জাতীয় পতাকা ছিলো।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম প্রমুখ। এছাড়া কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. ইবরাহিমও বক্তব্য রাখেন।