ঢাকা ০৫:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

শ্রীনগরে গড়ে উঠেছে নিষিদ্ধ চায়না দোয়ার কারখানা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৩:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৪৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়নের ছত্রভোগ গ্রামে গড়ে উঠেছে চায়না দোয়ার তৈরীর একটি কারখানা। কারখানায় এসব নিষিদ্ধ জাল (চায়না ম্যাজিক চাই) তৈরীর কাজ করছেন শিশু শ্রমিরা। তৈরীকৃত এসব জাল/চাই পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। ওই এলাকার দ্বিন ইসলাম ও আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে কারখানটি পরিচালনা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অঞ্চলের বিভিন্ন খাল, বিল, জলাশয় ও নদী নালায় চায়না দোয়ারে নিধন করা হচ্ছে নির্বিচারে ছোট, বড়, ডিমওয়ালা মা ও পোনা মাছসহ সব ধরনের মাছ। চায়না দোয়ারের থাবায় হুমকির মুখে পড়ছে মৎস্যসম্পদ।
অন্যদিকে উপজেলার রাঢ়িখালের বালাশুর, নতুন বাজার, ভাগ্যকুলের কামারগাঁও পাকাব্রিজ, মান্দ্রা এলাকায় বেশকিছু চায়না দোয়ার তৈরীর কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষসহ অসংখ্য শিশু শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঘড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ছত্রভোগের ইট ভাটার পাশে একটি বড় টিনের শেডে চায়না দোয়ার তৈরী করা হচ্ছে। এ সময় বেশকিছু শিশু শ্রমিককে কাজ করতে দেখা যায়। সাংবাদিক ছবি তোলার সময় শিশু শ্রমিকসহ অন্যান্যরা পিছনের গেইট দিয়ে পালিয়ে যায়। লক্ষ্য করা যায়, কারখানায় নিষিদ্ধ জাল তৈরীর বিভিন্ন উপকরণ রাখা হয়েছে। নানা সাইজের নিষিদ্ধ চাই প্রস্তুত করে বস্তাবন্দি করা হচ্ছে।
বাঘড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু আল নাসের তানজিল জানান, আমি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় কারখানাটির বিষয়ে উপস্থাপন করেছি। সংশ্লিষ্টগণ যদি ব্যবস্থা না নেন আমরা এলাকায় কি করতে পারি। চায়না দোয়াইরের ব্যবহারের এ অ লে মাছের প্রজনণ হুমকির পড়েছে।
ছত্রভোগ কারখানাটির মালিক পক্ষের দ্বিন ইসলাম বলেন, চায়না দোয়াইর নিষিদ্ধ না বৈধ জানি না। দেশের আইন কানন কিছু বুঝি না। আপনারা যা পারেন লিখেন। ব্যবসায়ীক পার্টনার আব্দুল জলিলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আগে ওখানে যাওয়া আসা করতাল। এখন যোগাযোগ কম বলে এ বিষয়ে এড়িয়ে যান তিনি।
শ্রীনগর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সমীর কুমার বসাক এ ব্যাপারে বলেন, ছত্রভোগের কারখানাটিতে একদিন গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখতে পাই কারখানাটি বন্ধ। সুনিদিষ্ট তথ্য পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রি. তারিখে শ্রীনগর উপজেলা পরিষদে পদ্মা সেতু বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্য বাস্তাবায়ন কমিটির জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের আওতায় সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার টেবিলে এক প্রসঙ্গে এ অঞ্চলে গড়ে উঠা বিভিন্ন চায়না দোয়ার কারখানার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে উঠে আসে। এ সময় সংশ্লিষ্টগণ চায়না দোয়ার তৈরী কারখানা ও নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার বন্ধের তাগিদ দেন। তবে উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নিষিদ্ধ চায়না চাই তৈরীর কারখানাগুলো বহাল তবিয়দে রয়েছে। ব্যবসাটি লাভজনক হওয়ায় নতুন নতুন কারখানার সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

শ্রীনগরে গড়ে উঠেছে নিষিদ্ধ চায়না দোয়ার কারখানা

আপডেট সময় : ০৮:৩৩:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৩
শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়নের ছত্রভোগ গ্রামে গড়ে উঠেছে চায়না দোয়ার তৈরীর একটি কারখানা। কারখানায় এসব নিষিদ্ধ জাল (চায়না ম্যাজিক চাই) তৈরীর কাজ করছেন শিশু শ্রমিরা। তৈরীকৃত এসব জাল/চাই পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। ওই এলাকার দ্বিন ইসলাম ও আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে কারখানটি পরিচালনা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অঞ্চলের বিভিন্ন খাল, বিল, জলাশয় ও নদী নালায় চায়না দোয়ারে নিধন করা হচ্ছে নির্বিচারে ছোট, বড়, ডিমওয়ালা মা ও পোনা মাছসহ সব ধরনের মাছ। চায়না দোয়ারের থাবায় হুমকির মুখে পড়ছে মৎস্যসম্পদ।
অন্যদিকে উপজেলার রাঢ়িখালের বালাশুর, নতুন বাজার, ভাগ্যকুলের কামারগাঁও পাকাব্রিজ, মান্দ্রা এলাকায় বেশকিছু চায়না দোয়ার তৈরীর কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষসহ অসংখ্য শিশু শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঘড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ছত্রভোগের ইট ভাটার পাশে একটি বড় টিনের শেডে চায়না দোয়ার তৈরী করা হচ্ছে। এ সময় বেশকিছু শিশু শ্রমিককে কাজ করতে দেখা যায়। সাংবাদিক ছবি তোলার সময় শিশু শ্রমিকসহ অন্যান্যরা পিছনের গেইট দিয়ে পালিয়ে যায়। লক্ষ্য করা যায়, কারখানায় নিষিদ্ধ জাল তৈরীর বিভিন্ন উপকরণ রাখা হয়েছে। নানা সাইজের নিষিদ্ধ চাই প্রস্তুত করে বস্তাবন্দি করা হচ্ছে।
বাঘড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু আল নাসের তানজিল জানান, আমি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় কারখানাটির বিষয়ে উপস্থাপন করেছি। সংশ্লিষ্টগণ যদি ব্যবস্থা না নেন আমরা এলাকায় কি করতে পারি। চায়না দোয়াইরের ব্যবহারের এ অ লে মাছের প্রজনণ হুমকির পড়েছে।
ছত্রভোগ কারখানাটির মালিক পক্ষের দ্বিন ইসলাম বলেন, চায়না দোয়াইর নিষিদ্ধ না বৈধ জানি না। দেশের আইন কানন কিছু বুঝি না। আপনারা যা পারেন লিখেন। ব্যবসায়ীক পার্টনার আব্দুল জলিলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আগে ওখানে যাওয়া আসা করতাল। এখন যোগাযোগ কম বলে এ বিষয়ে এড়িয়ে যান তিনি।
শ্রীনগর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সমীর কুমার বসাক এ ব্যাপারে বলেন, ছত্রভোগের কারখানাটিতে একদিন গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখতে পাই কারখানাটি বন্ধ। সুনিদিষ্ট তথ্য পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রি. তারিখে শ্রীনগর উপজেলা পরিষদে পদ্মা সেতু বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্য বাস্তাবায়ন কমিটির জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের আওতায় সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার টেবিলে এক প্রসঙ্গে এ অঞ্চলে গড়ে উঠা বিভিন্ন চায়না দোয়ার কারখানার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে উঠে আসে। এ সময় সংশ্লিষ্টগণ চায়না দোয়ার তৈরী কারখানা ও নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার বন্ধের তাগিদ দেন। তবে উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নিষিদ্ধ চায়না চাই তৈরীর কারখানাগুলো বহাল তবিয়দে রয়েছে। ব্যবসাটি লাভজনক হওয়ায় নতুন নতুন কারখানার সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে।