ঢাকা ০৩:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

শিগগিরই ইলিশা নামে নতুন গ্যাসক্ষেত্রের ঘোষনা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:২৫:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩
  • / ৪৫০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভোলার ইলিশার একাধিক কূপে গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড- বাপেক্স। তিন স্তরে সবধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে অন্তত ২০০ বিসিএফ গ্যাসের মজুদ রয়েছে বলে অনুমান বাপেক্স বিশেষজ্ঞদের। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পেলে শিগগির ইলিশা নামে ২৯ তম এই গ্যাসক্ষেত্রের আনুষ্ঠানিক ঘোষনা দেয়া হবে।

গত মার্চের শুরুতে ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে মালের হাটসংলগ্ন এলাকায় বাপেক্সের নকশা ও নির্দেশনা অনুযায়ী, রাশিয়ার প্রতিষ্ঠান গাজপ্রম খননকাজ শুরু করে। প্রায় চার কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকায় ২৪ এপ্রিল প্রাথমিকভাবে গ্যাসের সন্ধান পেলে খনন শেষে অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়। গত ২৮ এপ্রিল কূপের মুখে আগুন জ্বালিয়ে গ্যাসের অস্তিত্ব নিশ্চিত হয়। পরে সেখানে তিনটি স্তরে পরীক্ষা করে গ্যাসের অস্তিত্ব ও মজুদের পরিমান নিশ্চিত হয় বাপেক্স।

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ইলিশায় তিন স্তরে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। সাধারন একটা কূপে তিনটা জোনের মধ্যে একটাতে গ্যাস পেলেই উৎপাদন শুরু হয়। বলেন, ইলিশাতে পরীক্ষা করে দেখা গেছে তিনটার প্রত্যেকটাই আলাদা কূপের মতো। সার্বিক বিবেচনায় এটি একটা নতুন গ্যাসক্ষেত্র। সেখানে কোন পানি বা বালি পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি। বলেন, একেবারে বিশুদ্ধ গ্যাস পাওয়া গেছে।’

ইলিশাকে গ্যাসক্ষেত্র ঘোষনার বিষয়ে বাপেক্স ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, কোন গ্যাসক্ষেত্র ঘোষণা দিতে হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির প্রয়োজন। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা পেট্রোবাংলা চেয়্যারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেটি চেয়ারম্যান ও জ্বালানি মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হবে। এরপর তিনি সম্মতি দিলে এই গ্যাসক্ষেত্রের আনুষ্ঠানিক ঘোষনা দেয়া হবে। সঙ্কটময় মূহুর্তে নতুন গ্যাসক্ষেত্র পাওয়াটা জাতির জন্য খুবই আনন্দের সংবাদ’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গ্যাসের অস্তিত্ব অনুমান করতে পেরে আগেভাগেই প্রসেস প্লান্টের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের মধ্যে এই গ্যাসের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করা যাবে বলেও বাপেক্স কর্মকর্তারা আশা করছেন।

ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় ভোলা ইলিশা আলাদা গ্যাসক্ষেত্র। তবে এটা তুলনামূলক ছোটো গ্যাসক্ষেত্র। বলেন, ইলিশা একটা ‘ভিন্ন স্ট্রাকচার’। এর সাথে অন্যকোন গ্যাসক্ষেত্রের যোগাযোগ নেই। সুতরাং এটা একটা নতুন গ্যাসক্ষেত্র। গ্যাস সংকটের এই সময়ে এটা যথেষ্ট ভালো এবং খুশির খবর বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তারমতে, ভোলা এবং আশপাশের কয়েকটি এলাকায় আরও কূপ খনন করা হলে বিপুল পরিমান গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘কূপ খননের আগে করা ফিজিবিলিটি স্টাডির তথ্য অনুযায়ী ধারনা ছিল ইলিশায় ১৫০ থেকে ১৮০ বিসিএফ (বিলিয়ন ঘনফুট) গ্যাস মজুদ থাকতে পারে। কিন্তু সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা গেছে সেখানে ন্যুনতম ২০০ বিসিএফ গ্যাসের মজুদ রয়েছে। প্রতিদিন ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করলেও ২৫ থেকে ২৭ বছর এই গ্যাস ব্যবহার করা যাবে। বাপেক্সের গড় দাম বিবেচনায় এই গ্যাসের মূল্য ৬ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। আর আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) বিবেচনায় এর মূল্য ২৬ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। অথচ অনুসন্ধান ও খনন কাজে ব্যয় হয়েছে মাত্র ১৯০ কোটি টাকার মতো।’

নিউজটি শেয়ার করুন

শিগগিরই ইলিশা নামে নতুন গ্যাসক্ষেত্রের ঘোষনা

আপডেট সময় : ০২:২৫:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভোলার ইলিশার একাধিক কূপে গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড- বাপেক্স। তিন স্তরে সবধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে অন্তত ২০০ বিসিএফ গ্যাসের মজুদ রয়েছে বলে অনুমান বাপেক্স বিশেষজ্ঞদের। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পেলে শিগগির ইলিশা নামে ২৯ তম এই গ্যাসক্ষেত্রের আনুষ্ঠানিক ঘোষনা দেয়া হবে।

গত মার্চের শুরুতে ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে মালের হাটসংলগ্ন এলাকায় বাপেক্সের নকশা ও নির্দেশনা অনুযায়ী, রাশিয়ার প্রতিষ্ঠান গাজপ্রম খননকাজ শুরু করে। প্রায় চার কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকায় ২৪ এপ্রিল প্রাথমিকভাবে গ্যাসের সন্ধান পেলে খনন শেষে অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়। গত ২৮ এপ্রিল কূপের মুখে আগুন জ্বালিয়ে গ্যাসের অস্তিত্ব নিশ্চিত হয়। পরে সেখানে তিনটি স্তরে পরীক্ষা করে গ্যাসের অস্তিত্ব ও মজুদের পরিমান নিশ্চিত হয় বাপেক্স।

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ইলিশায় তিন স্তরে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। সাধারন একটা কূপে তিনটা জোনের মধ্যে একটাতে গ্যাস পেলেই উৎপাদন শুরু হয়। বলেন, ইলিশাতে পরীক্ষা করে দেখা গেছে তিনটার প্রত্যেকটাই আলাদা কূপের মতো। সার্বিক বিবেচনায় এটি একটা নতুন গ্যাসক্ষেত্র। সেখানে কোন পানি বা বালি পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি। বলেন, একেবারে বিশুদ্ধ গ্যাস পাওয়া গেছে।’

ইলিশাকে গ্যাসক্ষেত্র ঘোষনার বিষয়ে বাপেক্স ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, কোন গ্যাসক্ষেত্র ঘোষণা দিতে হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির প্রয়োজন। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা পেট্রোবাংলা চেয়্যারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেটি চেয়ারম্যান ও জ্বালানি মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হবে। এরপর তিনি সম্মতি দিলে এই গ্যাসক্ষেত্রের আনুষ্ঠানিক ঘোষনা দেয়া হবে। সঙ্কটময় মূহুর্তে নতুন গ্যাসক্ষেত্র পাওয়াটা জাতির জন্য খুবই আনন্দের সংবাদ’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গ্যাসের অস্তিত্ব অনুমান করতে পেরে আগেভাগেই প্রসেস প্লান্টের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের মধ্যে এই গ্যাসের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করা যাবে বলেও বাপেক্স কর্মকর্তারা আশা করছেন।

ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় ভোলা ইলিশা আলাদা গ্যাসক্ষেত্র। তবে এটা তুলনামূলক ছোটো গ্যাসক্ষেত্র। বলেন, ইলিশা একটা ‘ভিন্ন স্ট্রাকচার’। এর সাথে অন্যকোন গ্যাসক্ষেত্রের যোগাযোগ নেই। সুতরাং এটা একটা নতুন গ্যাসক্ষেত্র। গ্যাস সংকটের এই সময়ে এটা যথেষ্ট ভালো এবং খুশির খবর বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তারমতে, ভোলা এবং আশপাশের কয়েকটি এলাকায় আরও কূপ খনন করা হলে বিপুল পরিমান গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘কূপ খননের আগে করা ফিজিবিলিটি স্টাডির তথ্য অনুযায়ী ধারনা ছিল ইলিশায় ১৫০ থেকে ১৮০ বিসিএফ (বিলিয়ন ঘনফুট) গ্যাস মজুদ থাকতে পারে। কিন্তু সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা গেছে সেখানে ন্যুনতম ২০০ বিসিএফ গ্যাসের মজুদ রয়েছে। প্রতিদিন ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করলেও ২৫ থেকে ২৭ বছর এই গ্যাস ব্যবহার করা যাবে। বাপেক্সের গড় দাম বিবেচনায় এই গ্যাসের মূল্য ৬ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। আর আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) বিবেচনায় এর মূল্য ২৬ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। অথচ অনুসন্ধান ও খনন কাজে ব্যয় হয়েছে মাত্র ১৯০ কোটি টাকার মতো।’