ঢাকা ০৭:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রাজারহাটে লাম্পি স্কিনে ৩শ’ গরুর মৃত্যু : আক্রান্ত ২০ হাজার : আতঙ্কে খামারীরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:০৫:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০২৩
  • / ৪৫৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি //

রাজারহাটে মহামারী আকার ধারন করেছে গবাদি পশুর লাম্পি স্কিন রোগ। ১৫দিনের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ছড়িয়ে গেছে। মৃত্যু হয়েছে তিন শতাধিক গরুর। ফলে খামারীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জানা গেছে, চলতি জুলাই মাসের শুরুর দিকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে লাম্বি স্কিন ডিজিজ আক্রান্ত গরু সনাক্ত হয়। দিনদিন এর সংখ্যা বাড়তে থাকে। গত ১৫দিনের মধ্যে উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ, গতিয়াশাম, সরিষাবাড়ী, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের দূর্লোভকুটি, চতুরা, গাবুর হেলান, পাড়ামৌলা, উমর মজিদ ইউনিয়নের তালুক সুবল, ধনঞ্জন, ফুলখাঁ, ঘুমারু ভিমশীতলা, মকর, চাকিরপশার ইউনিয়নের পীরমামুদ, চাকিরপশার তালুক, রতিরাম কমলওঝাঁ, চকনাককাটি,কানুয়া এবং ছিনাই ইউনিয়নের দেবালয়, জয়কুমোর, মীরেরবাড়ি, মহিধর, মেখলি, আচার্য্য, ছত্রজিতসহ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে গরুর শরীরের লাম্পি স্কিন ডিজিজ ছড়িয়ে পরে। বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ২০হাজার ছড়িয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

সরেজমিনে উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের চকনাককাটি গ্রামের মেহের আলী বলেন,আমার একটি বকনা গরু লাম্পি স্কিন ডিজিজ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। চিকিৎসা করেও লাভ হয়নি।

 

আরও পড়ুন : পবিত্র হজ শেষে দেশে ফিরেছেন সাড়ে ৯৫ হাজার হাজী

উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের দেবালয় গ্রামের বাচ্চা গাড়িয়ালের ১টি ষাঁড় গরু, মীরের বাড়ি গ্রামের আফজল হোসেনের ১টি বকনা গরু, মহিধর গ্রামের আব্দুল জলিলের ১টি এঁড়ে বাছুর, ইসমাইল হোসেনের ১টি বকনা গরু, ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ গ্রামের জাহাঙ্গির হোসেনের ১টি বকনা গরু, একই গ্রামের পূর্ণ কর্মকারের ১টি এঁড়ে বাছুর, জাহিদ হাসানের ১টি এঁড়ে বাছুর,তালুক আষাঢ়ু গ্রামের ছোলেয়মানের ১টি বকনা বাছুর, শাহআলমের ১টি এঁড়ে বাছুরসহ সাত ইউনিয়নে তিন শতাধিক গরুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। আক্রান্ত এবং মৃতের অধিকাংশই বাছুর গরু বলে জানান ভূক্তভোগীরা।

বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের দূর্লভকুটি গ্রামের মমতা রানী, চাকিরপশার ইউনিয়নের কানুয়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম, ছিনাই ইউনিয়নের মহিধর গ্রামের খয়বর আলী সহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ২০হাজারের অধিক গরু এই রোগে আক্রান্ত বলে একাধিক সূত্রে জানিয়েছে। তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস আক্রান্তের সংখ্যা আনুমানিক সাত হাজার বলে দাবী করেছেন।

খিতাবখাঁ গ্রামের ফজল মন্ডল বলেন,আমার খামারের লাম্পি আক্রান্ত ১টি গরুর চিকিৎসা চলছে । অন্যান্য গুলো নিয়ে বর্তমানে আমি শঙ্কিত।

চাকিরপশার ইউনিয়নের চকনাককাটি গ্রামের মিল-চাতাল মালিক রাজু আহমেদ বলেন,আমার ও আমার ভাইয়ের মিলে খামারে ৫২টি গরুর মধ্যে ৬টি লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত। তবে এখন পর্যন্ত কোনদিন উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কেউ খবর নেয়নি। তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ বা ভেটেরিনারি কি, এ বিষয়ে আমার এলাকার লোকজন কিছু জানেনা ।
এদিকে উপজেলার নাককাটি,গলাকাটাসহ কয়েকটি স্থানে প্রতিদিন এসব রোগাক্রান্ত গরুর মাংস অবাধে বিক্রি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোথাও কোথাও এসব পশু জবাইয়ের পর অন্যান্য স্থানে নিয়ে গিয়ে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাহফুজার রহমান অভিযোগ অস্বীকার বলেন, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছি । শুক্র-শনি বারের ছুটি বাতিল করেও চিকিৎসা দিচ্ছি। উঠান বৈঠক করছি। জনবল সংকটের কারণে প্রতিটি গ্রামে যাওয়া সম্ভব হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

রাজারহাটে লাম্পি স্কিনে ৩শ’ গরুর মৃত্যু : আক্রান্ত ২০ হাজার : আতঙ্কে খামারীরা

আপডেট সময় : ০৪:০৫:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০২৩

// আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি //

রাজারহাটে মহামারী আকার ধারন করেছে গবাদি পশুর লাম্পি স্কিন রোগ। ১৫দিনের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ছড়িয়ে গেছে। মৃত্যু হয়েছে তিন শতাধিক গরুর। ফলে খামারীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জানা গেছে, চলতি জুলাই মাসের শুরুর দিকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে লাম্বি স্কিন ডিজিজ আক্রান্ত গরু সনাক্ত হয়। দিনদিন এর সংখ্যা বাড়তে থাকে। গত ১৫দিনের মধ্যে উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ, গতিয়াশাম, সরিষাবাড়ী, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের দূর্লোভকুটি, চতুরা, গাবুর হেলান, পাড়ামৌলা, উমর মজিদ ইউনিয়নের তালুক সুবল, ধনঞ্জন, ফুলখাঁ, ঘুমারু ভিমশীতলা, মকর, চাকিরপশার ইউনিয়নের পীরমামুদ, চাকিরপশার তালুক, রতিরাম কমলওঝাঁ, চকনাককাটি,কানুয়া এবং ছিনাই ইউনিয়নের দেবালয়, জয়কুমোর, মীরেরবাড়ি, মহিধর, মেখলি, আচার্য্য, ছত্রজিতসহ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে গরুর শরীরের লাম্পি স্কিন ডিজিজ ছড়িয়ে পরে। বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ২০হাজার ছড়িয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

সরেজমিনে উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের চকনাককাটি গ্রামের মেহের আলী বলেন,আমার একটি বকনা গরু লাম্পি স্কিন ডিজিজ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। চিকিৎসা করেও লাভ হয়নি।

 

আরও পড়ুন : পবিত্র হজ শেষে দেশে ফিরেছেন সাড়ে ৯৫ হাজার হাজী

উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের দেবালয় গ্রামের বাচ্চা গাড়িয়ালের ১টি ষাঁড় গরু, মীরের বাড়ি গ্রামের আফজল হোসেনের ১টি বকনা গরু, মহিধর গ্রামের আব্দুল জলিলের ১টি এঁড়ে বাছুর, ইসমাইল হোসেনের ১টি বকনা গরু, ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ গ্রামের জাহাঙ্গির হোসেনের ১টি বকনা গরু, একই গ্রামের পূর্ণ কর্মকারের ১টি এঁড়ে বাছুর, জাহিদ হাসানের ১টি এঁড়ে বাছুর,তালুক আষাঢ়ু গ্রামের ছোলেয়মানের ১টি বকনা বাছুর, শাহআলমের ১টি এঁড়ে বাছুরসহ সাত ইউনিয়নে তিন শতাধিক গরুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। আক্রান্ত এবং মৃতের অধিকাংশই বাছুর গরু বলে জানান ভূক্তভোগীরা।

বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের দূর্লভকুটি গ্রামের মমতা রানী, চাকিরপশার ইউনিয়নের কানুয়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম, ছিনাই ইউনিয়নের মহিধর গ্রামের খয়বর আলী সহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ২০হাজারের অধিক গরু এই রোগে আক্রান্ত বলে একাধিক সূত্রে জানিয়েছে। তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস আক্রান্তের সংখ্যা আনুমানিক সাত হাজার বলে দাবী করেছেন।

খিতাবখাঁ গ্রামের ফজল মন্ডল বলেন,আমার খামারের লাম্পি আক্রান্ত ১টি গরুর চিকিৎসা চলছে । অন্যান্য গুলো নিয়ে বর্তমানে আমি শঙ্কিত।

চাকিরপশার ইউনিয়নের চকনাককাটি গ্রামের মিল-চাতাল মালিক রাজু আহমেদ বলেন,আমার ও আমার ভাইয়ের মিলে খামারে ৫২টি গরুর মধ্যে ৬টি লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত। তবে এখন পর্যন্ত কোনদিন উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কেউ খবর নেয়নি। তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ বা ভেটেরিনারি কি, এ বিষয়ে আমার এলাকার লোকজন কিছু জানেনা ।
এদিকে উপজেলার নাককাটি,গলাকাটাসহ কয়েকটি স্থানে প্রতিদিন এসব রোগাক্রান্ত গরুর মাংস অবাধে বিক্রি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোথাও কোথাও এসব পশু জবাইয়ের পর অন্যান্য স্থানে নিয়ে গিয়ে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাহফুজার রহমান অভিযোগ অস্বীকার বলেন, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছি । শুক্র-শনি বারের ছুটি বাতিল করেও চিকিৎসা দিচ্ছি। উঠান বৈঠক করছি। জনবল সংকটের কারণে প্রতিটি গ্রামে যাওয়া সম্ভব হয়নি।