ঢাকা ০২:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

মধুখালীতে পাট জাগ দেয়া নিয়ে বিপাকে চাষীরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৭:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুলাই ২০২৩
  • / ৫০২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// নাজিম বকাউল, বিশেষ প্রতিনিধি //

“সোনালী আঁশে ভরপুর ভালবাসি ফরিদপুর” প্রতি বছরই পাট চাষিরা ফরিদপুরের মধুখালীতে সোনালী আঁশের সুনাম অর্জন করে আসছেন, গেল ও এ বছর ফরিদপুরের মধুখালীর পাট চাষীরা চরম বিপাকে পড়েছেন পাট জাগ দেওয়া বা পঁচান নিয়ে। খালে বিলে নালে ডোবায় কোথায়ও পানি নাই চলচ্ছে পানির জন্য হাহাকার। সুখবর নাই বৃষ্টির।
চলছে শ্রাবণ মাস বৃষ্টি না থাকায় পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষীরা। অন্যান্য বছরের এ সময় খাল, বিল, নদী নালা পানিতে ভরা থাকে কিন্তু গেল বছর ও এ বছর পানি না থাকায় কৃষকরা এখনও পাট কাটছেন না। পাট শুকাছে ক্ষেতে।

 

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুর সদর উপজেলা ও মধুখালী উপজেলা সংলগ্ন যে ঐতিহ্যেবাহী কুমার নদীটি রয়েছ খনন না করায় আষাঢ়-শ্রাবণ মাস বৃষ্টির মাস হলেও পনির দেখা নেই । পাট কেটে একই স্থানে জমা করে রেখেছেন চাষীরা।কৃষক মো: মোয়াজ্জেম শেখ বলেন, তিন -চার কিলোমিটার দুর থেকে পাট এনে জমা করছি কিন্তু পানি না থাকায় পাট জাগ দিতে পারছি না।

আরও পড়ুন : শাহজাদপুরে বিএনপি জামায়াতের নৈরাজ্য অগ্নিসন্ত্রাসের প্রতিবাদে আ.লীগের বিক্ষোভ মিছিল

চাষী মো. ওহিদ বলেন, যত টুকু সম্ভব পাট কেটে নিয়ে আসছি, পানি তো নেই অনেকেই পানির কারণে পাট কাটতে পারছে না, এখন স্যালো মেশিন দিয়ে পুকুরে পানি দিয়ে পাট জাগ দিতে হবে এতে করে পাটের খরচ দ্বিগুন বা তিনগুন বেড়ে যাবে এতে করে কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ব্যাসদী গ্রামের পাট চাষী মোঃ রাসেল আহম্মেদ এ প্রতিনিধিকে বলেন দেড় একর জমিতে পাট চাষ করেছি হয়েছে বাম্পার ফলন। পানির অভাবে এখন সোনালী আশ হয়েছে গলার ফাঁস। গত বছর পানির অভাবে পাশের উপজেলা ২৫/৩০ কিলো দুরে নসিমনে করে নিয়ে জাগ দেই । ভেবেছিলাম এ বছর হয়তো তেমনটি হবে না কারণ বছরের শুরুতেই যেভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। এখন তেমনটি লক্ষণ নাই বৃষ্টির। ক্ষেতে পাট শুকাতে শুরু করেছে লোকসানের সমুক্ষিণই হতে হবে-লাভের কোন সম্ভব নাই। যেটা খরচ হয়েছিল সেটা আর ঘরে আসবে না। এ ভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে আর কৃষি কাজ করা হবে না । অপর পাট চাষী আলীমউদ্দিন শেখ বলেন এ বছরতো গেল আগামীতে আখ রোপন ছাড়া উপায় নাই।এক আটি পাট কাটা ধোয়া নেওয়া ঘরে তোলা পর্যন্ত ১৪টাকার বেশী খরচ । এক আটি পাটে কত গ্রাম হবে আর তার দাম কত? সে জন্য আখ চাষের বিকল্প নাই। আখ চাষ করলেতো আর পানির চিন্তা থাকবে না। আখক্ষেতে পানির প্রয়োজন হলে সেচের ব্যবস্থা করা যাবে আর সেঁচ দিয়েতো আর পাট জাগ দেওয়া যাবে না। সেচ দিয়ে পাট জাগ দিলেও দুদিনেই শুকিয়ে যাবে সেক্ষেত্রে খরচের পরিমানও বেরে যাবে ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলভীর রহমানের কাছে তার মোবাইলে চাষিদের পাট নিয়ে যে দুর্দশা, বিকল্প কোন চিন্তা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বছর ১টি পৌরসবাসহ ১১টি ইউনিয়নে ৮ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদন করা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিছুই করার নাই। তবে চাষি ইচ্ছা করলে আধুনিক যন্ত্র দ্বারা রিবন রেটিং করে বা পাটগাছ থেকে ছাল বা বাকল আলাদা করার পর ঐ ছাল বা বাকলকে অল্প পানিতে জাগ বা পচানো যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে পাটচাষি উপকৃত হবেন এবং খরচ একটু কমে আসবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ পদ্ধতি খুবই সময় উপযোগি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে পাটের ছাল ছাড়ানো যেমন সহজ তেমনি খরচও কম।

নিউজটি শেয়ার করুন

মধুখালীতে পাট জাগ দেয়া নিয়ে বিপাকে চাষীরা

আপডেট সময় : ০৬:৫৭:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুলাই ২০২৩

// নাজিম বকাউল, বিশেষ প্রতিনিধি //

“সোনালী আঁশে ভরপুর ভালবাসি ফরিদপুর” প্রতি বছরই পাট চাষিরা ফরিদপুরের মধুখালীতে সোনালী আঁশের সুনাম অর্জন করে আসছেন, গেল ও এ বছর ফরিদপুরের মধুখালীর পাট চাষীরা চরম বিপাকে পড়েছেন পাট জাগ দেওয়া বা পঁচান নিয়ে। খালে বিলে নালে ডোবায় কোথায়ও পানি নাই চলচ্ছে পানির জন্য হাহাকার। সুখবর নাই বৃষ্টির।
চলছে শ্রাবণ মাস বৃষ্টি না থাকায় পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষীরা। অন্যান্য বছরের এ সময় খাল, বিল, নদী নালা পানিতে ভরা থাকে কিন্তু গেল বছর ও এ বছর পানি না থাকায় কৃষকরা এখনও পাট কাটছেন না। পাট শুকাছে ক্ষেতে।

 

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুর সদর উপজেলা ও মধুখালী উপজেলা সংলগ্ন যে ঐতিহ্যেবাহী কুমার নদীটি রয়েছ খনন না করায় আষাঢ়-শ্রাবণ মাস বৃষ্টির মাস হলেও পনির দেখা নেই । পাট কেটে একই স্থানে জমা করে রেখেছেন চাষীরা।কৃষক মো: মোয়াজ্জেম শেখ বলেন, তিন -চার কিলোমিটার দুর থেকে পাট এনে জমা করছি কিন্তু পানি না থাকায় পাট জাগ দিতে পারছি না।

আরও পড়ুন : শাহজাদপুরে বিএনপি জামায়াতের নৈরাজ্য অগ্নিসন্ত্রাসের প্রতিবাদে আ.লীগের বিক্ষোভ মিছিল

চাষী মো. ওহিদ বলেন, যত টুকু সম্ভব পাট কেটে নিয়ে আসছি, পানি তো নেই অনেকেই পানির কারণে পাট কাটতে পারছে না, এখন স্যালো মেশিন দিয়ে পুকুরে পানি দিয়ে পাট জাগ দিতে হবে এতে করে পাটের খরচ দ্বিগুন বা তিনগুন বেড়ে যাবে এতে করে কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ব্যাসদী গ্রামের পাট চাষী মোঃ রাসেল আহম্মেদ এ প্রতিনিধিকে বলেন দেড় একর জমিতে পাট চাষ করেছি হয়েছে বাম্পার ফলন। পানির অভাবে এখন সোনালী আশ হয়েছে গলার ফাঁস। গত বছর পানির অভাবে পাশের উপজেলা ২৫/৩০ কিলো দুরে নসিমনে করে নিয়ে জাগ দেই । ভেবেছিলাম এ বছর হয়তো তেমনটি হবে না কারণ বছরের শুরুতেই যেভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। এখন তেমনটি লক্ষণ নাই বৃষ্টির। ক্ষেতে পাট শুকাতে শুরু করেছে লোকসানের সমুক্ষিণই হতে হবে-লাভের কোন সম্ভব নাই। যেটা খরচ হয়েছিল সেটা আর ঘরে আসবে না। এ ভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে আর কৃষি কাজ করা হবে না । অপর পাট চাষী আলীমউদ্দিন শেখ বলেন এ বছরতো গেল আগামীতে আখ রোপন ছাড়া উপায় নাই।এক আটি পাট কাটা ধোয়া নেওয়া ঘরে তোলা পর্যন্ত ১৪টাকার বেশী খরচ । এক আটি পাটে কত গ্রাম হবে আর তার দাম কত? সে জন্য আখ চাষের বিকল্প নাই। আখ চাষ করলেতো আর পানির চিন্তা থাকবে না। আখক্ষেতে পানির প্রয়োজন হলে সেচের ব্যবস্থা করা যাবে আর সেঁচ দিয়েতো আর পাট জাগ দেওয়া যাবে না। সেচ দিয়ে পাট জাগ দিলেও দুদিনেই শুকিয়ে যাবে সেক্ষেত্রে খরচের পরিমানও বেরে যাবে ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলভীর রহমানের কাছে তার মোবাইলে চাষিদের পাট নিয়ে যে দুর্দশা, বিকল্প কোন চিন্তা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বছর ১টি পৌরসবাসহ ১১টি ইউনিয়নে ৮ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদন করা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিছুই করার নাই। তবে চাষি ইচ্ছা করলে আধুনিক যন্ত্র দ্বারা রিবন রেটিং করে বা পাটগাছ থেকে ছাল বা বাকল আলাদা করার পর ঐ ছাল বা বাকলকে অল্প পানিতে জাগ বা পচানো যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে পাটচাষি উপকৃত হবেন এবং খরচ একটু কমে আসবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ পদ্ধতি খুবই সময় উপযোগি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে পাটের ছাল ছাড়ানো যেমন সহজ তেমনি খরচও কম।