ঢাকা ০৩:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ব্রহ্মপুত্রের কাশফুল দেখতে ছুটছেন পর্যটকরা

// চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি //
  • আপডেট সময় : ০৮:৪৬:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৭৫০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি তাই আমি পৃথিবীর রুপ খুঁজিতে যাই না। ষড় ঋতুর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। ছয়টি ঋতুই প্রকৃতিতে যেন ভিন্ন ভিন্ন রূপ নিয়ে সাজে। এদের মধ্যে একটি হচ্ছে শরৎ ঋতু বা শরৎকাল। প্রকৃতিতে যখন এ শরৎ ঋতু বা শরৎকাল আসে তখন কাশফুলই জানিয়ে দেয় এ ঋতুর আগমনী বার্তা। কুড়িগ্রামের চিলমারীতে চরাঞ্চলসমুহ সেই শরতের শুভ্র কাশফুলে সেজেছে। বৈচিত্রময় প্রকৃতিতে শরতের কাশফুল দেখে যে কারোরই চোখ ও মন জুড়িয়ে আসবে। প্রকৃতির এই রুপকে দেখতে প্রকৃতি প্রেমিদের ঢল নেমছে চিলমারীর চরাঞ্চলসমূহের কাঁশবনে। অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে আসছেন সৌন্দর্য উপভোগ করতে তাছাড়া স্মৃতি ধরে রাখতে তুলছেন সেলফি।
চিলমারী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের তিনটি ইউনিয়নই ব্রহ্মপুত্র নদের মাঝে অবস্থিত। ইউনিয়ন তিনটি হচ্ছে চিলমারী ইউনিয়ন, নয়ারহাট ইউনিয়ন ও অষ্টমীরচর ইউনিয়ন। ইউনিয়ন তিনটিতে সবসময় চলে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙা-গড়ার খেলা। এ ভাবে জেগে উঠা অসংখ্য ধু-ধু বালুচর রয়েছে এই অঞ্চলসমুহে। আর ওই বালুচরগুলিতেই যেন শরতে কাশফুলের পশরা মেলেছে কাঁশ বনে বনে। চরাঞ্চলের কৃষকরা এ কাশবন নিয়ে অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন দেখছে। আর প্রকৃতি প্রেমিরা ছুটছে অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে। প্রতিদিন প্রকৃতি প্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে চিলমারীর চরাঞ্চলগুলো। এখানকার চরাঞ্চলসমুহ চলাচলের ক্ষেত্রে দুর্গম হওয়া সত্বেও বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসছে শুভ্র সাদা এই কাশফুলের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে। কাশফুল বাতাসে দোল খাওয়ার দৃশ্য যে কেউ অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকবে।ধু-ধু চরাঞ্চল হওয়ায় কাশফুলের সাথে শোভা বৃদ্ধি করে থাকে কখনো আকাশের কালো মেঘ আবার কখনো সাদা মেঘ। তাই এসময়ে মেঘ-পানি আর শুভ্র কাশফুলের খেলা দেখতে প্রতিনিয়ত নানা বয়সের প্রকৃতি প্রেমীরা ছুটে আসছেন ব্রহ্মপুত্রের বুকে।
চিলমারী ইউনিয়নের কৃষক মাইদুল ইসলাম  বলেন, চরে এক বিঘা জমিতে প্রায় ১৭শ থেকে দু’হাজার কাশিয়ার আটি হয়। কাশিয়া কেটে আটি বেঁধে ১৫-২০টাকা করে বিক্রি হয়। এই কাশ বিক্রি করে গড়ে প্রতি বিঘা জমি থেকে ১৫-২০ হাজার টাকা আসে। সাধারনত কার্তিক মাসে চরাঞ্চল সমূহে অভাব দেখা দেয়। এসময় কাশিয়া বিক্রি করে যে টাকা আসে তাতে কার্তিক মাসের অভাব পার হয়ে যায় এখানকার মানুষের।
বুধবার বিকেলে জোড়গাছ ঘাটের সামনে ব্রহ্মপুত্র বুক চিরে জেগে ওঠা চরে কাশবনের কাশফুলের শুভ্র সৌন্দর্য দেখতে আসা প্রকৃতি প্রেমি নুসরাত জাহান সুরভী, এস এম রাফি,সাকিব হানজালা,নয়ন, রোকুনুজ্জামান মানুসহ অনেকে বলেন, আমাদের ব্যস্ততার মাঝেও প্রায়ই নৌকা নিয়ে বিভিন্ন চরে কাশফুল দেখতে আসি। বিকেলে কাশফুল দেখতে আসলে প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য দেখতে দেখতে নিজেকে হারিয়ে ফেলি।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটন আশিস আহমেদ উল্লাস জানান, তিনি চিলমারীর কাশফুলের কথা শুনে ছুটে এসেছেন কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। শুভ্র এই ফুলের সৌন্দর্য তাকে বিমোহিত করেছে বলে জানান তিনি।
চিলমারী গোলাম হাবিব মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহ অধ্যাপক মামুন অর রশ্মিদ বলেন, সরকারি ভাবে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে চিলমারীর এই চরাঞ্চলে পর্যটন শিল্প বিকাশের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ব্রহ্মপুত্রের কাশফুল দেখতে ছুটছেন পর্যটকরা

আপডেট সময় : ০৮:৪৬:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ অক্টোবর ২০২৩
বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি তাই আমি পৃথিবীর রুপ খুঁজিতে যাই না। ষড় ঋতুর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। ছয়টি ঋতুই প্রকৃতিতে যেন ভিন্ন ভিন্ন রূপ নিয়ে সাজে। এদের মধ্যে একটি হচ্ছে শরৎ ঋতু বা শরৎকাল। প্রকৃতিতে যখন এ শরৎ ঋতু বা শরৎকাল আসে তখন কাশফুলই জানিয়ে দেয় এ ঋতুর আগমনী বার্তা। কুড়িগ্রামের চিলমারীতে চরাঞ্চলসমুহ সেই শরতের শুভ্র কাশফুলে সেজেছে। বৈচিত্রময় প্রকৃতিতে শরতের কাশফুল দেখে যে কারোরই চোখ ও মন জুড়িয়ে আসবে। প্রকৃতির এই রুপকে দেখতে প্রকৃতি প্রেমিদের ঢল নেমছে চিলমারীর চরাঞ্চলসমূহের কাঁশবনে। অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে আসছেন সৌন্দর্য উপভোগ করতে তাছাড়া স্মৃতি ধরে রাখতে তুলছেন সেলফি।
চিলমারী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের তিনটি ইউনিয়নই ব্রহ্মপুত্র নদের মাঝে অবস্থিত। ইউনিয়ন তিনটি হচ্ছে চিলমারী ইউনিয়ন, নয়ারহাট ইউনিয়ন ও অষ্টমীরচর ইউনিয়ন। ইউনিয়ন তিনটিতে সবসময় চলে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙা-গড়ার খেলা। এ ভাবে জেগে উঠা অসংখ্য ধু-ধু বালুচর রয়েছে এই অঞ্চলসমুহে। আর ওই বালুচরগুলিতেই যেন শরতে কাশফুলের পশরা মেলেছে কাঁশ বনে বনে। চরাঞ্চলের কৃষকরা এ কাশবন নিয়ে অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন দেখছে। আর প্রকৃতি প্রেমিরা ছুটছে অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে। প্রতিদিন প্রকৃতি প্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে চিলমারীর চরাঞ্চলগুলো। এখানকার চরাঞ্চলসমুহ চলাচলের ক্ষেত্রে দুর্গম হওয়া সত্বেও বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসছে শুভ্র সাদা এই কাশফুলের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে। কাশফুল বাতাসে দোল খাওয়ার দৃশ্য যে কেউ অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকবে।ধু-ধু চরাঞ্চল হওয়ায় কাশফুলের সাথে শোভা বৃদ্ধি করে থাকে কখনো আকাশের কালো মেঘ আবার কখনো সাদা মেঘ। তাই এসময়ে মেঘ-পানি আর শুভ্র কাশফুলের খেলা দেখতে প্রতিনিয়ত নানা বয়সের প্রকৃতি প্রেমীরা ছুটে আসছেন ব্রহ্মপুত্রের বুকে।
চিলমারী ইউনিয়নের কৃষক মাইদুল ইসলাম  বলেন, চরে এক বিঘা জমিতে প্রায় ১৭শ থেকে দু’হাজার কাশিয়ার আটি হয়। কাশিয়া কেটে আটি বেঁধে ১৫-২০টাকা করে বিক্রি হয়। এই কাশ বিক্রি করে গড়ে প্রতি বিঘা জমি থেকে ১৫-২০ হাজার টাকা আসে। সাধারনত কার্তিক মাসে চরাঞ্চল সমূহে অভাব দেখা দেয়। এসময় কাশিয়া বিক্রি করে যে টাকা আসে তাতে কার্তিক মাসের অভাব পার হয়ে যায় এখানকার মানুষের।
বুধবার বিকেলে জোড়গাছ ঘাটের সামনে ব্রহ্মপুত্র বুক চিরে জেগে ওঠা চরে কাশবনের কাশফুলের শুভ্র সৌন্দর্য দেখতে আসা প্রকৃতি প্রেমি নুসরাত জাহান সুরভী, এস এম রাফি,সাকিব হানজালা,নয়ন, রোকুনুজ্জামান মানুসহ অনেকে বলেন, আমাদের ব্যস্ততার মাঝেও প্রায়ই নৌকা নিয়ে বিভিন্ন চরে কাশফুল দেখতে আসি। বিকেলে কাশফুল দেখতে আসলে প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য দেখতে দেখতে নিজেকে হারিয়ে ফেলি।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটন আশিস আহমেদ উল্লাস জানান, তিনি চিলমারীর কাশফুলের কথা শুনে ছুটে এসেছেন কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। শুভ্র এই ফুলের সৌন্দর্য তাকে বিমোহিত করেছে বলে জানান তিনি।
চিলমারী গোলাম হাবিব মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহ অধ্যাপক মামুন অর রশ্মিদ বলেন, সরকারি ভাবে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে চিলমারীর এই চরাঞ্চলে পর্যটন শিল্প বিকাশের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।