ঢাকা ১০:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে পাঁকানো হচ্ছে আম

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৯:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ মে ২০২৩
  • / ৪৭৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

// যশোর প্রতিনিধি //

জমে উঠেছে দক্ষিণ বঙ্গের সর্ববৃহৎ যশোরের শার্শা উপজেলার বেলতলা আম বাজার। প্রতি বছরের ন্যায় চলতি মৌসুমে আমের ব্যাপক বেচাকেনা হলেও প্রতিটা আমের গোডাউনে রাসায়নিক কেমিক্যাল (ইন্ডিয়ান স্প্রে) দিয়ে আম পাঁকানোর মহোৎসব চলছে। কৃত্রিম উপায়ে আমের গায়ে পাঁকা রং তৈরি করা হচ্ছে। আর এসব রাসায়নিক কেমিক্যাল দিয়ে পাঁকানো আম খেয়ে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে সাধারণ ভোক্তারা। এক শ্রেণীর অসাধু আম ব্যবসায়ী বেশি লাভের আশায় কৃত্রিম উপায়ে আম পাঁকিয়ে বাজারজাত করছে। এতে করে আমের প্রকৃত স্বাদ এবং মান নষ্ট হচ্ছে, একই সাথে ভোক্তারা ব্যাপক ভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছে। কেমিক্যাল স্প্রে দিয়ে পাকানো আম খেয়ে প্রকৃত আমের স্বাদ ভূলে গেছেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস তথ্য মতে, যশোর তথা দক্ষিণাঞ্চলের বাগআঁচড়া বেলতলা বাজারে বিক্রিয়কৃত আমের সুনাম রয়েছে দেশ এবং বিদেশে। কিন্তু কেমিক্যাল দিয়ে আম পাঁকানোর মহোৎসবের কারণে সেই সুনাম আজ নষ্ট হতে চলেছে। বিদেশে আম রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার এই খাত থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করে থাকে। এতে অর্থনৈতিক ভাবে দেশ লাভবান হয়। এ বছর বিশ মুক্ত আম সরবরাহ না করা গেলে বিদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছুটা অনিশ্চিতার মুখে পড়তে পারে। তাই সচেতন মহলের দাবি অচিরেই বাজার মনিটরিং করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, মোঃ জিনারুল বেপারী, জালাল বেপারী ও কিরণ বেপারীসহ ব্যাপারী রাসায়নিক কেমিক্যাল স্প্রে (ইন্ডিয়ান স্প্রে) দিয়ে আম পাঁকাচ্ছে। দুপুরে স্প্রেরে করলেই সকাল হওয়ার সাথে সাথে সেসব আম গায়ে রং চড়ে পাঁকা আমে পরিণত হচ্ছে। এসব অনিয়মের বিষয়ে বেপারী মোঃ জিনারুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা তো স্প্রে করার জন্য প্রশাসনের টাকা দিয়েছি। আর বেপারী জালাল উদ্দিন জানান, সব ঘরেই তো স্প্রে দিয়ে আম পাঁকাচ্ছে, সবাই যে ভাবে পাকাচ্ছে আমিও সেই ভাবে আম পাঁকাচ্ছি।

শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর (আরএমও) লক্ষিনদার বলেন, আম পাঁকানোর জন্য সরকার নির্ধারিত স্প্রে ছাড়া অন্য যে সব কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকানো হলে তা অবশ্যই মানব দেহের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। শার্শা উপজেলা সেনেটারি ইন্সপেক্টর শেফালী খাতুন বলেন, ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন কোন বিষয় সামনে আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (কৃষিবিদ) প্রতাপ মন্ডল জানান, আমরা সার্বিক বিষয়ে বাজার মনিটরিং করছি। অসাধু ব্যবসায়ীরা যদি আম কেনা বেচা বা বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে আম পাঁকানোর চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নারায়ণ চন্দ্র পাল জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো আম বাজারে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন অনিয়ম তদারকি করছে। কোন রকম বাজারে চাঁদাবাজদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। পাশাপাশি কোন অসাধু ব্যবসায়ী যদি আমে বিষাক্ত কেমিক্যাল স্প্রে করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

বা/খ: এসআর।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে পাঁকানো হচ্ছে আম

আপডেট সময় : ০৭:৫৯:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ মে ২০২৩

// যশোর প্রতিনিধি //

জমে উঠেছে দক্ষিণ বঙ্গের সর্ববৃহৎ যশোরের শার্শা উপজেলার বেলতলা আম বাজার। প্রতি বছরের ন্যায় চলতি মৌসুমে আমের ব্যাপক বেচাকেনা হলেও প্রতিটা আমের গোডাউনে রাসায়নিক কেমিক্যাল (ইন্ডিয়ান স্প্রে) দিয়ে আম পাঁকানোর মহোৎসব চলছে। কৃত্রিম উপায়ে আমের গায়ে পাঁকা রং তৈরি করা হচ্ছে। আর এসব রাসায়নিক কেমিক্যাল দিয়ে পাঁকানো আম খেয়ে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে সাধারণ ভোক্তারা। এক শ্রেণীর অসাধু আম ব্যবসায়ী বেশি লাভের আশায় কৃত্রিম উপায়ে আম পাঁকিয়ে বাজারজাত করছে। এতে করে আমের প্রকৃত স্বাদ এবং মান নষ্ট হচ্ছে, একই সাথে ভোক্তারা ব্যাপক ভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছে। কেমিক্যাল স্প্রে দিয়ে পাকানো আম খেয়ে প্রকৃত আমের স্বাদ ভূলে গেছেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস তথ্য মতে, যশোর তথা দক্ষিণাঞ্চলের বাগআঁচড়া বেলতলা বাজারে বিক্রিয়কৃত আমের সুনাম রয়েছে দেশ এবং বিদেশে। কিন্তু কেমিক্যাল দিয়ে আম পাঁকানোর মহোৎসবের কারণে সেই সুনাম আজ নষ্ট হতে চলেছে। বিদেশে আম রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার এই খাত থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করে থাকে। এতে অর্থনৈতিক ভাবে দেশ লাভবান হয়। এ বছর বিশ মুক্ত আম সরবরাহ না করা গেলে বিদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছুটা অনিশ্চিতার মুখে পড়তে পারে। তাই সচেতন মহলের দাবি অচিরেই বাজার মনিটরিং করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, মোঃ জিনারুল বেপারী, জালাল বেপারী ও কিরণ বেপারীসহ ব্যাপারী রাসায়নিক কেমিক্যাল স্প্রে (ইন্ডিয়ান স্প্রে) দিয়ে আম পাঁকাচ্ছে। দুপুরে স্প্রেরে করলেই সকাল হওয়ার সাথে সাথে সেসব আম গায়ে রং চড়ে পাঁকা আমে পরিণত হচ্ছে। এসব অনিয়মের বিষয়ে বেপারী মোঃ জিনারুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা তো স্প্রে করার জন্য প্রশাসনের টাকা দিয়েছি। আর বেপারী জালাল উদ্দিন জানান, সব ঘরেই তো স্প্রে দিয়ে আম পাঁকাচ্ছে, সবাই যে ভাবে পাকাচ্ছে আমিও সেই ভাবে আম পাঁকাচ্ছি।

শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর (আরএমও) লক্ষিনদার বলেন, আম পাঁকানোর জন্য সরকার নির্ধারিত স্প্রে ছাড়া অন্য যে সব কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকানো হলে তা অবশ্যই মানব দেহের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। শার্শা উপজেলা সেনেটারি ইন্সপেক্টর শেফালী খাতুন বলেন, ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন কোন বিষয় সামনে আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (কৃষিবিদ) প্রতাপ মন্ডল জানান, আমরা সার্বিক বিষয়ে বাজার মনিটরিং করছি। অসাধু ব্যবসায়ীরা যদি আম কেনা বেচা বা বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে আম পাঁকানোর চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নারায়ণ চন্দ্র পাল জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো আম বাজারে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন অনিয়ম তদারকি করছে। কোন রকম বাজারে চাঁদাবাজদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। পাশাপাশি কোন অসাধু ব্যবসায়ী যদি আমে বিষাক্ত কেমিক্যাল স্প্রে করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

বা/খ: এসআর।