ঢাকা ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

তীব্র গরমে শাহজাদপুরসহ উত্তরাঞ্চলে বাড়ছে লোডশেডিং ও জনদুর্ভোগ

বাঘাবাড়ীর ৫৫১ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৬টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রই বন্ধ

মোঃ শামছুর রহমান শিশির ও রাজেশ দত্ত
  • আপডেট সময় : ০৮:০৩:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৪৯৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা খবর বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দর এলাকায় স্থাপিত ৬টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সবকটিই বন্ধ রয়েছে। এ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো চালু থাকলে কেন্দ্রগুলো থেকে প্রতিদিন উৎপাদিত ৫৫১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হতো। বন্ধ থাকা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো হলো, পিডিবি’র ১শ’ ও ৭১ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র্র, ডুয়েল ফুয়েল (গ্যাস ও ফার্নেশ ওয়েল) ব্যবস্থায় ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পিকিং পাওয়ার প্লান্ট, প্যারামাউন্ট বিট্রাক এনার্জি লিমিটেড এর ২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, ওয়েষ্টমন্ট পাওয়ার প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেড এর ৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ভাসমান বার্জ মাউন্টেন ‘বিজয়ের আলো-১’ এবং একই কোম্পানির ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ভাসমান বার্জ মাউন্টেন ‘বিজয়ের আলো-২’। এগুলোর মধ্যে ডুয়েল ফুয়েল (গ্যাস ও ফার্নেশ ওয়েল) ব্যবস্থায় ৫০ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পিকিং পাওয়ার প্লান্টটি মাঝে মধ্যে পিক আওয়ারে অর্থাৎ বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত সচল রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হলেও উৎপাদন খরচ বেশী হওয়ায় সেটিও বেশিরভাগ সময় বন্ধ রাখা হয়। আর সরকারের সাথে চুক্তির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় চলতি বছরের ১৫ ফেব্রæয়ারি থেকে প্যারামাউন্ট বিট্রাক এনার্জি লিমিটেড এর ২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে তীব্র গরমের মধ্যেও শাহজাদপুরসহ পুরো উত্তরাঞ্চলে লোডশেডিং দিনদিন বেড়েই চলেছে। সেইসাথে বাড়ছে জনদুর্ভোগ।

২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় পিডিবি’র বাঘাবাড়ী ১৭১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (তঃপ্রঃ) (ভারপ্রাপ্ত) নুর মোহাম্মদ ভুঞা মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে জানান , ‘প্রয়োজনীয় গ্যাস না পাওয়ায় বাঘাবাড়ীর ১৭১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ২টি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।’

অপরদিকে, ‘পাওয়ারগ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড এর শাহজাদপুরের ১৩২/৩৩ গ্রিড উপকেন্দ্রের প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে বাঘাবাড়ীর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো থেকে জাতীয় গ্রিডে কোন বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে না।’

বিজ্ঞমহলের ভাষ্যমতে, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানের ক্ষেত্রে সরকারের লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাঘাবাড়ীর বর্তমান প্রেক্ষাপট বাস্তবতাবর্জিত। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে  বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হলেও এর তেমন সুফল পাচ্ছেনা উত্তরাঞ্চলবাসী। এমনিতেই ইরি-বোরো মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ না হয়ে ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। একদিকে ওই ঘাটতিই পূরণ হচ্ছেনা । আর ওই ঘাটতি পূরণের জন্য উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় দিনে রাতে কিছুক্ষন পরপরই লোডশেডিং করা হচ্ছে। ফলে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার বিভিন্ন ধরনের শিল্পকারখানায় পন্যদ্রব্য উৎপাদন মারাত্বকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। একদিকে তীব্র গরম আবহাওয়া ও অন্যদিকে দিনে রাতে আলো-আধারের লুকোচুরি খেলার মতো কিছুক্ষণ পরপর ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে উত্তরাঞ্চলবাসীর জনদুর্ভোগ চরমে পৌছেছে।

তার পরেও ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’হিসাবে বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দর এলাকার ৬টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সবকটিই বন্ধ থাকায় জাতীয় গ্রিডে কোন বিদ্যুৎ যুক্ত না হওয়ায় লোডশেডিং কমারও কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

তীব্র গরমে শাহজাদপুরসহ উত্তরাঞ্চলে বাড়ছে লোডশেডিং ও জনদুর্ভোগ

বাঘাবাড়ীর ৫৫১ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৬টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রই বন্ধ

আপডেট সময় : ০৮:০৩:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪

সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দর এলাকায় স্থাপিত ৬টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সবকটিই বন্ধ রয়েছে। এ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো চালু থাকলে কেন্দ্রগুলো থেকে প্রতিদিন উৎপাদিত ৫৫১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হতো। বন্ধ থাকা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো হলো, পিডিবি’র ১শ’ ও ৭১ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র্র, ডুয়েল ফুয়েল (গ্যাস ও ফার্নেশ ওয়েল) ব্যবস্থায় ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পিকিং পাওয়ার প্লান্ট, প্যারামাউন্ট বিট্রাক এনার্জি লিমিটেড এর ২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, ওয়েষ্টমন্ট পাওয়ার প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেড এর ৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ভাসমান বার্জ মাউন্টেন ‘বিজয়ের আলো-১’ এবং একই কোম্পানির ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ভাসমান বার্জ মাউন্টেন ‘বিজয়ের আলো-২’। এগুলোর মধ্যে ডুয়েল ফুয়েল (গ্যাস ও ফার্নেশ ওয়েল) ব্যবস্থায় ৫০ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পিকিং পাওয়ার প্লান্টটি মাঝে মধ্যে পিক আওয়ারে অর্থাৎ বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত সচল রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হলেও উৎপাদন খরচ বেশী হওয়ায় সেটিও বেশিরভাগ সময় বন্ধ রাখা হয়। আর সরকারের সাথে চুক্তির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় চলতি বছরের ১৫ ফেব্রæয়ারি থেকে প্যারামাউন্ট বিট্রাক এনার্জি লিমিটেড এর ২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে তীব্র গরমের মধ্যেও শাহজাদপুরসহ পুরো উত্তরাঞ্চলে লোডশেডিং দিনদিন বেড়েই চলেছে। সেইসাথে বাড়ছে জনদুর্ভোগ।

২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় পিডিবি’র বাঘাবাড়ী ১৭১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (তঃপ্রঃ) (ভারপ্রাপ্ত) নুর মোহাম্মদ ভুঞা মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে জানান , ‘প্রয়োজনীয় গ্যাস না পাওয়ায় বাঘাবাড়ীর ১৭১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ২টি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।’

অপরদিকে, ‘পাওয়ারগ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড এর শাহজাদপুরের ১৩২/৩৩ গ্রিড উপকেন্দ্রের প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে বাঘাবাড়ীর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো থেকে জাতীয় গ্রিডে কোন বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে না।’

বিজ্ঞমহলের ভাষ্যমতে, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানের ক্ষেত্রে সরকারের লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাঘাবাড়ীর বর্তমান প্রেক্ষাপট বাস্তবতাবর্জিত। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে  বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হলেও এর তেমন সুফল পাচ্ছেনা উত্তরাঞ্চলবাসী। এমনিতেই ইরি-বোরো মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ না হয়ে ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। একদিকে ওই ঘাটতিই পূরণ হচ্ছেনা । আর ওই ঘাটতি পূরণের জন্য উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় দিনে রাতে কিছুক্ষন পরপরই লোডশেডিং করা হচ্ছে। ফলে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার বিভিন্ন ধরনের শিল্পকারখানায় পন্যদ্রব্য উৎপাদন মারাত্বকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। একদিকে তীব্র গরম আবহাওয়া ও অন্যদিকে দিনে রাতে আলো-আধারের লুকোচুরি খেলার মতো কিছুক্ষণ পরপর ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে উত্তরাঞ্চলবাসীর জনদুর্ভোগ চরমে পৌছেছে।

তার পরেও ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’হিসাবে বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দর এলাকার ৬টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সবকটিই বন্ধ থাকায় জাতীয় গ্রিডে কোন বিদ্যুৎ যুক্ত না হওয়ায় লোডশেডিং কমারও কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।